সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

সমস্ত জাতির লোকেদের জন্য সুসমাচার

সমস্ত জাতির লোকেদের জন্য সুসমাচার

সমস্ত জাতির লোকেদের জন্য সুসমাচার

“তোমরা . . . পৃথিবীর প্রান্ত পর্য্যন্ত আমার সাক্ষী হইবে।”—প্রেরিত ১:৮.

১. বাইবেলের শিক্ষক হিসেবে, আমরা কীসের প্রতি মনোযোগ দিই এবং কেন?

 দক্ষ শিক্ষকরা, তাদের ছাত্রদের তারা যা বলে কেবল সেটার প্রতিই নয় কিন্তু সেইসঙ্গে কীভাবে তা বলে সেটার প্রতিও মনোযোগ দেয়। বাইবেলের সত্যের শিক্ষক হিসেবে, আমরাও তা-ই করি। আমরা যে-বার্তা প্রচার করি এবং যে-পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করি, উভয় ক্ষেত্রেই মনোযোগ দিই। আমাদের বার্তা অর্থাৎ ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার পরিবর্তন হয় না কিন্তু আমরা আমাদের পদ্ধতিগুলোকে উপযোগী করে তুলি। কেন? যত বেশি লোকের কাছে সম্ভব পৌঁছানোর জন্য।

২. আমরা যখন আমাদের প্রচারের পদ্ধতিগুলোকে উপযোগী করে তুলি, তখন আমরা কাদের অনুকরণ করি?

আমাদের প্রচারের পদ্ধতিগুলোকে উপযোগী করে তোলার মাধ্যমে, আমরা ঈশ্বরের প্রাচীনকালের দাসদের অনুকরণ করি। উদাহরণস্বরূপ, প্রেরিত পৌলের কথা বিবেচনা করুন। তিনি বলেছিলেন: “আমি . . . যিহূদীদের কাছে যিহূদীর ন্যায় হইলাম; . . . ব্যবস্থাবিহীনদের কাছে ব্যবস্থাবিহীনের ন্যায় হইলাম। দুর্ব্বলদিগকে লাভ করিবার জন্য আমি দুর্ব্বলদের কাছে দুর্ব্বল হইলাম; সর্ব্বদা কতকগুলি লোককে পরিত্রাণ করিবার জন্য আমি সর্ব্বজনের কাছে সর্ব্ববিধ হইলাম।” (১ করিন্থীয় ৯:১৯-২৩) পৌলের উপযোগী পদ্ধতিগুলো কার্যকারী ছিল। আমরাও কার্যকারী হব, যদি আমরা যে-লোকেদের সঙ্গে কথা বলি, তাদের প্রতি আমাদের উপস্থাপনাগুলোকে উপযোগী করার জন্য বিবেচনাপূর্বক সমন্বয় সাধন করি।

“পৃথিবীর প্রান্ত” পর্যন্ত

৩. (ক) আমাদের প্রচার কাজে আমরা কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হই? (খ) যিশাইয় ৪৫:২২ পদের কথাগুলো আজকে কীভাবে পরিপূর্ণ হচ্ছে?

যারা সুসমাচার প্রচার করে, তারা সবচেয়ে বড় যে-প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হয় সেটা হল এলাকার আয়তন—‘সমুদয় জগৎ।’ (মথি ২৪:১৪) বিগত শতাব্দীতে, যিহোবার অনেক দাস সুসমাচার ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য নতুন নতুন জায়গায় যেতে কঠোর পরিশ্রম করেছে। এর ফল কী হয়েছে? বিশ্বব্যাপী বিস্ময়কর সম্প্রসারণ হয়েছে। বিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে মাত্র অল্প কয়েকটা দেশে প্রচার কাজ হয়েছিল কিন্তু বর্তমানে যিহোবার সাক্ষিরা দ্বীপ ও দেশ মিলিয়ে ২৩৫টা জায়গায় সক্রিয় রয়েছে! সত্যিই রাজ্যের সুসমাচার এমনকি “পৃথিবীর প্রান্ত” পর্যন্ত ঘোষিত হচ্ছে।—যিশাইয় ৪৫:২২.

৪, ৫. (ক) সুসমাচার ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে কারা এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে? (খ) কয়েকটা শাখা অফিস বিদেশ থেকে আসা সেই ব্যক্তিদের সম্বন্ধে কী বলে, যারা শাখার অধীনস্থ এলাকাতে কাজ করে?

