সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

যে-যুবক-যুবতীরা যিহোবার প্রশংসা করে, তারা তাদের জীবনকে সমৃদ্ধ করে

যে-যুবক-যুবতীরা যিহোবার প্রশংসা করে, তারা তাদের জীবনকে সমৃদ্ধ করে

“যিহোবার কাছ থেকে আমার সাহায্য আসে”

যে-যুবক-যুবতীরা যিহোবার প্রশংসা করে, তারা তাদের জীবনকে সমৃদ্ধ করে

 “আমি জীবনে সর্বোত্তম বিষয়টা পেতে চাই!” একজন কিশোর তার প্রত্যাশাগুলোকে এভাবেই বর্ণনা করেছিল। কিন্তু একজন অল্পবয়স্ক ব্যক্তি কীভাবে জীবনে সর্বোত্তম বিষয়টা পেতে পারে? বাইবেল এক স্পষ্ট উত্তর জোগায়: “তুমি যুবক বয়সে তোমার সৃষ্টিকর্তাকে মনে রাখো!”—উপদেশক ১২:১, কনটেমপোরারি ইংলিশ ভারসন।

যিহোবার প্রশংসা ও সেবা করা কেবল প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নয়। ইল্‌কানা ও হান্নার ছেলে শমূয়েল খুব অল্পবয়সে আবাসে যিহোবার সেবা করেছিলেন। (১ শমূয়েল ১:১৯, ২০, ২৪; ২:১১) অতি অল্পবয়সী এক ইব্রীয় মেয়ে যিহোবার ওপর পুরোপুরি বিশ্বাস দেখিয়েছিল যখন সে প্রস্তাব করেছিল যে, অরামীয় সেনাপতি নামান যেন কুষ্ঠরোগ থেকে আরোগ্য লাভ করার জন্য ভাববাদী ইলীশায়ের কাছে যান। (২ রাজাবলি ৫:২, ৩) গীতসংহিতা ১৪৮:৭, ১২ পদে বালক ও বালিকা উভয়কেই যিহোবার প্রশংসা করার জন্য আদেশ দেওয়া হয়েছে। * যিশুর বয়স যখন মাত্র ১২ বছর, তখন তিনি তাঁর পিতার সেবা করার ব্যাপারে গভীর আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। (লূক ২:৪১-৪৯) শাস্ত্র থেকে প্রশিক্ষণ পাওয়ার দরুন, কিছু বালক যারা যিশুকে মন্দিরে দেখেছিল তারা চিৎকার করে বলেছিল: “হোশান্না দায়ূদ-সন্তান।”—মথি ২১:১৫, ১৬.

আজকে যিহোবার প্রশংসা করা

আজকে, যিহোবার সাক্ষিদের মধ্যে অনেক যুবক-যুবতী তাদের বিশ্বাসের জন্য গর্বিত এবং তারা স্কুল ও অন্যান্য জায়গায় তাদের সেই বিশ্বাস সম্বন্ধে নির্ভীকভাবে অন্যদের সঙ্গে কথা বলে। দুটো উদাহরণ বিবেচনা করুন।

ব্রিটেনে ১৮ বছর বয়সী স্টিফেনির ক্লাসে গর্ভপাত ও অন্যান্য নৈতিক মানগুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। শিক্ষক জোরালোভাবে বলেছিলেন যে, গর্ভপাত করা এখন সাধারণত গ্রহণীয় বিষয় আর তাই কোনো যুবতীরই এটা করায় আপত্তি জানানোর কোনো কারণ থাকতে পারে না। ক্লাসের প্রত্যেকে যখন এই দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে একমত হয়েছিল, তখন স্টিফেনি তার বাইবেলভিত্তিক অবস্থানের পক্ষ সমর্থন করার বাধ্যবাধকতা অনুভব করেছিল। এই সুযোগটা তখনই এসেছিল যখন শিক্ষক স্টিফেনির মতামত জানতে চেয়েছিলেন। যদিও প্রথমে সে ঘাবড়ে গিয়েছিল কিন্তু স্টিফেনি শাস্ত্রীয় দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরার জন্য এই সুযোগটা কাজে লাগিয়েছিল। সে যাত্রাপুস্তক ২১:২২-২৪ পদের কথাগুলো বলেছিল এবং বুঝিয়ে দিয়েছিল যে, কোনো অজাত শিশুকে আহত করাই যদি দোষের হয়ে থাকে, তা হলে স্পষ্টতই গর্ভপাত ঈশ্বরের ইচ্ছার বিপরীত হবে।

শিক্ষক যিনি একজন পাদরিও, তিনি এই পদগুলো কখনও পড়েননি। স্টিফেনির নির্ভীক সাক্ষ্যদান তার সহপাঠীদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর অনেক আগ্রহজনক আলোচনার দিকে নিয়ে গিয়েছিল। একটি মেয়ে এখন নিয়মিতভাবে প্রহরীদুর্গসচেতন থাক! পত্রিকার নতুন কপিগুলো নেয় আর আরও দুজন, ঈশ্বরের কাছে স্টিফেনির নিজেকে উৎসর্গীকরণের প্রতীক হিসেবে বাপ্তিস্ম নিতে দেখার জন্য যিহোবার সাক্ষিদের এক জেলা সম্মেলনে যোগদান করেছিল।

