সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

দ্বিতীয় বংশাবলি বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো

দ্বিতীয় বংশাবলি বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো

যিহোবার বাক্য জীবন্ত

দ্বিতীয় বংশাবলি বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো

বাইবেলের দ্বিতীয় বংশাবলি বইটি যখন শুরু হয়, তখন শলোমন ইস্রায়েলের ওপর রাজত্ব করছিলেন। বাবিলে নির্বাসিত যিহুদিদের উদ্দেশে পারস্য রাজ কোরসের এই কথাগুলো দিয়ে বইটি শেষ হয়: “[সদাপ্রভু] যিহূদা দেশস্থ যিরূশালেমে তাঁহার জন্য এক গৃহ নির্ম্মাণ করিবার ভার আমাকে দিয়াছেন। তোমাদের মধ্যে, তাঁহার সমস্ত প্রজার মধ্যে, যে কেহ হউক, তাহার ঈশ্বর সদাপ্রভু তাহার সহবর্ত্তী হউন, সে [যিরূশালেমে] যাউক।” (২ বংশাবলি ৩৬:২৩) সা.কা.পূ. ৪৬০ সালে যাজক ইষ্রা বইটি লেখা শেষ করেন আর এটিতে ৫০০ বছরের—সা.কা.পূ. ১০৩৭ থেকে সা.কা.পূ. ৫৩৭ সালের—ঘটনা রয়েছে।

কোরস আদেশ জারি করার কারণে যিহুদিদের যিরূশালেমে ফিরে যাওয়া এবং সেখানে যিহোবার উপাসনাকে পুনর্প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভবপর হয়। কিন্তু, বহু বছর ধরে বাবিলে বন্দি থাকার ফলে তাদেরকে মাশুল দিতে হয়েছে। ফিরে আসা নির্বাসিত ব্যক্তিদের তাদের জাতির ইতিহাস সম্বন্ধে জ্ঞানের অভাব ছিল। দ্বিতীয় বংশাবলি তাদের জন্য দায়ূদের রাজবংশীয় রাজাদের বিভিন্ন ঘটনার এক স্পষ্ট সারাংশ তুলে ধরে। সেই বর্ণনা আমাদের জন্যও আগ্রহজনক কারণ এটা সত্য ঈশ্বরের বাধ্য থাকার ফলে যে-আশীর্বাদগুলো আসে এবং তাঁর অবাধ্য হওয়ার ফলে যে-পরিণতিগুলো ভোগ করতে হয়, সেই সম্বন্ধে তুলে ধরে।

একজন রাজা যিহোবার উদ্দেশে এক গৃহ নির্মাণ করেন

(২ বংশাবলি ১:১–৯:৩১)

যিহোবা রাজা শলোমনকে বুদ্ধি বা প্রজ্ঞা এবং জ্ঞান দিয়ে তার মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন ও সেইসঙ্গে তাকে ধনসম্পদ এবং সম্মান প্রদান করেন। রাজা যিহোবার উদ্দেশে যিরূশালেমে এক প্রতাপান্বিত গৃহ নির্মাণ করেন এবং লোকেরা “আনন্দিত ও হৃষ্টচিত্ত” হয়। (২ বংশাবলি ৭:১০) শলোমন “পৃথিবীস্থ সকল রাজার মধ্যে প্রধান” হয়ে ওঠেন।—২ বংশাবলি ৯:২২.

ইস্রায়েলে ৪০ বছর শাসন করার পর শলোমন ‘আপন পিতৃলোকদের সহিত নিদ্রাগত হন, এবং তাঁহার পুত্ত্র রহবিয়াম তাঁহার পদে রাজা হন।’ (২ বংশাবলি ৯:৩১) সত্য উপাসনা থেকে শলোমনের সরে যাওয়ার বিষয়টা ইষ্রা লিপিবদ্ধ করেননি। রাজা সম্বন্ধে শুধুমাত্র নেতিবাচক যে-বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে তা হল, মূর্খতাপূর্ণভাবে মিশর থেকে অনেক অশ্ব সংগ্রহ করা এবং ফরৌণের কন্যাকে বিবাহ করা। এভাবে বংশাবলির লেখক এক ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবরণটি তুলে ধরেছেন।

