সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

খ্রিস্টধর্ম প্রথম শতাব্দীর যিহুদিদের মধ্যে প্রসারিত হয়

খ্রিস্টধর্ম প্রথম শতাব্দীর যিহুদিদের মধ্যে প্রসারিত হয়

খ্রিস্টধর্ম প্রথম শতাব্দীর যিহুদিদের মধ্যে প্রসারিত হয়

যিরূশালেমে সা.কা. প্রায় ৪৯ সালে এক গুরুত্বপূর্ণ সভা হয়েছিল। প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতে “যাঁহারা স্তম্ভরূপে মান্য”—যোহন, পিতর এবং যিশুর অর্ধভ্রাতা যাকোব—সেখানে ছিল। আরও দুজন ব্যক্তি সেই সভায় যোগ দিয়েছিল, যাদের নাম হচ্ছে প্রেরিত পৌল এবং তার সঙ্গী বার্ণবা। সভায় আলোচ্য বিষয়টা ছিল কীভাবে প্রচার কাজের জন্য বিশাল এলাকাকে ভাগ করা যায়। পৌল ব্যাখ্যা করেছিলেন: “[তাহারা] আমাকে ও বার্ণবাকে সহভাগিতার দক্ষিণ হস্ত দিলেন, যেন আমরা পরজাতিগণের কাছে যাই, আর তাঁহারা ছিন্নত্বক্‌দের কাছে যান।”—গালাতীয় ২:১, ৯. *

এই সিদ্ধান্তকে আমাদের কীভাবে বোঝা উচিত? যে-এলাকায় সুসমাচার প্রচার করা হবে সেটা কি দুভাগে বিভক্ত করা হয়েছিল, যার একদিকে যিহুদি ও ধর্মান্তরিত ব্যক্তিরা এবং অন্যদিকে পরজাতিরা ছিল? নাকি সেই সিদ্ধান্ত সেই এলাকার ভৌগলিক বিভক্তির বিষয়ে ছিল? একটা সম্ভাব্য উত্তর খুঁজে পেতে আমাদের ডায়াস্পোরা অর্থাৎ প্যালেস্টাইনের বাইরে যিহুদিদের বিচ্ছিন্ন বসতি সম্বন্ধে কিছু ঐতিহাসিক তথ্য প্রয়োজন।

প্রথম শতাব্দীর যিহুদি জগৎ

প্রথম শতাব্দীতে সেই ডায়াস্পোরায় কতজন যিহুদি ছিল? অনেক পণ্ডিত ব্যক্তিকে যিহুদি জগতের মানচিত্র (ইংরেজি) প্রকাশনাটির সঙ্গে একমত বলে মনে হয়: “একেবারে সঠিক সংখ্যা নির্ণয় করা খুব কঠিন কিন্তু যুক্তিসংগতভাবে আনুমানিক হিসেব করা হয়েছে যে, সা.কা. ৭০ সালের কিছু সময় আগে যিহূদিয়ায় প্রায় পঁচিশ লক্ষ এবং রোমীয় ডায়াস্পোরায় চল্লিশ লক্ষেরও বেশি যিহুদি ছিল। . . . সম্ভবত সেই সাম্রাজ্যের মোট জনসংখ্যার দশ ভাগই যিহুদি ছিল এবং যে-এলাকাগুলোতে যিহুদিদের ঘনবসতি ছিল অর্থাৎ পশ্চিমাঞ্চলের শহরগুলোতে হয়তো এক চতুর্থাংশ বা আরও বেশি অধিবাসী বাস করত।”

যিহুদিদের প্রধান কেন্দ্র ছিল পূর্ব দিকের সুরিয়া, এশিয়া মাইনর, বাবিল এবং মিশর ও ইউরোপের কিছু যিহুদি সমাজ। কয়েক জন সুপরিচিত যিহুদি খ্রিস্টান ডায়াস্পোরা পটভূমিকা থেকে এসেছিল যেমন, কুপ্রীয় বার্ণবা, পন্ত ও পরে রোম থেকে আসা প্রিষ্কিল্লা এবং আক্কিলা, আলেক্‌সান্দ্রীয় আপল্লো এবং তার্ষ নগরের পৌল।—প্রেরিত ৪:৩৬; ১৮:২, ২৪; ২২:৩.

