সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

যিহোবা সবসময় যা ন্যায্য তা-ই করেন

যিহোবা সবসময় যা ন্যায্য তা-ই করেন

যিহোবা সবসময় যা ন্যায্য তা-ই করেন

“সদাপ্রভু আপনার সমস্ত পথে ধর্ম্মশীল।”—গীতসংহিতা ১৪৫:১৭.

১. কেউ যখন আপনার সম্বন্ধে ভুল উপসংহারে পৌঁছায়, তখন আপনার কেমন লাগে আর এই ধরনের একটা অভিজ্ঞতা থেকে আমরা কোন শিক্ষা পেতে পারি?

 কেউ কি কখনও আপনার সম্বন্ধে ভুল উপসংহারে পৌঁছেছে, হতে পারে সমস্ত বিষয় না জেনেই আপনার কাজ বা উদ্দেশ্যগুলো নিয়ে সন্দেহ করেছে? যদি তা-ই হয়, তা হলে সম্ভবত আপনি কষ্ট পেয়েছেন—আর সেটাই স্বাভাবিক। এই বিষয়টা থেকে আমরা এক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা পেতে পারি: আমরা যখন কোনো ঘটনার সমস্ত বিষয় না জানি, তখন তাড়াহুড়ো করে উপসংহারে পৌঁছানো এড়িয়ে চলাই হচ্ছে বিজ্ঞের কাজ।

২, ৩. বাইবেলের যে-বিবরণগুলোতে প্রত্যেকটা প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো যথেষ্ট বিস্তারিত বর্ণনা নেই, সেগুলো সম্বন্ধে কেউ কেউ কেমন প্রতিক্রিয়া দেখায়, অথচ যিহোবা সম্বন্ধে বাইবেল আমাদের কী জানায়?

যিহোবা ঈশ্বর সম্বন্ধে উপসংহারে পৌঁছানোর বিষয়টা যখন আসে, তখন আমাদের এই শিক্ষাটি মনে রাখা উচিত। কেন? কারণ বাইবেলে নির্দিষ্ট কিছু বিবরণ রয়েছে, যেগুলো প্রথম প্রথম কিছুটা দুর্বোধ্য বলে মনে হতে পারে। এই ঘটনাগুলোতে—হতে পারে ঈশ্বরের কিছু উপাসকদের কাজ বা ঈশ্বরের অতীত বিচার সম্বন্ধে—আমাদের সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো যথেষ্ট বিস্তারিত বর্ণনা না-ও থাকতে পারে। দুঃখের বিষয় যে, কেউ কেউ এই বিবরণগুলো নিয়ে আপত্তি তোলে, আদৌ ঈশ্বর ধার্মিক ও ন্যায়পরায়ণ কি না, এমনকি সেই বিষয়েও সন্দেহ করে থাকে। তা সত্ত্বেও, বাইবেল আমাদের বলে যে, “সদাপ্রভু আপনার সমস্ত পথে ধর্ম্মশীল।” (গীতসংহিতা ১৪৫:১৭) তাঁর বাক্য আমাদের এও আশ্বাস দেয় যে, তিনি “দুষ্টাচরণ করেন না।” (ইয়োব ৩৪:১২; গীতসংহিতা ৩৭:২৮) তাই একটু কল্পনা করুন যে, অন্যেরা যখন তাঁর সম্বন্ধে ভুল উপসংহারে পৌঁছায়, তখন তাঁর কেমন লাগে!

যিহোবার বিচারগুলোকে কেন আমাদের মেনে নেওয়া উচিত, সেই বিষয়ে আসুন আমরা পাঁচটা কারণ বিবেচনা করি। তারপর, সেই কারণগুলোর কথা মাথায় রেখে আমরা বাইবেলের দুটো ঘটনা পরীক্ষা করে দেখব, যেগুলো বোঝা হয়তো কারও কারও জন্য কঠিন বলে মনে হয়।

কেন যিহোবার বিচারগুলোকে মেনে নেব?

