দান যা ঈশ্বরের হৃদয়কে আনন্দিত করে
দান যা ঈশ্বরের হৃদয়কে আনন্দিত করে
গল্পটা বেশি সুখকর নয়। রানি অথলিয়া ছলচাতুরীর মাধ্যমে এবং হত্যা করিয়ে যিহূদার সিংহাসন দখল করেন। সমস্ত জন্মগত উত্তরাধিকারী হত হয়েছে বলে ভুলভাবে ধরে নিয়ে তিনি নিজেকে রানি হিসেবে অধিষ্ঠিত করেন। আরেকজন মহিলা, রাজকন্যা যিহোশেবা, যিনি যিহোবা এবং তাঁর ব্যবস্থাকে অত্যন্ত ভালবাসতেন, তিনি সাহসের সঙ্গে রাজবংশের একজন শিশু যিহোয়াশকে লুকিয়ে রাখেন। যিহোশেবা এবং তার স্বামী মহাযাজক যিহোয়াদা সেই উত্তরাধিকারীকে তাদের মন্দিরের গৃহে ছয় বছর লুকিয়ে রাখেন।—২ রাজাবলি ১১:১-৩.
যিহোয়াশের বয়স যখন সাত বছর হয়, তখন মহাযাজক যিহোয়াদা অন্যায়ভাবে দখলকৃত রানিকে অসদুপায়ে অর্জিত সিংহাসন থেকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার জন্য তৈরি হন। তিনি সেই বালককে গুপ্ত স্থান থেকে বের করেন এবং রাজ্যের ন্যায্য উত্তরাধিকারী হিসেবে তাকে মুকুট পরিয়ে দেন। দুষ্ট রানি অথলিয়াকে তখন রাজপ্রহরী দিয়ে মন্দিরের বাইরে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাকে হত্যা করা হয়, যা লোকেদের জন্য স্বস্তি এবং আনন্দ নিয়ে আসে। তাদের কাজের মাধ্যমে যিহোয়াদা এবং যিহোশেবা যিহূদা দেশে সত্য উপাসনা পুনর্স্থাপন করার ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখে। কিন্তু, এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে, তারা দায়ূদের সেই রাজবংশ রক্ষার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছিল, যা মশীহের দিকে পরিচালিত করবে।—২ রাজাবলি ১১:৪-২১.
নতুন অধিষ্ঠিত রাজাকেও দান করতে হবে, যা যিহোবার হৃদয়কে আনন্দিত করবে। যিহোবার গৃহ মেরামত করার খুবই প্রয়োজন ছিল। যিহূদার একমাত্র শাসক হওয়ার বিষয়ে অথলিয়ার অসংযত উচ্চাকাঙ্ক্ষার ফলে কেবল মন্দিরকে উপেক্ষাই করা হয়নি কিন্তু সেইসঙ্গে এর লুঠপাটও করা হয়েছিল। তাই, যিহোয়াশ মন্দির পুনর্নিমাণ এবং পুনর্স্থাপন করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হন। দেরি না করে, তিনি যিহোবার গৃহ পুনর্বাসন করার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করার আদেশ জারি করেন। তিনি বলেছিলেন: “পবিত্র বস্তু সম্বন্ধীয় যে সকল রৌপ্য সদাপ্রভুর গৃহে আনীত হয়, প্রচলিত রৌপ্য, প্রত্যেক গণিত লোকের হিসাবে প্রাণীর মূল্যরূপে নিরূপিত রৌপ্য, ও মনুষ্যের মনের প্রবৃত্তি অনুসারে সদাপ্রভুর গৃহে আনীত রৌপ্য, এই সমস্ত রৌপ্য যাজকেরা আপন আপন পরিচিত লোকদের হস্ত হইতে গ্রহণ করুক, এবং গৃহের যে কোন স্থান ভগ্ন হইয়াছে, দেখা যাইবে, তাহারা সেই সকল স্থান সারুক।”—২ রাজাবলি ১২:৪, ৫.