শাস্ত্রীয় প্রশ্নগুলোর উত্তর:

২:১৪—কেন এখানে বর্ণিত কারিগরের বংশ পরিচয় ১ রাজাবলি ৭:১৪ পদে বলা বংশ পরিচয় থেকে ভিন্ন? প্রথম রাজাবলি কারিগরের মাকে ‘নপ্তালি বংশীয় এক বিধবা’ হিসেবে উল্লেখ করে কারণ তিনি সেই বংশের একজন ব্যক্তিকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু, তিনি নিজে দান বংশীয় ছিলেন। তার স্বামীর মৃত্যুর পর, তিনি সোর নগরের একজন ব্যক্তিকে বিয়ে করেন এবং এই কারিগর সেই বিয়ের একজন সন্তান ছিলেন।

২:১৮; ৮:১০—এই পদগুলো বলে যে, শ্রমিকদের ওপর কার্যাধ্যক্ষ হিসেবে সেবারত অধ্যক্ষদের সংখ্যা ছিল ৩,৬০০ যোগ ২৫০ জন, অথচ ১ রাজাবলি ৫:১৬; ৯:২৩ পদ অনুসারে তাদের সংখ্যা ৩,৩০০ যোগ ৫৫০ জন। সংখ্যার মধ্যে কেন এই ভিন্নতা রয়েছে? এই ভিন্নতা অধ্যক্ষরা বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত থাকার কারণে রয়েছে বলে মনে হয়। হতে পারে যে, দ্বিতীয় বংশাবলি ৩,৬০০ জন ন-ইস্রায়েলীয় এবং ২৫০ জন ইস্রায়েলীয় অধ্যক্ষদের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরে আর প্রথম রাজাবলি ৩,৩০০ জন কার্যাধ্যক্ষ থেকে ৫৫০ জন উচ্চপদস্থ প্রধান তত্ত্বাবধায়কের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরে। যা-ই হোক না কেন, যারা অধ্যক্ষ হিসেবে সেবা করেছিল, তাদের মোট সংখ্যা ছিল ৩,৮৫০ জন।

৪:২-৪—ছাঁচে ঢালা সমুদ্রপাত্রের ভিত্তি নির্মাণ করার সময় কেন গরু বা ষাঁড়ের প্রতিকৃতি ব্যবহার করা হয়েছিল? শাস্ত্রে ষাঁড় হল শক্তির প্রতীক। (যিহিষ্কেল ১:১০; প্রকাশিত বাক্য ৪:৬, ৭) প্রতিকৃতি হিসেবে ষাঁড়কে বেছে নেওয়া উপযুক্ত ছিল কারণ ১২টা তামার ষাঁড় বিশাল ‘সমুদ্রপাত্রকে’ ধারণ করেছিল, যে-পাত্রের ওজন ছিল প্রায় ৩০ টন। এই উদ্দেশ্যে ষাঁড় নির্মাণ করা কোনোভাবেই দ্বিতীয় আজ্ঞাকে লঙ্ঘন করেনি, যেখানে উপাসনার জন্য কোনোকিছু নির্মাণ করতে নিষেধ করা হয়েছে।—যাত্রাপুস্তক ২০:৪, ৫.

৪:৫—ছাঁচে ঢালা সমুদ্রপাত্রের মোট ধারণ ক্ষমতা কত ছিল? যখন পূর্ণ করা হতো, তখন সমুদ্রপাত্র তিন হাজার বাৎ অথবা প্রায় ৬৬,০০০ লিটার পরিমাণ জল ধারণ করতে পারত। কিন্তু, স্বাভাবিক জলের পরিমাণ সম্ভবত এর ধারণ ক্ষমতার দুই তৃতীয়াংশ ছিল। প্রথম রাজাবলি ৭:২৬ পদ বলে: “[সমুদ্রপাত্রে] দুই সহস্র বাৎ [৪৪,০০০ লিটার] ধরিত।”

৫:৪, ৫, ১০—মূল আবাসের কোন আসবাবপত্র শলোমনের মন্দিরের অংশ হয়েছিল? মূল সমাগম তাম্বু থেকে একমাত্র যে-বস্তুটা শলোমনের মন্দিরে রাখা হয়েছিল, সেটা হল সিন্দুক। মন্দির নির্মাণের পরে, আবাস গিবিয়োন থেকে যিরূশালেমে নিয়ে আসা হয়েছিল এবং স্পষ্টতই সেখানে রাখা হয়েছিল।—২ বংশাবলি ১:৩, ৪.

