একটা নাম থাকার অধিকার
একটা নাম থাকার অধিকার
প্রত্যেকেরই একটা নাম থাকার অধিকার রয়েছে। তাহিতিতে, এমনকি এক পরিত্যক্ত নবজাতক, যার বাবামার পরিচয় পাওয়া যায় না, তারও নাম দেওয়া হয়ে থাকে। রেজিস্ট্রিকরণ অফিস সেই পরিত্যক্ত শিশুটিকে একটা নাম ও পদবি দিয়ে থাকে।
কিন্তু, এমন একজন ব্যক্তি আছেন যাঁকে এই মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, যে-অধিকার প্রায় সব মানুষেরই রয়েছে। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, তিনি হলেন “স্বর্গস্থ ও পৃথিবীস্থ সমস্ত পিতৃকুল যাঁহা হইতে নাম পাইয়াছে, সেই পিতা”! (ইফিষীয় ৩:১৪, ১৫) আপনি হয়তো লক্ষ করেন যে, অনেক লোক সৃষ্টিকর্তার নাম বাইবেলে যেমন পাওয়া যায়, সেটি ব্যবহার করতে প্রকৃতপক্ষে অস্বীকার করে। এর বদলে, তারা “ঈশ্বর,” “প্রভু” বা “সনাতন ব্যক্তি” এই উপাধিগুলো ব্যবহার করা বেছে নেয়। তা হলে, তাঁর নাম কী? মোশি এইভাবে এই প্রশ্নের উত্তর দেন: “তুমি ইস্রায়েল-সন্তানদিগকে এই কথা বলিও, যিহোবা [সদাপ্রভু], তোমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর, অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্হাকের ঈশ্বর ও যাকোবের ঈশ্বর তোমাদের নিকটে আমাকে পাঠাইয়াছেন; আমার এই নাম অনন্তকালস্থায়ী, এবং এতদ্দ্বারা আমি পুরুষে পুরুষে স্মরণীয়।”—যাত্রাপুস্তক ৩:১৫.
উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে যখন লন্ডন মিশনারি সোসাইটি থেকে মিশনারিরা তাহিতিতে এসে পৌঁছেছিল, তখন সেখানকার পলিনেশীয় লোকেরা বিভিন্ন দেবতার উপাসনা করত। এদের প্রত্যেকের নিজস্ব আলাদা আলাদা নাম ছিল, প্রধান দেবতাদের নাম ছিল অর এবং তাআরোয়া। অন্যান্য দেবতা থেকে বাইবেলের ঈশ্বরকে পৃথক করতে গিয়ে, সেই মিশনারিরা তাহিতীয় ভাষায় ইয়েহোভা হিসেবে বর্ণান্তরিত ঐশিক নামকে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করতে কোনোরকম দ্বিধা করেনি।
সেই নামটি সুপরিচিত হয়ে উঠেছিল এবং দৈনন্দিন কথাবার্তায় ও চিঠিপত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়েছিল। উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে তাহিতিতে রাজত্বকারী রাজা পোমারে দ্বিতীয়, তার ব্যক্তিগত চিঠিপত্রে প্রায়ই এই নামটি ব্যবহার করতেন। এর প্রমাণ পাওয়া যায় এই চিঠিতে যেটার ছবি এখানে দেওয়া হয়েছে। ইংরেজিতে লেখা এই চিঠিটা তাহিতির জাদুঘর ও এর দ্বীপগুলোতে প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে। এটা চিঠিটা দেখায় যে, সেই সময়ের লোকেরা কোনোরকম ভুল ধারণা ছাড়াই, সহজেই ঐশিক নামটি ব্যবহার করেছিল। এ ছাড়া, ১৮৩৫ সালে সমাপ্তকৃত প্রথম তাহিতীয় সংস্করণ বাইবেলে ঈশ্বরের ব্যক্তিগত নাম হাজার হাজার বার পাওয়া যায়।
[৩২ পৃষ্ঠার চিত্র]
রাজা পোমারে দ্বিতীয়
[৩২ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]
রাজা ও চিঠি: Collection du Musée de Tahiti et de ses Îles, Punaauia, Tahiti