৪. ঈশ্বরের কাজগুলো বিবেচনা করার সময় কেন আমাদের বিনয়ী হওয়া উচিত? উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করুন।

প্রথমত, যেহেতু কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত সমস্ত বিষয় যিহোবা জানেন কিন্তু আমরা জানি না, তাই ঈশ্বরের কাজগুলো বিবেচনা করার সময় আমাদের বিনয়ী হওয়া উচিত। উদাহরণস্বরূপ: কল্পনা করুন যে, পক্ষপাতশূন্য রায় দেওয়ার ব্যাপারে সুপরিচিত একজন বিচারক আদালতের একটা মামলায় দণ্ডাদেশ দিয়েছেন। এমন কোনো ব্যক্তির সম্বন্ধে আপনি কেমন মনে করবেন, যিনি সমস্ত বিষয় না জেনেই বা জড়িত আইনগুলো প্রকৃতপক্ষে না বুঝেই বিচারকের রায়ের সমালোচনা করেন? একজন ব্যক্তির পক্ষে কোনো বিষয় পুরোপুরিভাবে না জেনে সেই সম্বন্ধে সমালোচনা করা হবে অজ্ঞানতা বা বোকামির কাজ। (হিতোপদেশ ১৮:১৩) আর সামান্য মানুষের পক্ষে ‘সমস্ত পৃথিবীর বিচারকর্ত্তার’ সমালোচনা করা আরও কত বেশি বোকামিই না হবে!—আদিপুস্তক ১৮:২৫.

৫. নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের ওপর ঈশ্বরের বিচারের দণ্ডাজ্ঞা সম্বন্ধে বাইবেলের বিবরণগুলো পড়ার সময় আমাদের কী ভুলে যাওয়া উচিত নয়?

ঈশ্বরের বিচারগুলো মেনে নেওয়ার দ্বিতীয় কারণটা হচ্ছে, মানুষের বৈসাদৃশ্যে ঈশ্বর হৃদয় পড়তে পারেন। (১ শমূয়েল ১৬:৭) তাঁর বাক্য জানায়: “আমি সদাপ্রভু অন্তঃকরণের অনুসন্ধান করি, আমি মর্ম্মের পরীক্ষা করি; আমি প্রত্যেক মনুষ্যকে আপন আপন আচরণানুসারে আপন আপন কর্ম্মের ফল দিয়া থাকি।” (যিরমিয় ১৭:১০) তাই, যখন আমরা নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের ওপর ঈশ্বরের বিচার সম্বন্ধে বাইবেলের বিবরণগুলো পড়ি, তখন আসুন আমরা ভুলে না যাই যে তাঁর সর্বদর্শী চোখ সেই গুপ্ত চিন্তা, উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যগুলো দেখে থাকে, যা তাঁর বাক্যে লিপিবদ্ধ করা হয়নি।—১ বংশাবলি ২৮:৯.

৬, ৭. (ক) কীভাবে যিহোবা দেখিয়েছেন যে, এমনকি ব্যক্তিগতভাবে প্রচুর মূল্য দিতে হলেও তিনি তাঁর ন্যায্য ও ধার্মিক মানগুলো মেনে চলেন? (খ) আমাদের কী মনে রাখা উচিত যদি আমরা বাইবেল থেকে এমন কিছু পড়ি যা আমাদের এই বিষয়ে সন্দেহ করতে পরিচালিত করে যে, আদৌ ঈশ্বর ন্যায়সংগত বা ন্যায্য উপায়ে কাজ করেছেন কি না?

যিহোবার বিচারগুলোকে মেনে নেওয়ার তৃতীয় কারণটা লক্ষ করুন: তিনি তাঁর ধার্মিক মানগুলোর ব্যাপারে অটল থাকেন, এমনকি এর জন্য ব্যক্তিগতভাবে প্রচুর মূল্য দিতে হলেও। একটা উদাহরণ বিবেচনা করুন। বাধ্য মানবজাতিকে পাপ ও মৃত্যু থেকে উদ্ধার করার জন্য তাঁর পুত্রকে মুক্তির মূল্য হিসেবে প্রদান করে যিহোবা তাঁর ন্যায্য ও ধার্মিক মানগুলোকে পূরণ করেছিলেন। (রোমীয় ৫:১৮, ১৯) তা সত্ত্বেও, তাঁর প্রিয় পুত্রকে একটা যাতনাদণ্ডে কষ্ট পেতে ও মৃত্যুবরণ করতে দেখা নিশ্চয়ই যিহোবাকে সবচেয়ে বেশি ব্যথিত করেছিল। ঈশ্বর সম্বন্ধে এটি আমাদের কী বলে? “খ্রীষ্ট যীশুতে প্রাপ্য মুক্তি” বা মুক্তির মূল্য সম্বন্ধে বাইবেল জানায়: “যেন [ঈশ্বর] আপন ধার্ম্মিকতা দেখান।” (রোমীয় ৩:২৪-২৬) রোমীয় ৩:২৫ পদ সম্বন্ধে আরেকটা অনুবাদ জানায়: “ঈশ্বর এই কাজের মাধ্যমে দেখান যে তিনি সর্বদাই যা ন্যায্য তাই করেন।” (বাংলা ইজি-টু-রিড ভারসন) হ্যাঁ, মুক্তির মূল্য জোগানোর জন্য যিহোবা যতখানি পর্যন্ত যেতে ইচ্ছুক তা দেখায়, “যা ন্যায্য” সেটার প্রতি তাঁর সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা রয়েছে।

