এক সুখী জীবনের জন্য নির্ভরতা অতীব গুরুত্বপূর্ণ
এক সুখী জীবনের জন্য নির্ভরতা অতীব গুরুত্বপূর্ণ
খাদ্যে বিষক্রিয়া খুবই অপ্রীতিকর এক বিষয়। যে-ব্যক্তির বার বার এমনটা হয়, তার খাদ্যাভ্যাসের বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়া দরকার। কিন্তু খাদ্যে বিষক্রিয়ার ঝুঁকি এড়ানোর জন্য খাওয়াদাওয়া একেবারে বন্ধ করে দেওয়া বাস্তবসম্মত হবে না। তা করা সমস্যার সমাধান না করে বরং আরও বাড়াবে। খাবার না খেয়ে কেউই বেশি দিন বাঁচতে পারে না।
একইভাবে, বিশ্বাসঘাতকতা করে কারও নির্ভরতা ভঙ্গ করা বেদনাদায়ক। বার বার বিশ্বাসঘাতকতা করে নির্ভরতা ভঙ্গ করা হলে তা আমাদের হয়তো সঙ্গীসাথি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সতর্কভাবে চিন্তা করায় পরিচালিত করতে পারে। কিন্তু, নিরাশ হওয়ার ঝুঁকি এড়ানোর জন্য নিজেকে পুরোপুরি বিছিন্ন করা প্রকৃত সমাধান নয়। কেন? কারণ অন্যের ওপর নির্ভর করতে না পারা আমাদের নিজেদের সুখ হরণ করে। এক সন্তোষজনক জীবনযাপনের জন্য আমাদের এমন সম্পর্ক দরকার, যেটার ভিত্তি পারস্পরিক নির্ভরতা।
“নির্ভরতা প্রতিদিন অন্যদের সঙ্গে সরল আদানপ্রদানে এক ভিত্তি গঠন করে,” ইয়ুগেন্ট ২০০০ বই মন্তব্য করে। “প্রত্যেকে এমন কারও জন্য আকুল আকাঙ্ক্ষা করে, যার ওপর নির্ভর করতে পারবে,” সংবাদপত্র নয়ি জুরখের জাইটুং রিপোর্ট করে। “নির্ভরতা জীবনের গুণগতমানকে উন্নত করে,” এতখানি যে, “বেঁচে থাকার জন্য এটা অতীব গুরুত্বপূর্ণ।” বাস্তবিকই, সেই সংবাদপত্র আরও বলে, নির্ভর করা ছাড়া “একজন ব্যক্তি জীবনের সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারে না।”
যেহেতু কারও ওপর নির্ভর করার জন্য আমাদের এক মৌলিক চাহিদা রয়েছে, তা হলে নিরাশ হওয়ার কোনোরকম ঝুঁকি ছাড়া আমরা কার ওপর নির্ভর করতে পারি?
সমস্ত চিত্তে যিহোবাতে নির্ভর করুন
“সমস্ত চিত্তে সদাপ্রভুতে বিশ্বাস [“যিহোবাতে নির্ভর,” NW] কর,” বাইবেল আমাদের বলে। (হিতোপদেশ ৩:৫) বাস্তবিকই, ঈশ্বরের বাক্য আমাদেরকে বার বার আমাদের সৃষ্টিকর্তা যিহোবা ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করতে উৎসাহিত করে।
কেন ঈশ্বরের ওপর আমরা নির্ভর করতে পারি? প্রথমত, কারণ যিহোবা ঈশ্বর পবিত্র। ভাববাদী যিশাইয় লিখেছিলেন: “পবিত্র, পবিত্র, পবিত্র, . . . সদাপ্রভু।” (যিশাইয় ৬:৩) পবিত্রতার এই ধারণা কি আপনাকে আকৃষ্ট করে না? আসলে, এটা আপনাকে আকৃষ্ট করা উচিত কারণ যিহোবার পবিত্রতার মানে হল, তিনি বিশুদ্ধ, সমস্ত অন্যায় থেকে মুক্ত এবং নিশ্চিতভাবে আস্থাযোগ্য। তিনি কখনোই কলুষিত বা ক্ষতিকারক হতে পারেন না এবং আমাদের নির্ভরতা ভঙ্গ করা তাঁর পক্ষে অসম্ভব।