এই ধরনের উন্নতির কারণগুলো কী? অনেক কিছু। মিশনারিরা ওয়াচটাওয়ার বাইবেল স্কুল অফ গিলিয়েড-এ প্রশিক্ষণ পেয়েছে এবং আরও সম্প্রতি মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুল থেকে গ্র্যাজুয়েটপ্রাপ্ত ২০,০০০রেরও বেশি সংখ্যক ব্যক্তি বিরাট অবদান রেখেছে। তাই, অনেক সাক্ষি তাদের নিজেদের খরচে সেই জায়গাগুলোতে গিয়েছে, যেখানে রাজ্য প্রকাশকদের বেশি প্রয়োজন। এই আত্মত্যাগী খ্রিস্টানরা—নারী ও পুরুষ, যুবক ও বৃদ্ধ, অবিবাহিত ও বিবাহিত ব্যক্তিরা—সারা পৃথিবীতে রাজ্যের বার্তা প্রচার করার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। (গীতসংহিতা ১১০:৩; রোমীয় ১০:১৮) তাদেরকে অত্যন্ত মূল্যবান বলে গণ্য করা হয়। লক্ষ করুন যে, কয়েকটা শাখা অফিস বিদেশ থেকে আসা সেই ব্যক্তিদের সম্বন্ধে কী লিখেছে, যারা শাখার অধীনস্থ সেই এলাকাতে সেবা করে, যেখানে বেশি প্রয়োজন।

“এই প্রিয় সাক্ষিরা বিচ্ছিন্ন এলাকাগুলোতে প্রচার করার, নতুন নতুন মণ্ডলী গড়ে তোলার এবং স্থানীয় ভাই ও বোনদের আধ্যাত্মিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব নেয়।” (ইকুয়েডর) “এখানে যে-শত শত বিদেশিরা সেবা করে, তাদেরকে যদি চলে যেতে হয়, তা হলে মণ্ডলীর সুস্থিত অবস্থা প্রভাবিত হবে। আমাদের সঙ্গে তাদেরকে পাওয়া এক আশীর্বাদ।” (ডোমিনিকান রিপাবলিক) “আমাদের অনেক মণ্ডলীতে বোনদের সংখ্যা বেশি আর মাঝে মাঝে তা ৭০ শতাংশ। (গীতসংহিতা ৬৮:১১) তাদের মধ্যে বেশির ভাগ বোনই সত্যে নতুন কিন্তু যে-অবিবাহিত অগ্রগামী বোনেরা অন্য দেশগুলো থেকে এসেছে, তারা এই নতুন বোনদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে অমূল্য সাহায্য জুগিয়ে থাকে। বিদেশ থেকে আসা এই বোনেরা আমাদের কাছে এক প্রকৃত উপহার!” (পূর্ব ইউরোপের একটা দেশ) আপনি কি কখনো অন্য দেশে সেবা করার কথা ভেবে দেখেছেন? *প্রেরিত ১৬:৯, ১০.

“সর্ব্ব ভাষাবাদী দশ দশ পুরুষ”

৬. সখরিয় ৮:২৩ পদ কীভাবে আমাদের প্রচার কাজে ভাষাগত প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে ইঙ্গিত করে?

আরেকটা বড় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হল, সারা পৃথিবীতে বলা ভাষার বিরাট বৈচিত্র্য। ঈশ্বরের বাক্য ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল: “তৎকালে জাতিগণের সর্ব্ব ভাষাবাদী দশ দশ পুরুষ এক এক যিহূদী পুরুষের বস্ত্রের অঞ্চল ধরিয়া এই কথা কহিবে, আমরা তোমাদের সহিত যাইব, কেননা আমরা শুনিলাম, ঈশ্বর তোমাদের সহবর্ত্তী।” (সখরিয় ৮:২৩) এই ভবিষ্যদ্বাণীর আধুনিক পরিপূর্ণতায় দশ দশ পুরুষ প্রতিনিধিত্ব করে বিস্তর লোককে, যে-সম্বন্ধে প্রকাশিত বাক্য ৭:৯ পদে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল। কিন্তু লক্ষ করুন যে, সখরিয়ের ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে, “দশ দশ পুরুষ” কেবলমাত্র সমস্ত জাতি থেকেই আসবে না কিন্তু সেইসঙ্গে “জাতিগণের সর্ব্ব ভাষাবাদী” থেকেও আসবে। আমরা কি ভবিষ্যদ্বাণীর এই গুরুত্বপূর্ণ বিশদ বিবরণটির পরিপূর্ণতা দেখতে পেয়েছি? হ্যাঁ, তা দেখতে পেয়েছি।

৭. কোন পরিসংখ্যান দেখায় যে, “সর্ব্ব ভাষাবাদী” থেকে আসা লোকের কাছে সুসমাচার নিয়ে যাওয়া হচ্ছে?

