সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

শান্তি স্থাপনের উপকারগুলো

শান্তি স্থাপনের উপকারগুলো

শান্তি স্থাপনের উপকারগুলো

 এড মৃত্যুশয্যায় ছিলেন আর বিল তাকে ঘৃণা করতেন। বিশ বছর আগে এডের এক সিদ্ধান্তের কারণে বিলকে তার চাকরি হারাতে হয় আর সেটাই এক সময়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বকে ভেঙে দেয়। এখন এড দুঃখ প্রকাশের চেষ্টা করেন, যাতে তিনি শান্তিতে মারা যেতে পারেন। কিন্তু, বিল তার কথা শুনতে অস্বীকার করেন।

এর প্রায় ত্রিশ বছর পর বিল মৃত্যুর মুখে থাকার সময় ব্যাখ্যা করেছিলেন যে, কেন তিনি ক্ষমা করেননি। “এড তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুর প্রতি যা করেছিল, সেটা সে চাইলে না-ও করতে পারত। বিশ বছর পর আমি পুনরায় বন্ধুত্ব স্থাপন করতে চাইনি। . . . আমি যেভাবে চিন্তা করেছিলাম সেটা হয়তো ভুল ছিল কিন্তু আমি এমনই মনে করেছিলাম।” *

ব্যক্তিগত মতভেদগুলো সচরাচর এই ধরনের দুঃখজনক পরিণতি নিয়ে আসে না, তবে এগুলো প্রায়ই লোকেদের কষ্ট দেয় বা তাদের মধ্যে তিক্ত অনুভূতি সৃষ্টি করে। এমন একজনের বিষয়ে চিন্তা করুন যিনি এডের মতো অনুভব করেন। এই ধরনের একজন ব্যক্তি যখন বুঝতে পারেন যে, তার সিদ্ধান্ত ক্ষতির কারণ হয়েছে, তখন তিনি হয়তো এক দোষী বিবেক নিয়ে বেঁচে থাকেন আর হারানোর চরম অনুভূতি তাকে কুরে কুরে খায়। তবে যখন তিনি চিন্তা করেন যে, তার আঘাতপ্রাপ্ত বন্ধু কীভাবে তাদের বন্ধুত্বকে বর্জ্যের মতো বাতিল করেছে, তখন তিনি কষ্ট পান।

কিন্তু যিনি বিলের মতো অনুভব করেন, তিনি নিজেকে একজন নিরীহ শিকার হিসেবে মনে করেন আর খুবই তিক্ত ও রাগান্বিত হয়ে উঠতে পারেন। তার দৃষ্টিতে তার প্রাক্তন বন্ধু ইচ্ছা করেই কাজটা করেছে এবং সম্ভবত ক্ষতি করার পিছনে উদ্দেশ্য ছিল। যখনই দুজন ব্যক্তির মধ্যে মতভেদ হয়, তখন প্রত্যেকে নিজের বিষয়ে নিশ্চিত থাকে যে, তিনি ঠিক এবং সমস্ত দোষ অন্য জনের। এভাবে বলতে গেলে দুজন প্রাক্তন বন্ধুর মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়।

তারা নীরব অস্ত্রের সাহায্যে বিবাদ করে—একজন কাছে আসলে, অন্যজন মুখ ঘুরিয়ে চলে যায় আর কোনো দলের মধ্যে যখন তাদের দেখা হয়, তখন তারা একে অপরকে এড়িয়ে চলে। দূর থেকে তারা আড় চোখে অথবা নিস্পৃহভাবে, ঘৃণাপূর্ণ জ্বলন্ত দৃষ্টিতে একে অন্যকে দেখে। তারা যখনই কথা বলে, তখন রূঢ় ভাষা ব্যবহার করে বা অপমানজনকভাবে কথা বলে, যা অনেকটা ছুরির মতো কাটে।

