সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

নহিমিয়ের পুস্তকের প্রধান বিষয়গুলো

নহিমিয়ের পুস্তকের প্রধান বিষয়গুলো

যিহোবার বাক্য জীবন্ত

নহিমিয়ের পুস্তকের প্রধান বিষয়গুলো

বাইবেলে ইষ্রা বইয়ে লিপিবদ্ধ শেষ ঘটনাগুলোর পর বারো বছর কেটে গিয়েছে। ‘যিরূশালেমকে পুনঃস্থাপন ও নির্ম্মাণ করিবার আজ্ঞা বাহির হইবার’ সময়—যে-ঘটনা মশীহের আগমন সম্বন্ধে ৭০ সপ্তাহের বছরের শুরুর সময়কে চিহ্নিত করে—এখন নিকটবর্তী। (দানিয়েল ৯:২৪-২৭) নহিমিয়ের পুস্তকে যিরূশালেমের প্রাচীর পুনর্নিমাণসহ ঈশ্বরের লোকেদের এক ইতিহাস রয়েছে। এতে সা.কা.পূ. ৪৫৬ সাল থেকে সা.কা.পূ. ৪৪৩ সালের কিছু সময় পর পর্যন্ত প্রায় ১২ বছরেরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ সময়কালের বিবরণ রয়েছে।

যিহোবা ঈশ্বরের ওপর পূর্ণ নির্ভরতা রেখে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধভাবে কাজ করা হলে সত্য উপাসনা যেভাবে উচ্চীকৃত হয়, দেশাধ্যক্ষ নহিমিয়ের লেখা পুস্তকটি হল সেটার এক রোমাঞ্চকর বিবরণ। এটি স্পষ্টভাবে দেখায় যে, কীভাবে যিহোবা তাঁর ইচ্ছা সম্পাদন করার জন্য বিষয়গুলো কৌশলে পরিচালনা করেন। এ ছাড়া, এটি একজন দৃঢ় ও সাহসী নেতার বিবরণ। বর্তমানে সমস্ত সত্য উপাসকের জন্য নহিমিয়ের পুস্তকের বার্তা বিভিন্ন মূল্যবান শিক্ষা প্রদান করে, “কেননা ঈশ্বরের বাক্য জীবন্ত ও কার্য্যসাধক।”—ইব্রীয় ৪:১২.

“প্রাচীর সমাপ্ত হইল”

(নহিমিয় ১:১–৬:১৯)

নহিমিয় রাজধানী শূশনে এক নির্ভরযোগ্য পদে থেকে রাজা অর্তক্ষস্ত লঙ্গিম্যানাসের সেবা করছেন। তার নিজের লোকেরা “অতিশয় দুরবস্থার ও গ্লানির মধ্যে রহিয়াছে, এবং যিরূশালেমের প্রাচীর ভগ্ন ও তাহার দ্বার সকল অগ্নিতে দগ্ধ রহিয়াছে” শুনে নহিমিয় অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হন। তিনি নির্দেশনার জন্য ঈশ্বরের কাছে ঐকান্তিকভাবে প্রার্থনা করেন। (নহিমিয় ১:৩, ৪) এক সময়ে, রাজা নহিমিয়ের বিষণ্ণতা লক্ষ করেন আর তার জন্য যিরূশালেমে যাওয়ার পথ খুলে যায়।

নহিমিয় যিরূশালেমে পৌঁছে রাতের বেলা প্রাচীরের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন এবং যিহুদিদের কাছে প্রাচীর পুনর্নিমাণের জন্য তার পরিকল্পনা প্রকাশ করেন। নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সেইসঙ্গে এই কাজের প্রতি বিরোধিতাও শুরু হয়। কিন্তু, নহিমিয়ের সাহসী নেতৃত্বে “প্রাচীর সমাপ্ত হইল।”—নহিমিয় ৬:১৫.

