এক দীর্ঘ ও সুখী জীবনের মূলমন্ত্র
এক দীর্ঘ ও সুখী জীবনের মূলমন্ত্র
কিছু লোক বলে যে, সবাই-ই বয়স্ক হতে চায় কিন্তু কেউই বৃদ্ধ হতে চায় না। অনেক লোক, যাদের অবসরগ্রহণের বয়স এগিয়ে আসছে, তারা বেশি সময় অথচ অল্প দায়িত্ব পাবে বলে সানন্দে প্রতীক্ষা করে। কিন্তু, তারা লক্ষ্যহীন এবং অকেজো হয়ে পড়তে ভয় পায়। এ ছাড়া, তারা একা হয়ে যাওয়ার, অসুখী হওয়ার এবং স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ার ব্যাপারেও আশঙ্কা করে থাকে।
তা হলে, এক সুখী জীবনের রহস্য কী? ভাল বন্ধুবান্ধব ও এক প্রেমময় পরিবার যুবক-বৃদ্ধ সকলকে সুখী হতে সাহায্য করে। কিন্তু, অন্যেরা একজন বয়স্ক লোকের জীবনে যে-অবদান রাখে, সেটাই সব কিছু নয়। এর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল, একজন বয়স্ক ব্যক্তি অন্যদের জন্য কী করতে পারেন।
বয়স্ক দম্পতিদের ৪২৩ জনের ওপর করা দীর্ঘদিনের এক গবেষণা ইঙ্গিত করেছিল যে, “অন্য লোকেদের জীবনে অবদান রাখা আমাদের নিজেদের আয়ু বৃদ্ধি করতে সাহায্য করতে পারে।” স্টিফেনি ব্রাউন, যিনি সেই গবেষণা পরিচালনা করেছিলেন, তিনি ব্যাখ্যা করেন: “এই তথ্যগুলো ইঙ্গিত করে যে, অন্যের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার ফলে আমরা যা পাই, তা ততটা উপকারজনক নয়; বরং আমরা তাদের যা দিয়ে থাকি, সেটা উপকারজনক।” এই ধরনের দেওয়ার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে ঘরের কাজে, সন্তানদের যত্ন নিতে, টুকিটাকি কেনাকাটার জন্য বাইরে যেতে, গাড়ি করে পৌঁছে দিতে অন্যদের সাহায্য করা বা কথা বলতে চান এমন কারো কথা শুনে তাকে সাহায্য করা।
প্রায় ২,০০০ বছর আগে যিশু খ্রিস্ট বলেছিলেন: “গ্রহণ করা অপেক্ষা বরং দান করা ধন্য হইবার বিষয়” বা সুখী হওয়ার বিষয়। (প্রেরিত ২০:৩৫) এক দীর্ঘ ও সুখী জীবনের মূলমন্ত্র এক বিরাট অঙ্কের ব্যাংক আ্যকাউন্টে বা বার্ধক্যরোধের চিকিৎসা ও খাবারে নেই। বরং ক্রমাগত সক্রিয় থাকাতে এবং অন্যদের জীবনকে সমৃদ্ধ করার জন্য নিজের সময়, শক্তি ও বল বিলিয়ে দেওয়াতে রয়েছে।
কিন্তু, বার্ধক্য, অসুস্থতা ও মৃত্যু থেকে আমাদের রক্ষা করার জন্য কেবল এগুলোই যথেষ্ট নয়। একমাত্র ঈশ্বরের রাজ্যই এই সমস্তকিছুকে নির্মূল করবে। ঈশ্বরের রাজ্যে অসুস্থতা থাকবে না ও এমনকি “মৃত্যু আর হইবে না।” (প্রকাশিত বাক্য ২১:৩, ৪; যিশাইয় ৩৩:২৪) বাস্তবিকই, বাধ্য মানুষেরা এক পরমদেশ পৃথিবীতে চিরকাল সুখে বাস করবে। (লূক ২৩:৪৩) এক দীর্ঘ ও সুখী জীবনের বাইবেলভিত্তিক মূলমন্ত্র অন্যদের জানাতে পেরে যিহোবার সাক্ষিরা আনন্দিত।