আমাদের জন্য শিক্ষা:

১:১১, ১২. শলোমনের যাচ্ঞা যিহোবাকে দেখিয়েছিল যে, বুদ্ধি বা প্রজ্ঞা এবং জ্ঞান অর্জন করা রাজার আন্তরিক ইচ্ছা ছিল। ঈশ্বরের কাছে করা আমাদের প্রার্থনা প্রকৃতপক্ষে প্রকাশ করে যে, আমাদের আন্তরিক ইচ্ছা কী। আমাদের প্রার্থনার বিষয়বস্তু পরীক্ষা করা বিজ্ঞতার কাজ।

৬:৪. যিহোবার প্রেমপূর্ণ-দয়া এবং মঙ্গলভাবের প্রতি আন্তরিক উপলব্ধির দ্বারা আমাদের যিহোবার ধন্যবাদ করতে—অর্থাৎ অনুভূতি এবং কৃতজ্ঞতা সহকারে তাঁর প্রশংসা করতে—পরিচালিত হওয়া উচিত।

৬:১৮-২১. যদিও ঈশ্বরকে কোনো দালানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা যেতে পারে না কিন্তু মন্দির যিহোবার উপাসনার কেন্দ্রস্থল হিসেবে কাজ করত। আজকে, সমাজের মধ্যে যিহোবার সাক্ষিদের কিংডম হল সত্য উপাসনার কেন্দ্রস্থল।

৬:১৯, ২২, ৩২. যিহোবা সকলের—কোনো জাতির রাজা থেকে শুরু করে সবচেয়ে ক্ষুদ্র লোকের—প্রার্থনা শোনেন, এমনকি একজন বিদেশির প্রার্থনাও শোনেন, যিনি আন্তরিকভাবে তাঁর কাছে আসেন। *গীতসংহিতা ৬৫:২.

দায়ূদের বংশধারায় পরবর্তী রাজারা

(২ বংশাবলি ১০:১–৩৬:২৩)

ইস্রায়েলের ঐক্যবদ্ধ রাজ্য দুটো ভাগে বিভক্ত হয়—উত্তরের দশ বংশের রাজ্য এবং দক্ষিণের যিহূদা ও বিন্যামীনের দুই বংশের রাজ্য। সমগ্র ইস্রায়েলের যাজক এবং লেবীয়রা জাতীয়তাবাদের ঊর্ধ্বে রাজ্য চুক্তির প্রতি আনুগত্যকে স্থান দেয় এবং শলোমনের পুত্র রহবিয়ামের পক্ষ সমর্থন করে। মন্দির নির্মাণ সমাপ্ত হওয়ার ৩০ বছরের চেয়ে আরেকটু বেশি সময় পর, মন্দিরের সম্পদ লুঠ করা হয়।

রহবিয়ামের পরে যে-উনিশ জন রাজা আসে, তাদের মধ্যে ৫ জন বিশ্বস্ত থাকে, তিন জন প্রথমে বিশ্বস্ত থাকলেও পরে অবিশ্বস্ত হয়ে পড়ে এবং একজন তার মন্দ পথ থেকে ফিরে আসেন। বাকি সমস্ত শাসক যিহোবার চোখে যা মন্দ, তা-ই করেছিল। * যে-পাঁচ জন রাজা যিহোবার ওপর তাদের আস্থা রেখেছিল, তাদের কাজকর্মের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। মন্দিরের কাজকর্ম পুনরায় চালু করার বিষয়ে হিষ্কিয়ের বিবরণ এবং বিরাট নিস্তারপর্বের ব্যবস্থা করার বিষয়ে যোশিয়ের ঘটনা নিশ্চয়ই সেই যিহুদিদের জন্য অনেক উৎসাহজনক ছিল, যারা যিরূশালেমে যিহোবার উপাসনাকে পুনর্প্রতিষ্ঠিত করতে আগ্রহী ছিল।

