সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

“মৃত্যু জয়ে কবলিত হইল”

“মৃত্যু জয়ে কবলিত হইল”

“মৃত্যু জয়ে কবলিত হইল”

 কল্পনা করুন, একটা মেয়ে আত্মহত্যা করেছে, এমন একটা শিরোনামের পরিবর্তে আপনি ওপরে দেওয়া শিরোনামটি একটি খবরের কাগজ পড়ছেন। অবশ্য, কোনো খবরের কাগজই কখনো এই ধরনের বিবৃতি প্রকাশ করতে পারেনি। কিন্তু উপরোক্ত এই কথাগুলো একটি বইয়ে পাওয়া যায়, যেটি হাজার হাজার বছরের পুরোনো আর সেটি হল বাইবেল।

শাস্ত্রে মৃত্যু সম্বন্ধে স্পষ্ট ব্যাখ্যা রয়েছে। এ ছাড়া, বাইবেল কেবলমাত্র এটাই জানায় না যে, আমরা কেন মারা যাই কিন্তু সেইসঙ্গে এটি মৃতদের অবস্থা সম্বন্ধেও ব্যাখ্যা দেয় এবং আমাদের মৃত প্রিয়জনদের বিষয়ে আশাও জোগায়। সব শেষে, এটি অতি গুরুত্বপূর্ণ এক সময়ের কথা বলে, যখন এটা রিপোর্ট করা সম্ভবপর হবে: “মৃত্যু জয়ে কবলিত হইল।”—১ করিন্থীয় ১৫:৫৪.

বাইবেল মৃত্যুকে রহস্যময় শব্দগুলোর পরিবর্তে পরিচিত শব্দগুলোর দ্বারা ব্যাখ্যা দেয়। উদাহরণস্বরূপ, এটি মারা যাওয়াকে “নিদ্রিত” হওয়ার সঙ্গে তুলনা করে এবং এটি মৃত লোকেদের “নিদ্রাগত” বলে বর্ণনা দেয়। (গীতসংহিতা ১৩:৩; ১ থিষলনীকীয় ৪:১৩; যোহন ১১:১১-১৪) এ ছাড়া, মৃত্যুকে “শত্রু” বলেও চিহ্নিত করা হয়েছে। (১ করিন্থীয় ১৫:২৬) এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা হচ্ছে, বাইবেল আমাদেরকে এটা বুঝতে সাহায্য করে যে, কেন মৃত্যু নিদ্রা যাওয়ার সমরূপ, কেন মৃত্যু মানবজাতিকে কষ্ট দেয় এবং কীভাবে শেষ পর্যন্ত এই শত্রুকে পরাজিত করা যাবে।

আমরা কেন মারা যাই?

বাইবেলের প্রথম পুস্তকটি জানায় যে, ঈশ্বর কীভাবে প্রথম মনুষ্য আদমকে সৃষ্টি করেছিলেন এবং এক পরমদেশতুল্য গৃহে রেখেছিলেন। (আদিপুস্তক ২:৭, ১৫) আদমকে যখন সৃষ্টি করা হয়েছিল, তখন সে কাজের দায়িত্ব ও সেইসঙ্গে একটা কড়া নিষেধাজ্ঞাও পেয়েছিল। এদন বাগানের এক নির্দিষ্ট গাছ সম্বন্ধে ঈশ্বর তাকে বলেছিলেন: “তাহার ফল ভোজন করিও না, কেননা যে দিন তাহার ফল খাইবে, সেই দিন মরিবেই মরিবে।” * (আদিপুস্তক ২:১৭) তাই, আদম বুঝতে পেরেছিল যে, মৃত্যু অপরিহার্য বিষয় ছিল। কোনো ঐশিক আইন লঙ্ঘন করার সরাসরি ফল হচ্ছে মৃত্যু।

দুঃখের বিষয় যে, আদম ও তার স্ত্রী হবা অবাধ্য হয়েছিল। তারা তাদের সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছাকে অবজ্ঞা করা বেছে নিয়েছিল আর সেটার পরিণতিগুলো ভোগ করেছিল। “তুমি ধূলি, এবং ধূলিতে প্রতিগমন করিবে,” ঈশ্বর এই কথাগুলো বলেছিলেন, যখন তিনি তাদের পাপের পরিণতিগুলো সম্বন্ধে জানিয়েছিলেন। (আদিপুস্তক ৩:১৯) তাদের মধ্যে গুরুতর ত্রুটি—অসিদ্ধতা—দেখা দিয়েছিল। তাদের অসিদ্ধতা বা পাপপূর্ণ অবস্থা তাদেরকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিল।

