সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আজকে কারা ঈশ্বরকে গৌরব প্রদান করছে?

আজকে কারা ঈশ্বরকে গৌরব প্রদান করছে?

আজকে কারা ঈশ্বরকে গৌরব প্রদান করছে?

“হে আমাদের প্রভু [“যিহোবা,” NW] ও আমাদের ঈশ্বর, তুমিই প্রতাপ [“গৌরব,” NW] ও সমাদর ও পরাক্রম গ্রহণের যোগ্য।”প্রকাশিত বাক্য ৪:১১.

১, ২. (ক) কোন উদাহরণগুলো বায়োমিমেটিক্‌স নামের ক্ষেত্রটাকে তুলে ধরে? (খ) কোন প্রশ্ন উত্থাপিত হয় এবং এর উত্তর কী?

 উনিশশো চল্লিশ দশকের কোনো এক দিনে, সুইস ইঞ্জিনিয়ার জর্জ ডি মিস্ট্রাল তার কুকুরকে নিয়ে হাঁটতে বের হন। বাড়িতে ফিরে আসার পর, তিনি লক্ষ করেন যে তার কাপড় ও সেইসঙ্গে কুকুরের লোম চোরকাঁটায় ভরা। কৌতূহলী হয়ে তিনি অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে সেই চোরকাঁটাগুলো পরীক্ষা করেন এবং ক্ষুদ্রাকায় হুকগুলো দেখে খুবই অবাক হয়ে যান, যেগুলো ভাঁজ রয়েছে এমন যেকোনো জায়গায় লেগে আছে। অবশেষে, তিনি এর কৃত্রিম এক সমরূপ—ভেলক্রো—উদ্ভাবন করেন। ডি মিস্ট্রাল একাই কেবল প্রকৃতি থেকে নকল করেননি। যুক্তরাষ্ট্রের রাইট ভ্রাতৃদ্বয় বৃহৎ এক উড়ন্ত পাখি সম্বন্ধে পরীক্ষানিরীক্ষা করার পর উড়োজাহাজ বানিয়েছিল। ফরাসি ইঞ্জিনিয়ার আলেকসাঁদ্র-গুয়িস্তাভ্‌ ইফেল সেই মূলনীতিগুলো ব্যবহার করে প্যারিসে তার নাম বহনকারী একটা টাওয়ার তৈরি করেছিলেন, যেগুলো মানুষের ঊরু-অস্থিকে দেহের ভার বহনে সহায়তা করে।

এই উদাহরণগুলো সুন্দরভাবে বায়োমিমেটিক্‌স নামে বিজ্ঞানের একটা ক্ষেত্রকে তুলে ধরে, যা প্রকৃতি থেকে পাওয়া নকশাগুলোকে অনুকরণ করে। * কিন্তু, উপযুক্তভাবেই একটা প্রশ্ন উত্থাপিত হয়: উদ্ভাবকরা কতবার ক্ষুদ্রাকায় চোরকাঁটা, বৃহৎ পাখি, মানুষের ঊরু-অস্থি এবং অন্য সমস্ত সুদক্ষ মূল বিষয়গুলো, যেগুলোর ওপর ভিত্তি করে অনেক মনুষ্য উদ্ভাবিত বস্তু তৈরি করা হয়েছে, সেই সমস্তের নির্মাতাকে কৃতিত্ব দেয়? দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আজকের জগতে ঈশ্বরকে খুব কমই কৃতিত্ব বা গৌরব প্রদান করা হয়, যা তিনি পাওয়ার যোগ্য।

৩, ৪. “গৌরব” হিসেবে অনুবাদিত ইব্রীয় শব্দের অর্থ কী এবং যখন তা যিহোবার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়, তখন সেটির কী নির্দেশ করা উচিত?

কেউ কেউ হয়তো ভাবতে পারে, ‘ঈশ্বরকে গৌরব প্রদান করার দরকার কী? ঈশ্বর কি ইতিমধ্যেই গৌরবান্বিত নন?’ এটা সত্যি যে, যিহোবা হলেন নিখিলবিশ্বের সবচেয়ে গৌরবান্বিত ব্যক্তি কিন্তু তাই বলে তার মানে এই নয় যে, তিনি সকল মানুষের চোখেই গৌরবান্বিত। বাইবেলে “গৌরব” হিসেবে অনুবাদিত ইব্রীয় শব্দটির মধ্যে “গুরুত্ব” শব্দটির মূল ধারণা রয়েছে। এটা এমন যেকোনোকিছুকে নির্দেশ করে, যা একজন ব্যক্তিকে অন্যদের কাছে প্রভাবশালী অথবা গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে। যখন ঈশ্বরের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, তখন সেই বিষয়কে নির্দেশ করে, যা মানুষের কাছে ঈশ্বরকে প্রভাবশালী করে তোলে।

যে-বিষয়টা ঈশ্বরকে প্রভাবশালী করে তোলে, তা আজ খুব অল্প লোকই লক্ষ করে। (গীতসংহিতা ১০:৪; ১৪:১) বস্তুত, সমাজের সম্মানিত ব্যক্তিবিশেষরা, আদৌ ঈশ্বরকে বিশ্বাস করে থাকলেও, নিখিলবিশ্বের গৌরবান্বিত সৃষ্টিকর্তাকে অসম্মানের চোখে দেখার জন্য লোকেদের প্রভাবিত করেছে। কোন কোন উপায়ে তারা তা করেছে?

