সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

বাবামারা—আপনাদের সন্তানদের জন্য আপনারা কোন ভবিষ্যৎ চান?

বাবামারা—আপনাদের সন্তানদের জন্য আপনারা কোন ভবিষ্যৎ চান?

বাবামারা—আপনাদের সন্তানদের জন্য আপনারা কোন ভবিষ্যৎ চান?

“যুবকগণ ও যুবতী সকল . . . সকলে সদাপ্রভুর নামের প্রশংসা করুক।”—গীতসংহিতা ১৪৮:১২, ১৩.

১. ছেলেমেয়েদের জন্য বাবামাদের কোন কোন চিন্তা রয়েছে?

 কোন বাবামা তাদের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উৎকণ্ঠার সঙ্গে চিন্তা করে না? যে-মুহূর্তে একটা বাচ্চা জন্মগ্রহণ করে—অথবা এমনকি জন্মের আগেই—বাবামা তার মঙ্গলের জন্য চিন্তা করতে শুরু করে। সে কি স্বাস্থ্যবান হবে? সে কি স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাবে? সন্তান বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিন্তা আরও বাড়তে থাকে। মোট কথা, বাবামারা তাদের সন্তানদের জন্য কেবল সর্বোত্তমটাই চায়।—১ শমূয়েল ১:১১, ২৭, ২৮; গীতসংহিতা ১২৭:৩-৫.

২. কেন আজকে অনেক বাবামা তাদের ছেলেমেয়েরা যাতে বড় হয়ে এক উত্তম জীবন উপভোগ করতে পারে, তা মনেপ্রাণে চায়?

কিন্তু, আজকের জগতে ছেলেমেয়েদের জন্য সর্বোত্তমটা জোগানো বাবামাদের পক্ষে এক প্রতিদ্বন্দ্বিতাস্বরূপ। অনেক বাবামাকে কঠিন সময়ের—যুদ্ধ, রাজনৈতিক আন্দোলন, টাকাপয়সার সমস্যা, শারীরিক অথবা মানসিক চাপ এবং আরও অনেক বিষয়ের—মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে, তাদের আন্তরিক ইচ্ছা হল যেন তাদের ছেলেমেয়েরা একই বিষয় ভোগ না করে। সমৃদ্ধশালী দেশগুলোতে বাবামারা হয়তো লক্ষ করে যে, তাদের বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়স্বজনের ছেলেমেয়েরা পেশাদারী কেরিয়ারগুলোতে এগিয়ে যাচ্ছে এবং দেখে মনে হয় যেন আপাতদৃষ্টিতে সফল জীবনযাপন উপভোগ করছে। তাই, তাদের ছেলেমেয়েরাও যাতে বড় হয়ে পরিমিত আরামদায়ক এবং নিরাপদ জীবন—এক উত্তম জীবন—উপভোগ করতে সমর্থ হয়, সেই বিষয়টা নিশ্চিত করতে তারা তাদের যথাসাধ্য করার জন্য বাধ্যবাধকতা বোধ করে।—উপদেশক ৩:১৩.

এক উত্তম জীবন বাছাই করা

৩. খ্রিস্টানরা কোন বিষয়টা বাছাই করেছে?

যিশু খ্রিস্টের অনুসারী হিসেবে, খ্রিস্টানরা যিহোবার কাছে তাদের জীবন উৎসর্গ করাকে বেছে নিয়েছে। তারা যিশুর কথাগুলোতে মনোযোগ দিয়েছে: “কেহ যদি আমার পশ্চাৎ আসিতে ইচ্ছা করে, তবে সে আপনাকে অস্বীকার করুক, প্রতিদিন আপন ক্রুশ তুলিয়া লউক, এবং আমার পশ্চাদ্গামী হউক।” (লূক ৯:২৩; ১৪:২৭) হ্যাঁ, খ্রিস্টীয় জীবনের সঙ্গে আত্মত্যাগ জড়িত। কিন্তু, এটা বঞ্চনা এবং দুরবস্থার এক জীবন নয়। এর পরিবর্তে, এটা হল এক সুখী এবং পরিতৃপ্তিদায়ক জীবন—এক উত্তম জীবন—কারণ এর সঙ্গে দান জড়িত আর যিশু যেমন বলেছিলেন, “পাওয়ার চেয়ে দেওয়ারই মধ্যে বেশি সুখ।”—প্রেরিত (শিষ্যচরিত) ২০:৩৫, বাংলা জুবিলী বাইবেল।

৪. যিশু তাঁর অনুসারীদের কোন বিষয়ের অনুধাবন করতে জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন?