শাস্ত্রীয় প্রশ্নগুলোর উত্তর:

১:১; ২:১—এই দুটি পদে উল্লেখিত ‘বিংশতিতম বৎসর’ কি একই নির্দেশক তথ্য থেকে গণনা করা হয়েছিল? হ্যাঁ, এই বিংশতিতম বছর হল রাজা অর্তক্ষস্তের শাসনকাল। কিন্তু, এই পদগুলোতে ব্যবহৃত গণনা পদ্ধতি ভিন্ন। ঐতিহাসিক প্রমাণ ইঙ্গিত করে যে, অর্তক্ষস্ত সা.কা.পূ. ৪৭৫ সালে সিংহাসনে আরোহণ করেন।। যেহেতু বাবিলীয় লেখকরা পারস্যরাজদের শাসনের বছরকে প্রথানুসারে এক নিশান (মার্চ/এপ্রিল) থেকে অন্য নিশান মাস পর্যন্ত গণনা করত, তাই অর্তক্ষস্তের শাসনের প্রথম বছর শুরু হয়েছিল সা.কা.পূ. ৪৭৪ সালের নিশান মাসে। এই কারণে, নহিমিয় ২:১ পদে উল্লেখিত বিংশতিতম বছরের শাসনকাল শুরু হয়েছিল সা.কা.পূ. ৪৫৫ সালের নিশান মাসে। নহিমিয় ১:১ পদে উল্লেখিত কিসলেব (নভেম্বর/ডিসেম্বর) মাস, যুক্তিসংগতভাবেই আগের বছরের—সা.কা.পূ. ৪৫৬ সালের—কিসলেব মাস ছিল। সেই মাসও অর্তক্ষস্তের শাসনের বিংশতিতম বছরে পড়েছে বলে নহিমিয় উল্লেখ করেন। সম্ভবত এই ক্ষেত্রে তিনি রাজার সিংহাসনে আরোহণের তারিখ থেকে বছর গণনা করছিলেন। এটাও হতে পারে যে, নহিমিয় সেই সময় থেকে গণনা করছিলেন যেটাকে বর্তমানের যিহুদিরা প্রশাসনিক বছর বলে থাকে, যা তিসরি বা সেপ্টেম্বর/অক্টোবর মাসে শুরু হয়। যাই হোক না কেন, যিরূশালেম পুনর্স্থাপনের আজ্ঞা বের হয়েছিল সা.কা.পূ. ৪৫৫ সালে।

৪:১৭, ১৮—কীভাবে একজন ব্যক্তি কেবলমাত্র এক হাতে পুনর্নিমাণের কাজ করতে পেরেছিলেন? ভার বহনকারীদের জন্য এটা তেমন কোনো সমস্যা ছিল না। একবার যখন মাথা বা ঘাড়ের ওপরে বোঝা চাপানো হতো, তখন তারা ‘অন্য হস্তে অস্ত্র ধরিয়া’ এক হাত দিয়ে সহজেই ভারসাম্য রক্ষা করতে পারত। আর যে-গাঁথকদের দুই হাতই তাদের কাজের জন্য দরকার হতো, তারা “প্রত্যেক জন কটিদেশে খড়্গ বাঁধিয়া গাঁথিত।” তারা শত্রুদের যেকোনো আক্রমণের মুখে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত ছিল।

৫:৭—কেন নহিমিয় ‘প্রধান লোকদিগকে ও অধ্যক্ষদিগকে ভর্ৎসনা করিতে’ শুরু করেছিলেন? এই লোকেরা মোশির ব্যবস্থা লঙ্ঘন করে সহযিহুদিদের কাছ থেকে বৃদ্ধি বা সুদ দাবি করছিল। (লেবীয় পুস্তক ২৫:৩৬; দ্বিতীয় বিবরণ ২৩:১৯) অধিকন্তু, ঋণদাতারা বেশ চড়া সুদ দাবি করছিল। যদি প্রতি মাসে ‘শতকরা বৃদ্ধি’ দাবি করা হয়, তা হলে তা এক বছরে ১২ শতাংশের সমান হবে। (নহিমিয় ৫:১১) ইতিমধ্যেই কর ও খাদ্যাভাবে ভারাক্রান্ত লোকেদের ওপর তা চাপিয়ে দেওয়া নির্দয় কাজ ছিল। তাই, নহিমিয় ঈশ্বরের ব্যবস্থা ব্যবহার করে ধনীদের তিরস্কার ও ভর্ৎসনা করেছিলেন।