“তাহাদের উত্তর দিবার পথ নাই”

৫. কীভাবে অনেক বিজ্ঞানী সৃষ্টির বিস্ময়গুলো সম্বন্ধে অজুহাত দাঁড় করায়?

অনেক বিজ্ঞানী দাবি করে যে, ঈশ্বর বলে কেউ নেই। তা হলে মানুষসহ সৃষ্টির বিস্ময়গুলোকে তারা কীভাবে ব্যাখ্যা করে? এইরকম বিস্ময়গুলোকে তারা দৈবের ওপর ভিত্তি করা এক নৈর্ব্যক্তিক শক্তি বিবর্তনবাদের প্রতি আরোপ করে। উদাহরণস্বরূপ, বিবর্তনবাদী স্টিফেন জে গুল্ড লিখেছিলেন: “এক অদ্ভুত গোত্রের মাছের ডানায় এক অস্বাভাবিক দৈহিক গঠনতন্ত্র ছিল বলেই আমরা এখানে বাস করছি, যেগুলো স্থলের প্রাণীগুলোর পায়ে পরিণত হতে পারত . . . আমরা হয়তো ‘উচ্চতর’ উত্তর পাওয়ার জন্য আকুল আকাঙ্ক্ষী—কিন্তু কোনো অস্তিত্ব নেই।” একইভাবে, রিচার্ড লিকি ও রজার লুইন লিখেছিলেন: “সম্ভবত মানব প্রজাতিগুলো শুধুমাত্র এক বিকটাকার জীববিজ্ঞান সংক্রান্ত দুর্ঘটনা।” এমনকি কিছু বিজ্ঞানী যারা প্রকৃতির সৌন্দর্য ও গঠন দেখে প্রশংসা করে, তারাও ঈশ্বরকে কৃতিত্ব দিতে ব্যর্থ হয়।

৬. কী অনেককে সৃষ্টিকর্তা হিসেবে ঈশ্বর যে-কৃতিত্ব পাওয়ার যোগ্য, তা দেওয়া থেকে বিরত করে?

যখন উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিবিশেষরা দাবি করে যে বিবর্তনবাদ বাস্তব বিষয়, তখন তারা বোঝায় যে কেবল মূর্খ লোকেরা এটা বিশ্বাস করতে চায় না। এইরকম দাবির প্রতি অনেকে কেমন প্রতিক্রিয়া দেখায়? কয়েক বছর আগে, বিবর্তনবাদ সম্বন্ধে অত্যন্ত অভিজ্ঞ এক ব্যক্তি সেই মতবাদ গ্রহণকারী লোকেদের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন: “আমি আবিষ্কার করেছিলাম যে, বিবর্তনবাদে বিশ্বাসী বেশির ভাগ লোক এই জন্য বিশ্বাসী কারণ তাদেরকে বলা হয়েছিল যে, সমস্ত বুদ্ধিমান লোকেরা তা বিশ্বাস করে।” হ্যাঁ, যখন শিক্ষিত ব্যক্তিবিশেষরা তাদের নাস্তিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে, তখন অন্যেরা সৃষ্টিকর্তা হিসেবে ঈশ্বর যে-কৃতিত্ব পাওয়ার যোগ্য, তা দেওয়া থেকে বিরত থাকে।—হিতোপদেশ ১৪:১৫, ১৮.

৭. রোমীয় ১:২০ পদ অনুসারে, দৃশ্যত সৃষ্টির মাধ্যমে স্পষ্টভাবে কী দেখা যেতে পারে এবং কেন?

বিজ্ঞানীরা কি তাদের উপসংহারে এই জন্য পৌঁছেছে যে, প্রকৃত ঘটনা ও সাক্ষ্যপ্রমাণগুলো তা-ই প্রমাণ করে? কখনোই না! আমাদের চারপাশে একজন সৃষ্টিকর্তার অস্ত্বিতের প্রমাণ রয়েছে। তাঁর বিষয়ে প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “তাঁহার অদৃশ্য গুণ, অর্থাৎ তাঁহার অনন্ত পরাক্রম ও ঈশ্বরত্ব, জগতের [মানবজাতির] সৃষ্টিকাল অবধি তাঁহার বিবিধ কার্য্যে বোধগম্য হইয়া দৃষ্ট হইতেছে, এ জন্য তাহাদের [অবিশ্বাসীদের] উত্তর দিবার পথ নাই।” (রোমীয় ১:২০) তাঁর হস্তকৃত কাজের মধ্যে আমরা স্পষ্টভাবে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের প্রমাণ পাই। তাই পৌল বলছিলেন যে, মানবজাতির অস্তিত্বের শুরু থেকেই মানুষের পক্ষে দৃশ্যত সৃষ্টির মাধ্যমে ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রমাণ “বোধগম্য” করা সম্ভব হয়েছে। এই প্রমাণ কোথায়?

