সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আ্যনাব্যাপ্টিস্টরা কারা ছিল?

আ্যনাব্যাপ্টিস্টরা কারা ছিল?

আ্যনাব্যাপ্টিস্টরা কারা ছিল?

 জার্মানির ওয়েস্টফেলিয়ায় মুনস্টার শহরের কেন্দ্রস্থলে যারা প্রথমবারের মতো পরিদর্শন করতে আসে, তারা বেশির ভাগ সময়ই গির্জার দুর্গ থেকে ঝুলে থাকা তিনটে লোহার খাঁচা দেখে থমকে দাঁড়ায়। মাঝে অল্প কিছু সময় ছাড়া প্রায় ৫০০ বছর ধরে খাঁচাগুলো সেখানেই রয়েছে। এগুলোর ভিতরে আসলে তিন জন পুরুষের দেহ রাখা হয়েছিল, যাদেরকে প্রকাশ্যে অত্যাচার করা ও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। সেই লোকেরা ছিল আ্যনাব্যাপ্টিস্ট আর খাঁচাগুলো হল তাদের রাজ্যের স্মৃতিচিহ্ন।

আ্যনাব্যাপ্টিস্টরা কারা ছিল? এই আন্দোলন কীভাবে শুরু হয়েছিল? এদের মৌলিক শিক্ষাগুলো কী ছিল? কেন সেই পুরুষদের হত্যা করা হয়েছিল? আর একটা রাজ্যের সঙ্গে সেই তিনটে খাঁচার কী সম্পর্ক রয়েছে?

গির্জার সংস্কার—কিন্তু কীভাবে?

পনেরো শতকের শেষের দিকে এবং ষোল শতকের প্রথমদিকে রোমান ক্যাথলিক গির্জা এবং পাদরিদের প্রতি সমালোচনা বেড়ে গিয়েছিল। গির্জার সর্বত্র দুর্নীতি ও অনৈতিকতায় ছেয়ে গিয়েছিল; তাই, অনেকেই ব্যাপক পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছিল। ১৫১৭ সালে মার্টিন লুথার প্রকাশ্যে সংস্কারের দাবি জানিয়েছিলেন এবং অন্যেরাও সেই বিতর্কে যোগ দিয়েছিল আর এভাবে সঙ্গে সঙ্গে প্রটেস্টান্ট সংস্কারের সূত্রপাত হয়েছিল।

কিন্তু কী করা উচিত অথবা কতখানি পর্যন্ত পরিবর্তনগুলো করা উচিত, সেই বিষয়ে সংস্কারবাদীদের কোনো সংগতিপূর্ণ পরিকল্পনা ছিল না। অনেকেই উপাসনার বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে বাইবেলের কথা মেনে চলার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছিল। তবুও, সংস্কারবাদীরা এমনকি বাইবেলের শিক্ষাগুলোর বিষয়েও এক সাধারণ ব্যাখ্যার সঙ্গে একমত হতে পারেনি। কেউ কেউ মনে করেছিল যে, সংস্কারের অগ্রগতি খুবই ধীরে ধীরে হচ্ছিল। আর এই সংস্কারবাদীদের মধ্যে থেকেই আ্যনাব্যাপ্টিস্ট আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল।

“সত্যি বলতে কী, কেবলমাত্র একটা ব্যাপ্টিস্ট আন্দোলন ছিল না; বরং বেশ কয়েকটা ছিল,” হান্স ইয়ুরগেন গুর্টস তার ডি টয়িফি জেশিখটি উন্ট ডয়িটাং বইয়ে লেখেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ১৫২১ সালে জুইকাও ভাববাদী হিসেবে পরিচিত চার জন ব্যক্তি উইটেনবার্গে আ্যনাবাপ্টিস্ট আন্দোলনের শিক্ষাগুলো প্রচারের মাধ্যমে জোরালো প্রভাব ফেলেছিল। আর ১৫২৫ সালে সুইজারল্যান্ডের জুরিখে আ্যনাব্যাপ্টিস্টদের আলাদা একটা দল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ ছাড়া, আ্যনাব্যাপ্টিস্ট সম্প্রদায়গুলো মোরেভিয়া—এখন চেক প্রজাতন্ত্র—এবং নেদারল্যান্ডস্‌-এ চালু হয়েছিল।

বাপ্তিস্ম—শিশুদের জন্য অথবা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য?