লোকেরা স্বেচ্ছায় দান করেছিল। কিন্তু, যাজকরা মন্দির মেরামত করার বিষয়ে তাদের দায়িত্বের ক্ষেত্রে পূর্ণহৃদয়ের ছিল না। তাই, রাজা নিজেই বিষয়টার তদারক করবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন এবং আদেশ দেন যাতে সমস্ত দান সরাসরি এক বিশেষ বাক্সের মধ্যে রাখা হয়। তিনি যিহোয়াদাকে দায়িত্ব দেন এবং সেই বিবরণ বলে: “যিহোয়াদা যাজক একটী সিন্দুক লইলেন, ও তাহার ডালাতে এক ছিদ্র করিয়া যজ্ঞবেদির নিকটে সদাপ্রভুর গৃহের প্রবেশস্থানের দক্ষিণ পার্শ্বে রাখিলেন; আর দ্বার-রক্ষক যাজকেরা সদাপ্রভুর গৃহে আনীত সমস্ত টাকা তাহার মধ্যে রাখিত। পরে যখন তাহারা দেখিতে পাইল, সিন্দুকে অনেক টাকা জমিয়াছে, তখন রাজার লেখক ও মহাযাজক আসিয়া সদাপ্রভুর গৃহে প্রাপ্ত ঐ সকল টাকা ২ রাজাবলি ১২:৯-১২.
থলীতে করিয়া গণনা করিতেন। পরে তাঁহারা সেই পরিমিত টাকা কর্ম্মকারীদের হস্তে, সদাপ্রভুর গৃহের অধ্যক্ষদের হস্তে দিতেন, আর ইহাঁরা সদাপ্রভুর গৃহের কর্ম্মকারী সূত্রধর ও গাঁথকদিগকে, এবং রাজ ও ভাস্করদিগকে তাহা দিতেন, এবং সদাপ্রভুর গৃহের ভগ্ন স্থান সারিবার জন্য কাষ্ঠ ও ক্ষোদিত প্রস্তর ক্রয় করিবার জন্য, ও গৃহ সারিবার নিমিত্তে যাহা যাহা লাগিত, সেই সকলের জন্য তাহা ব্যয় করিতেন।”—লোকেরা পূর্ণহৃদয়ে সাড়া দিয়েছিল। যিহোবার উপাসনার গৃহ পুনর্স্থাপিত হয়েছিল যাতে তাঁর উপাসনা মর্যাদাপূর্ণ উপায়ে চলতে পারে। এভাবে, দানকৃত সমস্ত তহবিল সঠিকভাবে ব্যবহৃত হয়েছিল। রাজা যিহোয়াশ সেই বিষয়টা নিশ্চিত করেছিলেন!
