সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আপনি কি জানেন দান করা থেকে সুখ আসে?

আপনি কি জানেন দান করা থেকে সুখ আসে?

আপনি কি জানেন দান করা থেকে সুখ আসে?

 একজন বিশ্বস্ত খ্রিস্টান বোন খ্রিস্টীয় পরিচর্যায় সক্রিয়ভাবে প্রায় ৫০ বছর ব্যয় করেছিলেন। যদিও বার্ধক্যের প্রভাবগুলো তাকে শারীরিকভাবে দুর্বল করে দিয়েছে কিন্তু তিনি নতুন নির্মিত কিংডম হলটি পরিদর্শন করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ ছিলেন। একজন সাহায্যকারী ভাইয়ের হাত ধরে তিনি কিংডম হলে প্রবেশ করেছিলেন এবং আস্তে আস্তে অথচ সরাসরি তার লক্ষ্যবস্তুর—দান বাক্সের—দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন। সেই বাক্সে তিনি সামান্য পরিমাণ অর্থ রেখেছিলেন, যা তিনি এই উদ্দেশ্যেই জমিয়েছিলেন। হল নির্মাণের কাজে যদিও তিনি কিছু করতে পারেননি কিন্তু তিনি সাহায্য করতে চেয়েছিলেন।

এই খ্রিস্টান স্ত্রীলোকটি আপনাকে হয়তো আরেকজন বিশ্বস্ত স্ত্রীলোকের—সেই ‘দরিদ্রা বিধবার’—কথা মনে করিয়ে দিতে পারে, যাকে যিশু মন্দিরের ভাণ্ডারে দুটো ক্ষুদ্র মুদ্রা রাখতে দেখেছিলেন। আমাদের তার পরিস্থিতির কথা জানানো হয়নি কিন্তু তখনকার দিনে স্বামী না থাকাটা একজন স্ত্রীলোককে চরম আর্থিক সংকটে ফেলতে পারত। নিশ্চিতভাবে যিশু তার জন্য সহমর্মিতা অনুভব করেছিলেন কারণ তিনি সেই বিধবার অবস্থা পুরোপুরিভাবে বুঝতে পেরেছিলেন। তাঁর শিষ্যদের কাছে তাকে এক উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরে যিশু বলেছিলেন যে, সেই বিধবার ক্ষুদ্র দান তার ‘যাহা কিছু ছিল, সমস্ত জীবনোপায়কে’ প্রতিনিধিত্ব করেছিল।—মার্ক ১২:৪১-৪৪.

এই দরিদ্রা বিধবার মতো একজন অভাবী স্ত্রীলোক কেন এই ধরনের ত্যাগস্বীকার করেন? এর স্পষ্ট কারণ হল যে, তিনি যিহোবা ঈশ্বরের কাছে পুরোপুরি উৎসর্গীকৃত ছিলেন, যাঁর উপাসনা যিরূশালেম মন্দিরে কেন্দ্রীভূত ছিল। যদিও তার করার ক্ষমতা সীমিত ছিল কিন্তু তিনি পবিত্র পরিচর্যাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। আর তিনি তার সাধ্যমতো দান দিয়ে নিশ্চয়ই প্রকৃত আনন্দ অনুভব করেছিলেন।

যিহোবার কাজে সমর্থন করার জন্য দান করা

বস্তুগত ও আর্থিক দান সবসময়ই শুদ্ধ উপাসনার এক অপরিহার্য অংশ হয়ে এসেছে আর এটা সবসময়ই মহা আনন্দের এক উৎস হয়েছে। (১ বংশাবলি ২৯:৯) প্রাচীন ইস্রায়েলে দান কেবল মন্দিরকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করার জন্যই ব্যবহৃত হতো না কিন্তু যিহোবার উপাসনার সমস্ত দিককে প্রতিদিন কার্যকর রাখার জন্যও ব্যবহৃত হতো। ব্যবস্থা নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেছিল যে, লেবীয়দের অর্থাৎ যারা মন্দিরে সেবা করত তাদেরকে সমর্থন করার জন্য ইস্রায়েল সন্তানরা তাদের উৎপন্ন দ্রব্যের দশ ভাগের এক ভাগ দান করবে। কিন্তু, লেবীয়রা যে-দ্রব্যগুলো পেত সেগুলো থেকে তাদেরও দশ ভাগের এক ভাগ যিহোবাকে দান করতে হতো।—গণনাপুস্তক ১৮:২১-২৯.

খ্রিস্টানরা যদিও ব্যবস্থা চুক্তির শর্তগুলো থেকে মুক্ত হয়ে গিয়েছিল কিন্তু সত্য উপাসনাকে সমর্থন করার জন্য ঈশ্বরের দাসদের বস্তুগতভাবে দান করার নীতিটি অপরিবর্তিতই থেকে গিয়েছিল। (গালাতীয় ৫:১) এ ছাড়া, প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানরা ভাইবোনদের অভাব দূর করার জন্য দান করাকে আনন্দের বিষয় বলে বিবেচনা করত। (প্রেরিত ২:৪৫, ৪৬) প্রেরিত পৌল খ্রিস্টানদের মনে করিয়ে দিয়েছিলেন যে, ঈশ্বর যেমন তাদেরকে উদারভাবে উত্তম জিনিসগুলো জুগিয়েছেন, ঠিক তেমনই তাদেরও অন্যদের প্রতি উদারতা দেখানো উচিত। তিনি লিখেছিলেন: “যাহারা এই যুগে ধনবান্‌, তাহাদিগকে এই আজ্ঞা দেও, যেন তাহারা গর্ব্বিতমনা না হয়, এবং ধনের অস্থিরতার উপরে নয়, কিন্তু যিনি ধনবানের ন্যায় সকলই আমাদের ভোগার্থে যোগাইয়া দেন, সেই ঈশ্বরেরই উপরে প্রত্যাশা রাখে; যেন পরের উপকার করে, সৎক্রিয়ারূপ ধনে ধনবান্‌ হয়, দানশীল হয়, সহভাগীকরণে তৎপর হয়; এইরূপে তাহারা আপনাদের নিমিত্ত ভাবীকালের জন্য উত্তম ভিত্তিমূলস্বরূপ নিধি প্রস্তুত করুক, যেন, যাহা প্রকৃতরূপে জীবন, তাহাই ধরিয়া রাখিতে পারে।” (১ তীমথিয় ৬:১৭-১৯; ২ করিন্থীয় ৯:১১) বাস্তবিকই, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে পৌল যিশুর এই কথাগুলোকে সত্য বলে স্বীকার করতে পেরেছিলেন: “গ্রহণ করা অপেক্ষা বরং দান করা ধন্য [“সুখী,” NW] হইবার বিষয়।”—প্রেরিত ২০:৩৫.

আজকে খ্রিস্টীয় দান

আজকে, যিহোবার দাসরা একে অপরকে সাহায্য এবং ঈশ্বরের কাজকে সমর্থন করার জন্য ক্রমাগত তাদের বস্তুগত সম্পদগুলোকে ব্যবহার করে। এমনকি যারা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল, তারাও তাদের সাধ্যমতো দান করে থাকে। “বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্‌ দাস” এই সমস্ত দানকৃত অর্থকে যথাসম্ভব সর্বোত্তম উপায়ে কাজে লাগানোর জন্য যিহোবার কাছে দায়বদ্ধ বলে মনে করে। (মথি ২৪:৪৫) শাখা অফিসগুলোকে কার্যকর রাখতে, বাইবেল ও বাইবেলভিত্তিক সাহিত্যাদি অনুবাদ করতে এবং ছাপাতে, খ্রিস্টীয় বড় সমাবেশগুলোর ব্যবস্থা করতে, ভ্রমণ অধ্যক্ষ ও মিশনারিদের প্রশিক্ষণ দিতে এবং অন্য জায়গায় পাঠাতে, দুর্যোগের সময় ত্রাণসামগ্রী জোগাতে আর সেইসঙ্গে অতি প্রয়োজনীয় আরও অনেক উদ্দেশ্যে দানকৃত অর্থ ব্যবহার করা হয়। আসুন আমরা এই ধরনের একটা উদ্দেশ্যের ওপর মনোযোগ দিই আর তা হল উপাসনার স্থানগুলো নির্মাণে অর্থ দিয়ে সাহায্য করা।

আধ্যাত্মিক শিক্ষা ও গঠনমূলক মেলামেশা থেকে উপকৃত হতে যিহোবার সাক্ষিরা সপ্তাহে বেশ কয়েক বার তাদের কিংডম হলগুলোতে মিলিত হয়ে থাকে। কিন্তু অনেক দেশে, অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে স্থানীয় সাক্ষিরা প্রাথমিক কোনো আর্থিক সাহায্য ছাড়া কিংডম হল নির্মাণ কাজের জন্য অর্থ জোগান দিতে পারে না। তাই, যিহোবার সাক্ষিরা দরিদ্র দেশগুলোতে কিংডম হল নির্মাণে সাহায্য করতে ধনী দেশগুলো থেকে আসা অর্থ ব্যবহার করার জন্য ১৯৯৯ সাল থেকে একটা কর্মসূচি শুরু করেছে। এ ছাড়া, হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক তাদের সময় ও বিভিন্ন দক্ষতা বিলিয়ে দিয়েছে, প্রায়ই এই দেশগুলোর দূরবর্তী অঞ্চলগুলোতে গিয়ে কাজ করছে। নির্মাণ কাজের সময়, স্থানীয় সাক্ষিরা নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করার দক্ষতাগুলো শেখে আর কিংডম হল তহবিলের অর্থ দিয়ে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও নির্মাণসামগ্রী কেনা সম্ভবপর হয়। যে-সাক্ষিরা এখন এই নতুন হলগুলো ব্যবহার করে, তারা তাদের সহবিশ্বাসীদের দানকৃত সময় ও অর্থের জন্য গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। এ ছাড়া, নতুন কিংডম হলের রক্ষণাবেক্ষণ এবং নির্মাণ কাজের ব্যয়ভার বহনে সাহায্য করার জন্য প্রত্যেক মাসে স্থানীয় সাক্ষিরা দানও দিয়ে থাকে আর এইভাবে আরও বেশি কিংডম হল তৈরি করার জন্য সাহায্য করে।

স্থানীয় পদ্ধতি ও নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে কিংডম হলগুলো তৈরি করা হয়ে থাকে। যদিও এই হলগুলো জমকালো নয় কিন্তু সেগুলো আকর্ষণীয়, ব্যবহারোপযোগী ও আরামদায়ক। ১৯৯৯ সালে যখন নির্মাণ কর্মসূচিটি শুরু হয়েছিল, তখন প্রায় ৪০টা দরিদ্র দেশকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। সেই সময় থেকে, নির্মাণ কর্মসূচিকে এই ধরনের ১১৬টা দেশে সম্প্রসারিত করা হয়েছিল, এতে পৃথিবীতে যিহোবার সাক্ষিদের মণ্ডলীগুলোর অর্ধেকেরও বেশি মণ্ডলী জড়িত হয়েছিল। বিগত পাঁচ বছরে, এই ব্যবস্থার অধীনে ৯,০০০রেরও বেশি কিংডম হল নির্মাণ করা হয়েছিল, যা প্রতিদিন গড়ে ৫টারও বেশি! তারপরেও, এই ১১৬টা জায়গায় আরও ১৪,৫০০টা নতুন কিংডম হলের প্রয়োজন রয়েছে। যিহোবার আশীর্বাদে এবং সারা পৃথিবীর সাক্ষিদের ইচ্ছুক মনোভাব ও উদারতার মাধ্যমে এই প্রয়োজন পূরণ করার জন্য যথেষ্ট অর্থ-তহবিল পাওয়া যাবে বলে আশা করা হয়।—গীতসংহিতা ১২৭:১.

কিংডম হলগুলো বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে

এই অসাধারণ প্রচেষ্টা স্থানীয় সাক্ষিদের এবং রাজ্য প্রচার কাজের ওপর কোন প্রভাব ফেলেছে? অনেক জায়গায়, একটা নতুন কিংডম হল তৈরি করার পর সভার উপস্থিতিতে লক্ষণীয় বৃদ্ধি দেখা যায়। বুরুন্ডি থেকে পাওয়া এই রিপোর্টে একটা আদর্শ উদাহরণ দেখতে পাওয়া যায়: “কিংডম হল তৈরি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, এটা পূর্ণ হয়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, এমন একটা মণ্ডলীর জন্য কিংডম হল তৈরি করা হয়েছিল যেখানে গড়ে ১০০ জন সভাগুলোতে উপস্থিত হতো। তাদের নতুন কিংডম হলে আরাম করে ১৫০ জন বসতে পারে। কিন্তু এটা তৈরি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সভাগুলোতে ২৫০ জন উপস্থিত হতে থাকে।”

কেন এইরকম বৃদ্ধি ঘটে থাকে? একটা কারণ হল যে, রাজ্য প্রকাশকদের দলগুলো যাদের আনুষ্ঠানিক কোনো সভার জায়গা নেই অথচ কোনো গাছের তলায় অথবা মাঠে মিলিত হতেই হয়, তাদেরকে কখনও কখনও সন্দেহের চোখে দেখা হয়। একটা দেশে, এইরকম ছোট ধর্মীয় দলগুলোর সঙ্গে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা জড়িত ছিল আর তাই আইন করা হয়েছিল যে, সমস্ত ধর্মীয় সভা একটা উপাসনা ঘরের মধ্যে হতে হবে।

নিজস্ব হলগুলো থাকা যিহোবার সাক্ষিদের এটাও দেখাতে সাহায্য করে যে, তারা বিশেষ কিছু পাস্টরের শিষ্য নয়। যিহোবার সাক্ষিদের জিম্বাবোয়ের শাখা অফিস লেখে: “অতীতে, এই এলাকার ভাইয়েরা ব্যক্তিগত গৃহগুলোতে একত্রিত হতো আর তাই তারা যেখানে মিলিত হতো সেই গৃহের মালিকের নামেই স্থানীয় লোকেরা মণ্ডলীকে চিনত। তারা ভাইদেরকে ‘মিঃ ওমুক’ এর গির্জার সদস্য বলে উল্লেখ করত। এইরকম ধারণা এখন পালটে যাচ্ছে কারণ লোকেরা স্পষ্টভাবে প্রত্যেকটা হলকে ‘যিহোবার সাক্ষিদের কিংডম হল’ বলে শনাক্তকারী সাইনবোর্ডগুলো দেখতে পায়।”

আনন্দিত দাতারা

“ঈশ্বর হৃষ্টচিত্ত দাতাকে ভাল বাসেন,” প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন। (২ করিন্থীয় ৯:৭) বড় অঙ্কের অর্থদান অবশ্যই খুব সাহায্যকারী হয়ে থাকে। কিন্তু, যিহোবার সাক্ষিদের কাজের জন্য দান তহবিলগুলোর বড় অংশ কিংডম হলের দানবাক্সগুলো থেকেই এসে থাকে। বড় অথবা ছোট, সমস্ত দানই গুরুত্বপূর্ণ এবং সেগুলোকে উপেক্ষা করা হয় না। মনে করে দেখুন যে, যিশু নিজে সেই স্থানে দাঁড়িয়ে ছিলেন যেখান থেকে তিনি দরিদ্রা বিধবাটিকে তার দুটো ক্ষুদ্র মুদ্রা দান করতে দেখেছিলেন। স্বর্গদূতেরা এবং যিহোবাও তাকে দেখেছিল। আমরা সেই বিধবার নাম পর্যন্ত জানি না কিন্তু যিহোবা নিশ্চিত করেছিলেন যে, তার এই নিঃস্বার্থ কাজটা যেন সর্বকালের জন্য বাইবেলে লিপিবদ্ধ করা হয়।

কিংডম হল নির্মাণ কাজ ছাড়াও, আমাদের এই দান অতি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের কাজের সমস্ত দিককে সমর্থন করে। এইভাবে সহযোগিতা করা আমাদেরকে আনন্দ করার এবং ‘অনেক ধন্যবাদের দ্বারা ঈশ্বরের উদ্দেশে উপচিয়া পড়িবার’ কারণ দান করে। (২ করিন্থীয় ৯:১২) বেনিনে আমাদের খ্রিস্টান ভাইয়েরা রিপোর্ট করে: “আন্তর্জাতিক ভ্রাতৃসমাজের কাছ থেকে পাওয়া আর্থিক সাহায্যের জন্য প্রতিদিন যিহোবার কাছে কৃতজ্ঞতাপূর্ণ অনেক প্রার্থনা করা হয়।” একই সময়ে আমরা যারা রাজ্যের কাজে আর্থিকভাবে সাহায্য করায় অংশ নিই, তারা সকলে সেই সুখ লাভ করি যা খ্রিস্টীয় দান করা থেকে আসে!

[২২, ২৩ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্র]

কেউ কেউ যে-উপায়গুলোতে দান করে থাকে

শিক্ষামূলক কাজের জন্য দান

অনেকে “শিক্ষামূলক কাজের জন্য দান—মথি ২৪:১৪” লেখা দানবাক্সে দেওয়ার জন্য একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আলাদা করে রাখে।

প্রত্যেক মাসে, মণ্ডলীগুলো এই অর্থ যিহোবার সাক্ষিদের সেই শাখা অফিসে পাঠিয়ে দেয়, যে-অফিস তাদের নিজের দেশের জন্য কাজ করে থাকে। স্বেচ্ছাকৃত দান হিসেবে দেওয়া অর্থও সরাসরি এই অফিসগুলোতে পাঠানো হয়ে থাকে। শাখা অফিসগুলোর ঠিকানা এই পত্রিকার ২ পৃষ্ঠায় পাওয়া যেতে পারে। চেকগুলো “ওয়াচ টাওয়ার”-কে প্রদানযোগ্য হিসেবে পাঠানো উচিত। এ ছাড়া, অলংকার অথবা অন্য কোনো মূল্যবান জিনিসও দান করা যেতে পারে। এই ধরনের দানের সঙ্গে একটা ছোট চিঠিতে উল্লেখ করে দেওয়া উচিত যে, এই দানগুলো এক শর্তহীন উপহার হিসেবে পাঠানো হয়েছে।

শর্তযুক্ত দানের ট্রাস্ট ব্যবস্থা

ওয়াচ টাওয়ার এর উপকারের জন্য অর্থ ট্রাস্টে রাখা যেতে পারে। তবে, অনুরোধ জানালে, প্রদত্ত অর্থ ফিরিয়ে দেওয়া হবে। আরও তথ্য জানার জন্য, দয়া করে আপনার স্থানীয় শাখা অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

দাতব্য পরিকল্পনা

শিক্ষামূলক কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য উপহার হিসেবে শর্তহীন অর্থ পাঠানো ছাড়াও, দান করার অন্যান্য উপায় রয়েছে। এগুলোর অন্তর্ভুক্ত:

বিমা: কোনো জীবন বিমা প্রকল্পের অথবা অবসর গ্রহণ/পেনশন পরিকল্পনার স্বত্বভোগী হিসেবে ওয়াচ টাওয়ার এর নাম দেওয়া যেতে পারে।

ব্যাঙ্ক আ্যকাউন্ট: ব্যাঙ্ক আ্যকাউন্ট, ডিপোজিটের সার্টিফিকেট অথবা ব্যক্তির অবসর গ্রহণকালীন আ্যকাউন্টগুলো স্থানীয় ব্যাঙ্কের নিয়ম অনুসারে, ওয়াচ টাওয়ার এর ট্রাস্টে দেওয়া যেতে পারে অথবা ব্যক্তির মৃত্যুর পর ওয়াচ টাওয়ার-কে প্রদানযোগ্য হিসেবে দেওয়া যেতে পারে।

স্টক ও বন্ড: স্টক ও বন্ডগুলোকে শর্তহীন উপহার হিসেবে ওয়াচ টাওয়ারকে-কে দান করা যেতে পারে।

স্থাবর সম্পত্তি: বিক্রয়যোগ্য স্থাবর সম্পত্তি হয় এক শর্তহীন উপহার হিসেবে দান করা যেতে পারে অথবা আবাসিক সম্পত্তির ক্ষেত্রে দাতার জন্য জীবনস্বত্বরূপে সংরক্ষণ করে তা প্রদান করা যেতে পারে, এই শর্তে যে, তিনি তার জীবনকালে সেখানে বসবাস করতে পারবেন। কোনো স্থাবর সম্পত্তি দেওয়ার জন্য দলিলের ব্যবস্থা করার আগে আপনার দেশের শাখা অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

বার্ষিক বৃত্তি উপহার: বার্ষিক বৃত্তি উপহার হল একটা ব্যবস্থা যেটার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি ওয়াচটাওয়ার কর্পোরেশনকে অর্থ অথবা সম্পত্তির মালিকানাসূচক দলিলগুলো হস্তান্তর করেন। এটার বিনিময়ে, দাতা অথবা দাতার দ্বারা নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি জীবনভর প্রতি বছর এক নির্দিষ্ট বার্ষিক বৃত্তির অর্থ লাভ করেন। যে-বছর থেকে বার্ষিক বৃত্তি উপহার ব্যবস্থা চালু হয়, সেই সময় থেকে দাতা আয়করের ক্ষেত্রেও ছাড় পেয়ে থাকেন।

উইল ও ট্রাস্ট: সম্পত্তি অথবা অর্থ আইনসম্মতভাবে সম্পন্ন উইলের সাহায্যে ওয়াচ টাওয়ার-কে হস্তান্তর করা যেতে পারে অথবা ট্রাস্ট চুক্তির স্বত্বভোগী হিসেবে ওয়াচ টাওয়ার এর নাম দেওয়া যেতে পারে। কিছু দেশে, কোনো ট্রাস্টের দ্বারা একটা ধর্মীয় সংগঠন উপকৃত হলে সেটা কর দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু সুযোগসুবিধা দিতে পারে যদিও ভারতে এটা প্রযোজ্য নয়।।

“দাতব্য পরিকল্পনা” শব্দটা যেমন ইঙ্গিত করে যে, এই ধরনের দানগুলো করার জন্য সাধারণত দাতার আগে থেকেই পরিকল্পনা করা দরকার। যে-ব্যক্তিরা কোনো ধরনের দাতব্য পরিকল্পনার মাধ্যমে যিহোবার সাক্ষিদের শিক্ষামূলক কাজে সাহায্য করতে চায়, তাদের সহযোগিতা করার জন্য ইংরেজি ও স্প্যানিশ ভাষায় একটা ব্রোশার প্রস্তুত করা হয়েছে, যেটার শিরোনাম হল চ্যারিটেবেল প্ল্যানিং টু বেনিফিট কিংডম সার্ভিস ওয়ার্ল্ডওয়াইড। এই ব্রোশারটি উপহারগুলো দেওয়ার বিভিন্ন উপায় সম্বন্ধে তথ্য জোগানোর জন্য লিখিত হয়েছে, যেগুলো হয় এখনই বা মৃত্যুর পর উইলের মাধ্যমে দেওয়া যেতে পারে। ব্রোশারটি পড়া এবং তাদের নিজস্ব আইনগত অথবা কর উপদেষ্টাদের সঙ্গে পরামর্শ করার পর, অনেকেই পৃথিবীব্যাপী যিহোবার সাক্ষিদের কাজকে সমর্থন করার জন্য সাহায্য করতে সমর্থ হয়েছে আর তা করার ফলে কর দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের সুবিধাগুলো বৃদ্ধি করেছে।

আরও তথ্য জানার জন্য, নিচে দেওয়া ঠিকানায় অথবা আপনার দেশের জন্য যিহোবার সাক্ষিদের যে-অফিস কাজ করছে, সেখানে চিঠি লিখে অথবা টেলিফোনে যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।

Jehovah’s Witnesses,

Post Box ৬৪৪০,

Yelahanka,

Bangalore ৫৬০ ০৬৪,

Karnataka.

Telephone: (০৮০) ২৮৪৬৮০৭২

[২০, ২১ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

যিহোবার সাক্ষিদের সভার পুরনো ও নতুন স্থানগুলো

জাম্বিয়া

মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র