১ যোহন ৪:৮) ঈশ্বরের প্রেম তাঁর সমস্ত কাজে প্রভাব ফেলে। যিহোবার পবিত্রতা এবং তাঁর অন্যান্য অতুলনীয় গুণাবলি তাঁকে এমন এক আদর্শ পিতা করে তোলে, যাঁর ওপর আমরা নিশ্চিন্তে নির্ভর করতে পারি। অন্য কোনো কিছু বা কেউ যিহোবার চাইতে কখনও বেশি নির্ভরযোগ্য হতে পারে না।
এ ছাড়া, আমরা ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করতে পারি কারণ যারা তাঁর সেবা করে তাদের সমর্থন করার ব্যাপারে তাঁর ক্ষমতা ও ইচ্ছা রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে, তাঁর সর্বোচ্চ শক্তি তাঁকে কাজ করতে সমর্থ করে। তাঁর নিখুঁত ন্যায়বিচার এবং প্রজ্ঞা তিনি যেভাবে কাজ করেন, তাতে পরিচালনা দেয়। আর তাঁর অতুলনীয় প্রেম তাঁকে কাজ করতে প্রেরণা দেয়। “ঈশ্বর প্রেম,” প্রেরিত যোহন লিখেছিলেন। (যিহোবাতে নির্ভর করুন এবং সুখী হোন
যিহোবাতে নির্ভর করার আরেকটা যুক্তিসংগত কারণ হল, তিনি আমাদের অন্য যেকোনো ব্যক্তির চাইতে আরও ভালভাবে জানেন। তিনি জানেন যে, প্রত্যেক মানুষেরই সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে এক নিরাপদ, স্থায়ী এবং নির্ভরযোগ্য সম্পর্ক গড়ে তোলার মৌলিক চাহিদা রয়েছে। যাদের এই ধরনের এক সম্পর্ক রয়েছে তারা আরও বেশি নিরাপদ বোধ করে। “ধন্য [“সুখী,” NW] সেই জন, যে সদাপ্রভুকে আপন বিশ্বাসভূমি [“নির্ভরভূমি,” NW] করে,” রাজা দায়ূদ এই উপসংহার করেছিলেন। (গীতসংহিতা ৪০:৪) আজকে লক্ষ লক্ষ ব্যক্তি পূর্ণ হৃদয়ে দায়ূদের চিন্তার সঙ্গে একমত প্রকাশ করে।
কয়েকটা উদাহরণ বিবেচনা করুন। ডরিস নামে এক মহিলা ডমিনিক্যান রিপাবলিক, জার্মানি, গ্রিস এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেছেন। তিনি বলেন: “আমি যিহোবাতে নির্ভর করতে পেরে খুবই সুখী। তিনি জানেন কীভাবে আমাকে শারীরিক, আধ্যাত্মিক এবং আবেগগতভাবে যত্ন নিতে হয়। তিনি হচ্ছেন একজন ব্যক্তির সর্বোত্তম বন্ধু।” ভল্ফগ্যাং একজন আইন উপদেষ্টা, তিনি বলেন: “এমন কারও ওপর নির্ভর করতে পারা খুবই চমৎকার, যিনি আপনার মঙ্গলের প্রতি আগ্রহী, এমন একজন যিনি আপনার জন্য সর্বোত্তম বিষয়টা করতে পারেন এবং সত্যি সত্যি করবেন!” হ্যামের জন্ম এশিয়ায় তবে তিনি এখন ইউরোপে বাস করেন, তিনি মন্তব্য করেন: “আমার এই আস্থা রয়েছে যে, সমস্ত ব্যাপারই যিহোবার হাতে আর তিনি ভুল করেন না, তাই আমি তাঁর ওপর ভরসা করে সুখী।”
অবশ্য আমাদের প্রত্যেকের কেবলমাত্র আমাদের সৃষ্টিকর্তার ওপরই নয় কিন্তু লোকেদের ওপরও নির্ভর করা দরকার। তাই, একজন বিজ্ঞ ও অভিজ্ঞ বন্ধু হিসেবে যিহোবা আমাদের উপদেশ দেন যে, আমাদের কী ধরনের ব্যক্তিদের ওপর নির্ভর করা উচিত। মনোযোগপূর্বক বাইবেল পড়ে আমরা এই বিষয়ে তাঁর পরামর্শ লক্ষ করতে পারি।
