সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

যেকারণে তারা গির্জায় যায়

যেকারণে তারা গির্জায় যায়

যেকারণে তারা গির্জায় যায়

 “দক্ষিণ কোরিয়ায় এখন আমেরিকার চেয়েও প্রায় চারগুণ প্রেসবিটেরিয়ান সদস্য রয়েছে।” নিউজউইক পত্রিকার এই বিবৃতি হয়তো অনেক পাঠককে অবাক করেছে কারণ বেশির ভাগ লোক কোরিয়াকে কনফুশিয়ান বা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী দেশ বলে মনে করে। আজকে, সেখানে একজন পর্যটক অনেক “খ্রিস্টীয়” গির্জা খুঁজে পাবেন, যেগুলো লাল নিয়নবাতির ক্রুশ সজ্জিত বলে সহজেই শনাক্ত করা যায়। রবিবারগুলোতে প্রায়ই দেখা যায় লোকেরা দুই বা তিন জন করে দল বেঁধে বাইবেল হাতে নিয়ে গির্জায় যাচ্ছে। ১৯৯৮ সালের এক সমীক্ষা অনুযায়ী, কোরিয়ার শতকরা প্রায় ৩০ ভাগ লোক হয় ক্যাথলিক নতুবা প্রটেস্টান্ট গির্জায় যায়, যে-সংখ্যা নিজেদের বৌদ্ধ বলে দাবি করে এমন লোকেদের চেয়ে বেশি।

বর্তমানে কোনো জায়গায় এতটা উচ্চহারে লোকেরা নিয়মিতভাবে গির্জায় যাচ্ছে, তা দেখতে পাওয়া অস্বাভাবিক। তবুও এটা কেবল কোরিয়াতেই নয় কিন্তু এশিয়ার অন্যান্য দেশ সহ আফ্রিকা এবং ল্যাটিন আমেরিকাতেও ঘটছে। পৃথিবীতে যখন ধর্মের প্রতি অনীহা ও উদাসীনতা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে, তখন কেন এত এত লোক এখনও ঈশ্বরে বিশ্বাস করে? কেন তারা গির্জায় যায়?

একটা জনমত সমীক্ষা প্রকাশ করেছিল যে, কোরিয়াতে গির্জায় যায় এমন লোকেদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি মনের শান্তি খুঁজছে; এক তৃতীয়াংশ মৃত্যুর পর অনন্তজীবনের আশা করে; প্রতি ১০ জনের মধ্যে ১ জন স্বাস্থ্য, সম্পদ এবং সাফল্যের অন্বেষণ করে।

চিনে অনেক লোক আধ্যাত্মিক শূন্যতাকে পূরণ করার জন্য কিছু পাওয়ার আশায় গির্জাগুলোতে ভিড় করে, যেকারণে সাম্যবাদী ভাবাদর্শের স্থলে ধীরে ধীরে পুঁজিবাদী ভাবাদর্শ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতি বছর চিনে লক্ষ লক্ষ বাইবেল ছাপানো ও বন্টন করা হয় এবং লোকেরা মাও সেতুংয়ের ছোট্ট লাল বইটিকে যেভাবে পড়ে, এটিও তেমনভাবেই পড়ে বলে মনে হয়।

ব্রাজিলে কিছু ক্যাথলিক, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা ভবিষ্যতে সুখ আসার প্রতিজ্ঞার বিষয়ে সন্তুষ্ট নয়—তারা এখনই এর পূর্ণতা চায়। নিউজ ম্যাগাজিন টুডু বলে: “৭০ এর দশকে যদি লিবারেশন থিওলজি লোকেদের হৃদয় ও মনকে প্রেরণা দিয়ে থাকে, তা হলে আজকে তাদের প্রেরণা দেয় সমৃদ্ধির থিওলজি।” ব্রিটেনে একটা সমীক্ষায় গির্জাগামী লোকেদের গির্জা সম্বন্ধে তাদের একটা পছন্দের বিষয়ে উল্লেখ করতে বলা হয়েছিল। সদস্যপদই স্বাভাবিকভাবে প্রথমে এসেছিল।

এই সমস্তকিছু দেখায় যে, যদিও অনেক সংখ্যক লোক এখনও ঈশ্বরে বিশ্বাস করে কিন্তু অধিকাংশ লোকই ভবিষ্যতের চেয়ে বা এমনকি স্বয়ং ঈশ্বরের চেয়ে এখন তারা কী পেতে পারে, সেটা নিয়ে বেশি চিন্তিত। ঈশ্বরে বিশ্বাস করার জন্য সঠিক কারণটা কী হতে পারে বলে আপনি মনে করেন? এই বিষয়ে বাইবেল কী বলে? পরের প্রবন্ধে আপনি এর উত্তর পাবেন।