সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

কার প্রতিজ্ঞাগুলোর ওপর আপনি নির্ভর করতে পারেন?

কার প্রতিজ্ঞাগুলোর ওপর আপনি নির্ভর করতে পারেন?

কার প্রতিজ্ঞাগুলোর ওপর আপনি নির্ভর করতে পারেন?

 “তিনি ছিলেন প্রবল পরাক্রমশালী অথচ তাঁর প্রতিশ্রুতির কোন দাম ছিল না।”—উইলিয়াম শেকসপিয়ার কর্তৃক রাজা অষ্টম হেনরি (ইংরেজি)।

শেকসপিয়ার যে-পরাক্রমশালী প্রতিশ্রুতি বা প্রতিজ্ঞাগুলোর উল্লেখ করেছিলেন, সেগুলো ছিল ইংরেজ কার্ডিনাল থমাস উলসির, যিনি ষোড়শ শতাব্দীতে ইংল্যান্ডে মহা রাজনৈতিক শক্তি প্রয়োগ করেছিলেন। কেউ কেউ বলবে যে, শেকসপিয়ারের বর্ণনাটি আজকে তারা যে-প্রতিজ্ঞাগুলোর বিষয়ে শুনে থাকে সেগুলোর অধিকাংশর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। বার বার, লোকদের কাছে অনেক প্রতিজ্ঞা করা হয় কিন্তু সেগুলোর অধিকাংশই বাস্তবায়িত হয় না। তাই, এটা বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, কেন তারা যেকোনো প্রতিজ্ঞার বিষয়ে সন্দেহপ্রবণ হয়।

হতাশা পুরোপুরি ছেয়ে গেছে

উদাহরণস্বরূপ, ১৯৯০ এর দশকে বলকান অঞ্চলে শোচনীয় সংঘাতের সময়, রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ঘোষণা করেছিল যে, স্রিবরিনিটসার বসনিয়া শহর হবে “এক নিরাপদ এলাকা।” এটাকে আন্তর্জাতিক সংঘের দ্বারা এক নির্ভরযোগ্য নিশ্চয়তা বলে মনে হয়েছিল। স্রিবরিনিটসার হাজার হাজার মুসলমানও তা-ই মনে করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত, এক নিরাপদ আশ্রয়স্থলের প্রতিজ্ঞাটি একেবারেই অকার্যকর হয়েছিল। (গীতসংহিতা ১৪৬:৩) ১৯৯৫ সালের জুলাই মাসে, আক্রমণকারী বাহিনী বাষ্ট্রসংঘের বাহিনীকে সম্পূর্ণভাবে একপাশে সরিয়ে দেয় এবং শহরটি আক্রমণ করে। ৬,০০০রেরও বেশি মুসলমান অদৃশ্য হয়ে যায় আর অন্তত ১,২০০ বেসামরিক মুসলমানকে হত্যা করা হয়।

জীবনের প্রত্যেকটা দিক ভঙ্গ প্রতিজ্ঞাগুলোর দ্বারা পূর্ণ। লোকেরা “অগণিত মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনের” দ্বারা প্রতারিত বলে মনে করে, যেগুলো আজকে তাদের জর্জরিত করে। “হাজারো রাজনীতিবিদের ভঙ্গ প্রতিজ্ঞাগুলোর অভিযানের” দ্বারা তারা মোহমুক্ত হয়। (দ্যা নিউ এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা, খণ্ড ১৫, পৃষ্ঠা ৩৭) নির্ভরযোগ্য ধর্মীয় নেতারা যারা তাদের পালের যত্ন নেওয়ার বিষয়ে প্রতিজ্ঞা করে, তারা জঘন্যভাবে তাদের সঙ্গে অপব্যবহার করে। এমনকি এই ধরনের পেশার লোকেরা, যেমন শিক্ষা এবং চিকিৎসায় জড়িত—যা মূলত অন্যদের প্রতি সমবেদনা ও চিন্তার দ্বারা পরিচালিত হওয়ার কথা—তাদের মধ্যেও কেউ কেউ তাদের ওপর নির্ভরতাকে ভঙ্গ করেছে এবং যারা তাদের যত্নের অধীন তাদেরকে শোষণ অথবা এমনকি হত্যা করেছে। তাই এতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই যে, বাইবেল আমাদের সকল কথায় বিশ্বাস না করার সম্বন্ধে সাবধান করে।—হিতোপদেশ ১৪:১৫.

যে-প্রতিজ্ঞাগুলো পূর্ণ হয়

অবশ্য, অনেক লোকই তাদের কথা রাখে, কখনও কখনও এমনকি চরম মূল্য দিয়েও। (গীতসংহিতা ১৫:৪) তাদের কথা হল তাদের নিশ্চয়তা আর তারা সেটা পূর্ণ করে। অন্যেরা ভাল উদ্দেশ্য নিয়ে করা তাদের প্রতিজ্ঞাগুলোকে আন্তরিকভাবে পূর্ণ করতে চায়। তারা যা প্রতিজ্ঞা করেছে সেটাকে পূর্ণ করতে তারা প্রস্তুত ও ইচ্ছুক কিন্তু তারা পূর্ণভাবে তা করতে অসমর্থ। বিভিন্ন পরিস্থিতি হয়তো সবচেয়ে মহত্তর পরিকল্পনাগুলোকেও ব্যর্থ করতে পারে।—উপদেশক ৯:১১.

কারণ যাইহোক না কেন, বাস্তব বিষয় হল যে, অনেক লোকই যেকারোর প্রতিজ্ঞাগুলোতেই বিশ্বাস রাখাকে খুব কঠিন বলে মনে করে। তাই প্রশ্ন ওঠে: এমন কোনো প্রতিজ্ঞা কি আছে, যেটার ওপর আমরা নির্ভর করতে পারি? হ্যাঁ, আছে। ঈশ্বরের বাক্য বাইবেলে পাওয়া প্রতিজ্ঞাগুলোর ওপর আমরা নির্ভর করতে পারি। এই বিষয়ে পরের প্রবন্ধটি যা বলে, সেটা পরীক্ষা করে দেখুন না কেন? লক্ষ লক্ষ লোক ইতিমধ্যেই যেমন পৌঁছেছে তেমনি আপনি হয়তো এই উপসংহার পৌঁছাবেন যে, আমরা সত্যিই ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাগুলোর ওপর নির্ভর করতে পারি।

[৩ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

AP Photo/Amel Emric