“যাহারা জাহাজে চড়িয়া সমুদ্রযাত্রা করে”
“যাহারা জাহাজে চড়িয়া সমুদ্রযাত্রা করে”
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসিটসের গ্লসটারের পোতাশ্রয়ের দিকে মুখ করে একজন কর্ণধারের তামার তৈরি একটা প্রতিমূর্তি রয়েছে, যিনি ঝড়ের মধ্যে তার জাহাজের হাল ধরে রাখার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। সেই প্রতিমূর্তি গ্লসটারের সেইসমস্ত হাজার হাজার জেলের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, যারা সমুদ্রে মারা গিয়েছে বলে জানা যায়। প্রতিমূর্তির ভিত্তিমূলে এবং এর নিকটবর্তী একটা স্মারকফলকে গীতসংহিতা ১০৭:২৩, ২৪ পদের কথাগুলো রয়েছে: “যাহারা জাহাজে চড়িয়া সমুদ্রযাত্রা করে, মহাজলরাশির মধ্যে ব্যবসায় করে, তাহারা সদাপ্রভুর কার্য্য সকল দেখে, গভীর জলে তাঁহার আশ্চর্য্য ব্যাপার সকল দেখে।”
আটলান্টিকের সমুদ্রগর্ভে প্রচুর মাছ রয়েছে এমন এলাকায় কাজ করা হল ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাবসা। গ্লসটার, যেখানকার জনসংখ্যা এখন প্রায় ৩০,০০০ সেখান থেকে বছরের পর বছর ধরে অন্ততপক্ষে ৫,৩৬৮ জন ব্যক্তি সমুদ্রে মাছ ধরার সময় তাদের জীবন হারিয়েছে। সেই স্মারকটা বলে: “কেউ কেউ উত্তরপূর্ব দিক থেকে আসা সর্বনাশা প্রচণ্ড দমকা হাওয়া এবং প্রবল ঢেউয়ের কারণে ভেসে গিয়েছে। কেউ কেউ মাস্তুলযুক্ত জাহাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া চ্যাপটা তলাবিশিষ্ট দাঁড়টানা নৌকায় করে একাকী মৃত্যুবরণ করেছে, যা তাদেরকে প্রচুর মাছ রয়েছে এমন এলাকায় নিয়ে গিয়েছে। কিছু জাহাজ ঝড়ের কবলে পড়ে মর্মান্তিকভাবে ডুবে গিয়েছে। অন্যগুলো জাহাজ চলাচলের জন্য ব্যবহৃত পথে স্টিমারের সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছে।”
শত শত বছর ধরে জেলেরা যে-কঠোর পরিশ্রম এবং বিপদের মুখোমুখি হয়েছে, সেই সম্বন্ধে স্মারকফলক দুঃখজনক সাক্ষ্য দেয়। স্বামী, বাবা, ভাই এবং ছেলেদের হারিয়ে হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তিরা যে-চোখের জল ফেলেছে, তা কল্পনা করে দেখুন। কিন্তু, যিহোবা সেইসমস্ত বিধবা, অনাথ অথবা সমুদ্রে যারা প্রাণ হারিয়েছে, তাদের ভুলে যান না। প্রেরিত যোহন এই ভবিষ্যৎ ঘটনার বিষয়ে নির্দেশ করে বলেছিলেন: “সমুদ্র আপনার মধ্যবর্ত্তী মৃতগণকে সমর্পণ করিল, এবং মৃত্যু ও পাতাল আপনাদের মধ্যবর্ত্তী মৃতগণকে সমর্পণ করিল।” (প্রকাশিত বাক্য ২০:১৩) তাদের পুনরুত্থানের সময়, যারা “জাহাজে চড়িয়া সমুদ্রযাত্রা” করেছে, তারা বাস্তবিকই “সদাপ্রভুর” অপূর্ব “কার্য্য সকল” দেখবে।