ডায়াস্পোরা সমাজগুলোর বিভিন্নভাবে তাদের মাতৃভূমির সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। একটা ছিল যিরূশালেমে অবস্থিত মন্দিরে বার্ষিক কর পাঠানো, যা ছিল মন্দিরের কাজে ও উপাসনায় অংশগ্রহণের এক উপায়। এই বিষয়ে পণ্ডিত জন বার্কলে মন্তব্য করেন: “যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, এই অর্থ সংগ্রহ যা ধনীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত দান গ্রহণ করে বৃদ্ধি পেত, তা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পালন করা হতো।”

আরেকটা বিষয় ছিল, প্রতি বছর বিভিন্ন উৎসবের জন্য হাজার হাজার তীর্থযাত্রী যিরূশালেমে যেত। সা.কা. ৩৩ সালের পঞ্চাশত্তমীর দিনের বিষয়ে প্রেরিত ২:৯-১১ পদের বিবরণ তা স্পষ্টভাবে বর্ণনা করে। যিহুদি তীর্থযাত্রীরা পার্থীয়া, মাদিয়া, এলম, মিসপতামিয়া, কাপ্পাদকিয়া, পন্ত, আশিয়া, ফরুগিয়া, মিশর, লুবিয়া, রোম, ক্রীতী এবং আরব থেকে এসেছিল।

যিরূশালেমের মন্দির প্রশাসন ডায়াস্পোরার যিহুদিদের সঙ্গে চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ রাখত। এটা সবারই জানা যে, প্রেরিত ৫:৩৪ পদে উল্লেখিত ব্যবস্থা বিষয়ক গুরু গমলীয়েল বাবিল এবং পৃথিবীর অন্যান্য জায়গায় চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সা.কা. ৫৯ সালে প্রেরিত পৌল যখন একজন বন্দি হিসেবে রোমে পৌঁছেছিলেন, তখন ‘যিহূদীদের প্রধান লোকেরা’ তাকে বলেছিল যে, “আমরা আপনার বিষয়ে যিহূদীয়া হইতে কোন পত্র পাই নাই; অথবা ভ্রাতৃগণের মধ্যেও কেহ এখানে আসিয়া আপনার বিষয়ে মন্দ সংবাদ দেন নাই, বা মন্দ কথাও বলেন নাই।” এটা ইঙ্গিত করে যে, প্রায়ই মাতৃভূমি থেকে বিভিন্ন চিঠি ও রিপোর্ট রোমে পাঠানো হতো।—প্রেরিত ২৮:১৭, ২১.

ডায়াস্পোরা যিহুদিদের বাইবেল ছিল ইব্রীয় শাস্ত্রের গ্রিক অনুবাদ, যা সেপ্টুয়াজিন্ট নামে পরিচিত ছিল। একটি তথ্যগ্রন্থ বলে: “এই উপসংহারে আসা যুক্তিসংগত যে, ডায়াস্পোরার সর্বত্র LXX [সেপ্টুয়াজিন্ট] ডায়াস্পোরা যিহুদি বাইবেল বা ‘পবিত্র শাস্ত্র’ হিসেবে পড়া হতো এবং গ্রহণযোগ্য ছিল।” সেই একই অনুবাদ প্রাথমিক খ্রিস্টানদের দ্বারা তাদের শিক্ষায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো।

যিরূশালেমের খ্রিস্টান পরিচালক গোষ্ঠীর সদস্যরা এই পরিস্থিতিগুলোর সঙ্গে সুপরিচিত ছিল। সুসমাচার ইতিমধ্যেই সুরিয়ার ডায়াস্পোরা যিহুদিদের ছাড়িয়ে দম্মেশক এবং আন্তিয়খিয়ায় পৌঁছেছিল। (প্রেরিত ৯:১৯, ২০; ১১:১৯; ১৫:২৩, ৪১; গালাতীয় ১:২১) সা.কা. ৪৯ সালে যারা সভায় উপস্থিত হয়েছিল স্পষ্টতই তারা ভবিষ্যৎ কাজের জন্য পরিকল্পনা করছিল। আসুন আমরা যিহুদি ও ধর্মান্তরিত ব্যক্তিদের মধ্যে সম্প্রসারণ সম্বন্ধে বাইবেলের তথ্যগুলো বিবেচনা করি।