অতএব, আমরা যদি বাইবেলে এমন কিছু পড়ি যা কাউকে কাউকে এইরকম সন্দেহ করতে পরিচালিত করে যে, আদৌ ঈশ্বর ন্যায়সংগত বা ন্যায্য উপায়ে কাজ করেছেন কি না, তা হলে আমাদের এই বিষয়টা মনে রাখা উচিত: ধার্মিকতা ও ন্যায়বিচারের মানগুলোর প্রতি তাঁর আনুগত্যের কারণে যিহোবা তাঁর নিজ পুত্রকে বেদনাদায়ক মৃত্যুবরণ করা থেকে নিষ্কৃতি দেননি। অন্যান্য বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে কি তিনি সেই মানগুলোকে লঙ্ঘন করবেন? সত্য বিষয়টা হচ্ছে, যিহোবা কখনোই তাঁর ধার্মিক ও ন্যায়সংগত মানগুলোকে লঙ্ঘন করেন না। তাই, যিহোবা যে সবসময় যা ন্যায্য ও উপযুক্ত তা-ই করেন, সেই বিষয়ে দৃঢ়প্রত্যয়ী হওয়ার প্রচুর কারণ আমাদের রয়েছে।—ইয়োব ৩৭:২৩.

৮. যিহোবার মধ্যে কোনো না কোনোভাবে ন্যায়বিচার ও ধার্মিকতার ঘাটতি রয়েছে, এইরকম চিন্তা করা কেন মানুষের জন্য অসংগতিপূর্ণ হবে?

যিহোবার বিচারগুলোকে আমাদের কেন মেনে নেওয়া উচিত, তার চতুর্থ কারণটা বিবেচনা করুন: যিহোবা মানুষকে তাঁর প্রতিমূর্তিতে নির্মাণ করেছেন। (আদিপুস্তক ১:২৭) তাই মানুষকে ঈশ্বরের মতো গুণাবলি দেওয়া হয়েছে, যেগুলোর মধ্যে ন্যায়বিচার ও ধার্মিকতার বোধশক্তিও রয়েছে। ন্যায়বিচার ও ধার্মিকতার প্রতি আমাদের বোধশক্তি যদি আমাদের এইরকম মনে করায় যে, যিহোবার মধ্যে কোনো না কোনোভাবে সেই গুণগুলোর ঘাটতি রয়েছে, তা হলে তা অসংগতিপূর্ণ হবে। বাইবেলের নির্দিষ্ট কোনো ঘটনা যদি আমাদের উদ্বিগ্ন করে, তা হলে আমাদের মনে রাখতে হবে যে, উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া আমাদের পাপের কারণে কোনটা ন্যায়সংগত ও ন্যায্য, সেই বিষয়ে আমাদের বোধশক্তি ত্রুটিপূর্ণ। আমরা যাঁর প্রতিমূর্তিতে নির্মিত হয়েছি, সেই যিহোবা ঈশ্বর হলেন ন্যায়বিচার ও ধার্মিকতায় সিদ্ধ। (দ্বিতীয় বিবরণ ৩২:৪) মানুষরা ঈশ্বরের চেয়ে অধিক ন্যায়পরায়ণ ও ধার্মিক হতে পারে, তা চিন্তা করাই অসম্ভব!—রোমীয় ৩:৪, ৫; ৯:১৪.

৯, ১০. কেন যিহোবা মানুষের কাছে তাঁর কাজগুলো ব্যাখ্যা করতে বা এগুলো সঠিক কি না, তার প্রমাণ দিতে বাধ্য নন?

