সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

মানুষ কি দরিদ্রতার শেষ আনতে পারে?

মানুষ কি দরিদ্রতার শেষ আনতে পারে?

মানুষ কি দরিদ্রতার শেষ আনতে পারে?

 লক্ষ লক্ষ লোক কোনোরকম দরিদ্রতা ভোগ না করেই বড় হয়ে উঠেছে। তাদের কখনোই পেটে ক্ষুধা নিয়ে বিছানায় যেতে হয়নি বা হাড়কাঁপানো ঠাণ্ডার মধ্যে ঘুমাতে হয়নি। তা সত্ত্বেও, তাদের মধ্যে অনেকেই দরিদ্র লোকেদের জন্য দুঃখবোধ করে এবং তাদেরকে সাধ্যমতো সাহায্য করার চেষ্টা করে।

কিন্তু, দরিদ্রতা সেই লোকেদের জন্য এক কঠোর বাস্তবতা হিসেবে অব্যাহত থাকে, যারা গৃহযুদ্ধ, বন্যা, খরা এবং অন্যান্য সমস্যার দ্বারা জর্জরিত। এই বিষয়গুলো আফ্রিকার কৃষকদের কাছে এক দুঃস্বপ্নের মতো। কেউ কেউ তাদের নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে বড় বড় শহরে চলে যেতে বা অন্য একটা নতুন দেশে শরণার্থী হিসেবে বাস করতে বাধ্য হয়েছে। গ্রামের অন্যান্য অধিবাসী আরও উন্নত জীবনের প্রতিশ্রুতির দ্বারা প্রলুব্ধ হয়ে শহরগুলোতে চলে আসে।

ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলো প্রায়ই দরিদ্রতার কেন্দ্রস্থল হয়ে ওঠে। চাষ করার মতো খুবই অল্প জায়গা থাকে বা বলতে গেলে থাকেই না। চাকরি খুঁজে পাওয়া সাধারণত কষ্টসাধ্য। নিরাশ হয়ে অনেকে অপরাধীতে পরিণত হয়। শহরের অধিবাসীরা সাহায্যের জন্য আর্তনাদ করে কিন্তু মানব সরকারগুলো দরিদ্রতার ক্রমবর্ধমান সমস্যাগুলোর সমাধান করতে অসমর্থ। ২০০৩ সালের নভেম্বর মাসে রাষ্ট্রসংঘের দ্বারা প্রকাশিত এক রিপোর্টের বিষয়ে উল্লেখ করে লন্ডনের দি ইনডেপেনডেন্ট পত্রিকা বলে: “পৃথিবী দিনের পর দিন আরও বেশি ক্ষুধার্ত হচ্ছে।” এটি আরও বলে: “বর্তমানে বিশ্বজুড়ে আনুমানিক ৮৪ কোটি ২০ লক্ষ লোক পুষ্টিহীনতায় ভুগছে—আর সেই সংখ্যার সঙ্গে প্রতি বছর অতিরিক্ত আরও ৫০ লক্ষ ক্ষুধার্ত লোক যুক্ত হচ্ছে।”

যিহোবার সাক্ষিদের দক্ষিণ আফ্রিকার শাখা অফিস মাঝে মাঝে দরিদ্রতায় কবলিত লোকেদের কাছ থেকে অনেক চিঠি পায়। উদাহরণ হিসেবে, ব্লুমফনটেনের একজন লোক লিখেছিলেন: “আমি একজন বেকার আর আমি সুযোগমতো শহরে চুরি করে থাকি। যদি আমি তা না করি, তা হলে আমাদের দিনভর ক্ষুধার্ত থাকতে হয়—আর কনকনে ঠাণ্ডার কথা না-ই বা বললাম। সত্যি বলতে কী, কোনো কাজই নেই। কাজের খোঁজে এবং একটু খাবারের আশায় অনেকে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়। আমি কারো কারো সম্বন্ধে জানি, যারা আবর্জনার মধ্যে খাবার খোঁজে। কেউ কেউ আত্মহত্যা করে। অনেকেই আমার মতো হতাশ এবং নিরাশ। ভবিষ্যতের কোনো আশা নেই বলেই মনে হয়। ঈশ্বর, যিনি আমাদের খাদ্য এবং বস্ত্রের চাহিদা দিয়ে সৃষ্টি করেছিলেন, তিনি কি এগুলো দেখেন না?”

এই ব্যক্তির উদ্বিগ্নতাগুলোর সান্ত্বনাজনক উত্তর রয়েছে। পরবর্তী প্রবন্ধটি দেখাবে যে, এই উত্তরগুলো ঈশ্বরের বাক্য বাইবেলের পাতায় পাতায় পাওয়া যায়।