আজকে, যিহোবার দৃশ্যত সংগঠন সতর্কতার সঙ্গে লক্ষ রাখে, যাতে যিহোবার উপাসনাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দানকৃত সমস্ত তহবিল সঠিকভাবে ব্যবহৃত হয় এবং এই ক্ষেত্রে সত্য খ্রিস্টানরা প্রাচীন ইস্রায়েলীয়দের মতো সাড়া দিয়েছে আর সেটা হল পূর্ণহৃদয়ে। আপনি হয়তো তাদের মধ্যে রয়েছেন, যারা গত পরিচর্যা বছরে রাজ্যের বিষয়গুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দান করেছে। যে-উপায়গুলোতে আপনার দান ব্যবহৃত হয়েছে, সেগুলোর কিছু বিষয় আসুন আমরা লক্ষ করি।
প্রকাশিত বিষয়বস্তু
বিশ্বব্যাপী, নীচের এই প্রকাশনাগুলো অধ্যয়ন এবং বিতরণ করার জন্য প্রকাশ করা হয়েছে:
• বই: ৪,৭৪,৯০,২৪৭
• পুস্তিকা: ৬৮,৩৪,৭৪০
• ব্রোশার: ১৬,৭৮,৫৪,৪৬২
• ক্যালেন্ডার: ৫৪,০৫,৯৫৫
• পত্রিকা: ১১৭,৯২,৬৬,৩৪৮
• ট্র্যাক্ট: ৪৪,০৯,৯৫,৭৪০
• ভিডিও: ৩১,৬৮,৬১১
ছাপার কাজ সম্পন্ন হচ্ছে আফ্রিকা, উত্তর, মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকা, এশিয়া, ইউরোপ ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্বীপপুঞ্জে—মোট ১৯টা দেশে।
“আমার নাম কেটলিন মে। আমার বয়স আট বছর। আমার কাছে ২৮ ডলার আছে এবং আমি সেটা ছাপাখানার কাজে সাহায্য করার জন্য আপনাদেরকে দিতে চাই। আপনাদের ছোট বোন, কেটলিন।”
“নতুন ছাপাখানা সম্বন্ধে আমাদের পরিবারে একটা সভা হয়েছিল। আমাদের ১১ এবং ৯ বছর বয়সি ছেলেমেয়ে তাদের সঞ্চয় থেকে অর্থ নিয়ে সেটা দান করার সিদ্ধান্ত নেয়। আমাদের সঙ্গে তাদের দানও পাঠাতে পেরে আমরা আনন্দিত।”
নির্মাণ
নীচে কিছু নির্মাণ প্রকল্পের বিষয় রয়েছে, যেগুলো যিহোবার সাক্ষিদের কাজকর্মকে সমর্থন করার জন্য গ্রহণ করা হয়েছে:
• সীমিত সম্পদ রয়েছে এমন দেশগুলোতে কিংডম হল: ২,১৮০
• সম্মেলন হল: ১৫
• শাখা: ১০
• পূর্ণসময়ের পরিচর্যায় আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক: ২,৩৪২
“এই সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আমাদের নতুন কিংডম হলে প্রথম সভা হয়েছে। আমাদের পিতা যিহোবা ঈশ্বরকে প্রশংসা করার জন্য সঠিক জায়গা পেয়ে আমরা খুবই আনন্দিত। অধিক সংখ্যক কিংডম হল তৈরি করে আমাদের চাহিদাগুলোর প্রতি মনোযোগ দেওয়ার জন্য আমরা যিহোবা এবং আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। বস্তুতপক্ষে, আমাদের কিংডম হলটি আমাদের এলাকায় এক প্রকৃত সম্পদ।”—চিলি।
“যিহোবার সংগঠনের মাধ্যমে যে-সাহায্য প্রদান করা হয়, সেটার জন্য ভাইবোনেরা খুবই কৃতজ্ঞ। এখনও পর্যন্ত, আমরা নির্মাণ দলের সঙ্গে কাটানো অপূর্ব সময় নিয়ে কথা বলি।”—মলডোভা।
“আমার স্ত্রী এবং আমি সম্প্রতি ৩৫তম বিবাহবার্ষিকী উদ্যাপন করেছি। এই উপলক্ষে আমরা একে অন্যকে কী দেব, সেই বিষয়ে ঠিক করার চেষ্টা করছিলাম এবং আমরা যিহোবা ও তাঁর সংগঠনকে কিছু দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি কারণ তাদের সাহায্য ছাড়া আমরা হয়তো আমাদের বিবাহিত জীবনে সফল হতে পারতাম না। এই চিঠির সঙ্গে দেওয়া অর্থটা আমরা কোনো গরিব দেশে একটা কিংডম হল তৈরিতে ব্যবহার করার জন্য দিতে চাই।”