যে-লোকেদের ওপর আমরা নির্ভর করতে পারি
গীতরচক লিখেছিলেন, “তোমরা নির্ভর করিও না রাজন্যগণে, বা মনুষ্য-সন্তানে, যাহার নিকটে ত্রাণ নাই।” (গীতসংহিতা ১৪৬:৩) এই অনুপ্রাণিত বিবৃতি আমাদের স্বীকার করতে সাহায্য করে যে, অনেক লোকই আমাদের আস্থা পাওয়ার যোগ্য নয়। এমনকি সেই ব্যক্তিরাও যাদেরকে এই জগতে ‘রাজন্যগণ’ হিসেবে উচ্চমূল্য দেওয়া হয়, যেমন কোনো বিশেষ জ্ঞান বা কাজের ক্ষেত্রে পারদর্শী ব্যক্তিরাও, এমনি এমনি আমাদের নির্ভরতা পাওয়ার যোগ্য নয়। তাদের পরিচালনা প্রায়ই ভ্রান্ত হয় আর তাই এই ধরনের “রাজন্যগণে” নির্ভর করা মুহূর্তের মধ্যে নিরাশায় পরিণত হতে পারে।
অবশ্য, এর জন্য আমাদের সকলের ওপর নির্ভরতা হারানো উচিত নয়। তবে, আমরা কাদের ওপর নির্ভর করব, তা নির্বাচন করার সময় স্পষ্টভাবে বাছাই করতে সমর্থ হতে হবে। এই ক্ষেত্রে কোন মানদণ্ড আমাদের ব্যবহার করা উচিত? প্রাচীন ইস্রায়েল জাতির কাছ থেকে একটা উদাহরণ হয়তো আমাদের সাহায্য যাত্রাপুস্তক ১৮:২১) এটা থেকে আমরা কী শিখতে পারি?
করতে পারে। যখন ভিন্ন ব্যক্তিদের ইস্রায়েলে গুরু দায়িত্ব পালন করার জন্য নিয়োগ করা জরুরি হয়ে পড়েছিল, তখন মোশিকে “লোকসমূহের মধ্য হইতে কার্য্যদক্ষ পুরুষদিগকে, ঈশ্বরভীত, সত্যবাদী [“নির্ভরযোগ্য,” NW] ও অন্যায়-লাভ-ঘৃণাকারী ব্যক্তিদিগকে মনোনীত” করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। (এই ব্যক্তিরা ছিল তারা, যারা নির্ভরযোগ্য পদে নিযুক্ত হওয়ার আগেই ঈশ্বরীয় গুণাবলি দেখিয়েছিল। তারা ইতিমধ্যেই প্রমাণ দিয়েছিল যে, তারা ঈশ্বরকে ভয় করে; সৃষ্টিকর্তার প্রতি তাদের এক গঠনমূলক শ্রদ্ধা ছিল এবং তাঁকে অসন্তুষ্ট করার ভয় ছিল। এটা সকলের কাছে স্পষ্ট ছিল যে, এই লোকেরা ঈশ্বরের মানগুলো সমর্থন করার জন্য তাদের সর্বোত্তম প্রচেষ্টা করেছিল। তারা অন্যায়-লাভকে ঘৃণা করেছিল, যা নির্দেশ করেছিল নৈতিক দৃঢ়তা, যা কিনা ক্ষমতার অপব্যবহার করা থেকে তাদের রক্ষা করবে। তারা তাদের ব্যক্তিগত সুবিধার্থে অথবা তাদের আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধবদের জন্য তাদের নির্ভরযোগ্যতাকে নষ্ট করবে না।
নির্ভর করার জন্য যাদের আমরা মনোনীত করি তাদের প্রতিও কি আজকে আমাদের একই মান ব্যবহার করা বিজ্ঞতার কাজ হবে না? আমরা কি সেই ব্যক্তিদের জানি, যাদের ব্যবহার দেখায় তারা ঈশ্বরকে ভয় করে? তারা কি আচরণ সম্বন্ধে তাঁর মানগুলো মেনে চলার বিষয়ে সংকল্পবদ্ধ? যে-বিষয়গুলো সঠিক নয়, সেগুলো থেকে বিরত থাকার জন্য তাদের কি নীতিনিষ্ঠা রয়েছে? কোনো একটা পরিস্থিতিকে স্বীয় স্বার্থে কাজে না লাগানোর বা নিজেদের ইচ্ছামতো কাজ না করার মতো সততা কি তাদের আছে? নিশ্চিতভাবেই যেসব পুরুষ ও মহিলা এই ধরনের গুণাবলি প্রকাশ করে, তারা আমাদের নির্ভরতা পাওয়ার যোগ্য।