এ ছাড়া, এই ত্রুটি—পাপ—আদম ও হবার বংশধর, সমগ্র মানবকুলের মধ্যেও প্রবাহিত হয়েছিল। এক অর্থে, এটা এক বংশগত রোগের মতো ছিল। আদম কেবল মৃত্যুর অভিশাপ থেকে মুক্ত এক জীবন নিয়ে বেঁচে থাকার সুযোগই হারায়নি কিন্তু সেইসঙ্গে সে তার বংশধরদের মধ্যেও অসিদ্ধতা দিয়েছিল। মানব পরিবার পাপের দাসত্বে চলে এসেছিল। বাইবেল বলে: “অতএব যেমন এক মনুষ্য দ্বারা পাপ, ও পাপ দ্বারা মৃত্যু জগতে প্রবেশ করিল; আর এই প্রকারে মৃত্যু সমুদয় মনুষ্যের কাছে উপস্থিত হইল, কেননা সকলেই পাপ করিল।”—রোমীয় ৫:১২.

“পাপ . . . জগতে প্রবেশ করিল”

এই বংশগত ত্রুটি বা পাপকে কোনো অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে দেখা যায় না। “পাপ” ইঙ্গিত করে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক ঘাটতিকে, যা আমাদের প্রথম পিতামাতার কাছ থেকে আমাদের মধ্যে চলে এসেছিল এবং এর শারীরিক পরিণতিগুলোও রয়েছে। তবে বাইবেল জানায় যে, ঈশ্বর এক প্রতিকার জুগিয়েছেন। প্রেরিত পৌল ব্যাখ্যা দেন: “পাপের বেতন মৃত্যু; কিন্তু ঈশ্বরের অনুগ্রহ-দান আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টেতে অনন্ত জীবন।” (রোমীয় ৬:২৩) পৌলের কাছে অর্থপূর্ণ ছিল এমন একটা আশ্বাসবাণী তিনি করিন্থীয়দের উদ্দেশে লেখা তার প্রথম চিঠিতে যোগ করেছিলেন: “আদমে যেমন সকলে মরে, তেমনি আবার খ্রীষ্টেই সকলে জীবনপ্রাপ্ত হইবে।”—১ করিন্থীয় ১৫:২২.

স্পষ্টতই, যিশু খ্রিস্ট পাপ ও মৃত্যু দূর করার ব্যাপারে এক প্রধান ভূমিকা পালন করেন। তিনি বলেছিলেন যে, তিনি পৃথিবীতে “অনেকের পরিবর্ত্তে আপন প্রাণ মুক্তির মূল্যরূপে দিতে” এসেছিলেন। (মথি ২০:২৮) এই পরিস্থিতিটা এক অপহরণের ঘটনার সঙ্গে তুলনা করা যায়, যেখানে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করার দ্বারাই অপহৃত ব্যক্তিকে মুক্ত করা যেতে পারে। এই ক্ষেত্রে, মুক্তির সেই মূল্য যা আমাদেরকে পাপ ও মৃত্যু থেকে মুক্ত করতে পারে তা হল যিশুর সিদ্ধ মানব জীবন। *প্রেরিত ১০:৩৯-৪৩.

মুক্তির মূল্য প্রদান করতে, ঈশ্বর যিশুকে তাঁর জীবন বলি দেওয়ার জন্য পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন। “ঈশ্বর জগৎকে এমন প্রেম করিলেন যে, আপনার একজাত পুত্ত্রকে দান করিলেন, যেন, যে কেহ তাঁহাতে বিশ্বাস করে, সে . . . অনন্ত জীবন পায়।” (যোহন ৩:১৬) এক বলিদানমূলক মৃত্যুবরণ করার আগে খ্রিস্ট ‘সত্যের পক্ষে সাক্ষ্য দিয়াছিলেন।’ (যোহন ১৮:৩৭) আর তাঁর জনসাধারণ্যে পরিচর্যার সময় তিনি মৃত্যু সম্বন্ধে সত্য প্রকাশ করতে নির্দিষ্ট ঘটনার সদ্ব্যবহার করেছিলেন।

“কন্যাটী . . . ঘুমাইয়া রহিয়াছে”