যিহোবার বিচারগুলোকে মেনে নেওয়ার পঞ্চম কারণ হল যে, তিনি “সমস্ত পৃথিবীর উপরে পরাৎপর।” (গীতসংহিতা ৮৩:১৮) প্রকৃত অর্থে, তিনি মানুষের কাছে তাঁর কাজগুলো ব্যাখ্যা করতে বা এগুলো সঠিক কি না, তার প্রমাণ দিতে বাধ্য নন। তিনি হচ্ছেন মহান কুম্ভকার আর আমরা হচ্ছি সেই মৃৎপিণ্ডের মতো, যেটাকে আকার দিয়ে পাত্রে পরিণত করা হয়েছে যাতে তিনি আমাদের সঙ্গে তাঁর ইচ্ছামতো আচরণ করেন। (রোমীয় ৯:১৯-২১) আমরা—তাঁর হাতের মৃন্ময় পাত্র—কে যে তাঁর সিদ্ধান্ত ও কাজগুলো নিয়ে প্রশ্ন তুলব? কুলপতি ইয়োব যখন মানবজাতির সঙ্গে ঈশ্বরের আচরণ সম্বন্ধে ভুল বুঝেছিলেন, তখন যিহোবা তাকে এই কথা জিজ্ঞেস করে সংশোধন করে দিয়েছিলেন: “তুমি কি সত্যই আমার বিচার অগ্রাহ্য করিবে? নিজে ধার্ম্মিক হইবার জন্য আমাকে দোষী করিবে?” তিনি কোনোকিছু না বুঝেই কথা বলেছেন, তা বুঝতে পেরে ইয়োব পরে অনুতপ্ত হয়েছিলেন। (ইয়োব ৪০:৮; ৪২:৬) আমরা যেন কখনও ঈশ্বরের দোষ ধরার মতো ভুল না করি!

১০ এটা স্পষ্ট যে, আমাদের এইরকম মনে করার যুক্তিযুক্ত কারণগুলো রয়েছে যে, যিহোবা সবসময় যা ন্যায্য তা-ই করেন। যিহোবার পথ বোঝার জন্য এই বিষয়টিকে ভিত্তি করে, আসুন আমরা বাইবেল থেকে দুটো ঘটনা পরীক্ষা করে দেখি যেগুলো কারও কারও কাছে দুর্বোধ্য বলে মনে হতে পারে। প্রথমটার সঙ্গে ঈশ্বরের একজন উপাসকের কাজ এবং অন্যটাতে, স্বয়ং যিহোবার বিচারের দণ্ডাজ্ঞা জড়িত।

কেন লোট তার মেয়েদের ক্রুদ্ধ জনতার হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন?

১১, ১২. (ক) ঈশ্বর যখন মানুষের রূপ ধারণকারী দুজন দূতকে সদোমে পাঠিয়েছিলেন, তখন কী হয়েছিল তা বর্ণনা করুন। (খ) এই বিবরণ কারও কারও মনে কোন প্রশ্নগুলো জাগিয়ে তুলেছে?

১১ ঈশ্বর যখন মানুষের রূপ ধারণকারী দুজন দূতকে সদোমে পাঠিয়েছিলেন, তখন কী হয়েছিল সেই সম্বন্ধে আমরা আদিপুস্তক ১৯ অধ্যায়ে পাই। লোট সেই অতিথিদের তার বাড়িতে থাকার জন্য আন্তরিকভাবে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু, সেই রাতে নগরের পুরুষদের এক জনতা সেই ঘরকে ঘিরে ফেলেছিল এবং দাবি করেছিল যে, অনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য অতিথিদের যেন বাইরে তাদের কাছে নিয়ে আসা হয়। লোট জনতার সঙ্গে যুক্তি করার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। তার অতিথিদের রক্ষা করার চেষ্টায় লোট বলেছিলেন: “ভাই সকল, বিনয় করি, এমন কুব্যবহার করিও না। দেখ, পুরুষের পরিচয় অপ্রাপ্তা আমার দুইটী কন্যা আছে, তাহাদিগকে তোমাদের নিকটে আনি তোমাদের দৃষ্টিতে যাহা ভাল, তাহা কর, কিন্তু সেই ব্যক্তিদের প্রতি কিছুই করিও না, কেননা এই নিমিত্তে তাঁহারা আমার গৃহের ছায়া আশ্রয় করিলেন।” সেই জনতা কথা শোনেনি এবং দরজা প্রায় ভেঙে ফেলতে উদ্যত হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত, অতিথি স্বর্গদূতেরা সেই ক্ষিপ্ত জনতাকে অন্ধ করে দিয়েছিল।—আদিপুস্তক ১৯:১-১১.

১২ স্বাভাবিকভাবেই, এই বিবরণ কারও কারও মনে প্রশ্ন জাগিয়ে তুলেছে। তারা ভেবে থাকে: ‘কীভাবে লোট তার অতিথিদের রক্ষা করার জন্য তার মেয়েদেরকে কামলালসাপূর্ণ এক জনতার হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিতে পারলেন? তিনি কি এখানে অনুচিত কাজ করেননি, এমনকি কাপুরুষোচিত আচরণ দেখাননি?’ এই বিবরণের পরিপ্রেক্ষিতে, কেন ঈশ্বর লোটকে একজন “ধার্ম্মিক” ব্যক্তি বলে সম্বোধন করতে পিতরকে অনুপ্রাণিত করবেন? লোট কি ঈশ্বরের অনুমোদন নিয়ে কাজ করেছিলেন? (২ পিতর ২:৭, ৮) আসুন আমরা এই বিষয়ের ওপর যুক্তি করি, যাতে কোনো ভুল উপসংহারে না পৌঁছাই।

১৩, ১৪. (ক) লোটের কাজগুলো সম্বন্ধে বাইবেলের বিবরণ থেকে কোন বিষয়টা লক্ষ করা উচিত? (খ) কী দেখায় যে, লোট কোনো কাপুরুষোচিত উপায়ে কাজ করেননি?