মাঝেমধ্যে নিরাশ হলে হাল ছেড়ে দেবেন না
আমরা কাদের ওপর নির্ভর করতে পারি, তা নির্ণয় করতে আমাদের অবশ্যই ধৈর্য ধরতে হবে কারণ নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠতে কিছুটা সময় লাগে। কারও ওপর আমাদের নির্ভরতা ধীরে ধীরে, ধাপে ধাপে বাড়ানো বিজ্ঞতার কাজ হবে। কীভাবে? এই ক্ষেত্রে আমরা হয়তো কিছু সময় ধরে একজন ব্যক্তির আচরণ লক্ষ করতে পারি, তিনি কোনো একটা পরিস্থিতিতে কীভাবে কাজ করেন তা দেখতে পারি। এই ব্যক্তি কি ক্ষুদ্র বিষয়গুলোতে নির্ভরযোগ্য? উদাহরণ হিসেবে, তিনি কি তার ধার করা জিনিসগুলো প্রতিজ্ঞানুযায়ী ফেরত দেন এবং তিনি কি সাক্ষাৎগুলোর সময় নির্ধারণ করে তা রক্ষা করেন? যদি তা-ই হয়, তা হলে আমরা হয়তো মনে করতে পারি যে, আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে আমরা নিশ্চিন্তে তার ওপর নির্ভর করতে পারি। এটা এই নীতির সঙ্গে মিল রাখে: “যে ক্ষুদ্রতম বিষয়ে বিশ্বস্ত, সে প্রচুর বিষয়েরও বিশ্বস্ত।” (লূক ১৬:১০) বাছাই করতে সমর্থ হওয়া এবং ধৈর্য ধরা হয়তো আমাদের বড় ধরনের নিরাশা এড়াতে সাহায্য করতে পারে।
কিন্তু, যদি কেউ আমাদের এই ক্ষেত্রে নিরাশ করে, তা হলে কী? বাইবেলের ছাত্রছাত্রীরা সেই রাতের কথা মনে করবে, যে-রাতে যিশু খ্রিস্টকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, সেই সময়ে তিনি তাঁর প্রেরিতদের কারণে খুবই নিরাশ হয়েছিলেন। ঈষ্করিয়োতীয় যিহূদা তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল এবং অন্যেরা ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। এমনকি পিতর তিন বার যিশুকে অস্বীকার করেছিলেন। কিন্তু, যিশু উপলব্ধি করেছিলেন যে, কেবল যিহূদা স্বেচ্ছায় তা করেছিল। এই ধরনের এক কঠিন সময়ে নিরাশ হওয়া সত্ত্বেও, তা যিশুকে অল্প কয়েক সপ্তাহ পরে তাঁর বাকি ১১ জন প্রেরিতদের ওপর নির্ভর করা থেকে বিরত রাখেনি। (মথি ২৬:৪৫-৪৭, ৫৬, ৬৯-৭৫; ২৮:১৬-২০) একইভাবে, আমরা নির্ভর করি এমন কেউ যদি আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলে আমরা মনে করি, তা হলে আমাদের বিবেচনা করা উচিত যে, আমাদের কাছে মনে হওয়া বিশ্বাসঘাতকতার বিষয়টা আসলেই তার নির্ভরযোগ্যহীন মনোভাবের প্রমাণ কি না, অথবা সেটা ক্ষণিকের কোনো মাংসিক দুর্বলতা।
আমি কি নির্ভরযোগ্য?