পৌলের ভ্রমণগুলো এবং ডায়াস্পোরার যিহুদিরা

প্রেরিত পৌলের মূল কার্যভার ছিল, ‘জাতিগণের ও রাজগণের এবং ইস্রায়েল-সন্তানগণের নিকটে [যিশু খ্রিস্টের] নাম বহন করা।’ * (প্রেরিত ৯:১৫) যিরূশালেমে সভা করার পর পৌল যেখানেই ভ্রমণ করেছিলেন সেখানকার ডায়াস্পোরা যিহুদিদের সঙ্গে দেখা করে চলেছিলেন। (১৪ পৃষ্ঠার বাক্স দেখুন) এটা ইঙ্গিত করে যে, এলাকা সম্বন্ধীয় সিদ্ধান্তটি সম্ভবত ভৌগলিক বিষয় হয়ে উঠেছিল। পৌল ও বার্ণবা তাদের মিশনারি কাজকে পশ্চিমাঞ্চলে সম্প্রসারিত করেছিল এবং অন্যেরা যিহুদি মাতৃভূমি ও প্রাচ্যজগতের বিশাল যিহুদি সমাজগুলোতে কাজ করেছিল।

পৌল এবং তার সঙ্গীরা যখন সুরিয়ার আন্তিয়খিয়া থেকে তাদের দ্বিতীয় মিশনারি যাত্রা শুরু করেছিল, তখন তারা এশিয়া মাইনরের মধ্য দিয়ে ত্রোয়া পর্যন্ত গিয়েছিল। সেখান থেকে পার হয়ে তারা মাকিদনিয়ায় গিয়েছিল কারণ তারা এই উপসংহারে এসেছিল যে, “[মাকিদনীয়দের] নিকটে সুসমাচার প্রচার করিতে ঈশ্বর [তাহাদিগকে] ডাকিয়াছেন।” পরে অন্যান্য ইউরোপীয় শহরে খ্রিস্টীয় মণ্ডলী স্থাপন করা হয়েছিল আর এর মধ্যে ছিল আথীনী এবং করিন্থ।—প্রেরিত ১৫:৪০, ৪১; ১৬:৬-১০; ১৭:১–১৮:১৮.

সাধারণ কাল প্রায় ৫৬ সালে পৌল তার তৃতীয় মিশনারি যাত্রার শেষে, যিরূশালেমের সভায় তাকে যে-কার্যভার দেওয়া হয়েছিল সেই এলাকাকে সম্প্রসারিত করতে আরও পশ্চিমে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন: “আমার যতটা সাধ্য, আমি রোম-নিবাসী তোমাদের কাছেও সুসমাচার প্রচার করিতে উৎসুক” এবং “আমি তোমাদের নিকট দিয়া স্পেন দেশে গমন করিব।” (রোমীয় ১:১৫; ১৫:২৪, ২৮) কিন্তু পূর্বাঞ্চলের বিশাল ডায়াস্পোরা সমাজের সম্বন্ধে কী বলা যায়?

পূর্বাঞ্চলের যিহুদি সমাজগুলো

সাধারণ কাল প্রথম শতাব্দীতে সবচেয়ে বড় ডায়াস্পোরা সমাজ ছিল মিশরে, বিশেষ করে এর রাজধানী আলেক্‌সান্দ্রীয়ায়। ব্যাবসাবাণিজ্য ও সংস্কৃতির এই কেন্দ্রে লক্ষ লক্ষ যিহুদি জনগণ বাস করত আর সারা শহর জুড়ে অনেক সমাজগৃহ ছড়িয়েছিটিয়ে ছিল। ফাইলো নামে আলেক্‌সান্দ্রীয়ার একজন যিহুদি দাবি করেছিলেন যে, সেই সময়ে পুরো মিশরে অন্তত দশ লক্ষ যিহুদি ছিল। এ ছাড়া এক বিরাট সংখ্যক লোক কাছাকাছি লুবিয়ায়, কুরীণী নগর ও এর আশেপাশে স্থায়ী হয়েছিল।

