সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

প্রথম রাজাবলি বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো

প্রথম রাজাবলি বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো

যিহোবার বাক্য জীবন্ত

প্রথম রাজাবলি বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো

“ধার্ম্মিকেরা বর্দ্ধিষ্ণু হইলে প্রজাগণ আনন্দ করে, কিন্তু দুষ্ট লোক কর্ত্তৃত্ব পাইলে প্রজারা আর্ত্তস্বর করে।” (হিতোপদেশ ২৯:২) বাইবেলের প্রথম রাজাবলি বইটি সুস্পষ্টভাবে এই প্রবাদের সত্যতা তুলে ধরে। এটি শলোমনের জীবনকাহিনী সম্বন্ধে বর্ণনা করে, যার রাজপদের সময়ে প্রাচীন ইস্রায়েল নিরাপত্তা এবং ব্যাপক সমৃদ্ধি উপভোগ করেছিল। এ ছাড়া, প্রথম রাজাবলি বইয়ে শলোমনের মৃত্যুর পরে সেই জাতির বিভক্ত হওয়া এবং তার পরের ১৪ জন রাজার বিবরণও রয়েছে, যাদের মধ্যে কেউ কেউ ইস্রায়েলে এবং কেউ কেউ যিহূদায় রাজত্ব করেছে। এদের মধ্যে মাত্র দুজন রাজা সবসময় যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত ছিল। অধিকন্তু, এই বই এলিয়সহ ছয় জন ভাববাদীর কাজকর্ম বর্ণনা করে।

ভাববাদী যিরমিয়ের দ্বারা যিরূশালেম এবং যিহূদায় লিখিত এই বর্ণনায় প্রায় ১২৯ বছরের—সা.কা.পূ. ১০৪০ সাল থেকে সা.কা.পূ. ৯১১ সালের—ঘটনা রয়েছে। এই বই রচনার সময় স্পষ্টতই যিরমিয় এই ধরনের প্রাচীন বিবরণগুলো যেমন, ‘শলোমনের বৃত্তান্ত-পুস্তক’ থেকে তথ্য খুঁজেছিলেন। এই পৃথক বিবরণগুলো এখন আর নেই।—১ রাজাবলি ১১:৪১; ১৪:১৯; ১৫:৭.

একজন বিজ্ঞ রাজা শান্তি এবং সমৃদ্ধিকে উন্নীত করেন

(১ রাজাবলি ১:১–১১:৪৩)

প্রথম রাজাবলি বইটি, রাজা দায়ূদের পুত্র আদোনিয় তার পিতার রাজপদ অন্যায়ভাবে দখল করার চেষ্টা সম্বন্ধে আগ্রহজনক বিবরণ দিয়ে শুরু হয়। ভাববাদী নাথনের দ্রুত পদক্ষেপ সেই পরিকল্পনাকে ভেস্তে দেয় এবং দায়ূদের পুত্র শলোমনকে রাজা বানানো হয়। সিংহাসনে অধিষ্ঠিত নতুন রাজার যাচ্ঞা শুনে যিহোবা খুশি হন এবং তাকে “জ্ঞানশালী ও বুঝিবার চিত্ত” এবং সেইসঙ্গে “ঐশ্বর্য্য ও গৌরব” প্রদান করেন। (১ রাজাবলি ৩:১২, ১৩) রাজার প্রজ্ঞা হল অসমতুল্য এবং তার ধনসম্পদ হল অতুলনীয়। ইস্রায়েল এক শান্তি ও সমৃদ্ধির সময় উপভোগ করে।