শাস্ত্রীয় প্রশ্নগুলোর উত্তর:

১৩:৫—“লবণনিয়ম” অভিব্যক্তিটির অর্থ কী? লবণের সংরক্ষণ গুণের কারণে তা স্থায়িত্ব এবং অপরিবর্তনশীলতার এক প্রতীক হয়ে এসেছে। তাই, “লবণনিয়ম” অবশ্যপূরণীয় এক চুক্তিকে বোঝায়।

১৪:২-৫; ১৫:১৭—রাজা আসা কি সমস্ত “উচ্চস্থলী” দূর করেছিলেন? স্পষ্টতই, তিনি তা করেননি। হতে পারে যে, আসা কেবল মিথ্যা দেবতাদের উপাসনার সঙ্গে যুক্ত উচ্চস্থলীগুলো দূর করেছিলেন কিন্তু সেই উচ্চস্থলীগুলো করেননি, যেখানে লোকেরা যিহোবাকে উপাসনা করত। এটাও হতে পারে যে, আসার রাজত্বের সময়ের পরবর্তীকালে আবারও উচ্চস্থলী নির্মাণ করা হয়েছিল। এগুলো তার পুত্র যিহোশাফট দূর করেছিলেন। আসলে উচ্চস্থলীগুলো এমনকি যিহোশাফটের রাজত্বের সময়েও পুরোপুরিভাবে দূর করা হয়নি।—২ বংশাবলি ১৭:৫, ৬; ২০:৩১-৩৩.

১৫:৯; ৩৪:৬—ইস্রায়েল রাজ্যের বিভক্তিতে শিমিয়োন বংশের অবস্থান কী ছিল? উত্তরাধিকার হিসেবে যিহূদার মধ্যেকার বিভিন্ন এলাকা পাওয়ায় শিমিয়োন বংশ ভৌগলিকভাবে যিহূদা এবং বিন্যামীন রাজ্যের মধ্যে ছিল। (যিহোশূয়ের পুস্তক ১৯:১) কিন্তু, ধর্মীয় দিক দিয়ে এবং রাজনৈতিকভাবে সেই বংশ উত্তর রাজ্যের পক্ষ নিয়েছিল। (১ রাজাবলি ১১:৩০-৩৩; ১২:২০-২৪) তাই, শিমিয়োনকে দশ বংশের রাজ্যের মধ্যে গণনা করা হয়েছিল।

১৬:১৩, ১৪—আসাকে কি পোড়ানো হয়েছিল? না, “অতি বড় দাহ” বাক্যাংশটি আসাকে পোড়ানোর নির্দেশ করে না কিন্তু সুগন্ধি দ্রব্য পোড়ানোকে নির্দেশ করে।—পাদটীকা, NW.

৩৫:৩—যোশিয় কোথা থেকে পবিত্র সিন্দুক মন্দিরে নিয়ে এসেছিলেন? সিন্দুক আগেই একজন দুষ্ট রাজা সরিয়েছিলেন, নাকি যোশিয় মন্দিরের ব্যাপক মেরামত কাজের সময় তা নিরাপদে রাখার জন্য নতুন জায়গায় স্থাপন করেছিলেন, সেই সম্বন্ধে বাইবেল কিছু বলে না। শলোমনের দিনের পরে সিন্দুক সম্বন্ধে একমাত্র ঐতিহাসিক উল্লেখ হল, যখন যোশিয় সেটা মন্দিরে ফিরিয়ে এনেছিলেন।

আমাদের জন্য শিক্ষা:

১৩:১৩-১৮; ১৪:১১, ১২; ৩২:৯-২৩. যিহোবার ওপর নির্ভর করার গুরুত্ব সম্বন্ধে কী এক শিক্ষাই না আমরা পাই!

১৬:১-৫, ৭; ১৮:১-৩, ২৮-৩২; ২১:৪-৬; ২২:১০-১২; ২৮:১৬-২২. বিদেশি অথবা অবিশ্বাসী কারো সঙ্গে মৈত্রীবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পরিণতি দুঃখজনক। জগতের সঙ্গে অযথা যুক্ত হওয়া এড়িয়ে চলা আমাদের জন্য বিজ্ঞতার কাজ হবে।—যোহন ১৭:১৪, ১৬; যাকোব ৪:৪.

