সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আলেখান্ড্রার কাছ থেকে একটি চিঠি

আলেখান্ড্রার কাছ থেকে একটি চিঠি

রাজ্য ঘোষণাকারীরা বিবৃতি দেয়

আলেখান্ড্রার কাছ থেকে একটি চিঠি

 চিঠি লেখা, দীর্ঘদিন ধরেই সাক্ষ্য দেওয়ার এক কার্যকারী মাধ্যম হিসেবে প্রমাণিত হয়ে এসেছে। যদিও মাঝে মাঝে এর ফলাফল অনিশ্চিত বলে মনে হতে পারে কিন্তু যারা এই পদ্ধতি ব্যবহার করে চলেছে, তারা প্রচুররূপে আশীর্বাদপ্রাপ্ত হয়েছে। তারা বাইবেলের এই বিজ্ঞ পরামর্শ মনে রাখে: “তুমি প্রাতঃকালে আপন বীজ বপন কর, এবং সায়ংকালেও হস্ত নিবৃত্ত করিও না। কেননা ইহা কিম্বা উহা, কোন্‌টা সফল হইবে, কিম্বা উভয় সমভাবে উৎকৃষ্ট হইবে, তাহা তুমি জান না।”—উপদেশক ১১:৬.

আলেখান্ড্রা নামে এক যুবতী সাক্ষি, যে প্রায় দশ বছর ধরে যিহোবার সাক্ষিদের মেক্সিকো শাখা অফিসে সেবা করেছিল, ক্যান্সারের কারণে কেমোথেরাপি নিচ্ছিল। তার পরিস্থিতি খারাপ থেকে খারাপের দিকে যাচ্ছিল আর সে এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছিল যে, তার প্রতিদিনের কাজগুলো করতে পারছিল না। কিন্তু, আলেখান্ড্রা তার পরিচর্যাকে অবহেলা করতে চায়নি বলে চিঠি লেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সে বিনামূল্যে বাইবেল অধ্যয়নের ব্যবস্থা সম্বন্ধে লিখেছিল ও সেইসঙ্গে তার মার টেলিফোন নম্বরও দিয়ে দিয়েছিল। এরপর সে তার মাকে সেই চিঠিগুলো দিয়ে দিত, যাতে তিনি ঘরে ঘরে পরিচর্যার সময়, ঘরে থাকে না এমন লোকেদের বাসায় সেগুলো রেখে আসেন।

ইতিমধ্যে, ডিয়োহানি নামে গুয়াতেমালার এক যুবতী মেক্সিকোর কানকুনে একজন গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করতে যায়। সেখানে থাকার সময়ে যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয় এবং তাদের সঙ্গে সে বাইবেল আলোচনা উপভোগ করে। পরবর্তী সময়ে তার গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী মেক্সিকো সিটিতে চলে আসার সিদ্ধান্ত নেয় এবং তাকে সঙ্গে নিয়ে যেতে চায়। ডিয়োহানি যেতে ইতস্তত করে কারণ এর ফলে সাক্ষিদের সঙ্গে তার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে।

“চিন্তা করো না,” তার গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী তাকে আশ্বাস দেয়, “সাক্ষিরা সব জায়গায় রয়েছে। সেখানে পৌঁছানো মাত্রই আমরা তাদের খুঁজে বের করব।” সেই আনন্দিত প্রত্যাশা নিয়ে ডিয়োহানি তাদের সঙ্গে যেতে রাজি হয়। একবার মেক্সিকো সিটিতে ডিয়োহানির গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী সাক্ষিদের খোঁজ করেছিল। কোনো কারণে তারা তাদের খুঁজে বের করতে পারেনি, যদিও সেই শহরে ৪১,০০০রেরও বেশি সাক্ষি এবং ৭৩০টা মণ্ডলী ছিল।

শীঘ্রই ডিয়োহানি নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ে কারণ তার বাইবেল আলোচনা পুনরায় চালু করার জন্য সে সাক্ষিদের খুঁজে পায়নি। একদিন তার গৃহকর্ত্রী তার কাছে এসে বলেছিলেন: “আশ্চর্য! তোমার ঈশ্বর তোমার প্রার্থনা শুনেছেন।” তার হাতে একটি চিঠি দিয়ে তিনি বলেছিলেন: “সাক্ষিরা তোমার জন্য এই চিঠি রেখে গিয়েছে।” এই চিঠি আলেখান্ড্রার কাছ থেকে ছিল।

ডিয়োহানি আলেখান্ড্রার মা এবং বোন ব্লাঙ্কার সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং বাইবেল অধ্যয়ন করতে রাজি হয়। কয়েক সপ্তাহ পরে, সে আলেখান্ড্রার সঙ্গে দেখা করে আর তা এক হৃদয়গ্রাহী সাক্ষাৎ ছিল। আলেখান্ড্রা তাকে তার বাইবেল অধ্যয়ন চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করে, যাতে সে আধ্যাত্মিক উন্নতি করতে পারে।

কয়েক মাস পরে, ২০০৩ সালের জুলাই মাসে আলেখান্ড্রা মারা যায়। সে তার সহবিশ্বাসীদের জন্য বিশ্বাস এবং সাহসের এক উত্তম উদাহরণ রেখে গিয়েছে। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময় অনেকের হৃদয়কে এই বিষয়টা স্পর্শ করে, যখন ডিয়োহানির সঙ্গে তাদের দেখা হয় ও তাকে এই কথা বলতে শোনে: “আলেখান্ড্রা এবং তার পরিবার আমার জন্য এক চমৎকার উদাহরণ। আমি যিহোবাকে সেবা করতে এবং শীঘ্রই বাপ্তিস্ম নিতে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ। আসন্ন পরমদেশে আবারও আলেখান্ড্রাকে দেখব বলে আমি অধীরভাবে অপেক্ষা করে আছি!”

হ্যাঁ, চিঠি হয়তো সামান্য বিষয় হতে পারে। কিন্তু, এটির কতই না অনুকূল এবং স্থায়ী প্রভাব থাকতে পারে!