কিছু পরিসংখ্যান বিবেচনা করুন। পঞ্চাশ বছর আগে আমাদের সাহিত্যাদি ৯০টা ভাষায় প্রকাশিত হয়েছিল। আজকে সেই সংখ্যা ৪০০রও ওপরে গিয়ে পৌঁছেছে। “বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্‌ দাস” এমনকি সেই ব্যক্তিদের জন্য সাহিত্যাদি জোগানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে, যাদের ভাষায় তুলনামূলকভাবে কম লোক কথা বলে থাকে। (মথি ২৪:৪৫) উদাহরণস্বরূপ, বাইবেল সাহিত্যাদি এখন গ্রীনল্যানডিক (যে-ভাষায় ৪৭,০০০ লোক কথা বলে), পালাউয়ান (যে-ভাষায় ১৫,০০০ লোক কথা বলে) এবং ইয়্যাপিজ্‌ (যে-ভাষায় ৭,০০০রেরও কম লোক কথা বলে) ভাষায় পাওয়া যাচ্ছে।

‘এক বৃহৎ দ্বার’ নতুন নতুন সুযোগের দিকে পরিচালিত করছে

৮, ৯. কোন বৃদ্ধিরত পরিস্থিতিগুলো আমাদের জন্য ‘এক বৃহৎ দ্বার’ খুলে দিয়েছে এবং হাজার হাজার সাক্ষি তাতে কীভাবে সাড়া দিয়েছে?

তবে, বর্তমানে সব ভাষার লোকেদের কাছে সুসমাচার প্রচার করার জন্য আমাদের হয়তো বিদেশে যেতে হয় না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, অর্থনৈতিক দিক দিয়ে উন্নত দেশগুলোতে লক্ষ লক্ষ অভিবাসী ও শরণার্থী বহু অভিবাসী সমাজ গড়ে তুলেছে, যেখানে অনেক ভাষায় কথা বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ, ফ্রান্সের প্যারিসে প্রায় ১০০টা ভাষায় কথা বলা হয়। কানাডার টরেন্টোতে সেই সংখ্যা ১২৫; আর ইংল্যান্ডের লন্ডনে ৩০০রও বেশি বিদেশি ভাষায় কথা বলা হয়! অনেক মণ্ডলীর এলাকাগুলোতে অন্যান্য দেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের এই উপস্থিতি ‘এক বৃহৎ দ্বার’ খুলে দেয়, যা সমস্ত জাতির লোকেদের কাছে সুসমাচার জানানোর নতুন নতুন সুযোগের দিকে পরিচালিত করে।—১ করিন্থীয় ১৬:৯.

হাজার হাজার সাক্ষি অন্য আরেকটা ভাষা শেখার মাধ্যমে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রতি সাড়া দিচ্ছে। তাদের বেশির ভাগের কাছেই এটা কঠিন; কিন্তু অভিবাসী এবং শরণার্থীদের ঈশ্বরের বাক্যে পাওয়া সত্য সম্বন্ধে শিখতে সাহায্য করার আনন্দের দ্বারা সেই সংগ্রাম প্রচুররূপে পুরস্কৃত হয়। সাম্প্রতিক বছরে, পশ্চিম ইউরোপের একটা দেশে জেলা সম্মেলনে বাপ্তাইজিত সমস্ত ব্যক্তির মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ ব্যক্তি অন্য দেশ থেকে এসেছিল।

১০. সমস্ত জাতির লোকেদের জন্য সুসমাচার পুস্তিকাটি আপনি কীভাবে ব্যবহার করেছেন? (২৬ পৃষ্ঠায় “সমস্ত জাতির লোকেদের জন্য সুসমাচার পুস্তিকাটির বৈশিষ্ট্যগুলো” নামক বাক্সটা দেখুন।)

১০ এটা সত্য যে, আমাদের মধ্যে বেশির ভাগই একটা বিদেশি ভাষা শেখার মতো অবস্থায় নেই। তা সত্ত্বেও, আমরা নতুন প্রকাশিত সমস্ত জাতির লোকেদের জন্য সুসমাচার * (ইংরেজি) পুস্তিকাটি ভালভাবে ব্যবহার করার মাধ্যমে অভিবাসীদের সাহায্য করায় অংশ নিতে পারি, যেটির মধ্যে অনেকগুলো ভাষায় বাইবেলের হৃদয়গ্রাহী বার্তা রয়েছে। (যোহন ৪:৩৭) আপনি কি এই পুস্তিকাটি পরিচর্যায় ব্যবহার করছেন?