৮. (ক) কীভাবে আকাশমণ্ডল ঈশ্বরের শক্তি এবং প্রজ্ঞা সম্বন্ধে সাক্ষ্য দেয়? (খ) কোন ইঙ্গিত রয়েছে যে, নিখিলবিশ্বের একজন স্রষ্টা রয়েছে?

ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রমাণ আমরা তারাভরা আকাশের মধ্যে দেখতে পাই। “আকাশমণ্ডল ঈশ্বরের গৌরব বর্ণনা করে,”গীতসংহিতা ১৯:১ পদ বলে। “আকাশমণ্ডল”—সূর্য, চাঁদ এবংতারা—ঈশ্বরের শক্তি ও প্রজ্ঞা সম্বন্ধে সাক্ষ্য দেয়। অসংখ্য তারা আমাদের মধ্যে সশ্রদ্ধ ভয় জাগিয়ে তোলে। আর এই সমস্ত জ্যোতিষ্কমণ্ডলী মহাশূন্যের মধ্যে লক্ষ্যহীনভাবে নয়, বরং নির্ভুল ভৌত নিয়মগুলো অনুসারে চলাচল করে। * (যিশাইয় ৪০:২৬) এই ধরনের সুশৃঙ্খলা কি নৈর্ব্যক্তিক দৈবের ওপর আরোপ করা যুক্তিযুক্ত? লক্ষ করার মতো বিষয় হল, অনেক বিজ্ঞানী বলে যে নিখিলবিশ্ব হঠাৎ করে শুরু হয়েছিল। এর অনুমান সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে একজন অধ্যাপক লিখেছিলেন: “চিরকাল ধরে বিদ্যমান এক নিখিলবিশ্বের ধারণা একজন নাস্তিকবাদী অথবা অজ্ঞেয়বাদীর [দৃষ্টিতে] আরও বেশি গ্রহণযোগ্য। একইভাবে, নিখিলবিশ্বের শুরুই এমন একটা উৎস আছে বলে দাবি করে, যার কারণেই সমস্তকিছু অস্তিত্বে এসেছে বলে প্রতীয়মান হয়; কারণ পর্যাপ্ত কারণ ছাড়া কেই বা এইরকম এক ফলাফল কল্পনা করতে পারে?”

৯. প্রাণীজগতের সৃষ্টির মধ্যে কীভাবে যিহোবার প্রজ্ঞার প্রমাণ দেখা যায়?

এ ছাড়া, পৃথিবীর মধ্যেও আমরা ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রমাণ দেখতে পাই। গীতরচক বিস্ময়ে বলে উঠেছিলেন: “হে সদাপ্রভু, তোমার নির্ম্মিত বস্তু কেমন বহুবিধ! তুমি প্রজ্ঞা দ্বারা সে সমস্ত নির্ম্মাণ করিয়াছ; পৃথিবী তোমার সম্পত্তিতে পরিপূর্ণ।” (গীতসংহিতা ১০৪:২৪) প্রাণীজগৎসহ যিহোবার ‘সম্পত্তি’ তাঁর প্রজ্ঞার প্রমাণ দেয়। শুরুতেই যেমন আমরা দেখেছি যে, জীবিত বস্তুগুলোর গঠন এমনই যে বিজ্ঞানীরা প্রায়ই সেটাকে অনুকরণ করার চেষ্টা করে। আরও কয়েকটা উদাহরণ বিবেচনা করুন। গবেষকরা আরও মজবুত হেলমেট তৈরি করার লক্ষ্যে হরিণের শিং নিয়ে গবেষণা করছে; তারা শ্রবণযন্ত্রকে উন্নত করার উদ্দেশ্যে এমন এক প্রজাতির মাছিকে পরীক্ষা করছে, যেটার তীক্ষ্ণ শ্রবণশক্তি রয়েছে আর তারা রাডারের সাহায্যে নির্ণয় করা যায় না এমন উড়োজাহাজগুলোকে উন্নত করার অভিপ্রায় নিয়ে পেঁচার পাখার পালক পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখছে। কিন্তু, যত চেষ্টাই করুক না কেন, মানুষ আসলে প্রকৃতিতে পাওয়া নিখুঁত নকশার প্রতিরূপ করতে পারে না। বায়োমিমিক্রি—প্রকৃতির দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে উদ্ভাবন (ইংরেজি) বই বলে: “জীবিত বস্তুগুলো সেই সমস্তই করেছে, যা আমরা করতে চাই আর তা অশ্মীভূত জ্বালানীর অপচয় ও পৃথিবীকে দূষিত না করেই অথবা তাদের ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মুখে না ফেলেই।” আসলেই এটা হল এক প্রজ্ঞা!