যিশু যখন পৃথিবীতে ছিলেন তখন তিনি মৃত্যু সম্বন্ধে অজ্ঞাত ছিলেন না। তিনি তাঁর আশেপাশে থাকা লোকেদের হারানোর দুঃখ অনুভব করেছিলেন এবং তিনি পুরোপুরিভাবে অবগত ছিলেন যে, স্বয়ং তাঁর অকাল মৃত্যু ঘটবে। (মথি ১৭:২২, ২৩) স্পষ্টতই, যিশুকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার কয়েক মাস আগে, তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু লাসার মারা গিয়েছিলেন। সেই ঘটনা মৃত্যুর বিষয়ে যিশুর দৃষ্টিভঙ্গি সম্বন্ধে আমাদের এক অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে।

লাসারের মৃত্যু সংবাদ পাওয়া মাত্র যিশু বলেছিলেন: “আমাদের বন্ধু লাসার নিদ্রা গিয়াছে, কিন্তু আমি নিদ্রা হইতে তাহাকে জাগাইতে যাইতেছি।” শিষ্যরা ধরে নিয়েছিল যে, লাসার যদি ঘুমিয়ে থাকেন, তা হলে তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। তাই, যিশু স্পষ্টভাবে বলেছিলেন: “লাসার মরিয়াছে।” (যোহন ১১:১১-১৪) এর দ্বারা এই বিষয়টা একেবারে স্পষ্ট যে, যিশু বুঝিয়েছিলেন মৃত্যু হচ্ছে নিদ্রা যাওয়ার মতো। আমাদের ক্ষেত্রে মৃত্যুকে বোঝা হয়তো কঠিন বলে মনে হতে পারে, তবে নিদ্রা যাওয়ার অর্থ আমরা বুঝি। রাতে গভীর ঘুমের মধ্যে আমরা অতিবাহিত সময় এবং আমাদের চারপাশে কী ঘটছে, সেই বিষয়ে কিছুই জানতে পারি না কারণ আমরা ক্ষণস্থায়ীভাবে অচেতন অবস্থায় থাকি। মৃতদের অবস্থা সম্বন্ধে বাইবেল ঠিক এই ব্যাখ্যাই দেয়। উপদেশক ৯:৫ পদে বলে: “মৃতেরা কিছুই জানে না।”

এ ছাড়া, যিশু মৃত্যুকে নিদ্রা যাওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন কারণ ঈশ্বরের শক্তিতে মৃত্যু থেকে লোকেদের জাগিয়ে তোলা যেতে পারে। একবার যিশু শোকে দিশেহারা হয়ে পড়া এক পরিবারের বাড়িতে গিয়েছিলেন, যাদের কন্যাটি কিছুক্ষণ আগে মারা গিয়েছে। “কন্যাটী ত মরে নাই, ঘুমাইয়া রহিয়াছে,” যিশু বলেছিলেন। তারপর তিনি সেই মৃত কন্যাটির কাছে গিয়ে, তার হাত ধরেছিলেন এবং সে ‘উঠিয়াছিল।’ আরেকভাবে বললে, সে মৃত্যু থেকে উঠেছিল।—মথি ৯:২৪, ২৫.

একইভাবে, যিশু তাঁর বন্ধু লাসারকে মৃত্যু থেকে উঠিয়েছিলেন। কিন্তু, সেই অলৌকিক কাজটা করার আগে, তিনি লাসারের বোন মার্থাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেছিলেন: “তোমার ভাই আবার উঠিবে।” মার্থা আস্থার সঙ্গে উত্তর দিয়েছিলেন: “আমি জানি, শেষ দিনে পুনরুত্থানে সে উঠিবে।” (যোহন ১১:২৩, ২৪) স্পষ্টতই, তিনি আশা করেছিলেন যে, ঈশ্বরের সমস্ত দাস ভবিষ্যতে কোনো একসময় পুনরুত্থিত হবে।