কয়েক জন যিহুদি যারা খ্রিস্টান হয়েছিল তারা এই এলাকাগুলো থেকে ছিল। আমরা ‘আলেক্‌সান্দ্রীয় আপল্লো,’ “কয়েক জন কুপ্রীয় ও কুরীণীয় লোক” এবং “কুরীণীয় লুকিয়” সম্বন্ধে পড়ি, যারা সুরিয়ার আন্তিয়খিয়াতে এসে মণ্ডলীকে সমর্থন করেছিল। (প্রেরিত ২:১০; ১১:১৯, ২০; ১৩:১; ১৮:২৪) এগুলো ছাড়া বাইবেল মিশর এবং এর আশেপাশের অঞ্চলে প্রাথমিক খ্রিস্টানদের কাজ সম্বন্ধে আর কিছু জানায় না, তবে ব্যতিক্রম হচ্ছে ইথিওপীয় নপুংসকের কাছে খ্রিস্টান সুসমাচার প্রচারক ফিলিপের সাক্ষ্যদান।—প্রেরিত ৮:২৬-৩৯.

পার্থীয়া, মাদিয়া এবং এলমে প্রসারসহ বাবিল ছিল আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। একজন ইতিহাসবেত্তা বলেন যে, “টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস নদীর প্রত্যেকটা সমভূমি এলাকায়, আর্মেনিয়া থেকে পারস্য উপসাগর পর্যন্ত ও সেইসঙ্গে কাস্পিয়ান সাগরের উত্তরপূর্বাঞ্চলে এবং মাদিয়ার পূর্বদিকে যিহুদি জনগণ ছিল।” এনসাইক্লোপিডিয়া জুডাইকা তাদের সংখ্যা ৮,০০,০০০ বা আরও বেশি বলে অনুমান করে। প্রথম শতাব্দীর যিহুদি ইতিহাসবেত্তা জোসিফাস আমাদের বলেন যে, হাজার হাজার বাবিলীয় যিহুদি বাৎসরিক উৎসবগুলোর জন্য যিরূশালেমে যাত্রা করত।

সাধারণ কাল ৩৩ সালে পঞ্চাশত্তমীর দিনে কি কিছু বাবিলীয় তীর্থযাত্রী বাপ্তিস্ম নিয়েছিল? সেটা আমরা জানি না কিন্তু যে-লোকেরা সেই দিন প্রেরিত পিতরের কথা শুনেছিল, তাদের মধ্যে কয়েক জন মিসপতামিয়া থেকে ছিল। (প্রেরিত ২:৯) আমরা জানি যে, প্রেরিত পিতর সা.কা. প্রায় ৬২-৬৪ সাল পর্যন্ত বাবিলে ছিলেন। সেখানে থাকার সময়ই তিনি তার প্রথম চিঠি এবং সম্ভবত দ্বিতীয় চিঠিটিও লিখেছিলেন। (১ পিতর ৫:১৩) গালাতীয়দের উদ্দেশে লেখা চিঠিতে উল্লেখিত সভায় পিতর, যোহন এবং যাকোবকে যে-এলাকায় কার্যভার দেওয়া হয়েছিল, বিরাট সংখ্যক যিহুদি জনগণসহ বাবিল স্পষ্টতই তার অংশ ছিল।

যিরূশালেম মণ্ডলী এবং ডায়াস্পোরার যিহুদিরা

এলাকাগুলোর সম্বন্ধে যে-সভার উল্লেখ করা হয়েছিল সেখানে যাকোবও যোগ দিয়েছিলেন আর তিনি যিরূশালেম মণ্ডলীর একজন অধ্যক্ষ হিসেবে সেবা করছিলেন। (প্রেরিত ১২:১২, ১৭; ১৫:১৩; গালাতীয় ১:১৮, ১৯) সা.কা. ৩৩ সালে পঞ্চাশত্তমীর দিনে যখন ডায়াস্পোরার কয়েক হাজার যিহুদি দর্শনার্থী সুসমাচারের প্রতি সাড়া দিয়েছিল এবং বাপ্তিস্ম নিয়েছিল, তখন তিনি তার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন।—প্রেরিত ১:১৪; ২:১, ৪১.