১০. সর্বমহান নির্মাতার অস্তিত্ব সম্বন্ধে অস্বীকার করা কেন অযৌক্তিক? উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করুন।

১০ আপনি ওপরে আকাশের দিকে অথবা ঠিক এই পৃথিবীর সৃষ্টির দিকে চোখ বুলান না কেন, একজন সৃষ্টিকর্তার সাক্ষ্যপ্রমাণ অত্যন্ত স্পষ্ট। (যিরমিয় ১০:১২) আমাদের পূর্ণহৃদয়ে স্বর্গীয় প্রাণীদের সঙ্গে একমত হওয়া উচিত, যারা উচ্চরবে বলে: “হে আমাদের যিহোবা ও আমাদের ঈশ্বর, তুমিই গৌরব ও সমাদর ও পরাক্রম গ্রহণের যোগ্য; কেননা তুমিই সকলের সৃষ্টি করিয়াছ।” (প্রকাশিত বাক্য ৪:১১) কিন্তু, অনেক বিজ্ঞানী ‘তাহাদের হৃদয়ের চক্ষু’ দ্বারা প্রমাণ দেখতে ব্যর্থ হয়, যদিও তারা নিজের চোখে বিষয়গুলোর মধ্যে নকশাগুলো দেখে বিস্মিত হয়। (ইফিষীয় ১:১৮) এটাকে আমরা এভাবে তুলে ধরতে পারি: প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং নকশার প্রশংসা করা এবং এরপর মহান নির্মাতার অস্তিত্ব সম্বন্ধে অস্বীকার করা ঠিক ততটাই অযৌক্তিক যতটা এক অপূর্ব চিত্রকর্ম দেখে প্রশংসা করা এবং একইসঙ্গে চিত্রকরের অস্তিত্ব সম্বন্ধে অস্বীকার করা, যিনি এক শূন্য চিত্রপটকে শ্রেষ্ঠ শিল্পকর্মে রূপান্তরিত করেছেন। তাই, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, যারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে প্রত্যাখ্যান করে, তাদের সম্বন্ধে বলা হয়েছে যে তাদের “উত্তর দিবার পথ নাই”!

“অন্ধ পথদর্শক” অনেককে বিপথে চালিত করে

১১, ১২. অদৃষ্টবাদের মতবাদ কোন অনুমানের ওপর ভিত্তি করে এবং কী দেখায় যে, এই মতবাদ ঈশ্বরকে গৌরবান্বিত করে না?

১১ অনেক ধার্মিক ব্যক্তি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করে যে, তাদের উপাসনা পদ্ধতি ঈশ্বরকে গৌরব প্রদান করে। (রোমীয় ১০:২) কিন্তু, ধর্ম সামগ্রিকভাবে মানবসমাজের আরেকটা অংশ গঠন করেছে, যা আসলে কোটি কোটি লোককে ঈশ্বরকে গৌরব প্রদান করা থেকে বিরত করেছে। কীভাবে? আসুন আমরা দুটো উপায় সম্বন্ধে বিবেচনা করি।

১২ প্রথমত, ধর্মগুলো মিথ্যা শিক্ষাগুলোর মাধ্যমে ঈশ্বরের কাছ থেকে আসা গৌরবকে পৃথক করে। উদাহরণ হিসেবে অদৃষ্টবাদের শিক্ষার কথাই ধরুন। মতবাদটা এই অনুমানের ওপর ভিত্তি করে যে, যেহেতু ঈশ্বরের ভবিষ্যৎ জানার ক্ষমতা রয়েছে, তাই তিনি অবশ্যই সমস্তকিছুর পরিণতি সম্বন্ধে আগে থেকেই জানেন। এভাবে অদৃষ্টবাদ ইঙ্গিত দেয় যে, ঈশ্বর বহু আগেই প্রত্যেক ব্যক্তিবিশেষের ভবিষ্যৎ—ভাল অথবা মন্দ—নির্ধারণ করে রেখেছেন। এই ধারণা অনুসারে, আজকের জগতের সমস্ত দুঃখকষ্ট এবং দুষ্টতার জন্য ঈশ্বরের ওপর দোষ চাপানো যায়। এটা কখনোই ঈশ্বরকে গৌরবান্বিত করে না, যখন তাঁকে দোষ দেওয়া হয়, যে-দোষ আসলে তাঁর প্রধান শত্রু শয়তানের, যাকে বাইবেলে “জগতের অধিপতি” বলা হয়।—যোহন ১৪:৩০; ১ যোহন ৫:১৯.

