সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আপনি কি আপনার অনুভূতির সঙ্গে লড়াই করেন?

আপনি কি আপনার অনুভূতির সঙ্গে লড়াই করেন?

আপনি কি আপনার অনুভূতির সঙ্গে লড়াই করেন?

 লিনা তার জীবনের বেশির ভাগ সময়ই, নিজের সম্বন্ধে নেতিবাচক অনুভূতির সঙ্গে লড়াই করেছেন। “ছেলেবেলার বছরগুলোতে যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়া আমার অনেকখানি আত্মসম্মানবোধ নষ্ট করে দিয়েছিল,” তিনি বলেছিলেন। “আমার মনে হতো যে, আমি একেবারেই অকেজো।” সিমোনও তার তরুণ বয়সের কথা চিন্তা করে বলেন, “আমার মনের গভীরে একটা শূন্যতা ছিল আর মনে হতো যে, আমার কোনো মূল্যই নেই।” আজকে, এই ধরনের অনুভূতির কারণে প্রগাঢ় দুঃখ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে হয়। কিশোর-কিশোরীদের টেলিফোনে পরামর্শ প্রদানকারী একটা প্রতিষ্ঠান বলে যে, যারা তাদেরকে ফোন করে তাদের মধ্যে অর্ধেকই “সবসময় হীনম্মন্যতা” প্রকাশ করে থাকে।

কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, লোকেদের মধ্যে অযোগ্য মনে করার অনুভূতি তখনই উদ্ভব হয়, যখন অন্যেরা তাদের মূল্যহীন বলে মনে করতে পরিচালিত করে। এইরকম মনের অবস্থা হয়তো তখনই গড়ে ওঠে, যখন একজন ব্যক্তি ক্রমাগত বকাঝকা, মাত্রাতিরিক্ত ও কঠোর সমালোচনা কিংবা শোষণের শিকার হন। কারণ যা-ই হোক না কেন, এর পরিণতি অসহনীয় ও এমনকি ধ্বংসাত্মক হতে পারে। সাম্প্রতিক চিকিৎসা সংক্রান্ত একটা গবেষণা লক্ষ করেছে যে, নিজেদের সম্বন্ধে নেতিবাচক অনুভূতি পোষণকারী ব্যক্তিরা নিজেদের ও অন্যদের ওপর নির্ভরতা হারিয়ে ফেলে আর এভাবে তারা নিজের অজান্তেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও বন্ধুত্বকে নষ্ট করে ফেলে। গবেষণার রিপোর্টটা জানায়, “এক অর্থে, তারা ঠিক সেই ধরনের পরিস্থিতিগুলোর ‘সৃষ্টি’ করে, যেগুলোকে তারা সবচেয়ে বেশি ভয় পায়।”

যে-লোকেরা এভাবে চিন্তা করে থাকে, তারা প্রায়ই সেই অনুভূতির শিকার হয়, যেটাকে বাইবেল তাদের নিজেদের ‘মনের দুশ্চিন্তা’ বলে উল্লেখ করে। (গীতসংহিতা ৯৪:১৯, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন) তারা মনে করে যে তাদেরকে দিয়ে কখনোই কিছু হবে না। যখন খারাপ কিছু ঘটে, স্বাভাবিকভাবেই তারা নিজেদেরকে দোষ দিয়ে থাকে। যদিও অন্যেরা হয়তো তাদের সাফল্যগুলোর জন্য তাদেরকে প্রশংসা করে থাকে কিন্তু তারপরও মনের গভীরে তারা নিজেকে একজন প্রতারকের মতো মনে করে, যে আজ হোক বা কাল হোক প্রকাশ পাবেই। নিজেদের সুখী হওয়ার অযোগ্য মনে করে, তাদের মধ্যে অনেকে আত্মধ্বংসাত্মক আচরণে লিপ্ত হয় কারণ তারা নিজেদের সংশোধনের অক্ষম বলে মনে করে। লিনা, যার সম্বন্ধে শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছে, আত্মসম্মানবোধের অভাবে খাওয়াদাওয়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন আর তিনি স্বীকার করেন, “আমি কোনোকিছুই পরিবর্তন করতে সক্ষম ছিলাম না বলে মনে করেছিলাম।”

যারা এই ধরনের ‘মনের দুশ্চিন্তার’ সঙ্গে লড়াই করে, তারা কি জীবনের বাকি সময় ধরে তা করেই যাবে? এই ধরনের অনুভূতি প্রতিরোধ করার জন্য কিছু কি করা যেতে পারে? বাইবেল এমন কিছু নীতি ও ব্যবহারিক উপদেশ প্রদান করে, যেগুলো অনেক ব্যক্তিকে লড়াইয়ে সফল হতে সাহায্য করেছে। এর মধ্যে কিছু নীতি কী আর কীভাবে সেগুলো এইরকম কষ্টের শিকার ব্যক্তিদের জীবনে প্রকৃত আনন্দ খুঁজে পেতে সাহায্য করেছে? পরের প্রবন্ধ তা ব্যাখ্যা করবে।