“সম্প্রতি আমি উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ পেয়েছি আর যেহেতু আমার ‘চাওয়া’ সামান্য এবং আমার ‘প্রয়োজন’ বলতে গেলে নেই, তাই আমি কিংডম হল নির্মাণের জন্য আমার অর্থ পাঠাতে চাই, যা অনেক দেশে খুবই প্রয়োজন।”
দুর্যোগের ত্রাণসামগ্রী
এই শেষকালে কোনোরকম সর্তকবাণী ছাড়াই দুর্যোগ আসে। অনেক যিহোবার সাক্ষি বাড়তি দান করে থাকে, যাতে দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় তাদের ভাইদের সাহায্য করা যায়। মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে যে, দুর্যোগের ত্রাণসামগ্রীর জন্য দেওয়া দানকে শিক্ষামূলক কাজের অংশ হিসেবে দেখাশোনা করা হয়। নীচের কিছু জায়গায় যিহোবার সাক্ষিরা দুর্যোগের শিকার লোকেদের সাহায্য করেছে:
• আফ্রিকা
• এশিয়া
• ক্যারিবিয়ান অঞ্চল
• প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ
“হারিকেনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সাহায্যার্থে যে-ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয়েছে, তার জন্য আমার স্বামী এবং আমি আপনাদের অনেক ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমরা আমাদের বাড়িতে একটা নতুন ছাদ তৈরি করতে সমর্থ হয়েছি। আপনারা এত দ্রুত সাড়া দিয়েছিলেন বলে আমরা সত্যিই অনেক কৃতজ্ঞ।”
“আমার নাম কনর এবং আমার বয়স ১১ বছর। সুনামি আঘাত করার ফলে কী ঘটেছে, তা যখন আমি দেখেছি তখন আমি সাহায্য করতে চেয়েছি। আশা করি এটা আমার ভাই ও বোনদের সাহায্য করবে।”
বিশেষ পূর্ণসময়ের দাস
বেশ কিছু সংখ্যক খ্রিস্টান সুসমাচার প্রচারের কাজ অথবা বেথেল হোমে পূর্ণসময়ের সেবা করে। কিছু পূর্ণসময়ের স্বেচ্ছাসেবক স্বেচ্ছাকৃত দানের মাধ্যমে সাহায্য পায়। এদের মধ্যে রয়েছে:
• মিশনারি: ২,৬৩৫
• ভ্রমণ অধ্যক্ষ: ৫,৩২৫
• বেথেলকর্মী: ২০,০৯২
“যেহেতু এখন [পাঁচ বছর বয়সি ছেলে] আমি বেথেলে সেবা করতে পারি না, তাই আমি অনেক প্রেম সহকারে এই দান পাঠাতে চাই। আমি যখন বড় হব, তখন আমি কঠোর পরিশ্রম করার জন্য বেথেলে যাব।”
বাইবেলের শিক্ষাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া
যিশু খ্রিস্ট তাঁর অনুসারীদের ‘সমুদয় জাতিকে শিষ্য করিবার’ দায়িত্ব দিয়েছিলেন। (মথি ২৮:১৯) তাঁর কথার বাধ্য হয়ে যিহোবার সাক্ষিরা দ্বীপ ও দেশ মিলিয়ে ২৩৫টা জায়গায় বাইবেলের বার্তা প্রচার করতে এবং শিক্ষা দিতে ব্যস্ত রয়েছে। তারা ৪১৩টা ভাষায় বাইবেল সাহিত্য প্রকাশ এবং বিতরণ করে।
বস্তুতপক্ষে, আরও বেশি লোককে ঈশ্বর এবং তাঁর উদ্দেশ্য সম্বন্ধে জানানোর জন্য সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ যে-দান একজন খ্রিস্টান করতে পারেন, সেটা হল তার সময়। যিহোবার সাক্ষিরা তাদের প্রতিবেশীদের সাহায্য করার জন্য প্রচুররূপে তাদের সময় এবং শক্তি দিয়ে থাকে। এ ছাড়া, তারা উদারভাবে আর্থিক দানও করে থাকে এবং তাদের সমস্ত দান বিভিন্ন উপায়ে যিহোবার নাম ও তাঁর উদ্দেশ্যকে সারা পৃথিবীতে জানাতে সাহায্য করেছে। অন্যদের তাঁর সম্বন্ধে আরও বেশি জানতে সাহায্য করার জন্য যিহোবা যেন ক্রমাগত এই প্রচেষ্টায় সাহায্য করেন। (হিতোপদেশ ১৯:১৭) সাহায্য করার বিষয়ে এই ধরনের ইচ্ছুক মনোভাব যিহোবার হৃদয়কে আনন্দিত করে।—ইব্রীয় ১৩:১৫, ১৬.
