সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

যে-উত্তরাধিকারের ওপর আপনি নির্ভর করতে পারেন

যে-উত্তরাধিকারের ওপর আপনি নির্ভর করতে পারেন

যে-উত্তরাধিকারের ওপর আপনি নির্ভর করতে পারেন

 “আপনি যদি কারও কাছ থেকে চিঠির মাধ্যমে এমন একটা বিজ্ঞপ্তি পান, যেখানে বলা আছে যে আপনার জন্য দাবিদারহীন এক উত্তরাধিকার অপেক্ষা করে আছে, তা হলে সতর্ক থাকুন। আপনি ধূর্ত প্রতারকের লক্ষ্যবস্তু হতে পারেন।”

এই সাবধানবাণীই যুক্তরাষ্ট্রের ডাক পরিদর্শন বিভাগ, এর ওয়েব সাইটে দিয়েছিল। কেন? কারণ হাজার হাজার লোক চিঠিতে এই কথা সম্বলিত একটা বিজ্ঞপ্তি পেয়েছিল, ‘আপনার এক আত্মীয় মারা গিয়েছেন আর আপনার জন্য এক উত্তরাধিকার রেখে গিয়েছেন।’ এর ফলে, অনেকে ‘সম্পত্তি-তথ্যের’ জন্য ৩০ বা এরও বেশি ডলারসহ চিঠি পাঠিয়েছিল, যা কোথায় সেই উত্তরাধিকার রয়েছে এবং কীভাবে তা দাবি করা যেতে পারে, সেই সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করবে বলে মনে করা হয়েছিল। তারা অত্যন্ত হতাশ হয়েছিল। প্রত্যেক উত্তরদাতা একই তথ্য পেয়েছিল—আর কারও পক্ষে কোনোকিছুর উত্তরাধিকারী হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য ছিল।

এই ধরনের পরিকল্পনাগুলো, উত্তরাধিকার লাভ করার বিষয়ে লোকেদের স্বাভাবিক আকাঙ্ক্ষার কাছে আকর্ষণীয় বলে মনে হয়। কিন্তু, বাইবেল অনুমোদন সহকারে সেই ব্যক্তিদের কথা বলে, যারা এক অধিকার বা উত্তরাধিকারের ব্যবস্থা করে, যখন এটি বলে: “সৎ লোক পুত্ত্রদের পুত্ত্রগণের জন্য অধিকার রাখিয়া যায়।” (হিতোপদেশ ১৩:২২) বাস্তবিকপক্ষে, পর্বতেদত্ত উপদেশে এই সুপরিচিত এবং কাঙ্ক্ষিত বিবৃতি অন্য আর কেউ নন কিন্তু স্বয়ং যিশু খ্রিস্ট দিয়েছেন: “ধন্য যাহারা মৃদুশীল, কারণ তাহারা দেশের [“পৃথিবীর,” NW] অধিকারী হইবে।”—মথি ৫:৫.

যিশুর কথাগুলো, প্রাচীন ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদ কয়েক শতাব্দী আগে যা লিখতে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন, তা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়: “মৃদুশীলেরা দেশের [“পৃথিবীর,” NW] অধিকারী হইবে, এবং শান্তির বাহুল্যে আমোদ করিবে।”—গীতসংহিতা ৩৭:১১.

“পৃথিবীর অধিকারী”—কতই না রোমাঞ্চকর এক প্রত্যাশা! কিন্তু, আমরা কি নিশ্চিত হতে পারি যে, এটা শুধু আরেকটা চাতুরীপূর্ণ পরিকল্পনা নয়, যা লোকেদের কোনোকিছু পাওয়া থেকে বঞ্চিত করার জন্য তৈরি করা হয়েছে? হ্যাঁ, আমরা হতে পারি। যেহেতু পৃথিবী হল যিহোবার বিস্ময়কর সৃষ্টির একটা অংশ, তাই নির্মাতা এবং মালিক হিসেবে তিনি যাকে বাছাই করেন, তাকেই এটি দেওয়ার বৈধ অধিকার তাঁর রয়েছে। রাজা দায়ূদের মাধ্যমে যিহোবা তাঁর প্রিয় পুত্র যিশু খ্রিস্টের কাছে এই ভবিষ্যদ্বাণীমূলক প্রতিজ্ঞা করেছিলেন: “আমার নিকটে যাচ্ঞা কর, আমি জাতিগণকে তোমার দায়াংশ করিব, পৃথিবীর প্রান্ত সকল তোমার অধিকারে আনিয়া দিব।” (গীতসংহিতা ২:৮) এই কারণে প্রেরিত পৌল যিশুর সম্বন্ধে এভাবে বর্ণনা করেছেন, “ইহাকেই [ঈশ্বর] সর্ব্বাধিকারী দায়াদ করিয়াছেন।” (ইব্রীয় ১:২) তাই, আমরা পূর্ণ আস্থা রাখতে পারি যে, যিশু যখন বলেছিলেন, মৃদুশীল ব্যক্তি “পৃথিবীর অধিকারী হইবে,” তখন তিনি তা সরল বিশ্বাস সহকারে বলেছিলেন আর তাঁর প্রতিজ্ঞা পরিপূর্ণ করার যথাযথ ক্ষমতা তাঁর রয়েছে।—মথি ২৮:১৮.

তা হলে, গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটা হল কীভাবে সেই প্রতিজ্ঞা সত্য হবে? আজকে আমরা যেখানেই তাকাই না কেন, মনে হয় যেন আগ্রাসী এবং উচ্চমনা ব্যক্তিরা সবচেয়ে লাভবান হচ্ছে এবং তারা যা চাচ্ছে তা-ই অধিকার করছে। তা হলে, মৃদুশীল ব্যক্তিরা কীসের অধিকার লাভ করবে? এ ছাড়া, পৃথিবী দূষণসহ গুরুতর সমস্যাগুলোর দ্বারা জর্জরিত এবং লোভী ও সংকীর্ণমনা লোকেরা এর সম্পদগুলোকে স্বীয় স্বার্থে কাজে লাগাচ্ছে। তা হলে, উত্তরাধিকারী হওয়ার মতো এমন এক পৃথিবী কি থাকবে? এই প্রশ্নগুলো এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য আমরা আপনাকে পরের প্রবন্ধ পড়তে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।

[৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

আপনি কি এক প্রকৃত উত্তরাধিকার লাভ করতে যাচ্ছেন?