যিশুর দিনে লোকেরা অনেক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে বাস করত। জীবিকানির্বাহ করা ছাড়াও, তাদেরকে সেই সময়কার রোমীয়দের কঠোর শাসন এবং ধর্মীয় রীতিনীতির পীড়নকর বোঝা সহ্য করতে হয়েছিল। (মথি ২৩:২-৪) তা সত্ত্বেও, যিশুর সম্বন্ধে শুনেছিল এমন অনেকে আনন্দের সঙ্গে ব্যক্তিগত বিষয়গুলোর—এমনকি কেরিয়ারগুলোর—পিছনে ছোটা বাদ দিয়েছিল এবং তাঁর অনুসারী হয়েছিল। (মথি ৪:১৮-২২; ৯:৯; কলসীয় ৪:১৪) সেই শিষ্যরা কি তাদের ভবিষ্যৎকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছিল এবং সেটাকে বিপন্ন করেছিল? যিশুর কথাগুলো লক্ষ করুন: “যে কোন ব্যক্তি আমার নামের জন্য বাটী, কি ভ্রাতা, কি ভগিনী, কি পিতা, কি মাতা, কি সন্তান, কি ক্ষেত্র পরিত্যাগ করিয়াছে, সে তাহার শত গুণ পাইবে, এবং অনন্ত জীবনের অধিকারী হইবে।” (মথি ১৯:২৯) যিশু তাঁর অনুসারীদের আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, স্বর্গীয় পিতা তাদের চাহিদাগুলো সম্বন্ধে জানেন। অতএব, তিনি তাদেরকে এই জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন: “কিন্তু তোমরা প্রথমে তাঁহার রাজ্য ও তাঁহার ধার্ম্মিকতার বিষয়ে চেষ্টা কর, তাহা হইলে ঐ সকল দ্রব্যও তোমাদিগকে দেওয়া হইবে।”—মথি ৬:৩১-৩৩.

৫. ঈশ্বর তাঁর দাসদের জন্য চিন্তা করবেন, এই বিষয়ে যিশুর আশ্বাস সম্বন্ধে কিছু বাবামা কেমন বোধ করে?

আজকে পরিস্থিতি একেবারেই আলাদা নয়। যিহোবা আমাদের চাহিদাগুলো জানেন এবং যারা তাদের জীবনে রাজ্যের বিষয়গুলোকে প্রথমে রাখে, বিশেষভাবে যারা পূর্ণসময়ের পরিচর্যা করে চলে, তাদেরকেও একই আশ্বাস দেওয়া হয় যে, তিনি তাদের জন্য চিন্তা করবেন। (মালাখি ৩:৬, ১৬; ১ পিতর ৫:৭) কিন্তু, কিছু বাবামা এই বিষয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগে। একদিকে, তারা দেখতে চায় যে তাদের ছেলেমেয়েরা যিহোবার সেবায় উন্নতি করছে, হতে পারে এক সময় পূর্ণসময়ের পরিচর্যা করছে বলে দেখতে চায়। অন্যদিকে, আজকের জগতে অর্থনৈতিক এবং চাকরির পরিস্থিতি বিবেচনা করে তারা মনে করে যে, অল্প বয়স্কদের প্রথমে উত্তম শিক্ষা লাভ করা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তাদের এক কাঙ্ক্ষিত কাজ পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা থাকে অথবা প্রয়োজন হলে অন্ততপক্ষে অবলম্বন হিসেবে কিছু থাকে। এই ধরনের বাবামার কাছে উত্তম শিক্ষা মানে প্রায়ই উচ্চশিক্ষা।

ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি

৬. এই প্রবন্ধে কোন অর্থে “উচ্চশিক্ষা” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে?

শিক্ষাব্যবস্থা একেক দেশে একেক রকম। উদাহরণস্বরূপ, ভারতে স্কুলগুলোতে ১০ থেকে ১২ বছরের মৌলিক শিক্ষা প্রদান করা হয়। এরপর, ছাত্র-ছাত্রীরা হয়তো তিন বা আরও কয়েক বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় অথবা কলেজে যোগ দেওয়া বেছে নেয়, যা চিকিৎসাশাস্ত্র, আইন, প্রকৌশল এবং আরও অন্যান্য কেরিয়ারের জন্য ব্যাচেলর ডিগ্রি অথবা পোস্টগ্র্যাজুয়েট অধ্যয়ন করার দিকে পরিচালিত করে। এই প্রবন্ধে যখন “উচ্চশিক্ষা” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে, তখন এই ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকেই বোঝানো হয়েছে। অন্যদিকে, কারিগরি এবং বৃত্তিমূলক স্কুলগুলোও রয়েছে, যেগুলো স্বল্পকালীন কোর্স প্রদান করে, যার ফলে কোনো কারিগরি শিল্পে বা কায়িক শ্রমের পেশায় সার্টিফিকেট অথবা ডিপ্লোমা পাওয়া যায়।

৭. ছাত্র-ছাত্রীরা কোন চাপগুলোর সম্মুখীন হয়?