অট্টালিকা নির্মাণ প্রকল্পের মধ্যে শলোমন যিহোবার মন্দির এবং বিভিন্ন সরকারি অট্টালিকা নির্মাণ সম্পন্ন করেন। যিহোবা শলোমনকে আশ্বাস দেন: “আমি ইস্রায়েলের উপরে তোমার রাজসিংহাসন চিরকালের জন্য স্থির করিব।” (১ রাজাবলি ৯:৪, ৫) এ ছাড়া, সত্য ঈশ্বর তাকে অবাধ্য হওয়ার পরিণতিগুলো সম্বন্ধেও সাবধান করে দেন। তা সত্ত্বেও, পরিশেষে শলোমন অনেক বিদেশি স্ত্রী গ্রহণ করেন। তাদের প্ররোচণায়, বৃদ্ধ বয়সে তিনি মিথ্যা উপাসনা করতে শুরু করেন। যিহোবা ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে, তার রাজ্য বিভক্ত হবে। সা.কা.পূ. ৯৯৭ সালে শলোমন মারা যান এবং তার ৪০ বছরের রাজত্বের অবসান ঘটে। তার পুত্র রহবিয়াম সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন।

শাস্ত্রীয় প্রশ্নগুলোর উত্তর:

১:৫—দায়ূদ জীবিত থাকা সত্ত্বেও, আদোনিয় কেন সিংহাসন দখল করার চেষ্টা করেছিলেন? বাইবেল এই সম্বন্ধে কিছু বলে না। কিন্তু, এই উপসংহারে আসা যুক্তিযুক্ত যে, যেহেতু আদোনিয়ের দাদা অম্নোন এবং অবশালোম আর সম্ভবত দায়ূদের পুত্র কিলাবও মারা গিয়েছিল, তাই আদোনিয় মনে করেছিলেন যে, দায়ূদের অবশিষ্ট পুত্রদের মধ্যে বড় হিসেবে সিংহাসন লাভ করার অধিকার তার রয়েছে। (২ শমূয়েল ৩:২-৪; ১৩:২৮, ২৯; ১৮:১৪-১৭) সৈন্যদলের ক্ষমতাবান সেনাপতি যোয়াব এবং প্রভাবশালী প্রধান যাজক অবিয়াথরের সমর্থন পেয়েছিলেন বলে আদোনিয় সম্ভবত এই আস্থা বোধ করেছিলেন যে, তার প্রচেষ্টা সফল হবে। বাইবেল বলে না যে, তিনি শলোমনকে সিংহাসনের উত্তরাধিকার করার বিষয়ে দায়ূদের পরিকল্পনা জানতেন কি না। কিন্তু, শলোমন এবং দায়ূদের প্রতি অনুগত অন্যান্য ব্যক্তিকে আদোনিয় ‘বলিদানে’ আমন্ত্রণ জানাননি। (১ রাজাবলি ১:৯, ১০) এটা ইঙ্গিত করে যে, তিনি শলোমনকে একজন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখতেন।

১:৪৯-৫৩; ২:১৩-২৫—আদোনিয়কে ক্ষমা করে দেওয়ার পরেও কেন শলোমন তাকে বধ করিয়েছিলেন? অবীশগকে স্ত্রী হিসেবে তাকে দেওয়ার জন্য বৎশেবাকে দিয়ে রাজার কাছে বলানোর বিষয়ে আদোনিয়ের অনুরোধের পিছনে প্রকৃত অভিপ্রায় কী ছিল, তা যদিও বৎশেবা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছিলেন কিন্তু শলোমন তা বুঝতে পেরেছিলেন। যদিও দায়ূদ অবীশগের সঙ্গে যৌনসম্পর্ক করেননি কিন্তু সুন্দরী অবীশগকে দায়ূদের উপপত্নী হিসেবে গণ্য করা হতো। সেই সময়কার রীতি অনুযায়ী তিনি কেবলমাত্র দায়ূদের বৈধ উত্তরাধিকারী হতে পারতেন। আদোনিয় হয়তো মনে করেছিলেন যে, অবীশগকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করার মাধ্যমে তিনি আবারও সিংহাসন দখল করতে পারবেন। আদোনিয়ের অনুরোধ রাজপদ পাওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে স্পষ্ট করেছিল বলে শলোমন সেই ক্ষমা বাতিল করেছিলেন।