[২৮-৩০ পৃষ্ঠার বাক্স]
কেউ কেউ যে-উপায়গুলোতে দান করে থাকে
শিক্ষামূলক কাজের জন্য দান
অনেকে “শিক্ষামূলক কাজের জন্য দান—মথি ২৪:১৪” লেখা দানবাক্সে দেওয়ার জন্য একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আলাদা করে রাখে।
প্রত্যেক মাসে, মণ্ডলীগুলো এই অর্থ যিহোবার সাক্ষিদের সেই শাখা অফিসে পাঠিয়ে দেয়, যে-অফিস তাদের নিজের দেশের জন্য কাজ করে থাকে। স্বেচ্ছাকৃত দান হিসেবে দেওয়া অর্থও সরাসরি এই অফিসগুলোতে পাঠানো হয়ে থাকে। শাখা অফিসগুলোর ঠিকানা এই পত্রিকার ২ পৃষ্ঠায় পাওয়া যেতে পারে। চেকগুলো “ওয়াচ টাওয়ার”-কে প্রদানযোগ্য হিসেবে পাঠানো উচিত। এ ছাড়া, অলংকার অথবা অন্য কোনো মূল্যবান জিনিসও দান করা যেতে পারে। এই ধরনের দানের সঙ্গে একটা ছোট চিঠিতে উল্লেখ করে দেওয়া উচিত যে, এই দানগুলো এক শর্তহীন উপহার হিসেবে পাঠানো হয়েছে।
দাতব্য পরিকল্পনা
শিক্ষামূলক কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য উপহার হিসেবে শর্তহীন অর্থ পাঠানো ছাড়াও, দান করার অন্যান্য উপায় রয়েছে। এগুলোর অন্তর্ভুক্ত:
বিমা: কোনো জীবন বিমা প্রকল্পের অথবা অবসর গ্রহণ/পেনশন পরিকল্পনার স্বত্বভোগী হিসেবে ওয়াচ টাওয়ার এর নাম দেওয়া যেতে পারে।
ব্যাঙ্ক আ্যকাউন্ট: ব্যাঙ্ক আ্যকাউন্ট, ডিপোজিটের সার্টিফিকেট অথবা ব্যক্তির অবসর গ্রহণকালীন আ্যকাউন্টগুলো স্থানীয় ব্যাঙ্কের নিয়ম অনুসারে, ওয়াচ টাওয়ার এর ট্রাস্টে দেওয়া যেতে পারে অথবা ব্যক্তির মৃত্যুর পর ওয়াচ টাওয়ার-কে প্রদানযোগ্য হিসেবে দেওয়া যেতে পারে।
স্টক ও বন্ড: স্টক ও বন্ডগুলোকে শর্তহীন উপহার হিসেবে ওয়াচ টাওয়ার-কে দান করা যেতে পারে।
স্থাবর সম্পত্তি: বিক্রয়যোগ্য স্থাবর সম্পত্তি হয় এক শর্তহীন উপহার হিসেবে দান করা যেতে পারে অথবা আবাসিক সম্পত্তির ক্ষেত্রে দাতার জন্য জীবনস্বত্বরূপে সংরক্ষণ করে তা প্রদান করা যেতে পারে, এই শর্তে যে, তিনি তার জীবনকালে সেখানে বসবাস করতে পারবেন। কোনো স্থাবর সম্পত্তি দেওয়ার জন্য দলিলের ব্যবস্থা করার আগে আপনার দেশের শাখা অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