আজকের প্রবণতা হল ছাত্র-ছাত্রীদেরকে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুত করা। এই কারণে বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্মস্থলের জন্য সুসজ্জিত করে এমন কোর্সের চেয়ে বরং উচ্চশিক্ষার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সেই বিষয়গুলোর ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে, যেগুলো ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে অথবা ভর্তি পরীক্ষায় উচ্চ নম্বর পেতে সমর্থ করে। আজকে ছাত্র-ছাত্রীরা সেইসমস্ত সর্বোত্তম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার লক্ষ্য স্থাপন করার জন্য শিক্ষক, উপদেষ্টা এবং সহছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে অনেক চাপের সম্মুখীন হচ্ছে, যেখানে তারা এমন ডিগ্রিগুলো লাভ করবে বলে আশা করে, যেগুলো তাদের জন্য সম্ভাবনাময় এবং ভাল বেতনের চাকরি পাওয়ার সুযোগ এনে দিতে পারে।

৮. খ্রিস্টান বাবামারা কোন বাছাইগুলোর সম্মুখীন হয়?

তা হলে, খ্রিস্টান বাবামাদের করণীয় কী? অবশ্য, তারা চায় যে তাদের ছেলেমেয়েরা স্কুলে ভাল করুক এবং ভবিষ্যতে নিজেদের ভরণপোষণের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলো শিখুক। (হিতোপদেশ ২২:২৯) কিন্তু, তাদের কি তাদের ছেলেমেয়েদের শুধু বস্তুগত দিক দিয়ে অগ্রগতি এবং সাফল্যের জন্য প্রতিযোগিতার মনোভাবের দ্বারা প্রভাবিত হতে দেওয়া উচিত? কথা অথবা ব্যক্তিগত উদাহরণের মাধ্যমে কোন ধরনের লক্ষ্যগুলো তারা তাদের ছেলেমেয়েদের সামনে রেখে থাকে? কিছু বাবামা কঠোর পরিশ্রম করে এবং টাকাপয়সা সঞ্চয় করে, যাতে সময় হলে যেন তাদের ছেলেমেয়েদেরকে উচ্চশিক্ষা লাভ করার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পাঠাতে সমর্থ হয়। অন্যেরা এই উদ্দেশ্যে ঋণ করতেও ইচ্ছুক থাকে। কিন্তু, এই ধরনের সিদ্ধান্তের মূল্য কেবল অর্থ দিয়ে মাপা যেতে পারে না। আজকে উচ্চশিক্ষার পিছনে ছোটার মূল্য কী?—লূক ১৪:২৮-৩৩.

উচ্চশিক্ষার পিছনে ছোটার মূল্য

৯. আজকে উচ্চশিক্ষার আর্থিক মূল্য সম্বন্ধে কী বলা যেতে পারে?

আমরা যখন মূল্যের কথা চিন্তা করি, তখন সাধারণত অর্থ ব্যয়ের পরিমাণ নিয়ে চিন্তা করি। কিছু দেশে উচ্চশিক্ষার জন্য সরকার ব্যয়ভার বহন করে এবং যোগ্য ছাত্র-ছাত্রীদের ফি অথবা শিক্ষালাভের জন্য অর্থ দিতে হয় না। কিন্তু, বেশির ভাগ জায়গায় উচ্চশিক্ষা অনেক ব্যয়বহুল এবং দিন দিন সেই ব্যয় আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস পাঠকদের কলাম প্রবন্ধ বলে: “উচ্চশিক্ষাকে সুযোগের এক ইঞ্জিন বলে ধরে নেওয়া হয়। বর্তমানে এটা ধনী-গরিবের মধ্যে প্রভেদকে নিশ্চিত করছে।” অন্য কথায়, উচ্চমানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষা খুব দ্রুত সেইসমস্ত ধনী এবং প্রভাবশালী লোকেদের অধিকার হয়ে উঠছে, যারা তাদের ছেলেমেয়েদের এই ধরনের উচ্চশিক্ষা লাভ করতে দিচ্ছে এই বিষয়টা নিশ্চিত করার জন্য যে, তারাও যেন এই সমাজে ধনী এবং প্রভাবশালী হয়ে ওঠে। খ্রিস্টান বাবামাদের কি তাদের ছেলেমেয়েদের জন্য এই ধরনের লক্ষ্য বাছাই করা উচিত?—ফিলিপীয় ৩:৭, ৮; যাকোব ৪:৪.

১০. কীভাবে উচ্চশিক্ষা বর্তমান বিধিব্যবস্থার অগ্রগতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত?