৬:৩৭–৮:২—কখন মন্দির প্রতিষ্ঠা বা উদ্বোধন করা হয়েছিল? সা.কা.পূ. ১০২৭ সালের অষ্টম মাসে, শলোমনের রাজত্বের ১১তম বৎসরে মন্দির নির্মাণ সমাপ্ত হয়েছিল। আসবাবপত্র ও সাজসরঞ্জাম নিয়ে আসার এবং অন্যান্য প্রস্তুতির জন্য ১১ মাস লেগেছিল বলে মনে হয়। এই উদ্বোধন সা.কা.পূ. ১০২৬ সালের সপ্তম মাসে হয়েছিল। সেই ধারাবাহিক বিবরণ স্পষ্টতই, নির্মাণ কার্যক্রম সম্বন্ধে আরও পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা দেওয়ার জন্য আরও অন্যান্য নির্মাণ প্রকল্পের বিষয়ে বর্ণনা করে, যেগুলো মন্দিরের কাজ সমাপ্ত হওয়ার পর এবং এর উদ্বোধনের বিষয় উল্লেখ করার আগে নির্মিত হয়েছিল।—২ বংশাবলি ৫:১-৩.

৯:১০-১৩—সোরের রাজা হীরমকে উপহার হিসেবে শলোমনের দেওয়া গালীল দেশস্থ ২০টা নগর কি মোশির ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল? লেবীয় পুস্তক ২৫:২৩, ২৪ পদে যেমন বলা আছে, ব্যবস্থা কেবলমাত্র সেই এলাকাগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারত, যা ইস্রায়েলীয়দের অধিকারে রয়েছে। এটা হতে পারে যে, হীরমকে শলোমন যে-নগরগুলো দিয়েছিলেন, সেখানে ন-ইস্রায়েলীয় লোকেরা বাস করত, যদিও তা প্রতিজ্ঞাত দেশের সীমানার মধ্যে ছিল। (যাত্রাপুস্তক ২৩:৩১) এ ছাড়া, শলোমনের কাজ হয়তো ব্যবস্থা পুরোপুরিভাবে পালন করার ব্যাপারে তার ব্যর্থতার ইঙ্গিত দিয়েছিল, যখন তিনি ‘আপনার জন্য অনেক অশ্ব রাখিয়াছিলেন’ এবং অনেক স্ত্রী গ্রহণ করেছিলেন। (দ্বিতীয় বিবরণ ১৭:১৬, ১৭) বিষয়টা যা-ই হোক না কেন, হীরম সেই উপহারে অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন। সম্ভবত পৌত্তলিক অধিবাসীরা ভালভাবে সেই নগরগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ করছিল না অথবা হতে পারে যে, সেগুলো উত্তম স্থানে অবস্থিত ছিল না।

১১:৪—বার্ধক্যজনিত কারণগুলোর জন্যই কি শলোমন তার বৃদ্ধ বয়সে অবিশ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন? এইরকম হতে পারে বলে মনে হয় না। শলোমন যখন রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন, তখন তার বয়স বেশ কম ছিল আর তিনি ৪০ বছর ধরে রাজত্ব করলেও অতিবৃদ্ধ অবস্থায় পৌঁছাননি। এ ছাড়া, তিনি যিহোবাকে পুরোপুরিভাবে অনুসরণ করা ত্যাগ করেননি। স্পষ্টতই, তিনি অন্য ধর্মীয় বিশ্বাসের কিছু রীতি পালন করার চেষ্টা করেছিলেন।

আমাদের জন্য শিক্ষা:

২:২৬, ২৭, ৩৫. যিহোবা যা ভবিষ্যদ্বাণী করেন, তা সবসময় সত্য হয়। এলির একজন বংশধর অবিয়াথরকে অপসারিত করা, “এলির কুলের বিপক্ষে তিনি যাহা বলিয়াছিলেন,” সেই সম্বন্ধে “সদাপ্রভুর বাক্য” পরিপূর্ণ হয়েছিল। অবিয়াথরের পরিবর্তে পীনহসের বংশের সাদোককে নিযুক্ত করা, গণনাপুস্তক ২৫:১০-১৩ পদের কথাগুলোর পরিপূর্ণতা ছিল।—যাত্রাপুস্তক ৬:২৫; ১ শমূয়েল ২:৩১; ৩:১২; ১ বংশাবলি ২৪:৩.