তবে, যদিও তাদেরকে একে অপরের সম্পূর্ণ বিরোধী বলে মনে হয়, তবুও তারা সম্ভবত কিছু বিষয়ে একমত পোষণ করে থাকে। তারা হয়তো স্বীকার করে যে, তাদের মধ্যে গুরুতর সমস্যাগুলো রয়েছে এবং এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বকে নষ্ট করে দেওয়া দুঃখজনক। সম্ভবত প্রত্যেকেই সম্পর্কের তিক্ততার বেদনা অনুভব করে থাকে এবং উভয়েই জানে যে এর নিরাময়ের জন্য কিছু করা উচিত। কিন্তু, ভাঙা সম্পর্ক জোড়া দেওয়ার ও শান্তি স্থাপনের পদক্ষেপ কে প্রথমে নেবে? কারোরই সেই ইচ্ছা নেই।

দুই হাজার বছর আগে যিশু খ্রিস্টের প্রেরিতরা কখনও কখনও প্রচণ্ড তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিল। (মার্ক ১০:৩৫-৪১; লূক ৯:৪৬; ২২:২৪) একসময় তাদের এই ধরনের এক কলহের পর যিশু জিজ্ঞেস করেছিলেন: “পথে তোমরা কোন্‌ বিষয়ে তর্কবিতর্ক করিতেছিলে?” লজ্জায় চুপ থেকে তারা কেউই উত্তর দেয়নি। (মার্ক ৯:৩৩, ৩৪) যিশুর শিক্ষাগুলো তাদেরকে মিটমাট করার জন্য সাহায্য করেছিল। তাঁর এবং তাঁর কিছু শিষ্যের পরামর্শ লোকেদেরকে দ্বন্দ্বগুলোর সমাধান ও ভাঙা বন্ধুত্ব পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে চলেছে। আসুন দেখি, কীভাবে।

শান্তি স্থাপনের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করুন

“আমি ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে চাই না। আমি তার মুখ আর কখনও দেখতে চাই না।” যদি আপনি কারও সম্বন্ধে এই ধরনের কথা বলে থাকেন, তা হলে আপনাকেই পদক্ষেপ নিতে হবে যেমন নীচে দেওয়া বাইবেলের এই পদগুলো দেখায়।

যিশু শিখিয়েছিলেন: “অতএব তুমি যখন যজ্ঞবেদির নিকটে আপন নৈবেদ্য উৎসর্গ করিতেছ, তখন সেই স্থানে যদি মনে পড়ে যে, তোমার বিরুদ্ধে তোমার ভ্রাতার কোন কথা আছে, তবে সেই স্থানে বেদির সম্মুখে তোমার নৈবেদ্য রাখ, আর চলিয়া যাও, প্রথমে তোমার ভ্রাতার সহিত সম্মিলিত হও।” (মথি ৫:২৩, ২৪) তিনি এও বলেছিলেন: “যদি তোমার ভ্রাতা তোমার নিকটে কোন অপরাধ করে, তবে যাও, যখন কেবল তোমাতে ও তাহাতে থাক, তখন সেই দোষ তাহাকে বুঝাইয়া দেও।” (মথি ১৮:১৫) আপনি কাউকে আঘাত বা দুঃখ দেন কিংবা অন্য কেউ আপনাকে আঘাত দিক, যিশুর কথাগুলো অবিলম্বে আপনাকেই গিয়ে অন্য জনের সঙ্গে মিটমাট করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে জোর দেয়। আপনার তা “মৃদুতার আত্মায়” করা উচিত। (গালাতীয় ৬:১) এই কথাবার্তার লক্ষ্য, আত্মপক্ষ সমর্থন বা আপনার প্রতিপক্ষকে জোর করে দুঃখ প্রকাশ করিয়ে আপনার ভাবমূর্তিকে টিকিয়ে রাখা নয় কিন্তু শান্তি স্থাপন করা। বাইবেলের এই পরামর্শ কি কাজ করে?