১০ এমনকি যেখানে উচ্চশিক্ষা বিনামূল্যে পাওয়া যায়, সেখানেও হয়তো শর্তগুলো জড়িত রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, দ্যা ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল রিপোর্ট করে যে, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার একটা দেশে সরকার “পিরামিড সূচক স্কুল কাঠামো” চালু করেছে ‘যা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সবচেয়ে ভাল ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চ শিখরে ঠেলে দিচ্ছে।’ ‘উচ্চ শিখর’ এর চূড়ান্ত অর্থ হল বিশ্বের সবচেয়ে উৎকৃষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে—ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড এবং ক্যামব্রিজ, যুক্তরাষ্ট্রের আইভি লিগ স্কুলগুলো এবং অন্যান্যগুলোতে—জায়গা করে নেওয়া। সরকার কেন এইরকম সুদূরপ্রসারী কার্যক্রমের ব্যবস্থা করেছে? “জাতীয় অর্থনৈতিক অবস্থায় ইন্ধন জোগানোর জন্য,” রিপোর্ট বলে। শিক্ষা হয়তো প্রায় বিনামূল্যেই দেওয়া হয় কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীরা যে-মূল্য প্রদান করে, তা হল সেই জীবন যা বর্তমান বিধিব্যবস্থার অগ্রগতিতে পুরোপুরি রত থাকে। যদিও জগতে বেশির ভাগই এই ধরনের জীনযাপনের পিছনে ছুটছে কিন্তু খ্রিস্টান বাবামারা কি তাদের ছেলেমেয়েদের জন্য এটাই চান?—যোহন ১৫:১৯; ১ যোহন ২:১৫-১৭.

১১. বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে মদ্যজাতীয় পানীয় এবং যৌন অনৈতিকতার বিষয়ে রিপোর্টগুলো কী দেখায়?

১১ এরপর পরিবেশের বিষয়টা আসে। বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ ক্যাম্পাসগুলো খারাপ আচারআচরণের—নেশাকর ওষুধ এবং মদ্যজাতীয় পানীয়ের অপব্যবহার, অনৈতিকতা, প্রতারণা, উৎপীড়ন এবং এইরকম অন্যান্য অনেক বিষয়ের—জন্য কুখ্যাত। মদ্যজাতীয় পানীয়ের অপব্যবহার সম্বন্ধে বিবেচনা করুন। প্রচুর মদ্যপান অর্থাৎ একমাত্র মাতাল হওয়ার উদ্দেশ্যেই পান করার বিষয়ে রিপোর্ট করতে গিয়ে নিউ সাইনটিস্ট পত্রিকা বলে: “[যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের] প্রায় ৪৪ শতাংশ দুই সপ্তাহে অন্তত একবার প্রচুর মদ্যপান করে।” এই একই সমস্যা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, রাশিয়া এবং অন্যান্য জায়গায়ও দেখা যায়। আর যৌন অনৈতিকতার বিষয়ে বলতে গেলে আজকের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে “ক্ষণকালের যৌনসম্পর্ক” হল এক আলোচ্য বিষয়, নিউজউইক রিপোর্ট অনুসারে যেটাকে, “এক রাতের যৌনসম্পর্ক বলে বর্ণনা করে—যেখানে চুমু খাওয়া থেকে শুরু করে যৌন সহবাস সবকিছু রয়েছে—যা এমন পরিচিত ব্যক্তিদের মধ্যে হয়ে থাকে, যারা পরে এমনকি পরস্পরের মুখ দেখাদেখি পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়।” গবেষণা দেখায় যে, ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী এই ধরনের কার্যকলাপে লিপ্ত। “তুমি যদি একটা সাধারণ কলেজের ছাত্র বা ছাত্রী হও,” এক গবেষক বলেন, “তুমি তা করে থাকো।”—১ করিন্থীয় ৫:১১; ৬:৯, ১০.

১২. কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা কোন চাপগুলোর মুখে রয়েছে?

১২ খারাপ পরিবেশ ছাড়াও হোমওয়ার্ক এবং পরীক্ষার চাপ রয়েছে। সাধারণত, ছেলেমেয়েদের পরীক্ষায় পাশ করার জন্য অধ্যয়ন এবং হোমওয়ার্ক করতে হয়। কাউকে কাউকে কলেজে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্ততপক্ষে একটা খণ্ডকালীন চাকরি করতে হয়। এই সমস্তকিছুর জন্য অনেক সময় এবং প্রচেষ্টার প্রয়োজন হয়। তা হলে, আধ্যাত্মিক কার্যক্রমের জন্য কী বাকি থাকবে? যখন চাপ বৃদ্ধি পায়, তখন সেগুলো কি বাদ যাবে? তখনও রাজ্যের বিষয়গুলো কি আগে আসবে, নাকি সেগুলো উপেক্ষা করা হবে? (মথি ৬:৩৩) বাইবেল খ্রিস্টানদের জোরালো পরামর্শ দেয়: “তোমরা ভাল করিয়া দেখ, কিরূপে চলিতেছ; অজ্ঞানের ন্যায় না চলিয়া জ্ঞানবানের ন্যায় চল। সুযোগ কিনিয়া লও, কেননা এই কাল মন্দ।” (ইফিষীয় ৫:১৫, ১৬) এটা কতই না দুঃখজনক যে, কেউ কেউ সময় এবং প্রচেষ্টার দাবি পূরণ করতে গিয়ে অথবা কলেজে অশাস্ত্রীয় আচরণে জড়িয়ে পড়ার কারণে বিশ্বাস থেকে সরে পড়েছে!