১৩ প্রথমে এটা লক্ষ করা উচিত যে, লোটের কাজগুলোকে অনুমোদন বা নিন্দা করার পরিবর্তে বাইবেল সাধারণভাবে বর্ণনা করে যে, কী ঘটেছিল। এ ছাড়া বাইবেল আমাদের জানায় না যে, লোট কী ভাবছিলেন বা কী তাকে এভাবে কাজ করতে পরিচালিত করেছিল। তিনি যখন ‘ধার্ম্মিক লোকের পুনরুত্থানে’ আসবেন, হতে পারে তখন তিনি বিস্তারিত বিষয়গুলো প্রকাশ করবেন।—প্রেরিত ২৪:১৫.

১৪ লোট কখনোই একজন কাপুরুষ ছিলেন না। তিনি এক কঠিন অবস্থায় পড়েছিলেন। অতিথিরা তার গৃহের “ছায়া আশ্রয় করিলেন” বলার দ্বারা লোট ইঙ্গিত করেছিলেন যে, তিনি তাদের সুরক্ষা ও আশ্রয় জোগানোর ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা অনুভব করেছিলেন। কিন্তু তা সহজ ছিল না। যিহুদি ইতিহাসবেত্তা জোসিফাস রিপোর্ট করেন যে, সদোমের লোকেরা “মানুষের প্রতি অন্যায়পূর্ণ এবং ঈশ্বরের প্রতি অধার্মিক ছিল . . . তারা অপরিচিতদের ঘৃণা করত এবং সদোমীয় অভ্যাসগুলোর দ্বারা নিজেদের কলুষিত করেছিল।” তা সত্ত্বেও, লোট কখনও ঘৃণাপূর্ণ জনতা দেখে সংকুচিত হয়ে পড়েননি। এর পরিবর্তে, তিনি বাইরে গিয়েছিলেন এবং সেই ক্রুদ্ধ লোকেদের সঙ্গে যুক্তি করেছিলেন। তিনি এমনকি ‘আপনার পশ্চাৎ কবাট বন্ধ করিলেন।’—আদিপুস্তক ১৯:৬.

১৫. কেন বলা যেতে পারে যে, লোট হয়তো বিশ্বাস অনুযায়ী কাজ করেছিলেন?

১৫ ‘তবুও,’ কেউ কেউ হয়তো জিজ্ঞেস করতে পারে, ‘কেন লোট তার মেয়েদের সেই জনতার হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন?’ তার উদ্দেশ্যগুলো খারাপ ছিল, এইরকম ধরে নেওয়ার পরিবর্তে কিছু সম্ভাবনা নিয়ে বিবেচনা করুন না কেন? সবচেয়ে প্রথম বিষয়টা হচ্ছে, লোট নিশ্চয়ই বিশ্বাস অনুযায়ী কাজ করেছিলেন। কীভাবে? নিঃসন্দেহে লোট জানতেন যে, কীভাবে যিহোবা তার কাকা অব্রাহামের স্ত্রী সারাকে রক্ষা করেছিলেন। মনে করে দেখুন যে, সারা যেহেতু খুব সুন্দরী ছিলেন, তাই অব্রাহাম সারাকে বলেছিলেন তিনি যেন অব্রাহামকে তার ভাই বলে পরিচয় দেন, পাছে অন্যেরা সারাকে তার কাছ থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাকে হত্যা করে। * পরবর্তী সময়ে, সারাকে ফরৌণের গৃহে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু যিহোবা বিষয়টাতে হস্তক্ষেপ করেছিলেন, সারাকে ভ্রষ্ট করা থেকে ফরৌণকে বিরত করেছিলেন। (আদিপুস্তক ১২:১১-২০) সম্ভবত লোটের এই বিশ্বাস ছিল যে, তার মেয়েদেরও একইভাবে রক্ষা করা হবে। লক্ষণীয় বিষয়টা হচ্ছে, যিহোবা তাঁর দূতেদের মাধ্যমে সত্যিই হস্তক্ষেপ করেছিলেন এবং যুবতীরা নিরাপদে ছিল।

১৬, ১৭. (ক) কোন উপায়ে হয়তো লোট সদোমের লোকেদের বিহ্বল বা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিলেন? (খ) লোটের যুক্তি যা-ই হোক না কেন, আমরা কোন বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারি?