১৬:৭-১২; ২৬:১৬-২১; ৩২:২৫, ২৬. উদ্ধত মনোভাবের কারণে রাজা আসা তার জীবনের শেষ বছরগুলোতে খারাপভাবে আচরণ করেছিলেন। উষিয়ের গর্বিত মনোভাব তার পতনের কারণ হয়েছিল। হিষ্কিয় মূর্খের মতো এবং সম্ভবত গর্ব সহকারে কাজ করেছিলেন, যখন তিনি বাবিলীয় দূতদের তার সম্পদ দেখিয়েছিলেন। (যিশাইয় ৩৯:১-৭) “বিনাশের পূর্ব্বে অহঙ্কার,” বাইবেল সাবধান করে, “পতনের পূর্ব্বে মনের গর্ব্ব।”—হিতোপদেশ ১৬:১৮.

১৬:৯. যিহোবা তাদেরকে সাহায্য করেন, যাদের হৃদয় তাঁহার প্রতি একাগ্র এবং তিনি তাদের পক্ষে তাঁর ক্ষমতা ব্যবহার করতে উৎসুক।

১৮:১২, ১৩, ২৩, ২৪, ২৭. যিহোবা এবং তাঁর উদ্দেশ্যগুলো সম্বন্ধে কথা বলার বিষয়ে আমাদের মীখায়ের মতো সাহসী হতে হবে।

১৯:১-৩. যিহোবা আমাদের মধ্যে ভাল কিছু খোঁজেন, এমনকি সেই সময়গুলোতেও যখন আমরা তাঁর অসন্তোষের কারণ হই।

২০:১-২৮. আমরা আস্থা রাখতে পারি যে, যিহোবা আমাদেরকে তাঁর উদ্দেশ পেতে দেবেন যখন আমরা নম্রভাবে তাঁর ও তাঁর নির্দেশনার ওপর নির্ভর করি।—হিতোপদেশ ১৫:২৯.

২০:১৭. ‘সদাপ্রভু যে নিস্তার করিবেন, তাহা দেখিবার’ জন্য আমাদের ঈশ্বরের রাজ্যের সক্রিয় সমর্থনে ‘শ্রেণীবদ্ধ হইতে’ হবে। বিষয়গুলো নিজেদের হাতে তুলে না নিয়ে আমাদের অবশ্যই ‘দাঁড়াইয়া থাকিতে’ হবে, যিহোবার ওপর আমাদের পূর্ণ নির্ভরতা রাখতে হবে।

২৪:১৭-১৯; ২৫:১৪. যিহোয়াশ এবং তার পুত্র অমৎসিয়র জন্য প্রতিমাপূজা একটা ফাঁদ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছিল। একইভাবে আজকেও প্রতিমাপূজা বিপথে চালিত করতে পারে, বিশেষ করে যখন এটা লোভ অথবা জাতীয়তাবাদের মতো সূক্ষ্মরূপে আসে।—কলসীয় ৩:৫; প্রকাশিত বাক্য ১৩:৪.

৩২:৬, ৭. আমরা যখন “ঈশ্বরের সমগ্র যুদ্ধসজ্জা পরিধান” করি এবং আধ্যাত্মিক যুদ্ধ চালিয়ে যাই, তখন আমাদেরও অবশ্যই সাহসী এবং দৃঢ় হতে হবে।—ইফিষীয় ৬:১১-১৮.

৩৩:২-৯, ১২, ১৩, ১৫, ১৬. একজন ব্যক্তি ভুল পথ পরিত্যাগ করে এবং যা সঠিক তা করার জন্য প্রাণপণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে প্রকৃত অনুতাপ দেখায়। অকৃত্রিম অনুতাপের ভিত্তিতে একজন ব্যক্তি, যিনি এমনকি রাজা মনঃশির মতো মন্দ কাজ করেছে, তিনিও যিহোবার করুণা পেতে পারেন।