১৩. খ্রিস্টান বাবামাদের অবশ্যই কোন প্রশ্নগুলো বিবেচনা করতে হবে?

১৩ অবশ্য, অনৈতিকতা, খারাপ আচরণ এবং চাপগুলো কেবল কলেজ অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। কিন্তু, জগতের অনেক তরুণ-তরুণী এই ধরনের বিষয়গুলোকে কেবল তাদের পড়াশোনার অংশ হিসেবে দেখে এবং এই বিষয়ে তারা কিছুই চিন্তা করে না। খ্রিস্টান বাবামাদের কি জেনেশুনে তাদের ছেলেমেয়েদের এই ধরনের পরিবেশে চার বছর বা তারও বেশি সময়ের জন্য পাঠানো উচিত? (হিতোপদেশ ২২:৩; ২ তীমথিয় ২:২২) অল্পবয়স্করা যে-উপকারই লাভ করুক না কেন, এই ধরনের ঝুঁকি নেওয়া কি উপযুক্ত? আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, অল্পবয়স্কদের জীবনে যে-বিষয়টা প্রথমে আসা উচিত, সেই বিষয়ে তারা কী শেখে? * (ফিলিপীয় ১:১০, NW; ১ থিষলনীকীয় ৫:২১) বাবামাদের অবশ্যই এই প্রশ্নগুলো ও সেইসঙ্গে তাদের ছেলেমেয়েদের অন্য শহর অথবা দেশের স্কুলে পাঠানোর বিপদ সম্বন্ধে গুরুত্বের সঙ্গে এবং প্রার্থনাপূর্বক বিবেচনা করতে হবে।

বিকল্প বিষয়গুলো কী?

১৪, ১৫. (ক) জনপ্রিয় মতবাদ সত্ত্বেও, বাইবেলের কোন পরামর্শ আজকে প্রযোজ্য? (খ) অল্পবয়স্করা নিজেদের কোন প্রশ্নগুলো জিজ্ঞেস করতে পারে?

১৪ আজকে, যুবক-যুবতীদের জন্য সফল হওয়ার জনপ্রিয় মতবাদ হল শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা লাভ করা। কিন্তু, যা জনপ্রিয় তার পিছনে ছোটার পরিবর্তে, খ্রিস্টানরা বাইবেলের এই উপদেশে মনোযোগ দেয়: “এই যুগের অনুরূপ হইও না, কিন্তু মনের নূতনীকরণ দ্বারা স্বরূপান্তরিত হও; যেন তোমরা পরীক্ষা করিয়া জানিতে পার, ঈশ্বরের ইচ্ছা কি, যাহা উত্তম ও প্রীতিজনক ও সিদ্ধ।” (রোমীয় ১২:২) শেষকালের এই চূড়ান্ত পর্যায়ে তাঁর লোকেদের, যুবক ও বৃদ্ধ সকলের জন্য ঈশ্বরের ইচ্ছা কী? পৌল তীমথিয়কে জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন: “তুমি সর্ব্ববিষয়ে মিতাচারী হও, দুঃখভোগ স্বীকার কর, সুসমাচার-প্রচারকের কার্য্য কর, তোমার পরিচর্য্যা সম্পন্ন [“পূর্ণরূপে সম্পন্ন,” NW] কর।” এই কথাগুলো নিশ্চিতভাবেই আজকে আমাদের সকলের জন্য প্রযোজ্য।—২ তীমথিয় ৪:৫.

১৫ জগতের বস্তুবাদী মনোভাবের দ্বারা নিমজ্জিত হওয়ার পরিবর্তে, আমাদের সকলের ‘মিতাচারী’—আমাদের আধ্যাত্মিক বিষয়গুলোর দিকে নির্দেশিত—হতে হবে। তুমি যদি একজন যুবক বা যুবতী হও, তা হলে নিজেকে জিজ্ঞেস করো: ‘নিজেকে ঈশ্বরের বাক্যের একজন যোগ্য পরিচারক করে তুলতে আমি কি “আমার পরিচর্যা সম্পন্ন” করার জন্য যথাসাধ্য করি? আমার পরিচর্যা “পূর্ণরূপে” করে চলার জন্য আমার পরিকল্পনাগুলো কী? আমি কি পূর্ণসময়ের পরিচর্যাকে একটা বৃত্তি হিসেবে নেওয়ার জন্য বিবেচনা করেছি?’ এগুলো হল কঠিন প্রশ্ন, বিশেষ করে যখন তুমি অন্যান্য তরুণ-তরুণীকে স্বার্থপর লক্ষ্যগুলো চরিতার্থ করার পিছনে ছুটতে, সেইসমস্ত ‘মহৎ মহৎ বিষয়ের চেষ্টা করিতে’ দেখ, যেগুলো তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবে বলে তারা মনে করে। (যিরমিয় ৪৫:৫) তাই, খ্রিস্টান বাবামারা তাদের ছেলেমেয়েদেরকে ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞতার সঙ্গে সঠিক আধ্যাত্মিক পরিবেশ জোগাবেন এবং প্রশিক্ষণ দেবেন।—হিতোপদেশ ২২:৬; উপদেশক ১২:১; ২ তীমথিয় ৩:১৪, ১৫.