১৬ আরেকটা সম্ভাবনা বিবেচনা করুন। লোট হয়তো লোকেদের বিহ্বল বা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। তিনি হয়তো মনে করেছিলেন যে, তার মেয়েদেরকে জনতা চাইবে না কারণ সদোমীয়রা সমকামী কামলালসাপূর্ণ ছিল। (যিহূদা ৭) এ ছাড়া, সেই যুবতীরা নগরের পুরুষদের বাগদত্তা ছিল, তাই তার ভাবী জামাতাদের আত্মীয়, বন্ধুবান্ধব বা ব্যবসায়িক সহযোগীরাই হয়তো সেই জনতার মধ্যে ছিল। (আদিপুস্তক ১৯:১৪) লোট হয়তো আশা করেছিলেন যে, এই ধরনের সম্পর্কের কারণে সেই জনতার মধ্যে কিছু লোক হয়তো তার মেয়েদের পক্ষ হয়ে কথা বলবে। তাই বিভক্ত জনতা ততটা বিপদজনক হবে না। *

১৭ লোটের যুক্তি ও উদ্দেশ্যগুলো যা-ই হোক না কেন, আমরা এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারি: যেহেতু যিহোবা সবসময় যা ন্যায্য তা-ই করেন, তাই লোটকে একজন “ধার্ম্মিক” ব্যক্তি হিসেবে দেখার পিছনেও তাঁর নিশ্চয়ই উত্তম কারণ রয়েছে। আর সদোমের ক্ষিপ্ত জনতার কাজগুলো বিচার করলে, এই ব্যাপারে কি কোনো সন্দেহ থাকতে পারে যে, যিহোবা সেই দুষ্ট নগরের অধিবাসীদের ওপর বিচার আনার ব্যাপারে পুরোপুরি ন্যায্য ছিলেন?—আদিপুস্তক ১৯:২৩-২৫.

কেন যিহোবা উষকে আঘাত করে মৃত্যু ঘটিয়েছিলেন?

১৮. (ক) দায়ূদ যখন সিন্দুকটি যিরূশালেমে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা করেছিলেন, তখন কী হয়েছিল? (খ) এই বিবরণ কোন প্রশ্ন উত্থাপন করে?

১৮ আরেকটা বিবরণ যা হয়তো কারও কারও কাছে দুর্বোধ্য বলে মনে হতে পারে, সেটার সঙ্গে নিয়ম-সিন্দুক যিরূশালেমে ফিরিয়ে নিয়ে আসার বিষয়ে দায়ূদের প্রচেষ্টা জড়িত। নিয়ম-সিন্দুকটি একটা শকটের মধ্যে স্থাপন করা হয়েছিল, যেটিকে উষ ও তার ভাই পরিচালনা দিচ্ছিল। বাইবেল বলে: “তাহারা নাখোনের খামার পর্য্যন্ত গেলে উষ হস্ত বিস্তার করিয়া ঈশ্বরের সিন্দুক ধরিল, কেননা বলদযুগল পিছলাইয়া পড়িয়াছিল। তখন উষের প্রতি সদাপ্রভুর ক্রোধ প্রজ্বলিত হইল, ও তাহার হঠকারিতা প্রযুক্ত ঈশ্বর সেই স্থানে তাহাকে আঘাত করিলেন; তাহাতে সে তথায় ঈশ্বরের সিন্দুকের পার্শ্বে মরিয়া গেল।” কয়েক মাস পর, দ্বিতীয় প্রচেষ্টা সফল হয়েছিল, যখন সেই নিয়ম-সিন্দুক ঈশ্বরের নির্দেশিত উপায়ে অর্থাৎ কহাতীয় লেবীয়দের কাঁধে বহন করে আনা হয়েছিল। (২ শমূয়েল ৬:৬, ৭; গণনাপুস্তক ৪:১৫; ৭:৯; ১ বংশাবলি ১৫:১-১৪) কেউ কেউ হয়তো জিজ্ঞেস করতে পারে: ‘কেন যিহোবা এত কড়াকড়িভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন? উষ তো শুধুমাত্র সিন্দুকটিকে রক্ষা করার চেষ্টাই করছিলেন।’ আমরা যেন কোনো ভুল উপসংহারে না পৌঁছাই, তাই আমাদের কিছু সাহায্যকারী বিস্তারিত বিষয় লক্ষ করা উচিত।

১৯. কেন যিহোবার পক্ষে অন্যায়ভাবে কাজ করা অসম্ভব?

