সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

বিশ্বব্যাপী যিশুর প্রভাব

বিশ্বব্যাপী যিশুর প্রভাব

বিশ্বব্যাপী যিশুর প্রভাব

 “একান্তে এবং সাধারণ্যে যিশু যা কিছু বলেছিলেন সেই সম্বন্ধে সুসমাচারের বিবরণগুলো যা জানায়, সেগুলোর সমস্তই তিনি দুঘন্টায় বলতে পারতেন,” বাইবেল অনুবাদক এডগার গুডস্পীড লিখেছিলেন। “কিন্তু সেই সামান্য কথাগুলোই এত উদ্দীপনামূলক, এত মর্মস্পর্শী এবং এত মর্মভেদী ছিল যে, নির্দ্বিধায় বলা যায় পৃথিবীতে আর কেউই এতখানি প্রভাব ফেলতে পারেননি।”

সাধারণ কাল ৩৩ সালে যিশু খ্রিস্ট যখন তাঁর পার্থিব পরিচর্যা সম্পূর্ণ করেছিলেন, তখন পুরুষ ও নারী মিলিয়ে তাঁর অনুসারীদের সংখ্যা ছিল অন্তত প্রায় ১২০ জন। (প্রেরিত ১:১৫) আজকে, দুশো কোটিরও বেশি লোক নিজেদের খ্রিস্টান বলে দাবি করে। আরও কোটি কোটি লোক যিশুকে একজন ভাববাদী বলে স্বীকার করে। তাঁর শিক্ষাগুলো মানবজাতির ওপর সত্যিই এক অসাধারণ প্রভাব ফেলেছে।

এমনকি ন-খ্রিস্টীয় নেতারাও বিশ্বব্যাপী যিশুর প্রভাবকে স্বীকার করেছে। উদাহরণস্বরূপ, যিহুদি রব্বি হাইম্যান এনিলো লিখেছিলেন: “মানবজাতির ধর্মীয় ইতিহাসে যিশু সবচেয়ে জনপ্রিয়, সবচেয়ে বিজ্ঞ এবং সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি হয়ে উঠেছেন।” এনিলো আরও বলেছিলেন: “মানবজাতির ওপর যিশু যতখানি প্রভাব ফেলেছেন তার সমস্তই কেই বা মূল্যায়ন করতে পারে? তিনি যে-প্রেমকে উদ্বুদ্ধ করেছেন, যে-সান্ত্বনা দিয়েছেন, যে-মঙ্গল তিনি করেছেন, যে-আশা ও আনন্দ তিনি জাগিয়ে তুলেছেন—সমস্তই মানব ইতিহাসে অতুলনীয়। মানবজাতি যেসমস্ত মহান ও হিতৈষীদের জন্ম দিয়েছে, তাদের মধ্যে কেউই বিশ্বব্যাপী যিশু যে-সর্বজনীন আবেদন রেখেছেন, তার ধারেকাছেও আসতে পারেনি। ইতিহাসে তিনি সবচেয়ে আকর্ষণীয় চরিত্র হয়ে উঠেছেন।” আর হিন্দু নেতা মোহনদাস কে. গান্ধী বলেছিলেন: “আমি এমন কারো সম্বন্ধে জানি না, যিনি মানবজাতির জন্য যিশুর চেয়ে আরও বেশি কিছু করেছেন। বস্তুতপক্ষে, খ্রিস্টধর্মে কোনো ভুল নেই।” কিন্তু তিনি আরও বলেছিলেন: “সমস্যাটা হল আপনাদের খ্রিস্টানদের মধ্যে। আপনারা নিজেদের শিক্ষা অনুসারে জীবনযাপন করেন না।”

যিশুর শিক্ষা অনুসারে জীবনযাপন করতে ব্যর্থ হওয়ার এক দীর্ঘ নথি খ্রিস্টীয়জগতের রয়েছে। খ্রিস্টধর্মের ইতিহাসবেত্তা সিসিল জন কাডু বলেছিলেন যে, ‘গির্জা জুড়ে ক্রমান্বয়ে ও স্থির গতিতে এক নৈতিক শিথিল মনোভাবের বৃদ্ধি সা.কা. ১৪০ সালের মতো এত আগের খ্রিস্টান নেতাদের মনোযোগ’ কেড়েছিল। তিনি বলেছিলেন: “প্রারম্ভিক নৈতিক দৃঢ়তাকে লাঘব করা স্বাভাবিকভাবেই জগতের জীবনপ্রণালীর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সহযোগিতা করেছে।”

চতুর্থ শতাব্দীতে এই নৈতিক অধঃপতন আরও ত্বরান্বিত হয়েছিল, যখন রোমীয় সম্রাট কনস্ট্যানটিন খ্রিস্টধর্মকে গ্রহণ করেছিলেন। কাডু লিখেছিলেন, “গির্জা কনস্ট্যানটিনাসের সঙ্গে মৈত্রীবন্ধনের দ্বারা যে-বিরাট আপোশ করেছে, তা ইতিহাসবেত্তারা লক্ষ করেছিলেন এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর জন্য অনুশোচনা করেছিলেন।” তখন থেকে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে, নামধারী খ্রিস্টানরা বহু লজ্জাজনক কাজ করেছে, যা খ্রিস্টের নামকে অসম্মান করে।

তাই যে-প্রশ্নগুলো আমাদের উদ্বিগ্ন করে সেগুলো হল: যিশু প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দিয়েছিলেন? আর তাঁর শিক্ষাগুলোর আমাদের ওপর কোন প্রভাব ফেলা উচিত?

[৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

“আমি এমন কারো সম্বন্ধে জানি না, যিনি মানবজাতির জন্য যিশুর চেয়ে আরও বেশি কিছু করেছেন।”—মোহনদাস কে. গান্ধী

[৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

“পৃথিবীতে আর কেউই এতখানি প্রভাব ফেলতে পারেননি।”—এডগার গুডস্পীড

[সৌজন্যে]

Culver Pictures