সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আপনি কি এক পরমদেশ পৃথিবীর বিষয়ে বিশ্বাস করতে পারেন?

আপনি কি এক পরমদেশ পৃথিবীর বিষয়ে বিশ্বাস করতে পারেন?

আপনি কি এক পরমদেশ পৃথিবীর বিষয়ে বিশ্বাস করতে পারেন?

 খুব অল্প লোকেই বিশ্বাস করে যে, পৃথিবী একসময় পরমদেশ হবে। অনেকে মনে করে যে, একসময় এটার আর কোনো অস্তিত্বই থাকবে না। ব্রায়েন লি মলিনোর পবিত্র পৃথিবী (ইংরেজি) বই অনুসারে, কোটি কোটি বছর আগে ‘এক মহাজাগতিক রশ্মির বিস্ফোরণের’ ফলে এই পৃথিবী অস্তিত্বে এসেছিল। আর স্বয়ং মানুষ যদি এই পৃথিবীকে ধ্বংস না করে, তা হলে অনেকে বিশ্বাস করে যে, এই পৃথিবী এবং পুরো নিখিলবিশ্ব হয়তো শেষ পর্যন্ত “পুনরায় অগ্নিগোলক হয়ে ধ্বংস হয়ে যাবে।”

সপ্তদশ শতাব্দীর ইংরেজ কবি জন মিল্টনের এই ধরনের হতাশাপূর্ণ চিন্তাভাবনা ছিল না। প্যারাডাইস লস্ট নামে তার মহাকাব্যে তিনি লিখেছিলেন যে, মানব পরিবারের জন্য পৃথিবী এক পরমদেশ গৃহ হবে, এই উদ্দেশ্যেই ঈশ্বর এটা সৃষ্টি করেছিলেন। সেই আদি পরমদেশ হারিয়ে গেছে। কিন্তু, মিল্টন বিশ্বাস করতেন যে, এটা পুনর্স্থাপিত হবে—ত্রাণকর্তা হিসেবে যিশু খ্রিস্ট একদিন “তাঁর বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের পুরস্কৃত করবেন এবং তাদের পরমসুখ দেবেন . . . স্বর্গে অথবা পৃথিবীতে।” মিল্টন আস্থার সঙ্গে ঘোষণা করেছিলেন: “এরপর পুরো পৃথিবী পরমদেশ হবে।”

পরমদেশ—স্বর্গে অথবা পৃথিবীতে?

অনেক ধর্মপ্রাণ লোক মিল্টনের এই দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে একমত যে, পৃথিবীতে যেসব আতঙ্কজনক ঘটনা এবং কষ্ট তারা সহ্য করেছে সেগুলোর জন্য তারা অবশেষে কিছু পুরস্কার লাভ করবে। কিন্তু কোথায় তারা এই পুরস্কার উপভোগ করবে? এটা কি “স্বর্গে অথবা পৃথিবীতে” হবে? কিছু লোকের কাছে এই ছবিতে পৃথিবীকে কল্পনা করা অসম্ভব। তারা বলে যে, লোকেরা এই পৃথিবী ত্যাগ করে স্বর্গের এক আত্মিক স্থানে বসবাস করার পরই একমাত্র “পরমসুখ” উপভোগ করবে।

স্বর্গ—এক ইতিহাস (ইংরেজি) বইয়ে লেখিকা সি. মেকডানেল এবং লেখক বি. ল্যাং বলে যে, দ্বিতীয় শতাব্দীর ধর্মতত্ত্ববিদ আইরিনিয়েস বিশ্বাস করতেন যে, এক পুনর্স্থাপিত পরমদেশে জীবন “সুদূর কোনো স্বর্গীয় রাজ্যে নয় বরং পৃথিবীতে হবে।” সেই বই অনুসারে, জন ক্যালভিন এবং মার্টিন লুথারের মতো ধর্মীয় নেতারা যদিও স্বর্গে যাওয়ার প্রত্যাশা রেখেছিল কিন্তু তারাও বিশ্বাস করেছিল যে, “ঈশ্বর পৃথিবীকে আবার নতুন করবেন।” অন্য ধর্মের লোকেরা একই বিশ্বাস পোষণ করে থাকে। মেকডানেল এবং ল্যাং এও বলে যে, কিছু যিহুদি লোক বিশ্বাস করে, ঈশ্বরের নিরূপিত সময়ে মানুষের সমস্ত কষ্ট “শেষ হয়ে যাবে এবং পৃথিবীতে এক সন্তোষজনক জীবনযাপন করা যাবে।” প্রাচীন পারসিকদের বিশ্বাস অনুসারে, “পৃথিবীর আদি অবস্থা পুনর্স্থাপিত হবে এবং লোকেরা আরেকবার শান্তিতে বসবাস করবে,” দি এনসাইক্লোপিডিয়া অফ মিডিল ইস্টার্ন মাইথোলজি অ্যান্ড রিলিজিয়ান বলে।

এক পরমদেশ পৃথিবীর প্রত্যাশার কী হয়েছে? পৃথিবীতে আমাদের অস্তিত্বের মানে কি শুধু এক ক্ষণস্থায়ী সময় পর্যন্ত থাকা? প্রথম শতাব্দীর যিহুদি দার্শনিক ফাইলো যেমন মনে করতেন, এটা কি এক আত্মিক অবস্থানে যাত্রার কেবল “এক সংক্ষিপ্ত, প্রায় দুর্দশাপূর্ণ অভিজ্ঞতা”? অথবা ঈশ্বরের কি অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল, যখন তিনি পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন এবং এর মধ্যে এক পরমদেশতুল্য পরিস্থিতিতে মানুষকে রেখেছিলেন? মানবজাতি কি এই পৃথিবীতে প্রকৃত আধ্যাত্মিক পরিপূর্ণতা এবং পরমসুখ খুঁজে পেতে পারে? এই বিষয়ে বাইবেল কী বলে তা পরীক্ষা করে দেখুন না কেন? আপনি হয়তো এই উপসংহারেই আসবেন যেমন লক্ষ লক্ষ ব্যক্তি ইতিমধ্যেই এসেছে যে, এক পুনর্স্থাপিত পার্থিব পরমদেশের প্রত্যাশা আসলেই যুক্তিযুক্ত।

[৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

কবি জন মিল্টন বিশ্বাস করতেন যে, পরমদেশ পুনরায় ফিরে পাওয়া যাবে

[২ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

প্রচ্ছদ: পৃথিবী: U.S. Fish & Wildlife Service, Washington, D.C./NASA

[৩ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

পৃথিবী: U.S. Fish & Wildlife Service, Washington, D.C./NASA; জন মিল্টন: Leslie’s