তখন ও এর পর হাজার হাজার যিহুদি বাৎসরিক উৎসবগুলোর জন্য এসেছিল। শহর জনবহুল হয়ে পড়েছিল আর তাই দর্শনার্থীদের নিকটবর্তী বিভিন্ন গ্রামে এবং তাঁবুতে শিবির স্থাপন করতে হয়েছিল। তাদের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করা ছাড়াও, এনসাইক্লোপিডিয়া জুডাইকা ব্যাখ্যা করে যে, তীর্থযাত্রীরা উপাসনা, বলি উৎসর্গ এবং তোরাহ্‌ অধ্যয়নের জন্য মন্দিরে যেত।

কোনো সন্দেহ নেই যে, যাকোব এবং যিরূশালেম মণ্ডলীর অন্যান্য সদস্যরা ডায়াস্পোরার যিহুদিদের কাছে সাক্ষ্য দেওয়ার এই সুযোগগুলোর সদ্ব্যবহার করেছিল। সম্ভবত স্তিফানের মৃত্যুর ফলস্বরূপ যখন “যিরূশালেমস্থ মণ্ডলীর প্রতি বড়ই তাড়না উপস্থিত হইল,” তখন প্রেরিতরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে সেই কাজ করেছিল। (প্রেরিত ৮:১) এই ঘটনার আগের এবং পরের নথি ইঙ্গিত করে যে, প্রচার কাজের জন্য এই খ্রিস্টানদের উদ্যোগ ক্রমাগত বেড়ে চলেছিল।—প্রেরিত ৫:৪২; ৮:৪; ৯:৩১.

আমরা কী শিখতে পারি?

হ্যাঁ, যিহুদিরা যেখানেই বাস করুক না কেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য প্রাথমিক খ্রিস্টানরা আন্তরিক প্রচেষ্টা করেছিল। একই সময়ে, পৌল এবং অন্যেরা ইউরোপীয় ক্ষেত্রে পরজাতিদের কাছে গিয়েছিল। তারা “সমুদয় জাতিকে” শিষ্য করার বিষয়ে যিশুর অনুসারীদের প্রতি দেওয়া তাঁর বিদায়ী আজ্ঞা পালন করেছিল।—মথি ২৮:১৯, ২০.

আমরা তাদের উদাহরণ থেকে যিহোবার আত্মার সমর্থন লাভ করতে এক সাংগঠনিক উপায়ে প্রচার করার গুরুত্ব সম্বন্ধে শিখতে পারি। এ ছাড়া, আমরা সেই লোকেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার উপকারগুলো দেখতে পারি, যাদের ঈশ্বরের বাক্যের প্রতি সম্মান রয়েছে, বিশেষ করে যে-এলাকাগুলোতে অল্পসংখ্যক যিহোবার সাক্ষি রয়েছে। আপনার মণ্ডলীর নির্ধারিত এলাকার কয়েকটা কি অন্যগুলোর চেয়ে বেশি ফল উৎপন্ন করে? এই এলাকাগুলোতে বার বার কাজ করা উপকারজনক হতে পারে। এলাকার মধ্যে এমন কোনো ঘটনা কি ঘটেছে যা রীতিবহির্ভূতভাবে এবং রাস্তায় সাক্ষ্যদানের বিশেষ প্রচেষ্টা করার জন্য উপযুক্ত হবে?

প্রাথমিক খ্রিস্টানদের সম্বন্ধে কেবল বাইবেলের বিবরণ পড়াই নয় কিন্তু সেইসঙ্গে কিছু ঐতিহাসিক এবং ভৌগলিক বর্ণনাগুলোর সঙ্গে পরিচিত হওয়াও আমাদের জন্য উপকারজনক। অনেক মানচিত্র এবং ছবিসহ “সেই উত্তম দেশ দেখুন” (ইংরেজি) ব্রোশারটি হল এক হাতিয়ার, যেটিকে আমরা আমাদের বোধগম্যতাকে বাড়াতে ব্যবহার করতে পারি।

[পাদটীকাগুলো]

^ সম্ভবত এই সভা প্রথম শতাব্দীর পরিচালক গোষ্ঠী যখন ত্বক্‌চ্ছেদের বিষয়ে আলোচনা করার জন্য একত্রিত হয়েছিল সেই সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল অথবা এই আলোচনার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ছিল।—প্রেরিত ১৫:৬-২৯.