১৬. কীভাবে খ্রিস্টান বাবামারা বিজ্ঞতার সঙ্গে তাদের ছেলেমেয়েদের জন্য সঠিক আধ্যাত্মিক পরিবেশ জোগাতে পারে?

১৬ “মা আমাদের মেলামেশা খুব ভাল করে লক্ষ করতেন,” একটা পরিবারের তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে স্মরণ করে বলে, যেখানে মা অনেক বছর ধরে পূর্ণসময়ের পরিচারক। “আমরা আমাদের সহছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে মেলামেশা করতাম না কিন্তু মণ্ডলীতে যাদের উত্তম আধ্যাত্মিক অভ্যাস রয়েছে, তাদের সঙ্গে মেলামেশা করতাম। এ ছাড়া, তিনি যারা পূর্ণসময়ে রত ছিল তাদেরকে—মিশনারি, ভ্রমণ অধ্যক্ষ, বেথেলকর্মী এবং অগ্রগামীদেরকে—মেলামেশার জন্য নিয়মিতভাবে আমাদের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানাতেন। তাদের অভিজ্ঞতাগুলো শোনা এবং তাদের আনন্দ দেখা আমাদের মধ্যে পূর্ণসময়ের পরিচর্যার আকাঙ্ক্ষা গেঁথে দিতে সাহায্য করেছে।” আজকে তিন ছেলেকেই পূর্ণসময়ের পরিচর্যা করতে দেখা কতই না আনন্দের—একজন বেথেলে সেবারত, আরেকজন মিনিস্ট্রিয়াল ট্রেনিং স্কুল-এ যোগ দিয়েছে এবং অন্যজন অগ্রগামীর কাজ করছে!

১৭. স্কুলে অধ্যয়নের বিষয়গুলো এবং বৃত্তির লক্ষ্যগুলো বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে অল্পবয়স্কদেরকে বাবামারা কোন নির্দেশনা জোগাতে পারে? (২৯ পৃষ্ঠার বাক্স দেখুন।)

১৭ শক্তিশালী এক আধ্যাত্মিক পরিবেশ জোগানোর পাশাপাশি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাবামাদের অবশ্যই স্কুলে অধ্যয়নের বিষয়গুলো এবং বৃত্তিমূলক লক্ষ্যগুলো বাছাই করার ব্যাপারে তাদের ছেলেমেয়েদের যথাযথ নির্দেশনাও দিতে হবে। আরেক জন যুবক, যে এখন বেথেলে সেবা করছে, সে বলে: “আমার বাবামা উভয়ে বিয়ের আগে এবং পরে অগ্রগামীর কাজ করেছে এবং পুরো পরিবারের মধ্যে অগ্রগামীর মনোভাব গেঁথে দেওয়ার জন্য তাদের যথাসাধ্য করেছে। যখনই আমরা স্কুলে অধ্যয়নের বিষয়গুলো বেছে নিতাম এবং এমন সিদ্ধান্ত নিতাম যা আমাদের ভবিষ্যৎকে প্রভাবিত করবে, তখন তারা সবসময় আমাদের এমন এক বাছাই করতে উৎসাহিত করত, যা আমাদের খণ্ডকালীন কাজ খোঁজার এবং অগ্রগামীর কাজ করার সর্বোত্তম সুযোগ করে দেবে।” উচ্চশিক্ষার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত যে-বিষয়গুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার দিকে পরিচালিত করে, সেগুলো বেছে নেওয়ার পরিবর্তে, বাবামা এবং ছেলেমেয়েদের এমন কোর্সগুলো সম্বন্ধে বিবেচনা করতে হবে, যেগুলো ঈশতান্ত্রিক কেরিয়ার অনুধাবন করার জন্য উপকারী। *

১৮. অল্পবয়স্করা কোন কাজের সুযোগগুলো বিবেচনা করতে পারে?

