সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

খ্রিস্টের শিক্ষাগুলো আজকে কারা পালন করে?

খ্রিস্টের শিক্ষাগুলো আজকে কারা পালন করে?

খ্রিস্টের শিক্ষাগুলো আজকে কারা পালন করে?

 যিশু খ্রিস্টকে সর্বকালের সর্বমহান পুরুষ হিসেবে ব্যাপকভাবে দেখা হয়ে থাকে। অনেকেই তাঁকে সর্বমহান পুরুষ বলে বিবেচনা করে থাকে। ইংরেজ লেখক মেলভিন ব্র্যাগ লেখেন যে, প্রায় দুহাজার বছর ধরে, তাঁর শিক্ষাগুলো “সহজে নজরে পড়ে না এমন নিচু দয়ালু ও সদয় লোকেদের জীবনকে ও সেইসঙ্গে উচ্চাকাঙ্ক্ষী লোকহিতৈষী ব্যক্তিদের কাজকর্মকে” গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে।

খ্রিস্টধর্ম সম্বন্ধে কী বলা যায়?

খ্রিস্টধর্ম সম্বন্ধে কী বলা যায়? এটাকে “মানবজাতির সবচেয়ে বড় এক আধ্যাত্মিক অগ্রগতি” বলে বর্ণনা করা হয়েছে। স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো ক্যালিডোনিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভিড কেলসো এক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন: “খ্রিস্টধর্মের দুহাজার বছরের ইতিহাস শিল্পকলা, স্থাপত্যশিল্প, দর্শনশাস্ত্র, সংগীত এবং সামাজিক কাজের ক্ষেত্রে অতুলনীয় সাফল্যগুলোতে পূর্ণ।”

আবার অনেকে বিষয়গুলোকে ভিন্নভাবে দেখে থাকে। তাদের সমস্যা সেই ধর্মমত নিয়ে নয়, যে-ধর্মের ভিত্তিই হল যিশু খ্রিস্টের শিক্ষাগুলো এবং এই বিশ্বাস যে, তিনিই ছিলেন ঈশ্বরের পুত্র। বরং, তারা সেই ধর্মীয় সংগঠনগুলোর আচরণের কারণে অসন্তুষ্ট, যেগুলো খ্রিস্টধর্মকে প্রতিনিধিত্ব করে বলে দাবি করে থাকে।

উদাহরণস্বরূপ, উনবিংশ শতাব্দীর জার্মান দার্শনিক ফ্রিডরিখ নিচি খ্রিস্টধর্মকে “মানবজাতির এক চির কলঙ্ক” বলে বর্ণনা করে দ্বিতীয় অর্থটা বুঝিয়েছিলেন। তিনি লিখেছিলেন খ্রিস্টধর্ম হল, “এক বড় অভিশাপ, প্রচণ্ড ও অন্তর্নিহিত এক বিকৃতি, . . . যেটার কাছে কোনো বিষয়ই তত বিদ্বেষপূর্ণ, অসৎ, গোপনীয় ও নগণ্য নয়।” এটা ঠিক যে, নিচির দৃষ্টিভঙ্গি চরম ছিল কিন্তু কিছু যুক্তিবাদী পর্যবেক্ষকও একই উপসংহারে এসেছে। কেন? কারণ শত শত বছর ধরে, খ্রিস্টান বলে দাবি করে এমন ব্যক্তিদের আচরণ, যিশু খ্রিস্টের গুণগুলোর দ্বারা নয় কিন্তু ব্যাপক “নৈতিক অধঃপতন, ভয়ানক অপরাধ এবং ঈশ্বরনিন্দার” দ্বারা চিহ্নিত হয়েছে।

খ্রিস্টধর্মের সঙ্গে কি আসলেই খ্রিস্ট আছেন?

অতএব, এটা জিজ্ঞেস করা অযৌক্তিক কিছু নয় যে, “খ্রিস্টধর্মের সঙ্গে কি আসলেই এখনও খ্রিস্ট আছেন?” “অবশ্যই তিনি আছেন!” কেউ কেউ সঙ্গে সঙ্গে বলবে। “তিনি কি তাঁর অনুসারীদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেননি যে, তিনি ‘যুগান্ত পর্য্যন্ত প্রতিদিন’ তাদের সঙ্গে সঙ্গে থাকবেন?” (মথি ২৮:২০) হ্যাঁ, যিশু তা বলেছিলেন। কিন্তু তিনি কি এটা বুঝিয়েছিলেন যে, তাঁর অনুসারী বলে দাবি করে এমন প্রত্যেকের সঙ্গেই তিনি থাকবেন, তা সেই ব্যক্তির আচরণ যা-ই হোক না কেন?

মনে করে দেখুন, যিশুর দিনের কিছু ধর্মীয় নেতা মনে করেছিল যে, ঈশ্বর নিঃশর্তভাবে তাদের সঙ্গে রয়েছেন। যেহেতু ঈশ্বর একটা বিশেষ কাজের জন্য ইস্রায়েলকে বেছে নিয়েছিলেন, তাই কিছু ধর্মীয় নেতা ভেবেছিল যে, তারা যা কিছুই করুক না কেন, ঈশ্বর তাদের কখনো পরিত্যাগ করবেন না। (মীখা ৩:১১) কিন্তু পরিশেষে তারা ঈশ্বরের আইন ও মানগুলোকে চরমভাবে লঙ্ঘন করেছিল। ফলে, যিশু খ্রিস্ট তাদেরকে খোলাখুলিভাবে বলেছিলেন: “দেখ, তোমাদের গৃহ তোমাদের নিমিত্ত উৎসন্ন পড়িয়া রহিল।” (মথি ২৩:৩৮) পুরো ধর্মীয় ব্যবস্থা ঈশ্বরের অনুগ্রহ হারিয়েছিল। তিনি এটাকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এবং সা.কা. ৭০ সালে রোমীয় সৈন্যদেরকে এর রাজধানী যিরূশালেম ও এর মন্দিরকে ধ্বংস করতে দিয়েছিলেন।

খ্রিস্টধর্মের প্রতিও কি একইরকম কিছু ঘটতে পারে? “জগতের শেষ” পর্যন্ত তাঁর অনুসারীদের সঙ্গে তাঁর থাকার প্রতিজ্ঞার সঙ্গে যিশু কী কী শর্ত যোগ করেছিলেন, আসুন আমরা সেগুলো বিবেচনা করি।

[২, ৩ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

যিশু খ্রিস্টের শিক্ষাগুলো পৃথিবীব্যাপী লক্ষ লক্ষ লোককে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে