পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল
পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল
পুনরুত্থিত যিশু কেন থোমাকে বলেছিলেন, যেন তিনি তাঁকে স্পর্শ করেন অথচ এর আগে মগ্দলীনী মরিয়মকে তা করতে বারণ করেছিলেন?
বাইবেলের কিছু পুরনো অনুবাদ এই ধারণা দেয় যে, মগ্দলীনী মরিময়কে যিশু তাঁকে স্পর্শ না করার জন্য বলেছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, পবিত্র বাইবেল [o.v.] যিশুর কথাগুলোকে এভাবে অনুবাদ করে: “আমাকে স্পর্শ করিও না, কেননা এখনও আমি ঊদ্ধের্ব পিতার নিকটে যাই নাই।” (যোহন ২০:১৭) কিন্তু, যে-মূল গ্রিক ক্রিয়াপদকে সাধারণত “স্পর্শ” হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে, সেটার অর্থ “লেগে থাকা, শক্ত করে ধরে থাকা, চেপে ধরা, আঁকড়ে ধরা, ধরে রাখা”-ও বোঝায়। যুক্তিযুক্তভাবেই, মগ্দলীনী মরিয়ম যে তাঁকে কেবল স্পর্শ করবে, সেই বিষয়ে যিশু আপত্তি করেননি, কারণ তিনি অন্যান্য যে-মহিলারা গুহার নিকটে ছিল, তাদেরকে ‘তাঁহার চরণ ধরিতে’ দিয়েছিলেন।—মথি ২৮:৯.
অনেক আধুনিক অনুবাদ যেমন, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন এবং বাংলা জুবিলী বাইবেল এভাবে অনুবাদ করার মাধ্যমে যিশুর কথাগুলোর প্রকৃত অর্থ বুঝতে সাহায্য করে: “আমাকে ধরে রেখো না।” মগ্দলীনী মরিয়মকে যিশু কেন তা বলেছিলেন, যিনি অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এক সহযোগী ছিলেন?—লূক ৮:১-৩.
সম্ভবত, মগ্দলীনী মরিয়ম এই ভয় পেয়েছিলেন যে, যিশু শীঘ্রই তাদেরকে ছেড়ে স্বর্গ চলে যাচ্ছিলেন। তার প্রভুর সঙ্গে সঙ্গে থাকার প্রবল আকাঙ্ক্ষার দ্বারা পরিচালিত হয়ে তিনি যিশুকে আঁকড়ে ধরেছিলেন, তাঁকে যেতে দিচ্ছিলেন না। তিনি এখনই যাচ্ছেন না, সেই বিষয়ে মরিয়মকে আশ্বস্ত করার জন্য যিশু তাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন যেন তিনি তাঁকে ধরে না রাখেন, বরং তাঁকে যেতে দেন এবং তাঁর শিষ্যদের কাছে তাঁর পুনরুত্থানের সংবাদটা জানান।—যোহন ২০:১৭.
যিশু এবং থোমার মধ্যে যে-আলোচনা হয়েছিল, সেটা ছিল আলাদা। যিশু যখন কিছু শিষ্যকে দেখা দিয়েছিলেন, তখন থোমা সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। পরবর্তী সময়ে, এই কথা বলার মাধ্যমে থোমা যিশুর পুনরুত্থান নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন যে, যতক্ষণ না তিনি যিশুর হাতে প্রেকের ক্ষতচিহ্ন দেখেন এবং যিশুর বর্শাবিদ্ধ স্থানে হাত দেন, ততক্ষণ তিনি তা বিশ্বাস করবেন না। আট দিন পর, যিশু আবারও শিষ্যদের দেখা দেন। এই সময় থোমা উপস্থিত ছিলেন এবং যিশু তাকে তাঁর ক্ষত স্পর্শ করতে বলেছিলেন।—যোহন ২০:২৪-২৭.
তাই, মগ্দলীনী মরিয়মের ক্ষেত্রে যিশু, তাঁকে যেতে বাধা দেওয়ার ভুল আকাঙ্ক্ষার বিষয়টা নিয়ে কথা বলেছিলেন; থোমার ক্ষেত্রে যিশু এমন একজনকে সাহায্য করছিলেন, যার সন্দেহ ছিল। উভয় ক্ষেত্রেই যিশু যেভাবে কাজ করেছিলেন, তা করার উত্তম কারণ তাঁর ছিল।