লোকেরা যখন সাড়া দেয় না

১১. কিছু এলাকায় আরও কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হয়?

১১ পৃথিবীতে শয়তানের প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রায়ই আরও একটা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় আর সেটা হল কিছু এলাকায় সামান্য সাড়া পাওয়া। অবশ্য, এই পরিস্থিতি আমাদের অবাক করে না কারণ যিশু ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, এই ধরনের এক পরিস্থিতি বিরাজ করবে। আমাদের দিন সম্বন্ধে বলতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন: “অধিকাংশ লোকের প্রেম শীতল হইয়া যাইবে।” (মথি ২৪:১২) বস্তুতপক্ষে, অনেকের মধ্যে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস এবং বাইবেলের প্রতি সম্মান হ্রাস পেয়েছে। (২ পিতর ৩:৩, ৪) এর ফলে, পৃথিবীর কিছু কিছু জায়গায় তুলনামূলকভাবে অল্পসংখ্যক ব্যক্তি খ্রিস্টের নতুন শিষ্য হচ্ছে। কিন্তু, এর অর্থ এই নয় যে, আমাদের সেই সমস্ত প্রিয় খ্রিস্টান ভাই ও বোনের পরিশ্রম বৃথা হয়েছে, যারা সাড়া দেয় না এমন এলাকাগুলোতে বিশ্বস্ততার সঙ্গে প্রচার করে। (ইব্রীয় ৬:১০) কেন নয়? পরবর্তী বিষয়টা বিবেচনা করুন।

১২. আমাদের প্রচার কাজের দুটো উদ্দেশ্য কী?

১২ মথির সুসমাচার আমাদের প্রচার কাজের দুটো মূল উদ্দেশ্য তুলে ধরে। একটা হল, আমরা “সমুদয় জাতিকে শিষ্য” করি। (মথি ২৮:১৯) আর অন্যটা হল, রাজ্যের বার্তা এক “সাক্ষ্য” হিসেবে কাজ করে। (মথি ২৪:১৪) দুটো উদ্দেশ্যই গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু পরেরটা বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। কেন?

১৩, ১৪. (ক) খ্রিস্টের আগমনের এক উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য কী? (খ) আমাদের কী মনে রাখা উচিত, বিশেষভাবে যখন আমরা কম সাড়া দেয় এমন এলাকাগুলোতে কাজ করি?

১৩ বাইবেল লেখক মথি লেখেন যে, প্রেরিতরা যিশুকে জিজ্ঞেস করেছিল: “আপনার আগমনের এবং যুগান্তের চিহ্ন কি?” (মথি ২৪:৩) এর উত্তরে যিশু বলেছিলেন যে, সেই চিহ্নের এক উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হবে পৃথিবীব্যাপী এক প্রচার কাজ। তিনি কি শিষ্য তৈরির করার বিষয়ে বলছিলেন? না। তিনি বলেছিলেন: “সর্ব্ব জাতির কাছে সাক্ষ্য দিবার নিমিত্ত রাজ্যের এই সুসমাচার সমুদয় জগতে প্রচার করা যাইবে।” (মথি ২৪:১৪) এভাবে, যিশু দেখিয়েছিলেন যে, রাজ্য প্রচার কাজই সেই চিহ্নের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হবে।

১৪ তাই, আমরা যখন রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করি, তখন আমরা মনে রাখি যে, এমনকি আমরা যদি সবসময় শিষ্য তৈরির কাজে সফল না-ও হই, আমরা “সাক্ষ্য” দেওয়ার কাজে সফল হচ্ছি। লোকেরা যেরকম সাড়াই দিক না কেন, তারা জানে যে আমরা কী করছি আর এভাবে আমরা যিশুর ভবিষ্যদ্বাণীর পরিপূর্ণতায় অংশ নিই। (যিশাইয় ৫২:৭; প্রকাশিত বাক্য ১৪:৬, ৭) জর্ডি নামে পশ্চিম ইউরোপের একজন যুবতী সাক্ষি বলেছিল: “মথি ২৪:১৪ পদের পরিপূর্ণতায় অংশ নেওয়ার জন্য যিহোবা আমাকে ব্যবহার করছেন, তা জানাই আমাকে অনেক আনন্দিত করে।” (২ করিন্থীয় ২:১৫-১৭) কোনো সন্দেহ নেই যে, আপনিও একইরকম বোধ করেন।

যখন আমাদের বার্তার বিরোধিতা করা হয়

১৫. (ক) যিশু তাঁর অনুসারীদের কোন বিষয়ে আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলেন? (খ) বিরোধিতা সত্ত্বেও, কোন বিষয়টা আমাদের প্রচার করতে সমর্থ করে?