আরনেস্ট একটা বড় অফিসের সুপারভাইজার। * অনেক বছর ধরে তার কাজের অন্তর্ভুক্ত ছিল সব ধরনের লোকেদের সঙ্গে স্পর্শকাতর বিষয়গুলোর মীমাংসা করা এবং তাদের সঙ্গে উত্তম সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রাখা। তিনি দেখেছিলেন কত সহজেই বিভিন্ন ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হতে পারে। তিনি বলেন: “মাঝেমধ্যে অন্যদের সঙ্গে আমার মতভেদ হয়েছে। কিন্তু যখন তা হয়, তখন আমি সেই ব্যক্তির সঙ্গে বসে সমস্যাটা আলোচনা করি। তাদের কাছে সরাসরি যাই। শান্তি স্থাপনের লক্ষ্য নিয়ে তাদের মুখোমুখি হই। এই প্রচেষ্টা কখনও ব্যর্থ হয় না।”

আ্যলিসিয়ার বন্ধুরা বিভিন্ন সংস্কৃতির আর তিনি এই কথা বলেন: “কখনও কখনও আমি এমন কিছু বলে ফেলি যা পরে উপলব্ধি করি যে, আমি হয়তো কাউকে আঘাত দিয়েছি। আমি সেই ব্যক্তির কাছে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করি। আমার হয়তো যতটা চাওয়া উচিত তার চেয়ে বেশি বার ক্ষমা চাই কারণ অন্যজন যদি এমনকি আঘাত না-ও পেয়ে থাকেন, আমি তা করে ভাল বোধ করি। একমাত্র তারপরই আমি জানি যে, এর ফলে কোনো ভুল বোঝাবুঝি থাকবে না।”

প্রতিবন্ধকতাগুলো অতিক্রম করা

কিন্তু, ব্যক্তিগত বাদানুবাদে শান্তির পথ প্রায়ই বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার দ্বারা বাধাগ্রস্ত হয়। আপনি কি কখনও এমনটা বলেছেন: “শান্তি স্থাপন করার জন্য আমি কেন প্রথমে এগিয়ে যাব? তিনি সমস্যাটা সৃষ্টি করেছেন।” অথবা আপনি কি কখনো কোনো একটা সমস্যা সমাধানের জন্য এমন কারোর কাছে গিয়েছেন, যার কাছ থেকে শুধু আপনি এই শোনেন যে: “আপনাকে আমার কিছুই বলার নেই”? কিছু লোক গভীরভাবে মনে কষ্ট পেয়ে থাকলে এভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়। হিতোপদেশ ১৮:১৯ পদ বলে: “বিরক্ত ভ্রাতা দৃঢ় নগর অপেক্ষা [দুর্জ্জয়], আর বিবাদ দুর্গের অর্গলস্বরূপ।” তাই অন্যের অনুভূতিগুলো বিবেচনা করুন। তিনি যদি আপনার কথা শুনতে অস্বীকার করেন, তা হলে কিছু সময় অপেক্ষা করুন এবং আবার কথা বলার চেষ্টা করুন। এভাবে, “দৃঢ় নগর” হয়তো খুলবে এবং পুনরায় মিলিত হওয়ার জন্য দরজার ‘অর্গল’ বা খিলগুলো হয়তো সরানো যাবে।

একজন ব্যক্তির আত্মসম্মানবোধ হয়তো শান্তির ক্ষেত্রে আরেকটা প্রতিবন্ধক হতে পারে। কিছু লোকের পক্ষে দুঃখ প্রকাশ করা অথবা এমনকি একজন বিপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হল অপমানজনক বিষয়। আত্মসম্মানবোধ থাকা ভাল কিন্তু শান্তি স্থাপন করতে অস্বীকার করা কি একজন ব্যক্তির আত্মসম্মান বৃদ্ধি করে, নাকি হ্রাস করে? আত্মসম্মান পাওয়ার এই উদ্বেগ কি অহংকারকে ঢেকে রাখতে পারে?

বাইবেল লেখক যাকোব দেখান যে, বিবাদপূর্ণ মনোভাব এবং অহংকারের মধ্যে এক যোগসূত্র রয়েছে। কিছু খ্রিস্টানদের মধ্যে যে “যুদ্ধ” এবং “বিবাদ” রয়েছে সেটা প্রকাশ করার পর, তিনি আরও বলেন: “ঈশ্বর অহঙ্কারীদের প্রতিরোধ করেন, কিন্তু নম্রদিগকে অনুগ্রহ প্রদান করেন।” (যাকোব ৪:১-৩, ৬) কীভাবে অহংকার শান্তি স্থাপনে বাধা দেয়?