২:৩৭, ৪১-৪৬. একজন ব্যক্তি সীমা অতিক্রম করেও অদণ্ডিত থাকবে, এটা চিন্তা করা কত বিপদজনক! যারা ‘জীবনে যাইবার সঙ্কীর্ণ দ্বার’ অনুসরণ করা থেকে স্বেচ্ছায় পথভ্রষ্ট হয়, তারা সেই মূর্খতাপূর্ণ সিদ্ধান্তের পরিণতি ভোগ করবে।—মথি ৭:১৪.

৩:৯, ১২-১৪. যিহোবাকে সেবা করে যাওয়ার জন্য প্রজ্ঞা, বোধগম্যতা এবং নির্দেশনা চেয়ে তাঁর দাসেরা যে-আন্তরিক প্রার্থনা করে, তার উত্তর তিনি দেন।—যাকোব ১:৫.

৮:২২-৫৩. যিহোবার—প্রেমপূর্ণ-দয়া, প্রতিজ্ঞা পরিপূর্ণকারী এবং প্রার্থনা শ্রবণকারী ঈশ্বরের—প্রতি শলোমন কত আন্তরিক উপলব্ধিই না প্রকাশ করেছিলেন! মন্দির উদ্বোধনের সময় করা শলোমনের প্রার্থনার কথাগুলো নিয়ে ধ্যান করা, এগুলোর এবং ঈশ্বরের ব্যক্তিত্বের অন্যান্য দিকগুলোর প্রতি আমাদের উপলব্ধিকে বাড়াবে।

১১:৯-১৪, ২৩, ২৬. শলোমন যখন তার জীবনের শেষের দিকের বছরগুলোতে অবাধ্য হয়েছিলেন, তখন যিহোবা তার বিপক্ষদের উৎপন্ন করেছিলেন। “ঈশ্বর অহঙ্কারীদের প্রতিরোধ করেন, কিন্তু নম্রদিগকে অনুগ্রহ প্রদান করেন,” প্রেরিত পিতর বলেছিলেন।—১ পিতর ৫:৫.

১১:৩০-৪০. যারবিয়াম সম্বন্ধে অহিয় যা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, সেটার পরিপ্রেক্ষিতে রাজা শলোমন যারবিয়ামকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন। প্রায় ৪০ বছর আগে রাজার প্রতিক্রিয়া কতই না ভিন্ন ছিল, যখন তিনি আদোনিয় এবং অন্যান্য ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়া প্রত্যাখ্যান করেছিলেন! (১ রাজাবলি ১:৫০-৫৩) তার মনোভাবের এই পরিবর্তন যিহোবার পথ থেকে সরে যাওয়ার ফলে হয়েছিল।

এক ঐক্যবদ্ধ রাজ্য ভেঙে যায়

(১ রাজাবলি ১২:১–২২:৫৩)

যারবিয়াম এবং লোকেরা রাজা রহবিয়ামের কাছে আসে এবং তার পিতা শলোমনের দ্বারা আরোপিত বোঝা হালকা করার জন্য তাকে অনুরোধ করে। তাদের অনুরোধ রাখার পরিবর্তে, রহবিয়াম তাদের ওপর আরও ভারী বোঝা চাপিয়ে দেন। দশ বংশ বিদ্রোহ করে এবং যারবিয়ামকে তাদের ওপর রাজা করে। রাজ্য বিভক্ত হয়ে যায়। রহবিয়াম দক্ষিণ রাজ্যের ওপর শাসন করেন, যা যিহূদা এবং বিন্যামীন বংশ নিয়ে গঠিত এবং যারবিয়াম ইস্রায়েলের দশ বংশের উত্তর রাজ্যের ওপর শাসন করেন।