বার্ষিক বৃত্তি উপহার: বার্ষিক বৃত্তি উপহার হল একটা ব্যবস্থা যেটার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি ওয়াচটাওয়ার কর্পোরেশনকে অর্থ অথবা সম্পত্তির মালিকানাসূচক দলিলগুলো হস্তান্তর করেন। এটার বিনিময়ে, দাতা অথবা দাতার দ্বারা নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি জীবনভর প্রতি বছর এক নির্দিষ্ট বার্ষিক বৃত্তির অর্থ লাভ করেন। যে-বছর থেকে বার্ষিক বৃত্তি উপহার ব্যবস্থা চালু হয়, সেই সময় থেকে দাতা আয়করের ক্ষেত্রেও ছাড় পেয়ে থাকেন।
উইল ও ট্রাস্ট: সম্পত্তি অথবা অর্থ আইনসম্মতভাবে সম্পন্ন উইলের সাহায্যে ওয়াচ টাওয়ার-কে হস্তান্তর করা যেতে পারে অথবা ট্রাস্ট চুক্তির স্বত্বভোগী হিসেবে ওয়াচ টাওয়ার এর নাম দেওয়া যেতে পারে। কিছু দেশে, কোনো ট্রাস্টের দ্বারা একটা ধর্মীয় সংগঠন উপকৃত হলে সেটা কর দেওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু সুযোগসুবিধা দিতে পারে যদিও ভারতে এটা প্রযোজ্য নয়।।
“দাতব্য পরিকল্পনা” শব্দটা যেমন ইঙ্গিত করে যে, এই ধরনের দানগুলো করার জন্য সাধারণত দাতার আগে থেকেই পরিকল্পনা করা দরকার। যে-ব্যক্তিরা কোনো ধরনের দাতব্য পরিকল্পনার মাধ্যমে যিহোবার সাক্ষিদের শিক্ষামূলক কাজে সাহায্য করতে চায়, তাদের সহযোগিতা করার জন্য ইংরেজি ও স্প্যানিশ ভাষায় একটা ব্রোশার প্রস্তুত করা হয়েছে, যেটির শিরোনাম হল চ্যারিটেবেল প্ল্যানিং টু বেনিফিট কিংডম সার্ভিস ওয়ার্ল্ডওয়াইড। * এই ব্রোশারটি উপহারগুলো দেওয়ার বিভিন্ন উপায় সম্বন্ধে তথ্য জোগানোর জন্য লিখিত হয়েছে, যেগুলো হয় এখনই বা মৃত্যুর পর উইলের মাধ্যমে দেওয়া যেতে পারে। ব্রোশারটি পড়া এবং তাদের নিজস্ব আইনগত অথবা কর উপদেষ্টাদের সঙ্গে পরামর্শ করার পর, অনেকেই পৃথিবীব্যাপী যিহোবার সাক্ষিদের কাজকে সমর্থন করার জন্য সাহায্য করতে সমর্থ হয়েছে আর তা করার ফলে কর দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের সুবিধাগুলো বৃদ্ধি করেছে।
আরও তথ্য জানার জন্য, নীচে দেওয়া ঠিকানায় অথবা আপনার দেশের জন্য যিহোবার সাক্ষিদের যে-অফিস কাজ করছে, সেখানে চিঠি লিখে অথবা টেলিফোনে যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
Jehovah’s Witnesses,
Post Box ৬৪৪০,
Yelahanka,
Bangalore ৫৬০ ০৬৪,
Karnataka.
Telephone: (০৮০) ২৮৪৬৮০৭২
[পাদটীকা]
^ ভারতে পাওয়া যাচ্ছে না
[২৭ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]
বিশ্বস্ত ভিডিও: স্টালিন: U.S. Army photo