১৫ প্রতিকূল পরিস্থিতি রাজ্যের সুসমাচার প্রচারে আরেকটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে আসে। যিশু তাঁর অনুসারীদের আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলেন: “আমার নাম প্রযুক্ত সমুদয় জাতি তোমাদিগকে দ্বেষ করিবে।” (মথি ২৪:৯) প্রাথমিক খ্রিস্টানদের মতো, আজকে যিশুর অনুসারীদের ঘৃণা, বিরোধিতা এবং তাড়না করা হয়েছে। (প্রেরিত ৫:১৭, ১৮, ৪০; ২ তীমথিয় ৩:১২; প্রকাশিত বাক্য ১২:১২, ১৭) কিছু কিছু দেশে তারা বর্তমানে সরকারি নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্যবস্তু। তা সত্ত্বেও, ঈশ্বরের প্রতি বাধ্যতার কারণে এই দেশগুলোতে সত্য খ্রিস্টানরা ক্রমাগত রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করে যাচ্ছে। (আমোষ ৩:৮; প্রেরিত ৫:২৯; ১ পিতর ২:২১) কোন বিষয়টা তাদেরকে ও সেইসঙ্গে পৃথিবীব্যাপী অন্য সমস্ত সাক্ষিকে তা করতে সমর্থ করে? যিহোবা তাদেরকে তাঁর পবিত্র আত্মার মাধ্যমে শক্তিশালী করেন।—সখরিয় ৪:৬; ইফিষীয় ৩:১৬; ২ তীমথিয় ৪:১৭.

১৬. কীভাবে যিশু প্রচার কাজ এবং ঈশ্বরের আত্মার মধ্যে যোগসূত্র দেখিয়েছিলেন?

১৬ ঈশ্বরের আত্মা এবং প্রচার কাজের মধ্যে যে-ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র রয়েছে, যিশু সেটার ওপর জোর দিয়েছিলেন যখন তিনি তাঁর অনুসারীদের বলেছিলেন: “পবিত্র আত্মা তোমাদের উপরে আসিলে তোমরা শক্তি প্রাপ্ত হইবে; আর তোমরা . . . পৃথিবীর প্রান্ত পর্য্যন্ত আমার সাক্ষী হইবে।” (প্রেরিত ১:৮; প্রকাশিত বাক্য ২২:১৭) এই শাস্ত্রপদের ঘটনাগুলোর ধারাবাহিকতা তাৎপর্যপূর্ণ। প্রথমে, শিষ্যরা পবিত্র আত্মা লাভ করেছিল এবং এরপর তারা পৃথিবীব্যাপী সাক্ষ্য দেওয়ার কাজের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল। একমাত্র ঈশ্বরের আত্মার সাহায্যে “সর্ব্ব জাতির কাছে সাক্ষ্য” দেওয়ার কাজ করে চলার শক্তি তাদের থাকবে। (মথি ২৪:১৩, ১৪; যিশাইয় ৬১:১, ২) তাই উপযুক্তভাবে, যিশু পবিত্র আত্মাকে “সহায়” হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। (যোহন ১৫:২৬) তিনি বলেছিলেন যে, ঈশ্বরের আত্মা তাঁর শিষ্যদের শিক্ষা এবং নির্দেশনা দেবে।—যোহন ১৪:১৬, ২৬; ১৬:১৩.

১৭. আমরা যখন চরম বিরোধিতার মুখোমুখি হই, তখন পবিত্র আত্মা কীভাবে আমাদের সাহায্য করে?

১৭ কোন কোন উপায়ে ঈশ্বরের আত্মা আজকে আমাদের সাহায্য করে, যখন আমরা সুসমাচার প্রচার কাজে প্রচণ্ড বিরোধিতার মুখোমুখি হই? ঈশ্বরের আত্মা আমাদের শক্তিশালী করে এবং এটি তাদের বিরোধিতা করে, যারা আমাদের তাড়না করে। এই বিষয়ে স্পষ্ট হওয়ার জন্য রাজা শৌলের একটা ঘটনা বিবেচনা করুন।

ঈশ্বরের আত্মার দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত

১৮. (ক) শৌলের মধ্যে কোন নাটকীয় খারাপ পরিবর্তন হয়েছিল? (খ) দায়ূদকে তাড়না করার জন্য শৌল কোন পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করেছিলেন?