১৯ আমাদের মনে রাখা দরকার যে, যিহোবার পক্ষে অন্যায়ভাবে কাজ করা অসম্ভব। (ইয়োব ৩৪:১০) তাঁর পক্ষে এমন কিছু করা প্রেমময় হবে না আর আমরা আমাদের পুরো বাইবেল অধ্যয়ন থেকে জানি যে, “ঈশ্বর প্রেম।” (১ যোহন ৪:৮) অধিকন্তু, শাস্ত্র আমাদের জানায় যে, “ধর্ম্মশীলতা ও ন্যায়বিচার [সদাপ্রভুর] সিংহাসনের ভিত্তিমূল।” (গীতসংহিতা ৮৯:১৪) তা হলে, কীভাবে যিহোবা কখনও অন্যায়ভাবে কাজ করতে পারতেন? যদি তিনি তা করতেন, তা হলে তিনিই তাঁর সার্বভৌমত্বের ভিত্তি নষ্ট করে ফেলতেন।

২০. কোন কারণগুলোর জন্য সিন্দুক সম্বন্ধে বিধিনিষেধগুলো উষের জানা উচিত ছিল?

২০ মনে রাখবেন যে, এই সম্বন্ধে উষের আরও ভালভাবে জানা উচিত ছিল। সিন্দুকটি যিহোবার উপস্থিতিকে প্রতিনিধিত্ব করত। ব্যবস্থায় নির্দিষ্টভাবে বলা ছিল যে, অনধিকারসম্পন্ন ব্যক্তিরা এটি স্পর্শ করবে না, সুস্পষ্টভাবে সাবধানবাণী ছিল যে, লঙ্ঘনকারীদের শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড। (গণনাপুস্তক ৪:১৮-২০; ৭:৮৯) তাই, সেই পবিত্র সিন্দুক স্থানান্তরের কাজটা হালকাভাবে নেওয়ার মতো বিষয় ছিল না। উষ (যদিও যাজক ছিলেন না) স্পষ্টতই একজন লেবীয় ছিলেন, তাই তার ব্যবস্থা সম্বন্ধে জানা উচিত ছিল। তা ছাড়া, বেশ কিছু বছর আগে সিন্দুকটি নিরাপদে রাখার জন্য তার পিতার গৃহে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। (১ শমূয়েল ৬:২০–৭:১) এটা সেখানে প্রায় ৭০ বছর ছিল, যতদিন না দায়ূদ সেটি স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তাই, একেবারে ছেলেবেলা থেকেই উষ সম্ভবত সিন্দুক সম্বন্ধীয় নিয়মগুলোর বিষয়ে জানতেন।

২১. উষের ক্ষেত্রে এটা স্মরণে রাখা কেন গুরুত্বপূর্ণ যে, যিহোবা হৃদয়ের উদ্দেশ্যগুলোকে দেখেন?

২১ আগে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, যিহোবা হৃদয় পড়তে পারেন। যেহেতু তাঁর বাক্য উষের কাজকে “হঠকারিতা” বলে অভিহিত করে, তাই যিহোবা নিশ্চয়ই কোনো স্বার্থপর উদ্দেশ্য দেখতে পেয়েছিলেন, যা সেই বিবরণে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করা হয়নি। এটা কি হতে পারে যে, উষ এক অহংকারী বা ধৃষ্ট ব্যক্তি ছিলেন, যিনি বৈধ সীমাগুলোকে লঙ্ঘন করতে উদ্যত হয়েছিলেন? (হিতোপদেশ ১১:২) তার পরিবার যেটিকে গোপনে রক্ষা করছিল সেই নিয়ম-সিন্দুকটিকে বহন করার সময় প্রকাশ্যে পরিচালনা দেওয়া কি তার মধ্যে আত্মগৌরবের অনুভূতি এনে দিয়েছিল? (হিতোপদেশ ৮:১৩) উষের কি এতটাই অবিশ্বাস ছিল যে তিনি ভেবেছিলেন যিহোবার হাত এতটাই সঙ্কুচিত যে, তাঁর উপস্থিতির প্রতীক সেই পবিত্র সিন্দুককে তিনি রক্ষা করতে পারবেন না? বিষয়টা যা-ই হোক না কেন, আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে, যিহোবা তা-ই করেছিলেন যা ন্যায্য ছিল। সম্ভবত তিনি উষের হৃদয়ে এমন কিছু দেখেছিলেন, যা তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে বিচার করতে পরিচালিত করেছিল।—হিতোপদেশ ২১:২.