আ্যনাব্যাপ্টিস্ট সম্প্রদায়গুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছোট ছিল আর সাধারণত এর সদস্যরা শান্তিপূর্ণ আচরণ করত। এর অনুগামী ব্যক্তিরা তাদের বিশ্বাসগুলোর ব্যাপারে কোনো গোপনীয়তা রাখত না; বস্তুতপক্ষে তারা অন্যদের কাছে প্রচার করত। আ্যনাব্যাপ্টিস্টদের বিশ্বাসের মৌলিক মতবাদগুলো ১৫২৭ সালে শ্লিটহিম ধর্মীয় ঘোষণাপত্রে বর্ণনা করা হয়েছিল। অন্যান্য বিষয়গুলোর মধ্যে কয়েকটা হল, তারা অস্ত্র বহন করা প্রত্যাখ্যান করত, জগৎ থেকে আলাদা থাকত এবং সম্প্রদায় থেকে অন্যায়কারীদের বহিষ্কার করত। কিন্তু যে-বৈশিষ্ট্যটা আ্যনাব্যাপ্টিস্টদের অন্য ধর্মগুলো থেকে স্পষ্টতই আলাদা করেছিল, সেটা ছিল এই বিষয়ে দৃঢ়প্রত্যয় যে, বাপ্তিস্ম প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ছিল, শিশুদের জন্য নয়। *

প্রাপ্তবয়স্কদের বাপ্তিস্ম কেবলমাত্র ধর্মীয় মতবাদের বিষয় ছিল না; এটা ক্ষমতার এক বিষয়ও ছিল। বাপ্তিস্মের জন্য যদি প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো—ফলে ব্যক্তিকে বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দিত—তা হলে, কেউ কেউ হয়তো শেষ পর্যন্ত বাপ্তিস্মই নিত না। আর যে-ব্যক্তিরা বাপ্তিস্ম নিত না, তারা এক অর্থে গির্জার নিয়ন্ত্রণের বাইরেই থাকত। অতএব, কিছু গির্জার জন্য প্রাপ্তবয়স্ক বাপ্তিস্ম বলতে ক্ষমতা হারানোকে বুঝিয়েছিল।

তাই, ক্যাথলিক এবং লুথারিয়ানরা প্রাপ্তবয়স্ক বাপ্তিস্মের বিষয়ে নিরুৎসাহিত করতে চেয়েছিল। ১৫২৯ সালের পর, অন্তত কিছু এলাকায় যারা প্রাপ্তবয়স্ক বাপ্তিস্ম দিয়েছিল বা যারা প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে বাপ্তিস্ম নিয়েছিল, তাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। সাংবাদিক টমাস সেইফার্ট ব্যাখ্যা করেন যে, আ্যনাব্যাপ্টিস্টরা “জার্মান জাতির পবিত্র রোমীয় সাম্রাজ্যের সর্বত্র প্রচণ্ডভাবে তাড়িত” হয়েছিল। মুনস্টারে সেই তাড়না চরমে পৌঁছেছিল।

মধ্যযুগের মুনস্টার পরিবর্তনের চেষ্টা করে

মধ্যযুগের মুনস্টারে প্রায় ১০,০০০ অধিবাসী বসবাস করত আর এর চারিদিকে বলতে গেলে প্রায় দুর্ভেদ্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল, যা প্রায় ৯০ মিটার প্রশস্ত ছিল এবং পরিধি ছিল প্রায় ৫ কিলোমিটার। কিন্তু, শহরের ভিতরের পরিস্থিতি এর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মতো এতটা স্থিতিশীল ছিল না। সিটি মিউজিয়াম অফ মুনস্টার দ্বারা প্রকাশিত দ্যা কিংডম অব দি আ্যনাব্যাপ্টিস্টস্‌ “শহরের আইন পরিষদ এবং সমবায় সমিতিগুলোর মধ্যে অন্তর্বর্তী রাজনৈতিক বাদানুবাদের বিষয়” উল্লেখ করে। এ ছাড়া, অধিবাসীরা পাদরিদের আচরণে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ ছিল। সংস্কারসাধনকে মুনস্টার মেনে নিয়েছিল এবং ১৫৩৩ সালে এটা ক্যাথলিক শহর থেকে পরিবর্তিত হয়ে লুথারিয়ান শহরে পরিণত হয়েছিল।

মুনস্টারে একজন অন্যতম সংস্কারবাদী প্রচারক ছিলেন বের্নহার্ট রটমান, যিনি একজন অপরিণামদর্শী ব্যক্তি ছিলেন। গ্রন্থকার ফ্রিডরিখ উনিংগার ব্যাখ্যা করেন যে, রটমানের “দৃষ্টিভঙ্গিগুলো স্পষ্টত আ্যনাব্যাপ্টিস্টদের মতো হয়ে উঠেছিল; তিনি এবং অন্য সহকর্মীরা শিশু বাপ্তিস্মকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।” যদিও কিছু লোকের কাছে তার সংস্কারমূলক চিন্তাভাবনা খুবই চরম ছিল, তারপরও তিনি মুনস্টারে যথেষ্ট সাড়া পেয়েছিলেন। “যেসব লোক পুরনো নিয়মকানুন পছন্দ করত, তারা শহর ছেড়ে চলে গিয়েছিল, অস্বস্তিবোধ করেছিল এবং অমঙ্গলের আশঙ্কা করেছিল। আ্যনাব্যাপ্টিস্টরা তাদের ধারণাগুলো বাস্তবায়িত হবে, এই আশায় চারিদিক থেকে দলে দলে মুনস্টারে জড়ো হয়েছিল।” মুনস্টারে আ্যনাব্যাপ্টিস্টদের এই একস্থানে জড়ো হওয়া এক ভয়ঙ্কর ঘটনার দিকে চালিত করেছিল।