১৩. কেন এটা চিন্তা করা বোকামি যে, ঈশ্বর ভবিষ্যতের বিষয়ে তাঁর জানার ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না? উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করুন।

১৩ অদৃষ্টবাদ হল এক অশাস্ত্রীয় শিক্ষা, যা ঈশ্বরকে অপবাদ দেয়। এটা তিনি যা করতে পারেন এবং তিনি আসলে যা করছেন, সেটার মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করে। বাইবেলে স্পষ্টভাবে বলা আছে যে, ঈশ্বর আগে থেকেই ঘটনাগুলো জানতে পারেন। (যিশাইয় ৪৬:৯, ১০) কিন্তু, এটা মনে করা অযৌক্তিক হবে যে, তিনি ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে জানার বিষয়ে তাঁর ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না অথবা সমস্ত পরিণতির জন্য তিনি দায়ী। উদাহরণস্বরূপ: ধরুন আপনার প্রচণ্ড শক্তি রয়েছে। তাই বলে কি আপনার সামনের সমস্ত ভারী জিনিসকে আপনি সরাতে চাইবেন? অবশ্যই না! একইভাবে, ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে জানার ক্ষমতা ঈশ্বরকে সমস্তকিছু আগে থেকেই জানতে অথবা নির্ধারণ করতে বাধ্য করে না। আগে থেকে জানার ক্ষমতা ব্যবহার করার ক্ষেত্রে তিনি বাছাই করেন। * স্পষ্টতই, অদৃষ্টবাদসহ মিথ্যা শিক্ষাগুলো ঈশ্বরকে গৌরবান্বিত করে না।

১৪. কোন উপায়ে সংগঠিত ধর্ম ঈশ্বরকে অসম্মান করেছে?

১৪ দ্বিতীয় যে-উপায়ে সংগঠিত ধর্ম ঈশ্বরের অসম্মান করে তা হল, এর সদস্যদের আচরণের মাধ্যমে। খ্রিস্টানদের কাছে আশা করা হয় যে তারা যিশুর শিক্ষাগুলো অনুসরণ করবে। অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে, যিশু তাঁর অনুসারীদের ‘পরস্পর প্রেম করিতে’ এবং ‘জগতের না’ হতে শিক্ষা দিয়েছিলেন। (যোহন ১৫:১২; ১৭:১৪-১৬) খ্রিস্টীয়জগতের পাদরিশ্রেণীর সদস্যের বিষয়ে কী বলা যায়? তারা কি আসলেই সেই শিক্ষাগুলো অনুসরণ করেছে?

১৫. (ক) জাতিগত যুদ্ধগুলোর বিষয়ে পাদরিশ্রেণীর নথি কী? (খ) লক্ষ লক্ষ লোকের ওপর পাদরিশ্রেণীর আচরণের কোন প্রভাব রয়েছে?

১৫ যুদ্ধের বিষয়ে পাদরিশ্রেণীর নথি বিবেচনা করুন। তারা জাতিগত অনেক যুদ্ধকে সমর্থন করেছে, সেগুলোকে প্রশ্রয় দিয়েছে, এমনকি তাতে নেতৃত্ব দিয়েছে। তারা সৈন্যদলগুলোকে আশীর্বাদ করেছে এবং হত্যা করাকে সমর্থন করেছে। আমরা জিজ্ঞেস না করে পারি না, ‘এই ধরনের পাদরিদের কি কখনও এইরকম মনে হয় না যে, অপর পক্ষের অন্যান্য পাদরিরাও একই বিষয় করছে?’ (“ঈশ্বর কাদের পক্ষে” বাক্সটা দেখুন।) পাদরিশ্রেণী ঈশ্বরকে গৌরবান্বিত করে না, যখন তারা দাবি করে যে রক্তাক্ত যুদ্ধগুলোতে ঈশ্বরের সমর্থন রয়েছে; অথবা তারা সেই সময়ও ঈশ্বরকে গৌরবান্বিত করে না, যখন তারা বাইবেলের মানগুলোকে সেকেলে বলে ঘোষণা করে এবং যেকোনো ধরনের যৌন অনৈতিকতাকে প্রশ্রয় দেয়। প্রকৃতপক্ষে তারা সেই ধর্মীয় নেতাদের বিষয়ে স্মরণ করিয়ে দেয়, যাদেরকে যিশু ‘অধর্ম্মচারী’ এবং “অন্ধ পথদর্শক” বলেছিলেন। (মথি ৭:১৫-২৩; ১৫:১৪) পাদরিশ্রেণীর আচরণ ঈশ্বরের প্রতি লক্ষ লক্ষ লোকের প্রেমকে শীতল করে দিয়েছে।—মথি ২৪:১২.