^ এই প্রবন্ধ যিহুদিদের কাছে পৌলের সাক্ষ্যদানের বিষয়ে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে, “পরজাতীয়দের জন্য প্রেরিত” হিসেবে তার কাজগুলোর ওপর নয়।—রোমীয় ১১:১৩.

[১৪ পৃষ্ঠার তালিকা]

ডায়াস্পোরার যিহুদিদের জন্য প্রেরিত পৌলের চিন্তা

সা.কা. ৪৯ সালে যিরূশালেমে সভার আগে

প্রেরিত ৯:১৯, ২০ দম্মেশক—‘তিনি সমাজ-গৃহে সমাজ-গৃহে প্রচার করিতে লাগিলেন’

প্রেরিত ৯:২৯ যিরূশালেম—“গ্রীক ভাষাবাদী যিহূদীদের সহিত কথোপকথন . . . করিতেন”

প্রেরিত ১৩:৫ সালামী, কুপ্র —“যিহূদীদের সমাজ-গৃহে সমাজ-গৃহে ঈশ্বরের বাক্য প্রচার করিতে লাগিলেন”

প্রেরিত ১৩:১৪ পিষিদিয়ার আন্তিয়খিয়া—“সমাজ-গৃহে প্রবেশ”

প্রেরিত ১৪:১ ইকনিয়—“যিহূদীদের সমাজ-গৃহে প্রবেশ করিলেন”

সা.কা. ৪৯ সালে যিরূশালেমে সভার পর

প্রেরিত ১৬:১৪ ফিলিপী—“লুদিয়া . . . একটী ঈশ্বর-ভক্ত স্ত্রীলোক”

প্রেরিত ১৭:১ থিষলনীকী—“যিহূদীদের এক সমাজ-গৃহ”

প্রেরিত ১৭:১০ বিরয়া—“যিহূদীদের সমাজ-গৃহে”

প্রেরিত ১৭:১৭ আথীনী—‘সমাজ-গৃহে যিহূদী লোকদের কাছে কথা প্রসঙ্গ করিতেন’

প্রেরিত ১৮:৪ করিন্থ—“সমাজ-গৃহে কথা প্রসঙ্গ করিতেন”

প্রেরিত ১৮:১৯ ইফিষ—“সমাজ-গৃহে প্রবেশ করিয়া যিহূদীদের কাছে কথা প্রসঙ্গ করিলেন”

প্রেরিত ১৯:৮ ইফিষ—“সমাজ-গৃহে প্রবেশ করিয়া তিন মাস সাহস পূর্ব্বক কথা কহিলেন”

প্রেরিত ২৮:১৭ রোম—“যিহূদীদের প্রধান লোককে ডাকাইয়া একত্র করিলেন”

[১৫ পৃষ্ঠার মানচিত্র]

(পুরোপুরি ফরম্যাট করা টেক্সটের জন্য এই প্রকাশনা দেখুন)

সা.কা. ৩৩ সালে পঞ্চাশত্তমীর দিনে যারা সুসমাচার শুনেছিল তারা বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে এসেছিল

ইল্লুরিকা

ইতালি

রোম

মাকিদনিয়া

গ্রিস

আথীনী

ক্রীতী

কুরীণী

লুবিয়া

বিথুনিয়া

গালাতিয়া

আশিয়া

ফরুগিয়া

পাম্ফলিয়া

কুপ্র

মিশর

ইথিওপিয়া

পন্ত

কাপ্পাদকিয়া

কিলিকিয়া

মিসপতামিয়া

সুরিয়া

শমরিয়া

যিরূশালেম

যিহূদিয়া

মাদিয়া

বাবিল

এলম

আরব

পার্থীয়া

[জলরাশি]

ভূমধ্যসাগর

কৃষ্ণ সাগর

লোহিত সাগর

পারস্য উপসাগর