১৮ ইস্রায়েলের প্রথম রাজা হিসেবে শৌলের আরম্ভটা ভালই ছিল কিন্তু পরে তিনি যিহোবার অবাধ্য হয়ে পড়েছিলেন। (১ শমূয়েল ১০:১, ২৪; ১১:১৪, ১৫; ১৫:১৭-২৩) এর ফলে, ঈশ্বরের আত্মা আর রাজাকে সমর্থন করেনি। শৌল দায়ূদের ওপর প্রচণ্ড রেগে যান, যাকে পরবর্তী রাজা হিসেবে অভিষিক্ত করা হয়েছিল এবং যিনি তখন ঈশ্বরের আত্মার সমর্থন লাভ করছিলেন। (১ শমূয়েল ১৬:১, ১৩, ১৪) দায়ূদকে সহজ শিকার বলেই মনে হয়েছিল। কারণ তার কাছে কেবল একটা বীণা ছিল আর অন্যদিকে শৌল দক্ষতার সঙ্গে বর্শা চালনা করতে পারতেন। তাই, একদিন দায়ূদ বীণা বাজানোর সময় “শৌল সেই বড়শা নিক্ষেপ করিলেন, বলিলেন, আমি দায়ূদকে ভিত্তির সঙ্গে গাঁথিব; কিন্তু দায়ূদ দুই বার তাঁহার সম্মুখ হইতে সরিয়া গেলেন।” (১ শমূয়েল ১৮:১০, ১১) পরে, শৌল তার ছেলে ও দায়ূদের বন্ধু যোনাথনের কথা শোনেন এবং দিব্য করেন: “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্য, [দায়ূদ] হত হইবে না।” কিন্তু, এরপর শৌল আবারও “বড়শা দিয়া দায়ূদকে ভিত্তির সঙ্গে গাঁথিতে চেষ্টা করিলেন।” তবে, দায়ূদ “শৌলের সম্মুখ হইতে সরিয়া যাওয়াতে তাঁহার বড়শা ভিত্তিতে ঢুকিয়া গেল।” দায়ূদ পালিয়ে গিয়েছিলেন কিন্তু শৌল তার পিছনে পিছনে গিয়েছিলেন। সেই কঠিন সময়ে ঈশ্বরের আত্মা শৌলের বিরোধী হয়ে উঠেছিল। কীভাবে?—১ শমূয়েল ১৯:৬, ১০.

১৯. কীভাবে ঈশ্বরের আত্মা দায়ূদকে রক্ষা করেছিল?

১৯ দায়ূদ ভাববাদী শমূয়েলের কাছে পালিয়ে গিয়েছিলেন কিন্তু শৌল দায়ূদকে ধরে নিয়ে আসার জন্য তার লোকেদের পাঠান। তবে, তারা যখন দায়ূদের লুকিয়ে থাকার স্থানে এসে পৌঁছায়, তখন “ঈশ্বরের আত্মা শৌলের দূতগণের উপরে আসিলেন, তাহাতে তাহারা ভাবোক্তি প্রচার করিতে লাগিল।” ঈশ্বরের আত্মা দ্বারা তারা এতটাই আবিষ্ট হয়ে পড়েছিল যে, তারা তাদের সেখানে যাওয়ার উদ্দেশ্য পুরোপুরি ভুলে গিয়েছিল। আরও দুবার শৌল তার লোকেদের দায়ূদকে ধরে নিয়ে আসার জন্য পাঠান কিন্তু প্রতিবারই একই ঘটনা ঘটে। অবশেষে, রাজা শৌল নিজে দায়ূদের কাছে যান কিন্তু শৌলও ঈশ্বরের আত্মার প্রতিরোধ করতে অসমর্থ হন। বস্তুতপক্ষে, পবিত্র আত্মা তাকে “দিবারাত্রি” নিষ্ক্রিয় করে রেখেছিল আর এটা দায়ূদকে পালানোর জন্য যথেষ্ট সময় করে দিয়েছিল।—১ শমূয়েল ১৯:২০-২৪.

২০. দায়ূদের ওপর শৌলের তাড়নার ঘটনা থেকে আমরা কোন শিক্ষা পেতে পারি?