লোকেদেরকে উপাসনার জন্য যিরূশালেমে যাওয়ার বিষয়ে নিরুৎসাহিত করে যারবিয়াম দুটো সোনার বাছুর স্থাপন করেন—একটা দানে এবং আরেকটা বৈথেলে। যারবিয়ামের পরে ইস্রায়েলে যে-রাজারা শাসন করেছিল তারা হল, নাদব, বাশা, এলা, সিম্রি, তিব্‌নি, অম্রি, আহাব এবং অহসিয়। রহবিয়ামের পরে যিহূদায় অবিয়াম, আসা, যিহোশাফট এবং যিহোরাম রাজত্ব করে। এই রাজাদের সময়ে যে-ভাববাদীরা সক্রিয় ছিল, তাদের মধ্যে রয়েছে, অহিয়, শময়িয় এবং ঈশ্বরের একজন অজ্ঞাতনামা লোক ও সেইসঙ্গে যেহূ, এলিয় এবং মীখায়।

শাস্ত্রীয় প্রশ্নগুলোর উত্তর:

১৮:২১—এলিয় যখন লোকেদেরকে হয় যিহোবা নতুবা বালকে অনুসরণ করতে বলেছিলেন, তখন লোকেরা কেন নীরব ছিল? হতে পারে যে, তারা যিহোবাকে সেই একাগ্র ভক্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছিল, যা তিনি চেয়েছিলেন আর এর ফলে তারা দোষী বোধ করেছিল। অথবা তাদের বিবেক এতটাই কঠিন হয়ে গিয়েছিল যে, নিজেদের যিহোবার উপাসক হিসেবে দাবি করে এবং একইসঙ্গে বাল উপাসনা করার মধ্যে তারা ভুল কিছু দেখেনি। কেবলমাত্র যিহোবা তাঁর শক্তি দেখানোর পরই তারা বলেছিল: “সদাপ্রভুই ঈশ্বর, সদাপ্রভুই ঈশ্বর।”—১ রাজাবলি ১৮:৩৯.

২০:৩৪—যিহোবা আহাবকে অরামীয়দের ওপর বিজয় এনে দেওয়ার পর, কেন আহাব তাদের রাজা বিন্‌হদদকে ছেড়ে দিয়েছিলেন? বিন্‌হদদকে হত্যা করার পরিবর্তে, আহাব তার সঙ্গে এক চুক্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যেখানে অরামের রাজধানী দম্মেশকের পল্লী আহাবকে দেওয়া হবে আর স্পষ্টতই তা বাজার অথবা হাট তৈরি করার জন্য। এর আগে, বিন্‌হদদের পিতা একইভাবে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে শমরিয়ার পল্লী চেয়েছিলেন। তাই, বিন্‌হদদকে মুক্ত করা হয়েছিল, যাতে আহাব দম্মেশকে বাণিজ্যিক সুযোগসুবিধা প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।

আমাদের জন্য শিক্ষা:

১২:১৩, ১৪. জীবনে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নেওয়ার সময়, আমাদের সেই সমস্ত বিজ্ঞ এবং পরিপক্ব ব্যক্তির কাছ থেকে পরামর্শ চাওয়া উচিত, যারা শাস্ত্রে অভিজ্ঞ এবং ঈশ্বরীয় নীতির প্রতি যাদের উচ্চসম্মান রয়েছে।

১৩:১১-২৪. যে-উপদেশ অথবা পরামর্শকে সন্দেহজনক বলে মনে হয়, এমনকি যদি তা একজন আন্তরিক সহবিশ্বাসীর কাছ থেকেও আসে, তা ঈশ্বরের বাক্যের উপযুক্ত নির্দেশনার বিপরীত বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।—১ যোহন ৪:১.