৬:৫—যেহেতু গোপনীয় চিঠিপত্র সাধারণত সীল করে বন্ধ করা ব্যাগে রাখা হতো, তা হলে সন্‌বল্লট কেন নহিমিয়ের কাছে “এক মুক্ত পত্র” পাঠিয়েছিলেন? সন্‌বল্লট সম্ভবত এই মুক্ত পত্র পাঠিয়ে, এতে উল্লেখিত মিথ্যা অভিযোগগুলো প্রকাশ্যে জানাতে চেয়েছিলেন। তিনি হয়তো আশা করেছিলেন যে, এমনটা করা নহিমিয়কে এতটাই ক্ষিপ্ত করে তুলবে যে, তিনি নির্মাণ কাজ পরিত্যাগ করে নিজেকে রক্ষা করার জন্য ছুটে আসবেন। অথবা সন্‌বল্লট হয়তো চিন্তা করেছিলেন যে, চিঠির বিষয়বস্তু যিহুদিদের মধ্যে এমন এক বিপদসংকেত হবে যে, এর ফলে তারা তাদের সমস্ত কাজ বন্ধ করে দেবে। নহিমিয় ভীত হননি বরং শান্তভাবে ঈশ্বরদত্ত কাজ করে চলেছিলেন।

আমাদের জন্য শিক্ষা:

১:৪; ২:৪; ৪:৪, ৫. আমরা যখন বিভিন্ন কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হই অথবা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি, তখন আমাদের ‘প্রার্থনায় নিবিষ্ট থাকা’ এবং ঈশতান্ত্রিক নির্দেশনার সঙ্গে মিল রেখে কাজ করা উচিত।—রোমীয় ১২:১২.

১:১১–২:৮; ৪:৪, ৫, ১৫, ১৬; ৬:১৬. যিহোবা তাঁর দাসদের আন্তরিক প্রার্থনার উত্তর দেন।—গীতসংহিতা ৮৬:৬, ৭.

১:৪; ৪:১৯, ২০; ৬:৩, ১৫. সমবেদনাপূর্ণ ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও নহিমিয়, ধার্মিকতার পক্ষে দৃঢ় একজন সক্রিয় ব্যক্তি হিসেবে চমৎকার উদাহরণ স্থাপন করেন।

১:১১–২:৩. একজন পানপাত্রবাহক হিসেবে নহিমিয়ের মর্যাদাপূর্ণ পদ তার আনন্দের প্রধান উৎস ছিল না। এর কারণ ছিল সত্য উপাসনার অগ্রগতি। যিহোবার উপাসনা ও যেসমস্ত বিষয় এর অগ্রগতিতে সাহায্য করে, সেগুলো কি আমাদের মূল চিন্তার বিষয় ও আনন্দের প্রধান উৎস হওয়া উচিত নয়?

২:৪-৮. নহিমিয়কে যিরূশালেমে যেতে দেওয়ার ও এর প্রাচীর পুনর্নিমাণের অনুমতি প্রদান করার জন্য যিহোবাই, অর্তক্ষস্তকে পরিচালিত করেছিলেন। “সদাপ্রভুর হস্তে রাজার চিত্ত জলপ্রণালীর ন্যায়,” হিতোপদেশ ২১:১ পদ বলে। “তিনি যে দিকে ইচ্ছা, সেই দিকে তাহা ফিরান।”

৩:৫, ২৭. তকোয়ীয় “প্রধানবর্গ” যেমনটা মনে করেছিল, সত্য উপাসনার জন্য করা কায়িকশ্রমকে আমাদের মর্যাদাহানিকর বলে মনে করা উচিত নয়। পরিবর্তে, আমরা সাধারণ তকোয়ীয়দের অনুকরণ করতে পারি, যারা স্বেচ্ছায় নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছিল।

৩:১০, ২৩, ২৮-৩০. যদিও কেউ কেউ যেখানে রাজ্য ঘোষণাকারীদের বেশি প্রয়োজন সেখানে যেতে সমর্থ হয় কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকে নিজেদের দেশে থেকেই সত্য উপাসনাকে সমর্থন করে। কিংডম হল নির্মাণ কাজ এবং দুর্যোগের সময়ে ত্রাণসামগ্রী বিতরণের কাজে অংশ নিয়ে তা করা গেলেও, মূলত রাজ্যের প্রচার কাজে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে আমরা তা করতে পারি।