২০ শৌল এবং দায়ূদের এই ঘটনার মধ্যে এক জোরালো শিক্ষা রয়েছে: ঈশ্বরের আত্মার বিরোধিতা করলে ঈশ্বরের দাসদের তাড়নাকারীরা সফল হতে পারে না। (গীতসংহিতা ৪৬:১১; ১২৫:২) যিহোবার উদ্দেশ্য ছিল যে দায়ূদ ইস্রায়েলের ওপর রাজা হবে। কেউই সেটা পরিবর্তন করতে পারেনি। আমাদের দিনের জন্য যিহোবা নির্ধারণ করেছেন যে, “রাজ্যের সুসমাচার . . . প্রচার করা যাইবে।” কেউই তা করাকে বন্ধ করতে পারবে না।—প্রেরিত ৫:৪০, ৪২.

২১. (ক) আজকে কিছু বিরোধী কীভাবে আচরণ করে থাকে? (খ) আমরা কোন বিষয়ে আস্থা রাখতে পারি?

২১ কিছু ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক নেতা আমাদেরকে বাধা দেওয়ার চেষ্টায় বিভিন্ন মিথ্যা ও এমনকি দৌরাত্ম্যকে ব্যবহার করে। কিন্তু, যিহোবা যেমন দায়ূদকে আধ্যাত্মিকভাবে রক্ষা করেছিলেন, তেমনই তিনি আজকে তাঁর লোকেদের রক্ষা করবেন। (মালাখি ৩:৬) তাই, দায়ূদের মতো আমরা আস্থা সহকারে বলি: “আমি ঈশ্বরে নির্ভর করিয়াছি, ভয় করিব না; মনুষ্য আমার কি করিতে পারে?” (গীতসংহিতা ৫৬:১১; ১২১:১-৮; রোমীয় ৮:৩১) যিহোবার সাহায্যে আমরা যেন সমস্ত জাতির লোকেদের কাছে রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করার বিষয়ে ঈশ্বরদত্ত দায়িত্ব পালন করার সময় সমস্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা ক্রমাগত মোকাবিলা করে চলি।

[পাদটীকাগুলো]

^ ২২ পৃষ্ঠায় “পরিতৃপ্তির এক গভীর অনুভূতি” নামক বাক্সটা দেখুন।

^ যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত।

আপনি কি মনে করতে পারেন?

• কেন আমরা আমাদের প্রচারের পদ্ধতিগুলোকে উপযোগী করে তুলি?

• ‘এক বৃহৎ দ্বার’ নতুন নতুন কোন সুযোগের দিকে পরিচালিত করে, যা খোলা হয়েছে?

• এমনকি কম সাড়া দেয় এমন এলাকাগুলোতেও আমাদের প্রচার কাজ কী সম্পাদন করে?

• কেন কোনো বিরোধীই রাজ্যের সুসমাচার প্রচার বন্ধ করতে পারে না?

[অধ্যয়ন প্রশ্নাবলি]

[২২ পৃষ্ঠার বাক্স]

পরিতৃপ্তির এক গভীর অনুভূতি

“যিহোবার প্রতি তাদের ঐক্যবদ্ধ সেবায় আনন্দিত এবং তারা তা উপভোগ করছে।” একটা পরিবার সম্বন্ধে এভাবেই বর্ণনা করা হয়েছে, যারা স্পেন থেকে বলিভিয়ায় এসেছে। সেই পরিবারের এক ছেলে প্রথমে এক বিচ্ছিন্ন দলকে সহযোগিতা করার জন্য সেখানে গিয়েছিলেন। তিনি যে-আনন্দ দেখিয়েছিলেন, তা তার বাবামার ওপর এতটাই ছাপ ফেলেছিল যে, শীঘ্রই পুরো পরিবার—যাদের অন্তর্ভুক্ত ১৪ থেকে ২৫ বছর বয়সি চার ছেলে—সেখানে সেবা করার জন্য গিয়েছিল। তাদের মধ্যে তিন জন এখন অগ্রগামীর কাজ করছে এবং যে-ছেলে প্রথমে সেখানে গিয়েছিলেন, তিনি সম্প্রতি মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুলে যোগদান করেছেন।