কারা প্রকৃতই ঈশ্বরকে গৌরব প্রদান করছে?

১৬. আজকে কারা প্রকৃতই ঈশ্বরকে গৌরব প্রদান করছে, এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য কেন আমাদের বাইবেলের ওপর নির্ভর করতে হবে?

১৬ সাধারণত জগতের বিখ্যাত এবং প্রভাবশালী লোকেরা যদি ঈশ্বরকে গৌরবান্বিত করতে ব্যর্থ হয়ে থাকে, তা হলে কারা প্রকৃতপক্ষে তা করছে? সেই প্রশ্নের উত্তরের জন্য আমাদের বাইবেলের ওপর নির্ভর করতে হবে। এটা যুক্তিযুক্ত যে, ঈশ্বরের বলার অধিকার আছে যে কীভাবে তাঁকে গৌরবান্বিত করা যায় এবং তিনি তাঁর বাক্য বাইবেলে সেই মানগুলো দিয়েছেন। (যিশাইয় ৪২:৮) আসুন আমরা ঈশ্বরকে গৌরবান্বিত করার তিনটে উপায় সম্বন্ধে বিবেচনা করি এবং প্রতিটা ক্ষেত্রে এই প্রশ্নটা নিয়ে চিন্তা করি যে, আজকে কারা প্রকৃতপক্ষে তা করছে।

১৭. কীভাবে যিহোবা নিজে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, তাঁর নাম গৌরবান্বিত করা তাঁর ইচ্ছার এক অপরিহার্য দিক এবং কারা আজকে সারা পৃথিবীতে ঈশ্বরের নামের প্রশংসা করছে?

১৭ প্রথমত, তাঁর নামের প্রশংসা করে আমরা ঈশ্বরকে গৌরবান্বিত করতে পারি। তা করা যে ঈশ্বরের ইচ্ছার এক অপরিহার্য দিক, তা যিশুকে যিহোবা যা বলেছিলেন, সেটার মধ্যে স্পষ্ট হয়। মারা যাওয়ার কয়েক দিন আগে যিশু প্রার্থনা করেছিলেন: “পিতঃ, তোমার নাম মহিমান্বিত কর।” এরপর একটি স্বর উত্তর দিয়েছিল: “আমি তাহা মহিমান্বিত করিয়াছি, আবার মহিমান্বিত করিব।” (যোহন ১২:২৮) নিঃসন্দেহে সেই বক্তা ছিলেন যিহোবা নিজে। তাঁর উত্তর থেকে এটা স্পষ্ট যে তাঁর নামকে মহিমান্বিত বা গৌরবান্বিত করা তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তা হলে, কারা আজকে সারা পৃথিবীতে তাঁর নামকে জানানোর এবং সেটির প্রশংসা করার মাধ্যমে যিহোবাকে গৌরবান্বিত করছে? তারা হল, যিহোবার সাক্ষিরা এবং তারা দ্বীপ ও দেশ মিলিয়ে ২৩৫টা জায়গায় তা করছে!—গীতসংহিতা ৮৬:১১, ১২.

১৮. কীভাবে আমরা তাদেরকে শনাক্ত করতে পারি, যারা ঈশ্বরকে “সত্যে” উপাসনা করছে এবং কোন দল এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে বাইবেলের সত্য সম্বন্ধে শিক্ষা দিয়ে চলেছে?

১৮ দ্বিতীয়ত, ঈশ্বর সম্বন্ধে সত্য শিক্ষা দিয়ে আমরা তাঁর গৌরব করতে পারি। যিশু বলেছিলেন যে, সত্য উপাসকরা “সত্যে [ঈশ্বরের] ভজনা” করবে। (যোহন ৪:২৪) কীভাবে আমরা তাদের শনাক্ত করতে পারি, যারা “সত্যে” ঈশ্বরের উপাসনা করছে? তাদের অবশ্যই সেই মতবাদগুলো প্রত্যাখ্যান করতে হবে, যা বাইবেলের ওপর ভিত্তি করে নয় এবং যা ঈশ্বর ও তাঁর ইচ্ছাকে ভুলভাবে তুলে ধরে। এর পরিবর্তে, তাদের ঈশ্বরের বাক্যের বিশুদ্ধ সত্যগুলো সম্বন্ধে শিক্ষা দিতে হবে, যেগুলোর অন্তর্ভুক্ত এই শিক্ষাগুলো: যিহোবা হলেন পরাৎপর ঈশ্বর এবং এই অবস্থানের প্রতি গৌরব একমাত্র তাঁর কাছেই যায় (গীতসংহিতা ৮৩:১৮); যিশু হলেন ঈশ্বরের পুত্র এবং ঈশ্বরের মশীহ রাজ্যের মনোনীত শাসক (১ করিন্থীয় ১৫:২৭, ২৮); ঈশ্বরের রাজ্য যিহোবার নামকে পবিত্র করবে এবং এই পৃথিবী ও এর মানুষদের প্রতি তাঁর উদ্দেশ্যগুলো পরিপূর্ণ করবে (মথি ৬:৯, ১০); এই রাজ্যের সুসমাচার সমস্ত জগতে প্রচারিত হতে হবে। (মথি ২৪:১৪) এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে, একমাত্র একটা দলই এই ধরনের মূল্যবান সত্যগুলো বিশ্বস্ততার সঙ্গে শিক্ষা দিয়ে চলেছে—যিহোবার সাক্ষিরা!