৪:১৪. বিরোধিতার মুখোমুখি হলে আমরাও “মহান্‌ ও ভয়ঙ্কর প্রভুকে” মনে রেখে ভয় কাটিয়ে উঠতে পারি।

৫:১৪-১৯. দেশাধ্যক্ষ নহিমিয় খ্রিস্টান অধ্যক্ষদের জন্য নম্রতা, নিঃস্বার্থপরতা ও বিচক্ষণতার এক চমৎকার উদাহরণ। ঈশ্বরের ব্যবস্থা কার্যকর করায় উদ্যোগী হওয়া সত্ত্বেও, তিনি স্বার্থপর লাভের জন্য অন্যদের ওপর আধিপত্য খাটাননি। পরিবর্তে, তিনি অত্যাচারিত ও দরিদ্র লোকেদের জন্য চিন্তা প্রকাশ করেছিলেন। উদারতা দেখানোর ক্ষেত্রে নহিমিয় ঈশ্বরের দাসদের জন্য এক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ স্থাপন করেছেন।

“হে আমার ঈশ্বর, মঙ্গলার্থে আমাকে স্মরণ কর”

(নহিমিয় ৭:১–১৩:৩১)

যিরূশালেমের প্রাচীর নির্মাণ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নহিমিয় নগরের নিরাপত্তার জন্য দ্বারের কপাট স্থাপন করার ব্যবস্থা নেন। তিনি লোকেদের বংশ তালিকা করতে শুরু করেন। সমস্ত লোক “জল-দ্বারের সম্মুখস্থ চকে” একত্রিত হলে, যাজক ইষ্রা মোশির ব্যবস্থা পুস্তক পাঠ করেন এবং নহিমিয় ও লেবীয়রা লোকেদের কাছে সেই ব্যবস্থা ব্যাখ্যা করেন। (নহিমিয় ৮:১) কুটিরোৎসব সম্বন্ধে জানা তাদেরকে আনন্দের সঙ্গে তা পালন করতে পরিচালিত করে।

পরে আরেকটা সমাবেশে যখন “ইস্রায়েল-বংশ” তাদের পুরো জাতির পাপ স্বীকার করে, তখন লেবীয়রা ইস্রায়েলের সঙ্গে ঈশ্বরের আচরণ পুনরালোচনা করে এবং লোকেরা ‘ঈশ্বরের ব্যবস্থা-পথে চলিবার’ দিব্য বা শপথ করে। (নহিমিয় ৯:১, ২; ১০:২৯) যেহেতু যিরূশালেমে এখনও পর্যন্ত ঘনবসতি গড়ে ওঠেনি, তাই নগরের বাইরে বসবাসরত প্রতি দশ জনের মধ্যে একজনকে সেখানে আনার জন্য গুলিবাঁট করা হয়। এরপর, এতটাই উদ্যমের সঙ্গে প্রাচীর উদ্বোধন করা হয় যে, “অনেক দূর পর্য্যন্ত যিরূশালেমের আনন্দধ্বনি শুনা গেল।” (নহিমিয় ১২:৪৩) যিরূশালেমে আসার বারো বছর পর, নহিমিয় সেই জায়গা ছেড়ে অর্তক্ষস্তের কাছে তার কার্যভারে ফিরে যান। শীঘ্রই যিহুদিদের মধ্যে অশুচিতা ঢুকে পড়ে। যিরূশালেমে পুনরায় ফিরে এসে নহিমিয় পরিস্থিতিকে সংশোধন করার জন্য চূড়ান্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তিনি নিজের জন্য নম্রভাবে অনুরোধ করেন: “হে আমার ঈশ্বর, মঙ্গলার্থে আমাকে স্মরণ কর।”—নহিমিয় ১৩:৩১.