নতুন যিরূশালেম অবরুদ্ধ

মুনস্টারের দুজন ডাচ অভিবাসীর—হার্লেম থেকে আসা রুটি প্রস্তুতকারী ইয়ান মাটিস এবং লেইডেনের জন নামে পরিচিত ইয়ান বুকেলসন—সেখানকার উন্নয়নে এক চূড়ান্ত ভূমিকা পালন করার কথা ছিল। মাটিস নিজেকে একজন ভাববাদী হিসেবে দাবি করেছিলেন এবং ১৫৩৪ সালের এপ্রিল মাসকে খ্রিস্টের দ্বিতীয় আগমনের সময় হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। সেই শহরকে বাইবেলে উল্লেখিত নতুন যিরূশালেম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল আর সমস্ত চিন্তা জুড়ে ছিল, জগতের শেষ। রটমান সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, সমস্ত সম্পত্তি সকলেরই অধিকারভুক্ত হওয়া উচিত। প্রাপ্তবয়স্ক অধিবাসীদের একটা সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল: হয় বাপ্তাইজিত হওয়া নতুবা শহর ত্যাগ করা। বহু লোক বাপ্তাইজিত হয়, যাদের মধ্যে সেই লোকেরাও ছিল যারা কেবলমাত্র নিজেদের বাড়িঘর ও বিষয়সম্পত্তি ছেড়ে না যাওয়ার জন্য বাপ্তিস্ম নিয়েছিল।

অন্য সম্প্রদায়ের লোকেরা বিস্ময়ে হতবুদ্ধি হয়ে মুনস্টারকে প্রথম সেই শহর হয়ে উঠতে দেখেছিল, যেখানে আ্যনাব্যাপ্টিস্টরা সবচেয়ে বলবান ধর্মীয় ও রাজনৈতিক শক্তি ছিল। ডি টয়িফি সু মুনস্টার বই অনুসারে, এই অবস্থা “মুনস্টারকে পুরো জার্মান জাতির পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের শত্রুতায় পরিণত করে।” একজন স্থানীয় বিশিষ্ট কর্মকর্তা, প্রধান-বিশপ কাউন্ট ফ্রান্টস্‌ ফন ভালডেক, মুনস্টার আক্রমণ করার জন্য এক সৈন্যবাহিনীকে একত্র করেছিলেন। সেই সৈন্যবাহিনী লুথারিয়ান ও ক্যাথলিক উভয় সদস্য দ্বারা গঠিত হয়েছিল। এই দুই ধর্ম, যারা সেই সময় পর্যন্ত সংস্কারের বিপক্ষে ছিল আর শীঘ্রই ত্রিশ বছর দীর্ঘ যুদ্ধে অংশ নেবে, তারা আ্যনাব্যাপ্টিস্টদের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যোগ দিয়েছিল।

আ্যনাব্যাপ্টিস্ট রাজ্যের ধ্বংসসাধন

যারা শহরের প্রাচীরের মধ্যে সুরক্ষিত ছিল তাদের ওপর আক্রমণরত সৈন্যবাহিনীর শক্তি কোনো প্রভাব ফেলেনি। ১৫৩৪ সালের এপ্রিল মাসে যখন খ্রিস্টের দ্বিতীয় আগমন হবে বলে অনুমান করা হয়েছিল, তখন মাটিস সাদা ঘোড়ায় চড়ে শহর থেকে বের হয়েছিলেন এবং ঐশিক সুরক্ষার প্রত্যাশা করছিলেন। মাটিসের সমর্থকদের আতঙ্কের বিষয়ে কল্পনা করুন, যখন তারা প্রাচীরের ওপর দিয়ে উঁকি দিয়েছিল এবং দেখেছিল আক্রমণকারী সেনারা মাটিসকে কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলেছে এবং তার মাথাটা একটা লাঠির ওপর তুলে ধরেছে।