“প্রতিদ্বন্দ্বিতা অনেক,” কানাডার ৩০ বছর বয়সি আ্যঞ্জেলিকা বলেন, যিনি পূর্ব ইউরোপে সেবা করেন। “কিন্তু, পরিচর্যায় লোকেদের সাহায্য করে আমি পরিতৃপ্তি পেয়েছি। এ ছাড়া, স্থানীয় সাক্ষিদের কাছ থেকে আসা কৃতজ্ঞতার অনেক অভিব্যক্তি আমার হৃদয়কে স্পর্শ করেছে, যারা প্রায়ই তাদের সাহায্য করার জন্য আমি এসেছি বলে আমাকে ধন্যবাদ জানায়।”

“অনেক ধরনের প্রথা ছিল, যেগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়েছিল,” যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা দুজন আপন বোন বলে, যাদের বয়স ২০ এর কোঠার শেষের দিকে আর তারা ডোমিনিকান রিপাবলিকে সেবা করে। “কিন্তু, আমরা আমাদের কার্যভারে অটল ছিলাম এবং আমাদের বাইবেল ছাত্রদের মধ্যে সাত জন এখন সভাতে যোগ দিচ্ছে।” এই দুজন বোন সেই শহরে রাজ্য প্রকাশকদের একটা দল গঠনে সহায়ক ছিল, যেখানে কোনো মণ্ডলী নেই।

লরা নামে এক বোন, যার বয়স ২০ এর কোঠার শেষের দিকে, তিনি চার বছর ধরে বিদেশে সেবা করছেন। তিনি বলেন: “আমি ইচ্ছে করেই আমার জীবন সাধাসিধে রাখি। এটা প্রকাশকদের দেখতে সাহায্য করে যে, সাধাসিধে জীবনযাপন করা বেছে নেওয়ার মতো একটা বিষয় আর তা বুদ্ধির পরিচয় দেয়, দারিদ্রের নয়। অন্যদের, বিশেষভাবে অল্পবয়স্কদের সাহায্য করা আমার জন্য আনন্দের উৎস হয়েছে, যা বিদেশের ক্ষেত্রে সেবা করার প্রকৃত কষ্টকে লাঘব করে। অন্য যেকোনো জীবনের সঙ্গে আমি এই সেবাকে বিনিময় করতে চাই না এবং যিহোবা যতদিন চান, ততদিন আমি এখানে থাকব।”

[২৬ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্র]

সমস্ত জাতির লোকেদের জন্য সুসমাচার পুস্তিকাটির বৈশিষ্ট্যগুলো

সমস্ত জাতির লোকেদের জন্য সুসমাচার পুস্তিকাটির মধ্যে এক পৃষ্ঠার বার্তা রয়েছে। কিছু দেশের জন্য তৈরি সংস্করণে এটি ৯২টা ভাষা পর্যন্ত তুলে ধরা হয়েছে। বার্তাটি উত্তম পুরুষে লেখা হয়েছে। তাই, গৃহকর্তা যখন বার্তাটি পড়েন, তখন এটা এমন শোনায় যেন আপনি তার সঙ্গে কথা বলছেন।

এই পুস্তিকার প্রারম্ভিক মন্তব্য কয়েকটা পদক্ষেপ তুলে ধরে, যেগুলো সেই লোকেদের কার্যকরী সাহায্য প্রদান করার জন্য আমাদের গ্রহণ করা উচিত, যারা এমন একটা ভাষায় কথা বলে যা আমরা বুঝতে পারি না। দয়া করে এই পদক্ষেপগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং সেগুলো বিবেকবুদ্ধিপূর্বক প্রয়োগ করুন।

সূচিপত্র শুধুমাত্র ভাষার তালিকাই নয়, সেইসঙ্গে এর ঠিক পাশেই সেই ভাষার প্রতীকগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করে। এই বৈশিষ্ট্যটা আপনাকে ভাষার প্রতীকগুলোকে খুঁজে পেতে সাহায্য করবে, যা আমাদের অন্যান্য ভাষার ট্র্যাক্ট এবং প্রকাশনাগুলোতে ছাপানো রয়েছে।

[চিত্র]

আপনি কি এই পুস্তিকাটি পরিচর্যায় ব্যবহার করছেন?

[২৩ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

আমাদের বাইবেল সাহিত্যাদি এখন ৪০০রও বেশি ভাষায় পাওয়া যাচ্ছে

ঘানা

ল্যাপল্যান্ড (সুইডেন)

ফিলিপিনস

[২৪, ২৫ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

আপনি কি সেখানে সেবা করতে পারেন, যেখানে রাজ্য ঘোষণাকারীদের বেশি প্রয়োজন?

ইকুয়েডর

ডোমিনিকান রিপাবলিক