১৯, ২০. (ক) কেন একজন খ্রিস্টানের উত্তম আচরণ ঈশ্বরের গৌরব নিয়ে আসে? (খ) কোন প্রশ্নগুলো আমাদের বুঝতে সাহায্য করে যে, কারা আজকে তাদের উত্তম আচরণ বজায় রাখার মাধ্যমে ঈশ্বরকে গৌরবান্বিত করছে?

১৯ তৃতীয়ত, তাঁর মানগুলোর সঙ্গে মিল রেখে জীবনযাপন করে আমরা ঈশ্বরকে গৌরবান্বিত করতে পারি। প্রেরিত পিতর লিখেছিলেন: “আর পরজাতীয়দের মধ্যে আপন আপন আচার ব্যবহার উত্তম করিয়া রাখ; তাহা হইলে তাহারা যে বিষয়ে দুষ্কর্ম্মকারী বলিয়া তোমাদের পরীবাদ করে, স্বচক্ষে তোমাদের সৎক্রিয়া দেখিলে সেই বিষয়ে তত্ত্বাবধানের দিনে ঈশ্বরের গৌরব করিবে।” (১ পিতর ২:১২) একজন খ্রিস্টানের আচরণ তার বিশ্বাসের দ্বারা প্রতিফলিত হয়। পর্যবেক্ষকরা যখন সেই সংযোগটা বুঝতে পারে—অর্থাৎ যখন তারা দেখে যে, একজন খ্রিস্টানের উত্তম আচরণ তার বিশ্বাসের প্রত্যক্ষ প্রমাণ—তখন তা ঈশ্বরের গৌরব নিয়ে আসে।

২০ কারা আজকে উত্তম আচরণ বজায় রাখার মাধ্যমে ঈশ্বরকে গৌরবান্বিত করছে? কোন ধর্মীয় দল শান্তিপূর্ণ এবং আইনমান্যকারী এমন নাগরিক হওয়ার জন্য অনেক সরকারের কাছ থেকে যথেষ্ট প্রশংসা কুড়িয়েছে, যারা তাদের কর দিয়ে থাকে? (রোমীয় ১৩:১, ৩, ৬, ৭) কোন লোকেরা সহবিশ্বাসীদের সঙ্গে তাদের একতার জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত—যে-একতা বর্ণ, জাতিগত এবং সাম্প্রদায়িক পার্থক্যের ঊর্ধ্বে? (গীতসংহিতা ১৩৩:১; প্রেরিত ১০:৩৪, ৩৫) কোন দল পৃথিবীব্যাপী তাদের বাইবেল শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য স্বীকৃত, যা আইন, পারিবারিক মূল্যবোধ এবং বাইবেলের নৈতিকতার প্রতি সম্মানকে উচ্চীকৃত করে? একমাত্র একটা দলই রয়েছে, যাদের উত্তম আচরণ এই ক্ষেত্রে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে এর প্রমাণ দেয়—যিহোবার সাক্ষিরা!

আপনি কি ঈশ্বরকে গৌরব প্রদান করছেন?

২১. আমরা ব্যক্তিগতভাবে যিহোবাকে গৌরব প্রদান করছি কি না, তা কেন আমাদের বিবেচনা করা উচিত?

২১ আমাদের প্রত্যেকের নিজেকে জিজ্ঞেস করা উচিত: ‘আমি কি ব্যক্তিগতভাবে যিহোবাকে গৌরব প্রদান করছি?’ গীতসংহিতা ১৪৮ অধ্যায় অনুযায়ী বেশির ভাগ সৃষ্টি ঈশ্বরকে গৌরব প্রদান করে। দূতবাহিনী, আকাশমণ্ডল, পৃথিবী এবং এর প্রাণীজগৎ—সকলে যিহোবার গৌরব করে। (১-১০ পদ) কত দুঃখজনক যে, বেশির ভাগ মানুষ আজকে তা করে না! ঈশ্বরকে গৌরব প্রদান করে, এমন উপায়ে জীবনযাপন করার মাধ্যমে আপনি বাকি সমস্ত সৃষ্টির সঙ্গে মিল রাখেন, যারা যিহোবার প্রশংসা করছে। (১১-১৩ পদ) আপনার জীবনকে এর চেয়ে উত্তমভাবে ব্যবহার করার আর কোনো উপায় নেই।

২২. যিহোবাকে গৌরব প্রদান করার মাধ্যমে আপনি কোন কোন উপায়ে উপকৃত হন এবং আমাদের দৃঢ়সংকল্প কী হওয়া উচিত?