লেইডেনের জন পরে মাটিসের উত্তরাধিকারী হয়েছিলেন এবং তাকে মুনস্টারে আ্যনাব্যাপ্টিস্টদের রাজা ইয়ান নাম দেওয়া হয়েছিল। সেই শহরে পুরুষদের চেয়ে মহিলাদের সংখ্যা বেশি ছিল বলে পুরুষদেরকে যতটা খুশি বিয়ে করতে উৎসাহিত করার দ্বারা তিনি শহরের নারী-পুরুষের সংখ্যায় ভারসাম্য আনতে চেষ্টা করেছিলেন। মুনস্টারে আ্যনাব্যাপ্টিস্ট রাজ্যে চরম মানের একটা দৃষ্টান্ত হল, পারদারিকতা ও ব্যভিচারের শাস্তি ছিল মৃত্যুদণ্ড অথচ সেখানে বহুগামিতাকে অনুমোদন এমনকি উৎসাহিত করা হতো। স্বয়ং রাজা ইয়ানেরই ১৬ জন স্ত্রী ছিল। তার স্ত্রীদের মধ্যে একজন আ্যলিজাবেট ভান্টসেরার যখন শহর ত্যাগ করার জন্য তার অনুমতি চেয়েছিলেন, তখন জনসাধারণ্যে তার শিরচ্ছেদ করা হয়েছিল।

সেই আক্রমণ ১৪ মাস স্থায়ী হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত ১৫৩৫ সালের জুন মাসে এটাকে পুরোপুরি দখল করা হয়েছিল। মুনস্টারকে এমনভাবে ধ্বংস করা হয়েছিল যেমনটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে পর্যন্ত এই শহর আর দেখেনি। রটমান পালিয়ে গিয়েছিলেন কিন্তু রাজা ইয়ান এবং অন্য দুজন প্রধান আ্যনাব্যাপ্টিস্টকে বন্দি ও অত্যাচার করা হয়েছিল এবং পরে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তাদের দেহগুলোই খাঁচায় রাখা হয়েছিল এবং সেন্ট ল্যামবার্ট গির্জার দুর্গের ওপর ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেটা “সমস্ত সম্ভাব্য উপদ্রবসৃষ্টিকারী ব্যক্তিদের প্রতি এক ভয়াবহ সতর্কবাণী হিসেবে কাজ করার জন্য” ছিল, সেইফার্ট বলেন। হ্যাঁ, রাজনীতিতে অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ ভয়াবহ পরিণতি নিয়ে এসেছিল।

অন্যান্য আ্যনাব্যাপ্টিস্ট সম্প্রদায়গুলোর কী হয়েছিল? সমগ্র ইউরোপ জুড়ে অনেক বছর তাড়না অব্যাহত ছিল। যদিও অল্প সংখ্যক আ্যনাব্যাপ্টিস্ট সদস্য যুদ্ধপ্রবণ ছিল কিন্তু অধিকাংশ আ্যনাব্যাপ্টিস্টরাই শান্তিবাদী নীতিগুলোকে মেনে চলেছিল। পরবর্তী সময়ে, প্রাক্তন যাজক মেনো সাইমনস্‌ আ্যনাব্যাপ্টিস্টদের নেতৃত্ব নিয়েছিলেন আর সেই দলটি ধীরে ধীরে মেনোনাইট অথবা অন্যান্য নামে পরিচিত হয়ে উঠেছিল।

তিনটে খাঁচা

আ্যনাব্যাপ্টিস্টরা মূলত ধর্মমনা লোক ছিল, যারা বাইবেলের নীতিগুলোকে মেলে চলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু মুনস্টারে আমুল সংস্কারের সমর্থকরা আ্যনাব্যাপ্টিস্টদের সেগুলো পরিত্যাগ করতে চালিত করেছিল এবং রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছিল। আর যখন তা ঘটে, তখন সেই আন্দোলন বিপ্লবাত্মক হয়ে উঠেছিল। এটা আ্যনাব্যাপ্টিস্ট আন্দোলন ও মধ্যযুগের মুনস্টার শহরকে ধ্বংস করে দেয়।

শহরের কেন্দ্রস্থলে পরিদর্শনকারীদের এখনও প্রায় ৫০০ বছর আগের সেই ভয়াবহ ঘটনাগুলোর বিষয় স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। কীভাবে? সেই তিনটে লোহার খাঁচার মাধ্যমে, যেগুলো গির্জার দুর্গ থেকে ঝুলে আছে।

[পাদটীকা]

^ এই প্রবন্ধ শিশু বাপ্তিস্মের পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো বিষয়ই আলোচনা করে না। এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য ১৯৮৬ সালের ১৫ই মার্চ প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) পত্রিকার “শিশুদের কি বাপ্তাইজিত হওয়া উচিত?” প্রবন্ধটি দেখুন।

[১৩ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

রাজা ইয়ানকে অত্যাচার করা হয়েছিল, মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল এবং সেন্ট ল্যামবার্ট গির্জার দুর্গের ওপর ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল