সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

লোকেরা কতদিন বেঁচে থাকতে পারে?

লোকেরা কতদিন বেঁচে থাকতে পারে?

লোকেরা কতদিন বেঁচে থাকতে পারে?

 স্প্যানিশ অভিযাত্রী খোয়ান পনসে ডে লেয়ন ১৫১৩ সালের ৩রা মার্চে এক উল্লেখযোগ্য অভিযান শুরু করেছিলেন। তিনি বিমিনি দ্বীপে পৌঁছানোর আশায় পুয়োর্টো রিকো থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন। রূপকথা অনুযায়ী তিনি ফাউনটেন অফ ইয়ুথ নামে এক অলৌকিক ঝরনার সন্ধানে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু, তিনি সেই জায়গায় এসে পৌঁছেছিলেন, যেটা বর্তমানে ফ্লোরিডা নামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রদেশ। অবশ্য, তিনি কখনোই সেই অস্তিত্বহীন ঝরনাটি খুঁজে পাননি।

বর্তমানে, মানুষ সাধারণত ৭০ বা ৮০ বছরের চেয়ে বেশি দিন বাঁচে না। যদিও বাইবেল এমন কিছু লোকের তালিকা দেয় যারা বহু বছর বেঁচে ছিল কিন্তু ২০০২ গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস বলে যে, সবচেয়ে বয়স্ক যে-ব্যক্তি বেঁচে ছিলেন, তার বয়স ছিল ১২২ বছর ও ১৬৪ দিন। (আদিপুস্তক ৫:৩-৩২) কিন্তু, জৈব নীতিশাস্ত্রবিদ জন হ্যারিস বলেছিলেন: “নতুন গবেষণা এখন এমন এক জগতের আভাস দেয় যেখানে বার্ধক্য—ও এমনকি মৃত্যুও—হয়তো আর অপরিহার্য থাকবে না।” একবিংশ শতাব্দীর কিছু গবেষক “বাস্তবিক পক্ষে অমরত্ব,” “২০৯৯ সালের মধ্যে মানুষের জীবনায়ু সীমাহীন,” “কোষগুলোর চিরস্থায়ী বিস্তারণ হওয়ার ক্ষমতা” এবং এই ধরনের অন্যান্য বিষয় সম্বন্ধে বলে।

মার্ক বেনেকে তার অনন্ত জীবনের স্বপ্ন (ইংরেজি) বইয়ে উল্লেখ করেন: “জীবন প্রক্রিয়ায় প্রায় পুরো শরীরটাই বেশ কয়েক বার নবীকৃত হয়। . . . প্রায় সাত বছর পর আমরা প্রকৃত অর্থে নতুন ব্যক্তি হই।” কিন্তু, এটা চিরকাল ধরে চলে না কারণ কোষগুলো পূর্ব নির্ধারিত সংখ্যা পর্যন্ত বিভাজিত হওয়ার পর বৃদ্ধি পাওয়া বন্ধ করে দেয়। তবে যদি তা না হতো, তা হলে বেনেকে বলেন, “মানব শরীর অনেক দীর্ঘ সময়—এমনকি অনন্তকাল—ধরে নিজে থেকেই পুনরুৎপন্ন হয়ে যেতে পারত।”

এ ছাড়া, মানুষের মস্তিষ্কের বিস্ময়কর ক্ষমতা সম্বন্ধে বিবেচনা করুন, যেটা হয়তো তুলনামূলকভাবে আমাদের সংক্ষিপ্ত জীবনে আমরা যতটা ক্ষমতা ব্যবহার করি সেটার চেয়ে আরও বহু গুণ বেশি। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা অনুযায়ী, মানুষের মস্তিষ্ক “একজন ব্যক্তি তার সারাজীবনে যতটা পরিমাণ ব্যবহার করে, তার চেয়ে বহুগুণ বেশি কার্যকররূপে তৈরি।” (১৯৭৬ সংস্করণ, খণ্ড ১২, পৃষ্ঠা ৯৯৮) ডেভিড এ. সুজার লেখা যেভাবে মস্তিষ্ক শেখে (ইংরেজি) বইটি উল্লেখ করে: “বাস্তবিকপক্ষে, তথ্য সংগ্রহ করার ব্যাপারে মস্তিষ্কের ক্ষমতা অসীম।”—পৃষ্ঠা ৭৮, দ্বিতীয় সংস্করণ, গ্রন্থস্বত্ব ২০০১.

আমরা যেকারণে মারা যাই, সেই বিষয়ে গবেষকরা কেন কোনো শারীরবৃত্তীয় কারণ খুঁজে পায় না? আর কেন মানুষের মস্তিষ্ক এতটা ক্ষমতাসম্পন্ন? এটা কি সম্ভব যে, আমাদের চিরকাল ধরে জ্ঞান অর্জন করে চলার মতো করে তৈরি করা হয়েছিল? কেন আমরা অনন্তজীবন সম্বন্ধে চিন্তা করতে সক্ষম?

বাইবেল বলে: “[ঈশ্বর] . . . আবার তাহাদের হৃদয়মধ্যে চিরকাল রাখিয়াছেন; তথাপি ঈশ্বর আদি অবধি শেষ পর্য্যন্ত যে সকল কার্য্য করেন, মনুষ্য তাহার তত্ত্ব বাহির করিতে পারে না।” (উপদেশক ৩:১১) এই কথাগুলো ইঙ্গিত দেয় যে, ঈশ্বর আমাদের মধ্যে চিরকাল বেঁচে থাকার ধারণা গেঁথে দিয়েছেন। সেই কারণে আমাদের সবসময় ঈশ্বর ও তাঁর কাজগুলো সম্বন্ধে শেখার জন্য কিছু না কিছু বিষয় থাকবে। আমরা যদি অগণিত কোটি কোটি বছর—হ্যাঁ, চিরকাল—বেঁচে থাকি, তা হলে আমরা সবসময়ই ঈশ্বরের সৃজনশীল কাজগুলো সম্বন্ধে আরও কিছু শিখতে পারব।

এ ছাড়া, যিশু খ্রিস্টের কথাগুলোও দেখায় যে, মানুষের চিরকাল বেঁচে থাকা সম্ভব। তিনি বলেছিলেন: “আর ইহাই অনন্ত জীবন যে, তাহারা তোমাকে, একমাত্র সত্যময় ঈশ্বরকে, এবং তুমি যাঁহাকে পাঠাইয়াছ, তাঁহাকে, যীশু খ্রীষ্টকে, জানিতে পায়।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) (যোহন ১৭:৩) আপনার সম্বন্ধে কী বলা যায়? আপনি কি চিরকাল বেঁচে থাকতে চান?

[৩ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

খোয়ান পনসে ডে লেয়ন ফাউনটেন অফ ইয়ুথ এর সন্ধান করেছিলেন

[সৌজন্যে]

পনসে ডে লেয়ন: Harper’s Encyclopædia of United States History