কাদের ওপর নির্ভর করবেন, সেই বিষয়ে বাছাই করতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় একজনকে অবশ্যই সৎ হতে হবে এবং নিজেকে জিজ্ঞেস করতে হবে: ‘আমি কি নির্ভরযোগ্য? আমার নিজের এবং অন্যদের কাছ থেকে নির্ভরযোগ্যতার কোন যুক্তিসংগত মান আশা করা উচিত?’
এটা নিশ্চিত যে, একজন নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি সবসময়ই সত্য বলেন। (ইফিষীয় ৪:২৫) ব্যক্তিগত সুবিধা লাভ করার জন্য তিনি তার কথাগুলো তার শ্রোতাদের উপযোগী করে তুলে ধরেন না। আর তিনি যদি কোনো প্রতিশ্রুতি দেন, তা হলে একজন নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি তার কথা রাখার জন্য যথাসাধ্য করেন। (মথি ৫:৩৭) কেউ যদি তার ওপর আস্থা রেখে কিছু বলেন, তা হলে নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি তা গোপন রাখেন এবং অন্যের কাছে তা বলে বেড়ান না। একজন নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি তার বিবাহ সঙ্গীর প্রতি বিশ্বস্ত হন। তিনি অশ্লীল বিষয়গুলো দেখেন না, কামনাউদ্দীপক কল্পনায় মত্ত থাকেন না এবং কারও সঙ্গে প্রেমের ভান করেন না। (মথি ৫:২৭, ২৮) আমরা নির্ভর করতে পারি এমন যোগ্য ব্যক্তি তার নিজের এবং তার পরিবারের জন্য উপার্জন করতে কঠোর পরিশ্রম করেন এবং অন্যদের ক্ষতি করে সহজে অর্থ উপার্জনের সুযোগ খোঁজেন না। (১ তীমথিয় ৫:৮) এই ধরনের যুক্তিসংগত এবং শাস্ত্রসংগত মানগুলো মনে রাখা আমাদের সেই লোকদের শনাক্ত করতে সাহায্য করবে, যাদের ওপর আমরা নির্ভর করতে পারি। এ ছাড়া, আচরণ সম্বন্ধে একই মানগুলোর প্রতি লেগে থাকা আমাদের প্রত্যেককে অন্যদের কাছে নির্ভরযোগ্য হতে সাহায্য করবে।
এমন এক জগতে বাস করা কতই না আনন্দদায়ক হবে, যেখানে সমস্ত লোক নির্ভরযোগ্য হবে এবং যেখানে নির্ভরতা ভঙ্গের কারণে নিরাশাগুলো অতীতের বিষয় হবে! এটা কি কেবলই এক স্বপ্ন? যারা বাইবেলের প্রতিজ্ঞাগুলো গুরুত্বের সঙ্গে নেয় তাদের কাছে নয়, কারণ ঈশ্বরের বাক্য এক অপূর্ব ‘নূতন পৃথিবী’ আসার বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করে, যেখানে কোনো প্রতারণা, মিথ্যা এবং শোষণ থাকবে না আর দুঃখ, অসুস্থতা ও এমনকি মৃত্যু থেকেও মুক্ত থাকবে! (২ পিতর ৩:১৩; গীতসংহিতা ৩৭:১১, ২৯; প্রকাশিত বাক্য ২১:৩-৫) এই প্রত্যাশা সম্বন্ধে আরও অধিক জানতে পারা কি মূল্যবান প্রমাণিত হবে না? যিহোবার সাক্ষিরা আপনাকে এই বিষয়ে এবং অন্যান্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আরও তথ্য জানাতে পেরে আনন্দিত হবে।
[৪ পৃষ্ঠার চিত্র]
নির্ভর করতে না পারা আমাদের সুখ হরণ করে
[৫ পৃষ্ঠার চিত্র]
যিহোবা আমাদের সবচেয়ে বেশি নির্ভরতা পাওয়ার যোগ্য
[৭ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]
আমাদের সকলের এমন সম্পর্ক দরকার, যেটার ভিত্তি হল পারস্পরিক নির্ভরতা