১৪:১৩. যিহোবা আমাদের মধ্যে ভাল কিছু দেখার জন্য পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসন্ধান করেন। সেই ভাল বিষয় যত ছোটই হয়ে থাকুক না কেন, তিনি সেটাকে এমনভাবে তুলে ধরতে পারেন যেন আমরা তাঁকে সেবা করার জন্য আমাদের সর্বোত্তম করেছি।

১৫:১০-১৩. আমাদের সাহসের সঙ্গে ধর্মভ্রষ্টতা এড়িয়ে চলতে হবে এবং এর পরিবর্তে সত্য উপাসনাকে উন্নীত করতে হবে।

১৭:১০-১৬. সারিফতের বিধবা এলিয়কে ভাববাদী হিসেবে স্বীকার করেছিলেন এবং তার সঙ্গে সেই অনুযায়ী আচরণ করেছিলেন আর যিহোবা তার বিশ্বাসের কাজের জন্য তাকে আশীর্বাদ করেছিলেন। আজকে, যিহোবা আমাদের বিশ্বাসের কাজকেও লক্ষ করেন এবং তিনি তাদেরকে পুরস্কৃত করেন, যারা বিভিন্ন উপায়ে রাজ্যের কাজকে সমর্থন করে।—মথি ৬:৩৩; মথি ১০:৪১, ৪২; ইব্রীয় ৬:১০.

১৯:১-৮. চরম বিরোধিতার মুখোমুখি হলে, আমরা যিহোবার সমর্থন সম্বন্ধে নিশ্চিত হতে পারি।—২ করিন্থীয় ৪:৭-৯.

১৯:১০, ১৪, ১৮. সত্য উপাসকরা কখনো একা নয়। তাদের সঙ্গে যিহোবা এবং বিশ্বব্যাপী ভ্রাতৃবর্গ রয়েছে।

১৯:১১-১৩. যিহোবা প্রকৃতির দেবতা নন অথবা প্রাকৃতিক শক্তিগুলোর নিছক কোনো সত্তা নন।

২০:১১. বিন্‌হদদ যখন শমরিয়া ধ্বংস করার জন্য বড়াই করেছিলেন, তখন ইস্রায়েলের রাজা উত্তর দিয়েছিলেন: “যে ব্যক্তি সজ্জা ধারণ [যুদ্ধের জন্য তার অস্ত্রসস্ত্র প্রস্তুত] করে, সে সজ্জাত্যাগীর ন্যায় শ্লাঘা না করুক।” নতুন কোনো কাজের সম্মুখীন হলে, আমরা অবশ্যই একজন মিথ্যা বড়াইকারীর মতো অতিরিক্ত আস্থা দেখানো এড়িয়ে চলব।—হিতোপদেশ ২৭:১; যাকোব ৪:১৩-১৬.

আমাদের কাছে মহামূল্যবান

সীনয় পর্বতে ব্যবস্থা দেওয়ার বিষয়টা বর্ণনা করার সময় মোশি ইস্রায়েল সন্তানদের বলেছিলেন: “দেখ, অদ্য আমি তোমাদের সম্মুখে আশীর্ব্বাদ ও অভিশাপ রাখিলাম। অদ্য আমি তোমাদিগকে যে সকল আজ্ঞা জানাইলাম, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেই সকল আজ্ঞাতে যদি কর্ণপাত কর, তবে আশীর্ব্বাদ পাইবে। আর যদি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আজ্ঞাতে কর্ণপাত না কর, এবং আমি অদ্য তোমাদিগকে যে পথের বিষয়ে আজ্ঞা করিলাম, যদি সেই পথ ছাড়িয়া” যাও “তবে অভিশাপগ্রস্ত হইবে।”—দ্বিতীয় বিবরণ ১১:২৬-২৮.

প্রথম রাজাবলি বইয়ের মধ্যে এই গুরুত্বপূর্ণ সত্যটি কত স্পষ্টভাবে আমাদের মনোযোগে আনা হয়েছে! আমরা যেমন দেখেছি, এই বই অন্যান্য মূল্যবান শিক্ষাও প্রদান করে। এটির বার্তা সত্যিই জীবন্ত এবং কার্যসাধক।—ইব্রীয় ৪:১২.

[২৯ পৃষ্ঠার চিত্র]

শলোমনের দ্বারা নির্মিত মন্দির এবং অন্যান্য অট্টালিকা

[৩০, ৩১ পৃষ্ঠার চিত্র]

যিহোবা তাঁর শক্তি দেখানোর পর লোকেরা চিৎকার করে বলেছিল: “সদাপ্রভুই ঈশ্বর”