২২ ঈশ্বরকে গৌরব প্রদান করার মাধ্যমে আপনি অনেক উপায়ে উকৃত হন। খ্রিস্টের মুক্তির মূল্যরূপ বলিদানে বিশ্বাস অনুশীলন করে আপনি ঈশ্বরের সঙ্গে সম্মিলিত হন এবং আপনার স্বর্গীয় পিতার সঙ্গে শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ সম্পর্ক উপভোগ করেন। (রোমীয় ৫:১০) আপনি যখন ঈশ্বরকে গৌরব প্রদান করার কারণগুলো খোঁজার চেষ্টা করবেন, তখন আপনি আরও ইতিবাচক এবং কৃতজ্ঞ হয়ে উঠবেন। (যিরমিয় ৩১:১২) তারপর, আপনি অন্যদের এক সুখী, পরিতৃপ্তিদায়ক জীবনযাপন করতে সাহায্য করতে পারবেন আর এভাবে নিজে আরও বেশি সুখী হবেন। (প্রেরিত ২০:৩৫, NW) আপনি যেন তাদের মধ্যে থাকেন, যারা ঈশ্বরকে গৌরব প্রদান করার দৃঢ়সংকল্প নেয়—এখন ও চিরকাল!

[পাদটীকাগুলো]

^ “বায়োমিমেটিক্‌স” শব্দটি গ্রিক শব্দ বাইয়স এবং মিমেসিস থেকে এসেছে, যেগুলোর অর্থ যথাক্রমে “জীবন” ও “অনুকরণ।”

^ কীভাবে আকাশমণ্ডল ঈশ্বরের প্রজ্ঞা এবং শক্তিকে প্রতিফলিত করে, তা আরও বিস্তারিত জানার জন্য যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত যিহোবার নিকটবর্তী হোন বইয়ের ৫ এবং ১৭ অধ্যায় দেখুন।

^ যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত শাস্ত্রের প্রতি অন্তর্দৃষ্টি (ইংরেজি) বইয়ের ১ম খণ্ডের ৮৫৩ পৃষ্ঠা দেখুন।

আপনি কি স্মরণ করতে পারেন?

• কেন আমরা বলতে পারি যে, বিজ্ঞানীরা সামগ্রিকভাবে ঈশ্বরকে গৌরব প্রদান করার জন্য লোকেদের সাহায্য করেনি?

• কোন দুটো উপায়ে সংগঠিত ধর্ম লোকেদের ঈশ্বরকে গৌরব প্রদান করা থেকে বিরত রেখেছে?

• কোন কোন উপায়ে আমরা ঈশ্বরকে গৌরবান্বিত করতে পারি?

• আপনি ব্যক্তিগতভাবে যিহোবাকে গৌরব প্রদান করছেন কি না, তা কেন আপনার বিবেচনা করা উচিত?

[অধ্যয়ন প্রশ্নাবলি]

[১২ পৃষ্ঠার বাক্স]

“ঈশ্বর কাদের পক্ষে?”

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মান বিমানবাহিনীতে ছিলেন কিন্তু পরে যিহোবার সাক্ষিদের একজন হয়েছিলেন এমন এক ব্যক্তি স্মরণ করে বলেন:

“যুদ্ধের সেই বছরগুলো যা আমাকে যন্ত্রণা দিত তা ছিল . . . এই বিষয়টা দেখা যে, প্রায় সমস্ত সম্প্রদায়ের—ক্যাথলিক, লুথারন, ইপিসকোপাল এবং অন্যান্য ধর্মের—পাদরিরা যুদ্ধবিমান এবং তাদের দলগুলোকে মারাত্মক মালগুলো ফেলে দেওয়ার জন্য তাদের কার্যভারে যাওয়ার আগে আশীর্বাদ করছে। আমি প্রায়ই চিন্তা করতাম, ‘ঈশ্বর কাদের পক্ষে?’

“জার্মান সৈন্যরা একটা বেল্ট পরত, যেটার বগল্‌সের মধ্যে এই কথাগুলো খোদাই করা ছিল, গট মিট উনস্‌ (ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে আছেন)। কিন্তু, আমি ভাবতাম, ‘ঈশ্বর কেন অন্য পক্ষের সৈন্যদের সঙ্গে থাকবেন না, যারা একই ধর্মের এবং যারা একই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছিল?’”

[১০ পৃষ্ঠার চিত্র]

পৃথিবীব্যাপী যিহোবার সাক্ষিরা প্রকৃতই ঈশ্বরকে গৌরব প্রদান করছে