পুনরুত্থান বলতে আসলে কী বোঝায়? “পুনরুত্থান” (আনাসটাসিস) হিসেবে অনুবাদিত গ্রিক শব্দের আক্ষরিক অর্থ হল “উঠে দাঁড়ানো।” এটা মৃত্যু থেকে ওঠাকে বোঝায়। কারো কারো কাছে এটা হয়তো অবিশ্বাস্য বলে মনে হতে পারে কিন্তু মৃতেরা তাঁর রব শুনবে, এই কথা বলার সময় যিশু বলেছিলেন: “ইহাতে আশ্চর্য্য মনে করিও না।” (যোহন ৫:২৮) পৃথিবীতে স্বয়ং যিশু যে-পুনরুত্থানগুলো সম্পাদন করেছিলেন, সেগুলো বাইবেলের প্রতিজ্ঞার ওপর আমাদের আস্থা জোগায় যে, ঈশ্বরের স্মরণে থাকা মৃতরা তাদের দীর্ঘ ‘নিদ্রা’ থেকে জেগে উঠবে। প্রকাশিত বাক্য ২০:১৩ পদ ভবিষ্যদ্বাণী করে: “সমুদ্র আপনার মধ্যবর্ত্তী মৃতগণকে সমর্পণ করিল, এবং মৃত্যু ও পাতাল [মানবজাতির সাধারণ কবর] আপনাদের মধ্যবর্ত্তী মৃতগণকে সমর্পণ করিল।”

এই মৃত লোকেদের কি শুধুমাত্র এই জন্য পুনরুত্থিত করা হবে যাতে তারা আবার বৃদ্ধ হয়ে মারা যায়, ঠিক যেমন লাসারের ক্ষেত্রে হয়েছিল? এটা ঈশ্বরের উদ্দেশ্য নয়। বাইবেল আমাদের আশ্বাস দেয় যে, এমন সময় আসবে যখন “মৃত্যু আর হইবে না,” তাই কেউ বৃদ্ধ হবে না ও তারপর মারা যাবে না।—প্রকাশিত বাক্য ২১:৪.

মৃত্যু হল এক শত্রু। মানবজাতির আরও অন্যান্য শত্রু রয়েছে যেমন অসুস্থতা ও বার্ধক্য যেগুলো একইভাবে অনেক কষ্ট নিয়ে আসে। ঈশ্বর এই সমস্তকিছুকে পরাভূত করার, শেষ পর্যন্ত মানবজাতির সবচেয়ে বড় শত্রুর ওপর দণ্ডাজ্ঞা নিয়ে আসার প্রতিজ্ঞা করেছেন। “শেষ শত্রু যে মৃত্যু, সেও বিলুপ্ত হইবে।”—১ করিন্থীয় ১৫:২৬.

এই প্রতিজ্ঞার পরিপূর্ণতাস্বরূপ, মানুষ পাপ ও মৃত্যুর দ্বারা কলুষতাহীন এক সিদ্ধ জীবন উপভোগ করবে। ইতিমধ্যে, আমরা এটা জানার দ্বারা সান্ত্বনা পেতে পারি যে, আমাদের মৃত প্রিয়জনেরা বিশ্রাম নিচ্ছে আর যদি তারা ঈশ্বরের স্মরণে থাকে, তা হলে তারা তাঁর নিরূপিত সময়ে পুনরুত্থিত হবে।

মৃত্যু সম্বন্ধে বোধগম্যতা জীবনকে অর্থপূর্ণ করতে সাহায্য করে

মৃত্যু ও মৃতদের আশা সম্বন্ধে স্পষ্ট বোধগম্যতা, জীবনের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে পালটে দিতে পারে। আগের প্রবন্ধে উল্লেখিত ইয়েনের বয়স যখন ২০-র কোঠায়, তখন সে মৃত্যু সম্বন্ধে বাইবেলের ব্যাখ্যা জানতে পেরেছিল। “আমার সবসময় এক অস্পষ্ট আশা ছিল যে, আমার বাবা কোথাও না কোথাও আছেন,” সে বলে। “তাই যখন আমি জেনেছিলাম যে, তিনি শুধু মৃত্যু-নিদ্রায় নিদ্রিত আছেন, তখন প্রথম প্রথম আমি খুব মনমরা হয়ে পড়েছিলাম।” কিন্তু, ইয়েন যখন মৃতদের পুনরুত্থানের বিষয়ে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা সম্বন্ধে পড়েছিল, তখন সে এটা জেনে খুবই আনন্দিত হয়েছিল যে, সে তার বাবাকে আবার দেখতে পাবে। “জীবনে এই প্রথম আমি শান্তি বোধ করেছিলাম,” সে স্মরণ করে বলে। মৃত্যু সম্বন্ধে এক সঠিক বোধগম্যতা তাকে মনের শান্তি এনে দিয়েছিল, যা তার মনকে শান্ত করেছিল।