শাস্ত্রীয় প্রশ্নগুলোর উত্তর:

৭:৬-৬৭—সরুব্বাবিলের সঙ্গে যিরূশালেমে ফিরে আসা অবশিষ্ট লোকেদের যে-তালিকা নহিমিয় তৈরি করেছিলেন, সেটা কেন ইষ্রার তৈরি করা প্রত্যেক কুলের আলাদা আলাদা ব্যক্তির তালিকা থেকে ভিন্ন ছিল? (ইষ্রা ২:১-৬৫) এই পার্থক্যের কারণ হতে পারে যে, ইষ্রা ও নহিমিয় আলাদা উৎস বিষয়বস্তু ব্যবহার করেছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, ফিরে আসার জন্য যারা নাম লিখিয়েছিল বা নিবন্ধভুক্ত করেছিল, সেই সংখ্যা হয়তো প্রকৃতপক্ষে ফিরে আসা ব্যক্তিদের সংখ্যার চেয়ে ভিন্ন ছিল। দুটো তালিকা এই কারণেও ভিন্ন হতে পারে যে, প্রথমে যে-যিহুদিরা তাদের বংশবৃত্তান্তের প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছিল তারা হয়তো পরে তা দিয়েছিল। কিন্তু, দুটো বিবরণই একটা বিষয়ে একমত: দাস-দাসী ও গায়ক-গায়িকা ছাড়া প্রথমে ফিরে আসা লোকেদের সংখ্যা ছিল ৪২,৩৬০ জন।

১০:৩৪—কেন লোকেদের কাঠ সরবরাহ করতে বলা হয়েছিল? মোশির ব্যবস্থায় কাঠ উৎসর্গ করার আদেশ দেওয়া হয়নি। এই চাহিদা মূলত প্রয়োজনের সময়ে উদ্ভূত হয়েছিল। বেদিতে বলি পোড়ানোর জন্য প্রচুর পরিমাণ কাঠ প্রয়োজন ছিল। স্পষ্টতই, মন্দিরে ন-ইস্রায়েলীয় দাস হিসেবে সেবারত যথেষ্ট নথীনীয় ছিল না। তাই, সবসময় কাঠ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য গুলিবাঁট করা হয়েছিল।

১৩:৬—নহিমিয় কত দিন যিরূশালেমে অনুপস্থিত ছিলেন? বাইবেল শুধুমাত্র বলে যে, নহিমিয় যিরূশালেমে ফেরার জন্য রাজার কাছ থেকে “কিছু দিনের পর” বিদায় বা ছুটি নিয়েছিলেন। তাই, তিনি কত দিনের জন্য ছুটি নিয়েছিলেন, তা নির্ণয় করা অসম্ভব। কিন্তু, যিরূশালেমে ফিরে এসে নহিমিয় দেখেছিলেন যে, যাজকবর্গকে সমর্থন করা হচ্ছিল না, এমনকি বিশ্রামবার আইনও পালন করা হচ্ছিল না। অনেকে পরজাতীয় স্ত্রী গ্রহণ করেছিল আর এমনকি তাদের সন্তানরা যিহুদিদের ভাষায় কথাও বলতে পারত না। যেহেতু পরিস্থিতির এতটা অবনতি ঘটেছিল, তাই নহিমিয় নিশ্চয়ই দীর্ঘ দিনের জন্যই চলে গিয়েছিলেন।

১৩:২৫, ২৮—নহিমিয় বিপথগামী যিহুদিদের সঙ্গে “বিবাদ” করা বা তাদের দোষ বের করা ছাড়াও আর কোন সংশোধনমূলক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন? নহিমিয় এই অর্থে ‘তাহাদিগকে তিরস্কার করিয়াছিলেন’ যে, তিনি তাদের বিরুদ্ধে ঈশ্বরের ব্যবস্থায় পাওয়া বিচারাজ্ঞা বার বার উল্লেখ করেছিলেন। তিনি সম্ভবত তাদের বিরুদ্ধে বিচার সংক্রান্ত আদেশের মাধ্যমে ‘তাহাদের কোন কোন ব্যক্তিকে প্রহার করিয়াছিলেন।’ তার নৈতিক ক্রোধের প্রতীক হিসেবে তিনি ‘তাহাদের কাহারও কাহারও কেশ উৎপাটন করিয়াছিলেন।’ এ ছাড়াও, তিনি মহাযাজক ইলিয়াশীবের নাতিকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন, যিনি হোরোণীয় সন্‌বল্লটের এক মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন।