১৮ গবেষণা দেখায় যে, অনেক দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের নয় বরং কারিগরি শিল্পে এবং কায়িক শ্রমের পেশাগুলোতে কাজ করার জন্য লোকেদের অনেক প্রয়োজন। ইউএসএ টুডে রিপোর্ট করে যে, “আসন্ন দশকগুলোতে ৭০ শতাংশ কর্মীদের ৪ বছরের কলেজ ডিগ্রির প্রয়োজন হবে না বরং কমিউনিটি কলেজ থেকে দুই বছরের সহযোগী ডিগ্রি অথবা কোন ধরনের কারিগরি সার্টিফিকেট লাগবে।” এইরকম অনেক প্রতিষ্ঠান অফিসের প্রয়োজনীয় দক্ষতা সম্বন্ধে, গাড়ি মেরামত, কম্পিউটার মেরামত, জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা, চুল কাটা এবং আরও অন্যান্য অনেক কারিগরি শিল্পে স্বল্পকালীন কোর্স দেয়। এগুলো কি কাঙ্ক্ষিত কাজ? অবশ্যই! কেউ কেউ মনে করতে পারে এগুলো অত আকর্ষণীয় কাজ নয় কিন্তু এগুলো ভরণপোষণ জোগায় ও সেইসঙ্গে সুযোগসুবিধা প্রদান করে, যেটা তাদের জন্য প্রয়োজন যাদের প্রকৃত বৃত্তি হল যিহোবাকে সেবা করা।—২ থিষলনীকীয় ৩:৮.

১৯. আনন্দদায়ক এবং পরিতৃপ্তিমূলক জীবনের এক নিশ্চিত পথ কোনটা?

১৯ “যুবকগণ ও যুবতী সকল; বৃদ্ধগণ ও বালক-বালিকা-সমূহ,” বাইবেল অনুরোধ করে, “সকলে সদাপ্রভুর নামের প্রশংসা করুক, কেননা কেবল তাঁহারই নাম উন্নত, তাঁহার প্রভা পৃথিবীর ও স্বর্গের উপরিস্থ।” (গীতসংহিতা ১৪৮:১২, ১৩) জগৎ যে-পদমর্যাদা এবং পুরস্কার দেয়, সেগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে যিহোবার প্রতি পূর্ণসময়ের সেবার এক কেরিয়ার নিঃসন্দেহে আনন্দদায়ক এবং পরিতৃপ্তিমূলক এক জীবনের নিশ্চিত পথ। বাইবেলের এই আশ্বাস মনে রাখুন: “সদাপ্রভুর আশীর্ব্বাদই ধনবান করে, এবং তিনি তাহার সহিত মনোদুঃখ দেন না।”—হিতোপদেশ ১০:২২.

[পাদটীকাগুলো]

^ যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার চেয়ে ঈশতান্ত্রিক শিক্ষাকে বেশি মূল্য দিয়েছে, তাদের অভিজ্ঞতাগুলোর জন্য ১৯৮২ সালের ১লা মে প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) পত্রিকার ৩-৬ পৃষ্ঠা; ১৯৭৯ সালের ১৫ই এপ্রিল প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) পত্রিকার ৫-১০ পৃষ্ঠা; ১৯৭৮ সালের ৮ই জুন সচেতন থাক! (ইংরেজি) পত্রিকার ১৫ পৃষ্ঠা; এবং ১৯৭৪ সালের ৮ই আগস্ট সচেতন থাক! (ইংরেজি) পত্রিকার ৩-৭ পৃষ্ঠা দেখুন।

^ ১৯৯৮ সালের অক্টোবর - ডিসেম্বর সচেতন থাক! পত্রিকার ৪-৬ পৃষ্ঠায় “নিরাপদ জীবনের সন্ধানে” প্রবন্ধটি এবং ১৯৮৯ সালের ৮ই মে সচেতন থাক! (ইংরেজি) পত্রিকার ১২-১৪ পৃষ্ঠায় “কোন কেরিয়ার আমার বেছে নেওয়া উচিত,” প্রবন্ধটি দেখুন।

আপনি কি ব্যাখ্যা করতে পারেন?

• নিশ্চিত ভবিষ্যতের জন্য খ্রিস্টান বাবামারা কীসের ওপর তাদের নির্ভরতা রাখে?

• খ্রিস্টান বাবামারা তাদের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলোর মুখোমুখি হয়?

• উচ্চশিক্ষা অনুধাবন করার মূল্য হিসেব করার সময় কী বিবেচনা করতে হবে?

• কীভাবে বাবামারা তাদের ছেলেমেয়েদেরকে যিহোবার সেবায় এক কেরিয়ার অনুধাবন করার জন্য সাহায্য করতে পারে?

[অধ্যয়ন প্রশ্নাবলি]

[২৯ পৃষ্ঠার বাক্স]

উচ্চশিক্ষার মূল্য কী?