অহংকার লোকেদের প্রতারিত করে, তাদের বিশ্বাস করায় যে তারা অন্যদের চেয়ে উত্তম। অহংকারী ব্যক্তিরা মনে করে যে, সহমানবদের নৈতিক মূল্যবোধ নির্ধারণ করার অধিকার তাদের রয়েছে। কীভাবে? যখন মতভেদ দেখা দেয়, তখন তারা প্রায়ই উন্নতির কোনো আশাই নেই ভেবে তাদের প্রতিপক্ষকে ব্যর্থ বলে বিবেচনা করে। অহংকারের জন্য কিছু ব্যক্তি সেই লোকেদের প্রতি মনোযোগ দেওয়াকে তুচ্ছ বলে মনে করে, যাদের সঙ্গে তাদের মতের মিল হয় না আর অন্তর থেকে দুঃখ প্রকাশের তো প্রশ্নই ওঠে না। তাই, নিজের অহংকারের দ্বারা পরিচালিত ব্যক্তিরা প্রায়ই সঠিকভাবে সমস্যাগুলোকে মিটমাট করার বদলে দ্বন্দ্বকে জিইয়ে রাখে।

রাজপথে গাড়ি চলাচলকে থামানোর জন্য রাখা কোনো ব্যারিকেডের মতো অহংকারও শান্তির পথে চালিত হওয়ার পদক্ষেপকে থামিয়ে দেয়। তাই আপনি যদি কারও সঙ্গে শান্তি স্থাপনে নিজের মধ্যে থেকে বাধা অনুভব করেন, তা হলে আপনি হয়তো অহংকারের সঙ্গে সংগ্রাম করছেন। কীভাবে আপনি অহংকারকে দমন করতে পারেন? এর বিপরীতটা—নম্রতা—গড়ে তুলে।

ঠিক বিপরীতটাই করুন

বাইবেল নম্রতাকে অত্যন্ত মূল্যবান বলে সুপারিশ করে। “নম্রতার ও সদাপ্রভুর ভয়ের পুরস্কার, ধন, সম্মান ও জীবন।” (হিতোপদেশ ২২:৪) গীতসংহিতা ১৩৮:৬ পদে আমরা অবনত বা নম্র এবং গর্বিত ব্যক্তিদের বিষয়ে ঈশ্বরের দৃষ্টিভঙ্গি সম্বন্ধে পড়ি: “সদাপ্রভু উচ্চ, তথাপি অবনতের প্রতি দৃষ্টি রাখেন, কিন্তু গর্ব্বিতকে দূর হইতে জানেন।”

অনেক লোকই নম্রতা এবং অবমাননাকে এক করে ফেলে। জগতের শাসকরা মনে হয় তা-ই অনুভব করে। যদিও পুরো জাতি তাদের ইচ্ছার কাছে বশ্যতাস্বীকার করে কিন্তু রাজনৈতিক নেতারা নম্রভাবে তাদের ভুলগুলো স্বীকার করতে সংকোচ বোধ করে। একজন শাসকের “আমি দুঃখিত,” বলতে শোনা সংবাদপত্রে প্রচার হওয়ার মতো কৌতূহলোদ্দীপক বিষয়। সম্প্রতি, একজন প্রাক্তন সরকারি কর্তৃপক্ষ যখন গুরুতর বিপর্যয়ে তার ব্যর্থতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন, তখন তার কথাগুলো খবরের কাগজের শিরোনাম হয়ে ওঠে।

নম্রতা হল নম্র হওয়ার গুণ অথবা নিজের সম্বন্ধে বিনত মনোভাব থাকা . . . অহংকার বা গর্বের বিপরীত। তাই নম্রতা, একজন ব্যক্তি নিজে যা সেই দৃষ্টিভঙ্গিকে বর্ণনা করে, তার বিষয়ে অন্যদের ধারণাকে নয়। নম্রভাবে একজনের তার নিজের ভুল স্বীকার করা এবং আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাওয়া তাকে অবমানিত করে না; বরং এটা তার সুনামকে বৃদ্ধি করে। বাইবেল বলে: “বিনাশের অগ্রে মনুষ্যের মন গর্ব্বিত হয়, আর সম্মানের অগ্রে নম্রতা থাকে।”—হিতোপদেশ ১৮:১২.