আমাদের জন্য শিক্ষা:

৮:৮. ঈশ্বরের বাক্যের শিক্ষক হিসেবে আমরা স্পষ্ট উচ্চারণ করে, মৌখিকভাবে জোর দিয়ে এবং শাস্ত্রকে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ স্পষ্ট করে “তাহার অর্থ করিয়া” দিই।

৮:১০. “সদাপ্রভুতে যে আনন্দ,” তা একজন ব্যক্তির আধ্যাত্মিক চাহিদা সম্বন্ধে সচেতনতা, সেগুলোর পরিপূর্ণতা এবং ঈশতান্ত্রিক নির্দেশনা পালন করার মাধ্যমে লাভ করা যায়। তাই, আমাদের অধ্যবসায়ের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করা, নিয়মিতভাবে খ্রিস্টীয় সভাগুলোতে যোগ দেওয়া এবং উদ্যোগের সঙ্গে রাজ্যের প্রচার ও শিষ্য তৈরির কাজে অংশগ্রহণ করা কতই না গুরুত্বপূর্ণ!

১১:২. একজন ব্যক্তির অধিকার বা পৈত্রিক সম্পত্তি ত্যাগ করে যিরূশালেমে যেতে ব্যক্তিগত খরচ লাগত আর সেইসঙ্গে কিছু অসুবিধাও জড়িত ছিল। যারা ইচ্ছাপূর্বক তা করেছিল, তারা আত্মত্যাগের মনোভাব দেখিয়েছিল। যখন সম্মেলনগুলোতে ও অন্যান্য উপলক্ষে অন্যদের জন্য স্বেচ্ছায় কাজ করার বিভিন্ন সুযোগ আসে, তখন আমরাও একই মনোভাব দেখাতে পারি।

১২:৩১, ৩৮, ৪০-৪২. গান যিহোবার প্রশংসা করার ও তাঁর প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের এক চমৎকার উপায়। খ্রিস্টীয় সমাবেশগুলোতে আমাদের পূর্ণহৃদয়ে গান করা উচিত।

১৩:৪-৩১. আমাদের অবশ্যই বস্তুবাদিতা, দুর্নীতি ও ধর্মভ্রষ্টতার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে, যেন এই বিষয়গুলো ক্রমান্বয়ে আমাদের জীবনে প্রবেশ করতে না পারে।

১৩:২২. নহিমিয় খুব ভালভাবেই অবগত ছিলেন যে, তাকে ঈশ্বরের কাছে নিকাশ দিতে হবে। আমাদেরও যিহোবার কাছে নিকাশ দেওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

যিহোবার আশীর্বাদ অপরিহার্য

“যদি সদাপ্রভু গৃহ নির্ম্মাণ না করেন,” গীতরচক গেয়েছিলেন, “তবে নির্ম্মাতারা বৃথাই পরিশ্রম করে।” (গীতসংহিতা ১২৭:১) নহিমিয়ের পুস্তকটি এই সত্যকে কত স্পষ্টই না করে!

আমাদের জন্য শিক্ষাটা স্পষ্ট। আমাদের যেকোনো প্রচেষ্টায় সফল হওয়ার জন্য যিহোবার আশীর্বাদ অপরিহার্য। সত্য উপাসনাকে আমাদের জীবনে প্রথম স্থানে না রেখে আমরা কি প্রকৃতপক্ষে যিহোবার আশীর্বাদ আশা করতে পারি? তাই, আসুন নহিমিয়ের মতো আমরা সত্য উপাসনা ও এর অগ্রগতিকে আমাদের প্রধান চিন্তার বিষয় করে তুলি।

[৮ পৃষ্ঠার চিত্র]

“সদাপ্রভুর হস্তে রাজার চিত্ত জলপ্রণালীর ন্যায়”

[৯ পৃষ্ঠার চিত্র]

নহিমিয়—একজন সক্রিয় ও সমবেদনাপূর্ণ ব্যক্তি—যিরূশালেমে আসেন

[১০, ১১ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

আপনি কি জানেন কীভাবে ঈশ্বরের বাক্যের “অর্থ করিতে” হয়?