৩৪:১-৩. ছোটবেলার কোনো নেতিবাচক পরিস্থিতিকে আমাদের ঈশ্বরকে জানতে এবং তাঁর সেবা করতে বাধা হতে দেওয়া উচিত নয়। ছোটবেলায় যোশিয়ের ওপর যে-ইতিবাচক প্রভাব এসেছিল, তা হতে পারে তার অনুতপ্ত দাদু মনঃশির কাছ থেকে ছিল। যোশিয়র ওপর যে-ইতিবাচক প্রভাবই পড়ুক না কেন, তা পরিশেষে ভাল ফল নিয়ে এসেছিল। আমাদের ক্ষেত্রেও একই বিষয় হতে পারে।

৩৬:১৫-১৭. যিহোবা সমবেদনাময় এবং ধৈর্যশীল। কিন্তু, তাঁর সমবেদনা এবং ধৈর্যের সীমা রয়েছে। যিহোবা যখন এই দুষ্ট বিধিব্যবস্থার শেষ নিয়ে আসবেন, তা থেকে যদি লোকেরা রক্ষা পেতে চায়, তা হলে তাদের অবশ্যই রাজ্যের প্রচার কাজের প্রতি অনুকূলভাবে সাড়া দিতে হবে।

৩৬:১৭, ২২, ২৩. যিহোবার বাক্য সবসময় সত্য হয়।—১ রাজাবলি ৯:৭, ৮; যিরমিয় ২৫:৯-১১.

একটি বই কাজ করতে পরিচালিত করেছে

“যোশিয় ইস্রায়েল-সন্তানগণের অধিকৃত সকল দেশ হইতে সমস্ত ঘৃণার্হ বস্তু দূর করিলেন,” ২ বংশাবলি ৩৪:৩৩ পদ বলে, “এবং ইস্রায়েলের মধ্যে যত লোক উপস্থিত ছিল, সকলকে সেবা, তাহাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেবা, করাইলেন।” কী যোশিয়কে তা করতে পরিচালিত করেছিল? শাফন লেখক যখন রাজা যোশিয়ের কাছে নতুন আবিষ্কৃত যিহোবার ব্যবস্থাপুস্তক নিয়ে এসেছিলেন, তখন রাজা সেটি জোরে জোরে পড়িয়েছিলেন। যোশিয় যা শুনেছিলেন, তা তার হৃদয়কে এতটাই স্পর্শ করেছিল যে, তিনি তার সারাজীবনে উদ্যোগের সঙ্গে সত্য উপাসনাকে উচ্চীকৃত করেছিলেন।

ঈশ্বরের বাক্য পড়া এবং আমরা যা পড়ি, তা নিয়ে ধ্যান করার বিষয়টা আমাদের গভীরভাবে প্রভাবিত করতে পারে। দায়ূদের বংশধারার রাজাদের বিবরণ গভীরভাবে চিন্তা করা কি যারা যিহোবাকে তাদের আস্থা করে তুলেছিল, তাদের উদাহরণ অনুকরণ করতে এবং যারা আস্থা করেনি তাদের আচরণ এড়িয়ে চলতে আমাদের উৎসাহিত করে না? দ্বিতীয় বংশাবলি আমাদের সত্য ঈশ্বরকে একাগ্র ভক্তি দিতে এবং তাঁর প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে উদ্দীপিত করে। এই বইয়ের বার্তা সত্যিই জীবন্ত ও কার্যসাধক।—ইব্রীয় ৪:১২.

[পাদটীকাগুলো]

^ মন্দির প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এবং সেই সময়ে করা শলোমনের প্রার্থনা থেকে অন্যান্য শিক্ষা সম্বন্ধে প্রশ্নগুলোর জন্য ২০০৫ সালের ১লা জুলাই প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ২৮-৩১ পৃষ্ঠা দেখুন।

^ যিহূদার রাজাদের বংশতালিকার জন্য ২০০৫ সালের ১লা আগস্ট প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ১২ পৃষ্ঠা দেখুন।

[১৮ পৃষ্ঠার চিত্র]

আপনি কি জানেন যে, সমুদ্রপাত্রের ভিত্তিতে ষাঁড়ের প্রতিকৃতি কেন উপযুক্ত ছিল?

[২১ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

যদিও বালক হিসেবে যোশিয় সামান্য সাহায্য পেয়েছিলেন কিন্তু তিনি যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত হিসেবে বেড়ে উঠেছিলেন