রাজনীতিবিদরা যারা কিনা তাদের ভুলগুলোর জন্য দুঃখ প্রকাশ করে না তাদের বিষয়ে একজন পর্যবেক্ষক বলেন: “দুঃখের বিষয় যে, তারা মনে করে এই ধরনের স্বীকারোক্তি হল দুর্বলতার এক চিহ্ন। দুর্বল আর অসহায় লোকেরা খুব কমই বলে, ‘দুঃখিত।’ তারাই উদার হৃদয়ের ও সাহসী ব্যক্তি, যারা ‘আমি একটা ভুল করেছি’ এই কথা বলে নিজেদের আত্মসম্মান হারায় না” রাজনৈতিক ক্ষমতাহীন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও একই বিষয় সত্য। আপনি যদি অহংকারের জায়গায় নম্রতা দেখানোর প্রচেষ্টা করেন, তা হলে ব্যক্তিগত বিবাদের মধ্যেও আপনার শান্তির প্রত্যাশা বৃদ্ধি পায়। লক্ষ করুন কীভাবে একটা পরিবার এই সত্যটা বুঝতে পেরেছিল।

একটা ভুল বোঝাবুঝি জুলি এবং তার ছোট ভাই উইলিয়ামের মধ্যে মনঃক্ষুণ্ণের কারণ হয়েছিল। জুলি ও তার স্বামী জোসেফের ওপর উইলিয়াম এতটাই রেগে গিয়েছিলেন যে, তিনি তাদের সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ ছিন্ন করেছিলেন। এমনকি জুলি এবং জোসেফ তাকে বছরের পর বছর ধরে যে-উপহারগুলো দিয়েছিল সেগুলোও তিনি ফেরত পাঠিয়েছিলেন। মাসের পর মাস কেটে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, ভাই ও বোনের মধ্যে যে-ঘনিষ্ঠতা এক সময়ে ছিল, তা তিক্ততায় পরিপূর্ণ হয়েছিল।

কিন্তু, জোসেফ মথি ৫:২৩, ২৪ পদ প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি মৃদুতার মনোভাব নিয়ে উইলিয়ামের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন এবং ব্যক্তিগতভাবে তাকে চিঠিপত্র লিখতে শুরু করেছিলেন, যেগুলোতে তিনি তাকে আঘাত দেওয়ার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। জোসেফ নিজের স্ত্রীকে উৎসাহিত করেছিলেন যেন তার ভাইকে তিনি ক্ষমা করে দেন। এক সময়ে উইলিয়াম দেখেন যে, জুলি এবং জোসেফ আন্তরিকভাবেই শান্তি স্থাপন করতে আগ্রহী আর তাই তার মনোভাবও পালটায়। উইলিয়াম ও তার স্ত্রী পরে জুলি ও জোসেফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিল; তারা সকলেই পরস্পরের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছিল, আলিঙ্গন করেছিল এবং তাদের বন্ধুত্ব পুনঃস্থাপন করেছিল।

আপনি যদি কারও সঙ্গে এক ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব সমাধান করতে আকুলভাবে ইচ্ছুক থাকেন, তা হলে ধৈর্যের সঙ্গে বাইবেলের শিক্ষাগুলোকে কাজে লাগান এবং সেই ব্যক্তির সঙ্গে শান্তি স্থাপনের প্রচেষ্টা করুন। যিহোবা আপনাকে সাহায্য করবেন। প্রাচীন ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর যা বলেছিলেন, তা আপনার বেলায়ও সত্য বলে প্রমাণিত হবে: “আহা! তুমি কেন আমার আজ্ঞাতে অবধান কর নাই? করিলে তোমার শান্তি নদীর ন্যায়, . . . হইত।”—যিশাইয় ৪৮:১৮.

[পাদটীকাগুলো]

^ স্ট্যানলি ক্লাউড এবং লিন ওলসনের লিখিত দ্যা মারো বয়েজ—পাইওনিয়ারস অন দ্যা ফ্রন্ট লাইনস অভ ব্রডকাস্ট জার্নালিজম এর ওপর ভিত্তি করে।

^ কিছু নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

[৭ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

দুঃখ প্রকাশ করা প্রায়ই শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করে