পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল
পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল
যদি একজন ব্যক্তি মন্দ দূতদের দ্বারা হয়রান হতে থাকেন, তা হলে এর থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তিনি কী করতে পারেন?
ঈশ্বরের বাক্য দেখায় যে, যারা মন্দ দূতদের আক্রমণের শিকার হচ্ছে তারা এই ধরনের হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে পারে। এই ধরনের মুক্তির ক্ষেত্রে প্রার্থনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক ভূমিকা পালন করে থাকে। (মার্ক ৯:২৫-২৯) কিন্তু, মন্দ দূতদের দ্বারা কষ্ট পাচ্ছেন এমন একজন ব্যক্তির হয়তো আরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার দরকার হতে পারে। প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানদের ঘটনাগুলো দেখায় যে, আর কী করার প্রয়োজন হতে পারে।
প্রাচীন ইফিষের কিছু ব্যক্তি খ্রিস্টের অনুসারী হওয়ার আগে ভৌতিক ক্রিয়াকলাপের সঙ্গে যুক্ত ছিল। কিন্তু, ঈশ্বরকে সেবা করার বিষয়ে মনস্থির করার পর ‘যাহারা যাদুক্রিয়া করিত, তাহারা আপন আপন পুস্তক আনিয়া একত্র করিয়া সকলের সাক্ষাতে পোড়াইয়া ফেলিল।’ (প্রেরিত ১৯:১৯) ভবিষ্যৎকথন সম্বন্ধীয় বইগুলো নষ্ট করার দ্বারা ইফিষের এই নতুন বিশ্বাসীরা সেইসমস্ত ব্যক্তির সামনে এক উদাহরণ স্থাপন করে, যারা আজকে মন্দ দূতদের আক্রমণ থেকে মুক্ত হতে চায়। এই ব্যক্তিদের প্রেতচর্চার সঙ্গে জড়িত সমস্তকিছু থেকে মুক্ত হওয়া আবশ্যক। এর অন্তর্ভুক্ত হল বই, পত্রপত্রিকা, চলচ্চিত্র, ইলেকট্রনিক উৎস থেকে পাওয়া তথ্য, প্রেতচর্চার সঙ্গে জড়িত রেকর্ডিং এবং সেইসঙ্গে তাবিজ বা “রক্ষা” পাওয়ার জন্য পরা হয় এমন বস্তু অথবা প্রেতচর্চার সঙ্গে জড়িত যেকোনো জিনিস।—দ্বিতীয় বিবরণ ৭:২৫, ২৬; ১ করিন্থীয় ১০:২১.
ইফিষের সেই খ্রিস্টানরা জাদু সংক্রান্ত বইগুলো পুড়িয়ে ফেলার কয়েক বছর পর, প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “দুষ্টতার আত্মাগণের সহিত আমাদের মল্লযুদ্ধ হইতেছে।” (ইফিষীয় ৬:১২) পৌল খ্রিস্টানদের জোরালোভাবে পরামর্শ দিয়েছিলেন: “ঈশ্বরের সমগ্র যুদ্ধসজ্জা পরিধান কর, যেন দিয়াবলের নানাবিধ চাতুরীর সম্মুখে দাঁড়াইতে পার।” (ইফিষীয় ৬:১১) সেই পরামর্শ আজও প্রযোজ্য। দুষ্ট আত্মাদের নাগালের বাইরে থাকতে হলে, খ্রিস্টানদের অবশ্যই তাদের নিজেদের আধ্যাত্মিকতাকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে। “এই সকল ছাড়া” পৌল জোর দিয়ে বলেছিলেন, “বিশ্বাসের ঢালও গ্রহণ কর, যাহার দ্বারা তোমরা সেই পাপাত্মার সমস্ত অগ্নিবাণ নির্ব্বাণ করিতে পারিবে।” (ইফিষীয় ৬:১৬) একজন ব্যক্তি বাইবেল অধ্যয়ন করার দ্বারা তার বিশ্বাসকে শক্তিশালী করে। (রোমীয় ১০:১৭; কলসীয় ২:৬, ৭) তাই, নিয়মিত বাইবেল অধ্যয়ন আমাদের বিশ্বাস বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, যা দুষ্ট আত্মাদের প্রভাবের বিরুদ্ধে এক সুরক্ষা হিসেবে কাজ করে।—গীতসংহিতা ৯১:৪; ১ যোহন ৫:৫.
ইফিষের সেই খ্রিস্টানদের আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। পৌল তাদের বলেছিলেন: “সর্ব্ববিধ প্রার্থনা ও বিনতি সহকারে সর্ব্বসময়ে আত্মাতে প্রার্থনা কর।” (ইফিষীয় ৬:১৮) হ্যাঁ, সুরক্ষার জন্য যিহোবার কাছে ঐকান্তিকভাবে প্রার্থনা করা বাস্তবিকই সেইসব ব্যক্তির জন্য এক অপরিহার্য বিষয়, যারা আজকে মন্দ দূতদের আক্রমণ থেকে মুক্তি পেতে চায়। (হিতোপদেশ ১৮:১০; মথি ৬:১৩; ১ যোহন ৫:১৮, ১৯) উপযুক্তভাবেই বাইবেল বলে: “অতএব তোমরা ঈশ্বরের বশীভূত হও; কিন্তু দিয়াবলের প্রতিরোধ কর, তাহাতে সে তোমাদের হইতে পলায়ন করিবে।”—যাকোব ৪:৭.
মন্দ দূতদের আক্রমণের শিকার এমন একজন ব্যক্তির যদিও মুক্তি পাওয়ার জন্য ঐকান্তিকভাবে প্রার্থনা করা উচিত কিন্তু সেইসঙ্গে অন্য সত্য খ্রিস্টানরাও হয়তো সেই ব্যক্তির জন্য প্রার্থনা করতে পারে, যিনি যিহোবাকে সেবা করার জন্য গভীর আকাঙ্ক্ষী এবং যিনি দুষ্ট আত্মাদের প্রতিরোধ করার জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছেন। তারা ঈশ্বরের কাছে অনুরোধ করতে পারে, যাতে মন্দ দূতদের দ্বারা আক্রান্ত সেই ব্যক্তি মন্দ আত্মাদের আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য আধ্যাত্মিক শক্তি লাভ করতে পারেন। যেহেতু ঈশ্বরের বাক্য বলে যে, “ধার্ম্মিকের বিনতি কার্য্যসাধনে মহাশক্তিযুক্ত,” তাই ঈশ্বরের দাসদের করা প্রার্থনা অবশ্যই সেই নিপীড়িত ব্যক্তিদের উপকৃত করবে, যারা সম্পূর্ণরূপে “দিয়াবলের প্রতিরোধ” করতে চেষ্টা করছে।—যাকোব ৫:১৬.
[৩১ পৃষ্ঠার চিত্র]
ইফিষের বিশ্বাসীরা তাদের জাদু সংক্রান্ত বইগুলো পুড়িয়ে ফেলেছিল