ক্লাইভ ও ব্রেন্ডা তাদের ২১ বছর বয়সি ছেলে স্টিভেনকে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় হারিয়েছিল, যে-বিষয়ে আগের প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও তারা জানত যে, মৃত্যু সম্বন্ধে বাইবেল কী বলে, তবুও তারা হঠাৎ করে সন্তানকে হারিয়ে খুবই ভেঙে পড়েছিল। সত্যিই, মৃত্যু হল এক শত্রু এবং এর হুল খুবই যন্ত্রণাদায়ক। মৃতদের অবস্থা সম্বন্ধে তাদের শাস্ত্রীয় জ্ঞান ধীরে ধীরে তাদের দুঃখকে লাঘব করেছিল। ব্রেন্ডা বলেন: “মৃত্যু সম্বন্ধে আমাদের বোধগম্যতা আমাদের জীবনকে আবার গুছাতে এবং সামনের দিকে এগিয়ে চলার সুযোগ করে দিয়েছে। অবশ্য, এমন একটা দিনও কাটে না, যেদিন আমরা এই বিষয়টা চিন্তা করি না যে, কখন স্টিভেন তার গভীর নিদ্রা থেকে জেগে উঠবে।”

“মৃত্যু তোমার হুল কোথায়?”

স্পষ্টতই, মৃতদের অবস্থা সম্বন্ধে বোঝা আমাদেরকে জীবনের প্রতি এক ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে। মৃত্যু এক বিভ্রান্তিকর প্রশ্ন হয়ে থাকবে না। আমাদের হুমকি দিয়ে আসা এই শত্রুর সম্বন্ধে আতঙ্কজনক ভয় ছাড়াই আমরা জীবন উপভোগ করতে পারি। আর মৃত্যু চিরকালের জন্য আমাদের জীবনকে শেষ করে দেয় না, এই বিষয়টা উপলব্ধি করা আমাদেরকে “জীবন খুবই সংক্ষিপ্ত” এই বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে ভোগবিলাসের পিছনে ছোটার যেকোনো প্রবণতাকে দূর করে দেয়। আমাদের মৃত প্রিয়জনেরা যারা ঈশ্বরের স্মরণে রয়েছে, তারা মৃত্যু-নিদ্রায় নিদ্রিত রয়েছে এবং পুনরুত্থানের অপেক্ষা করছে, এই বিষয়টা জানা আমাদের সান্ত্বনা দিতে পারে ও জীবনে এগিয়ে চলার আকাঙ্ক্ষাকে উদ্দীপিত করতে পারে।

হ্যাঁ, আমরা ভবিষ্যতের দিকে আস্থার সঙ্গে তাকাতে পারি, যখন জীবনদাতা যিহোবা ঈশ্বর, মৃত্যুকে চিরকালের জন্য সমাহিত করবেন। কী এক আশীর্বাদই না তা হবে, যখন আমরা উপযুক্তভাবে বলতে পারব: “মৃত্যু, তোমার জয় কোথায়? মৃত্যু, তোমার হুল কোথায়?”—১ করিন্থীয় ১৫:৫৫, ৫৬.

[পাদটীকাগুলো]

^ বাইবেলে এই প্রথম মৃত্যু সম্বন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে।

^ মুক্তির মূল্য ছিল এক সিদ্ধ মানব জীবন কারণ আদম ঠিক সেইরকম জীবনই হারিয়েছিল। পাপ সমস্ত মানুষকে সংক্রামিত করেছিল, তাই কোনো অসিদ্ধ মানুষই সেই মুক্তির মূল্য দিতে পারত না। ফলে, ঈশ্বর সেই উদ্দেশ্যে তাঁর পুত্রকে স্বর্গ থেকে পাঠিয়েছিলেন। (গীতসংগিতা ৪৯:৭-৯) এই বিষয়বস্তু সম্বন্ধে আরও তথ্যের জন্য, যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত জ্ঞান যা অনন্ত জীবনে পরিচালিত করে বইয়ের ৭ অধ্যায় দেখুন।

[৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

আদম ও হবার অবাধ্যতা মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিল

[৬ পৃষ্ঠার চিত্র]

যিশু মৃত কন্যাটির হাত ধরেছিলেন এবং সে উঠেছিল

[৭ পৃষ্ঠার চিত্র]

অনেকেই সেই সময়ের অপেক্ষায় রয়েছে যখন, তাদের মৃত প্রিয়জনেরা নিদ্রা থেকে জেগে উঠবে, যেমন লাসার উঠেছিলেন