দক্ষিণ আমেরিকার সুরিনামে বসবাসকারী ছয় বছর বয়সী ভারিটা, ঈশ্বরের প্রশংসা করার সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছিল, যখন তার শিক্ষিকার শাস্ত্র থেকে সান্ত্বনার প্রয়োজন হয়েছিল। তিন দিন অনুপস্থিত থাকার পর ফিরে এসে শিক্ষিকা তার ছাত্রীদের জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, কেন তিনি অনুপস্থিত ছিলেন তা তারা জানে কি না। তারা উত্তর দিয়েছিল: “আপনি অসুস্থ ছিলেন, তাই না?” “না,” শিক্ষিকা উত্তর দিয়েছিলেন। “আমার দিদি মারা গিয়েছেন আর আমার মন খুবই খারাপ। তাই তোমরা চুপ থাকবে।”

সেই দিন দুপুরবেলা তার মা যখন ঘুমাচ্ছিলেন, তখন ভারিটা পুরনো পত্রিকাগুলো খোঁজার জন্য শিরোনামগুলো পড়ায় ব্যস্ত ছিল। সে ২০০১ সালের ১৫ই জুলাইয়ের প্রহরীদুর্গ পত্রিকাটি খুঁজে পায়, যেটার শিরোনাম “মৃত্যুর পরে কি জীবন আছে?” রোমাঞ্চিত হয়ে সে তার মাকে জাগিয়ে তুলে বলেছিল: “মা, মা, দেখো! আমার শিক্ষিকার জন্য আমি মৃত্যু সম্বন্ধে একটা পত্রিকা খুঁজে পেয়েছি!” ভারিটার একটা চিঠিসহ সেই পত্রিকাটি শিক্ষিকাকে পাঠানো হয়েছিল। সে লিখেছিল: “এটা মূলত আপনার জন্য। পরমদেশে আপনি আবার আপনার দিদিকে দেখতে পাবেন কারণ যিহোবা কখনও মিথ্যা বলেন না। তিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন যে, স্বর্গে নয় কিন্তু এই পৃথিবীতে তিনি একটা পরমদেশ নিয়ে আসবেন।” এই প্রবন্ধগুলো বাইবেলভিত্তিক যে-সান্ত্বনা জুগিয়েছিল, তার জন্য শিক্ষিকা গভীর উপলব্ধি প্রকাশ করেছিলেন।

ভবিষ্যতের জন্য ভিত্তি স্থাপন করা

যিহোবা হলেন ‘পরম ধন্য [“সুখী,” NW] ঈশ্বর’ আর তিনি চান ছোটরাও যেন সুখী হয়। (১ তীমথিয় ১:১১) তাঁর নিজ বাক্য জানায়: “তোমার কিশোর বয়স উপভোগ কর। যৌবনকালে আনন্দিত হও।” (উপদেশক ১১:৯, টুডেজ ইংলিশ ভারসন) যিহোবা বর্তমানকে ছাড়িয়ে আরও বেশি দেখেন এবং উত্তম ও মন্দ উভয় আচরণের ভবিষ্যৎ পরিণতি উপলব্ধি করেন। সেইজন্য তাঁর বাক্য যুবক-যুবতীদের পরামর্শ দেয়: “তুমি যৌবনকালে আপন সৃষ্টিকর্ত্তাকে স্মরণ কর, যেহেতু দুঃসময় আসিতেছে, এবং সেই বৎসর সকল সন্নিকট হইতেছে, যখন তুমি বলিবে, ইহাতে আমার প্রীতি নাই।”—উপদেশক ১২:১.

হ্যাঁ, যিহোবা চান যুবক-যুবতীরা যেন জীবনের বহুমূল্য দান থেকে পুরোপুরিভাবে উপকার লাভ করে। ঈশ্বরকে স্মরণে রাখার ও প্রশংসা করার দ্বারা যুবক-যুবতীরা এক অর্থপূর্ণ, পরিতৃপ্তিদায়ক জীবনের দিকে পরিচালিত হতে পারে। এমনকি বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার সময়ও তারা আস্থার সঙ্গে বলতে পারে: “যিহোবার কাছ থেকে আমার সাহায্য আসে।”—গীতসংহিতা ১২১:২, NW.

[পাদটীকা]

^ যিহোবার সাক্ষিদের ২০০৫ সালের ক্যালেন্ডার (ইংরেজি) মার্চ/এপ্রিল দেখুন।

[৯ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

“পৃথিবী হইতে সদাপ্রভুর প্রশংসা কর, . . . যুবকগণ ও যুবতী সকল।”—গীতসংহিতা ১৪৮:৭, ১২

[৮ পৃষ্ঠার বাক্স]

যুবক-যুবতীদের যিহোবা সমর্থন করেন

“হে প্রভু সদাপ্রভু, তুমি আমার আশা; তুমি বাল্যকাল হইতে আমার বিশ্বাস-ভূমি।” —গীতসংহিতা ৭১:৫.

“[ঈশ্বর] উত্তম দ্রব্যে তোমার মুখ তৃপ্ত করেন, ঈগল পক্ষীর ন্যায় তোমার নূতন যৌবন হয়।” —গীতসংহিতা ১০৩:৫.