বেশির ভাগ লোক, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, তারা এমন এক ডিগ্রি লাভ করার আশা করে, যা তাদের জন্য ভাল বেতনের এবং নিরাপদ চাকরির পথ খুলে দেবে। কিন্তু, সরকারি রিপোর্ট দেখায় যে, যারা কলেজে যায় তাদের মধ্যে মাত্র ২৫ শতাংশ লোক ছয় বছরে একটা ডিগ্রি লাভ করে—সাফল্যের হার দুঃখজনক। তা সত্ত্বেও, সেই ডিগ্রি কি একটা ভাল চাকরির নিশ্চয়তা দেয়? সাম্প্রতিক গবেষণা এবং অধ্যয়ন কী বলে তা দেখুন।

“হার্ভার্ড অথবা ডিউক [বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে] যাওয়া মানে এমনি এমনিই ভাল চাকরি এবং ভাল বেতন পাওয়া যাবে না। . . . কোম্পানিগুলো চাকরির জন্য অল্পবয়স্ক আবেদনকারীদের সম্বন্ধে বেশি একটা জানে না। এক উজ্জ্বল প্রমাণপত্র (আইভি লিগ থেকে একটা ডিগ্রি) হয়তো প্রভাবিত করতে পারে। কিন্তু, এর পর লোকেরা কী করতে পারবে এবং কী করতে পারবে না, তা-ই বড় বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।”—নিউজউইক, নভেম্বর ১, ১৯৯৯.

“যদিও আজকের আদর্শ চাকরির জন্য আগের চেয়ে বেশি উচ্চমানের দক্ষতার প্রয়োজন হয় . . . কিন্তু এই চাকরিগুলোর জন্য যে-দক্ষতার প্রয়োজন হয়, তা হল উচ্চমাধ্যমিক স্কুল লেভেলের ভাল দক্ষতাগুলো—নবম শ্রেণীর লেভেলের গণিত, পড়া এবং লেখার বিষয়গুলো . . . , কলেজ লেভেলের দক্ষতাগুলো নয়। . . . একটা ভাল চাকরির জন্য ছেলেমেয়েদের কলেজে যাওয়ার দরকার নেই কিন্তু তাদের উচ্চমাধ্যমিক স্কুল লেভেলের দক্ষতায় দক্ষ হতে হবে।”—আমেরিকান এডুকেটর, স্প্রিং ২০০৪.

“বেশির ভাগ কলেজ, ছাত্র-ছাত্রীদেরকে কলেজ শেষ করার পরে চাকরি জগতের কর্মী হয়ে ওঠার জন্য প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে বাস্তব জগৎ থেকে একেবারেই আলাদা। বৃত্তিমূলক স্কুলগুলো . . . আকস্মিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০০ পর্যন্ত তাদের তালিকাভুক্তি বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৪৮ শতাংশ। . . . ইতিমধ্যেই, সেই ব্যয়বহুল, সময় ব্যয়কারী কলেজ ডিপ্লোমাগুলো আগের চেয়ে আরও মূল্যহীন হয়ে পড়েছে।”—টাইম, জানুয়ারি ২৪, ২০০৫.

“২০০৫ সালের ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব লেবার থেকে যে-আনুমানিক নিরীক্ষা করা হয় তা এই নিরুৎসাহজনক বিবরণ প্রকাশ করে যে, চার বছরের কলেজ গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে অন্ততপক্ষে এক তৃতীয়াংশ এমন চাকরি খুঁজে পাবে না, যা তাদের ডিগ্রির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।” দ্যা ফিউচারিস্ট, জুলাই/আগস্ট ২০০০.

এই সমস্তকিছুর পরিপ্রেক্ষিতে অনেক অনেক শিক্ষার্থী গুরুতরভাবে আজকের উচ্চশিক্ষার মূল্য নিয়ে সন্দেহ করছে। “আমরা লোকেদের ভুল ভবিষ্যতের জন্য প্রশিক্ষিত করছি,” ফিউচারিস্ট দুঃখ করে রিপোর্ট করে। এর পরিবর্তে, বাইবেল ঈশ্বর সম্বন্ধে কী বলে তা লক্ষ করুন: “সদাপ্রভু, তোমার মুক্তিদাতা, ইস্রায়েলের পবিত্রতম, এই কথা কহেন, আমি সদাপ্রভু তোমার ঈশ্বর, আমি তোমার উপকারজনক শিক্ষা দান করি, ও তোমার গন্তব্য পথে তোমাকে গমন করাই। আহা! তুমি কেন আমার আজ্ঞাতে অবধান কর নাই? করিলে তোমার শান্তি নদীর ন্যায়, তোমার ধার্ম্মিকতা সমুদ্র-তরঙ্গের ন্যায় হইত।”—যিশাইয় ৪৮:১৭, ১৮.

[২৬ পৃষ্ঠার চিত্র]

তারা ব্যক্তিগত লক্ষ্যগুলো বাদ দিয়ে যিশুকে অনুসরণ করেছিল

[৩১ পৃষ্ঠার চিত্র]

খ্রিস্টান বাবামারা বিজ্ঞতার সঙ্গে তাদের ছেলেমেয়েদেরকে একেবারে ছোটবেলা থেকেই শক্তিশালী আধ্যাত্মিক পরিবেশ জুগিয়ে থাকে