আস্থার এক সুদৃঢ় ভিত্তি

২২. যিহোবার বাক্য যে মাঝে মাঝে নির্দিষ্ট কিছু বর্ণনা বাদ দেয়, তাতে যিহোবার অতুলনীয় প্রজ্ঞা কীভাবে দেখা যায়?

২২ যিহোবার বাক্য যে মাঝে মাঝে নির্দিষ্ট কিছু বর্ণনা বাদ দেয়, তাতে যিহোবার অতুলনীয় প্রজ্ঞা দেখা যায়। এর মাধ্যমে যিহোবা আমাদের একটা সুযোগ দেন, যাতে আমরা দেখাতে পারি যে আমরা তাঁর ওপর নির্ভর করি। আমরা যা বিবেচনা করেছি সেই পরিপ্রেক্ষিতে এটা কি স্পষ্ট নয় যে, যিহোবার বিচারগুলোকে মেনে নেওয়ার যুক্তিযুক্ত কারণগুলো আমাদের রয়েছে? হ্যাঁ, আমরা যখন অকৃত্রিম হৃদয় ও খোলা মন নিয়ে তাঁর বাক্য অধ্যয়ন করি, তখন আমরা এই বিষয়ে দৃঢ়প্রত্যয়ী হওয়ার মতো যথেষ্ট জ্ঞান লাভ করি যে, যিহোবা সবসময় যা ন্যায়সংগত ও ন্যায্য তা-ই করেন। তাই, বাইবেলের কিছু বিবরণ যদি সেই প্রশ্নগুলো উত্থাপন করে যেগুলোর সুস্পষ্ট উত্তর আমরা সঙ্গে সঙ্গে খুঁজে পেতে পারি না, তখন আসুন আমরা পূর্ণ আস্থা রাখি যে, যিহোবা যা কিছু করেছিলেন, সেগুলো ন্যায্যই ছিল।

২৩. যিহোবার ভবিষ্যৎ কাজগুলো সম্বন্ধে আমরা কোন আস্থা রাখতে পারি?

২৩ যিহোবার ভবিষ্যৎ কাজগুলোর বিষয়েও আমরা একইরকম আস্থা রাখতে পারি। তাই, আমরা আশ্বাস পেতে পারি যে, আসন্ন মহাক্লেশে যখন তিনি বিচারের দণ্ডাজ্ঞা আনবেন, তখন তিনি “দুষ্টের সহিত ধার্ম্মিককেও সংহার করিবেন” না। (আদিপুস্তক ১৮:২৩) ধার্মিকতা ও ন্যায়বিচারের প্রতি তাঁর ভালবাসা কখনও তাঁকে তা করতে দেবে না। আমরা এই বিষয়েও পূর্ণ আস্থা রাখতে পারি যে, আসন্ন নতুন জগতে তিনি আমাদের সমস্ত প্রয়োজন যথাসম্ভব সর্বোত্তম উপায়ে পূর্ণ করবেন।—গীতসংহিতা ১৪৫:১৬.

[পাদটীকাগুলো]

^ অব্রাহামের ভয় যুক্তিযুক্ত ছিল কারণ এক প্রাচীন প্যাপিরাস একজন ফরৌণ সম্বন্ধে বলে, যিনি সশস্ত্র লোকেদের আদেশ দিয়েছিলেন তারা যেন একজন সুন্দরী স্ত্রীলোককে বন্দি করে নিয়ে আসে এবং তার স্বামীকে হত্যা করে।

^ অতিরিক্ত আলোচনার জন্য ১৯৭৯ সালের ১লা ডিসেম্বর প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) পত্রিকার ৩১ পৃষ্ঠা দেখুন।

আপনার কি মনে আছে?

• কোন কারণগুলোর জন্য যিহোবার বিচারগুলোকে আমাদের মেনে নেওয়া উচিত?

• লোট যে তার মেয়েদের ক্রুদ্ধ জনতার হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, সেই সম্বন্ধে ভুল উপসংহারে পৌঁছানো এড়িয়ে চলার জন্য কী আমাদের সাহায্য করতে পারে?

• কোন বিষয়গুলো আমাদের বুঝতে সাহায্য করতে পারে যে, কেন যিহোবা উষকে আঘাত করে মৃত্যু ঘটিয়েছিলেন?

• যিহোবার ভবিষ্যৎ কাজগুলো সম্বন্ধে আমরা কোন আস্থা রাখতে পারি?

[অধ্যয়ন প্রশ্নাবলি]