সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পানামায় প্রতিবন্ধকতাগুলোকে অতিক্রম করা

পানামায় প্রতিবন্ধকতাগুলোকে অতিক্রম করা

পানামায় প্রতিবন্ধকতাগুলোকে অতিক্রম করা

 “পানামা, বিশ্বের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করার এক সেতু।” এই স্লোগানটা পঞ্চাশ বছর আগে, মধ্য আমেরিকায় এক জনপ্রিয় রেডিও অনুষ্ঠানে উল্লেখ করা হয়েছিল। আজকে, এই স্লোগানটা সেই দেশ সম্বন্ধে অনেকের যে-অনুভূতি রয়েছে, তা প্রকাশ করে।

পানামা, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী এক ধরনের সেতুর মতোই কাজ করে। অধিকন্তু, সত্যিকারের আমেরিকা সেতু, বিখ্যাত পানামা খালের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। প্রকৌশলবিদ্যার এক উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব এই খালটা দেশের এপার থেকে ওপার পর্যন্ত বিস্তৃত, যা আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরকে সংযুক্ত করেছে। এটা বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত সমুদ্রগামী জাহাজগুলোকে মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে এপার থেকে ওপারে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়, যেটা না থাকলে এপার থেকে ওপারে যাওয়ার জন্য সমুদ্রযাত্রা করতে কয়েক দিন বা সপ্তাহ লেগে যেত। হ্যাঁ, পানামা বিশ্বের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করার এক সেতু হিসেবে কাজ করে।

এক সংযোগ এবং এক মিলনমেলা

এ ছাড়া, পানামা বিভিন্ন জাতি ও সাম্প্রদায়িক পটভূমির লোকেদের এক মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। এই লোকেরা স্থানীয় আরও অন্যান্য দলের সঙ্গে মিশে এক বৈচিত্র্যপূর্ণ জনসংখ্যা গড়ে তুলেছে, যারা এই সুন্দর দেশ জুড়ে ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে। কিন্তু, বিদ্যমান সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় এবং ভাষাগত ভেদাভেদকে অতিক্রম করা এবং ঈশ্বরের বাক্যে প্রাপ্ত অমূল্য সত্যগুলোর ওপর ভিত্তি করে লোকেদের মনোভাব ও উদ্দেশ্যে কি একতা আনা সম্ভব?

হ্যাঁ, সম্ভব। ইফিষীয় ২:১৭, ১৮ পদে লিপিবদ্ধ প্রেরিত পৌলের কথাগুলো ইঙ্গিত করে যে, প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানরা—যিহুদি ও পরজাতীয়রা উভয়েই—খ্রিস্টের বলিদানের ঐক্যসাধনকারী প্রভাবের দ্বারা ঠিক একইরকম প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করেছিল। পৌল লিখেছিলেন: “তিনি [যিশু] আসিয়া ‘দূরবর্ত্তী’ যে তোমরা, তোমাদের কাছে ‘সন্ধির, ও নিকটবর্ত্তীদের কাছেও সন্ধির [“শান্তির,” বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন]’ সুসমাচার জানাইয়াছেন। কেননা তাঁহারই দ্বারা আমরা উভয় পক্ষের লোক এক আত্মায় পিতার নিকটে উপস্থিত হইবার ক্ষমতা পাইয়াছি।”

একইভাবে আজকে, যিহোবার সাক্ষিরা পানামায় সেই লোকেদের কাছে “শান্তির সুসমাচার” ঘোষণা করছে, যারা মাঝে মাঝে সত্যি সত্যি অনেক দূর থেকে এবং বিভিন্ন ধর্মীয় পটভূমি থেকে এসেছে। যারা যিহোবার কাছে ‘উপস্থিত হয়’ তাদের মধ্যে এক মনোরম একতা গড়ে ওঠে। ফলস্বরূপ, পানামায় ছয়টা ভাষার—স্প্যানিশ, ক্যানটোনিজ, পানামীয় সাংকেতিক ভাষা, ইংরেজি এবং দুটো স্থানীয় ভাষা, মূলত কুনা ও নগবেরে (গুয়ামি)—মণ্ডলী গঠিত হয়েছে। এই ভাষার দলগুলোর সদস্যরা কীভাবে যিহোবার উপাসনায় ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, তা জানতে পারা খুবই আগ্রহজনক।

কোমারকা-র প্রতিবন্ধকতাগুলো অতিক্রম করা

পানামার আটটা স্থানীয় ভাষার দলের মধ্যে সবচেয়ে বড় দল হল, নগবে দল। প্রায় ১,৭০,০০০ জন অধিবাসী নিয়ে গঠিত এই দলের মধ্যে অধিকাংশই এক বিস্তৃত এলাকায় বাস করে, যে-এলাকাটাকে সম্প্রতি এক কোমারকা অর্থাৎ সংরক্ষিত এলাকা (রিজার্ভেশন) হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে। এই এলাকার এক বিরাট অংশ জুড়ে অরণ্য ও এবড়োখেবড়ো পাহাড়পর্বত রয়েছে, যেখানে মূলত হেঁটেই যাওয়া যায় আর এর উপকূলবর্তী অপূর্ব সুন্দর অঞ্চলগুলোতে সমুদ্র দিয়ে যেতে হয়। যে-নদীগুলো পরিবহণের উপযোগী পথ হিসেবে কাজ করে, প্রায়ই সেগুলোর কাছাকাছি জনসমাজ গড়ে উঠেছে আর সেইসঙ্গে উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতেও জনসমাজ গড়ে উঠেছে। কোমারকা-র অধিকাংশ অধিবাসী পাহাড়ের ওপর কফি চাষ করে, মাছ ধরে বা কৃষিকাজ করে সাধাসিধে জীবনযাপন করে থাকে। অনেকেই খ্রিস্টীয়জগতের গির্জাগুলোর সদস্য। কিন্তু, এদের মধ্যে কিছুজন মামা টাটা নামে এক স্থানীয় ধর্মের অনুসারী। আবার কেউ কেউ অসুস্থ হলে বা মন্দ আত্মার দ্বারা হয়রান হচ্ছে বলে মনে করলে, স্থানীয় সুকিয়াদের (ওঝাদের) কাছে যায়। যদিও অনেকে স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলে কিন্তু যে-ভাষাটা তারা সবচেয়ে ভাল বোঝে, সেটা হচ্ছে নগবেরে।

দাঁড় টেনে হৃদয়ে পৌঁছানো

যিহোবার সাক্ষিরা উপলব্ধি করে যে, লোকেদের এমন উপায়ে সত্য শিখতে সাহায্য করা গুরুত্বপূর্ণ, যা শুধুমাত্র তাদের মনেই পৌঁছাবে না কিন্তু একই সময়ে তাদের হৃদয়েও পৌঁছাবে। এটা বাইবেলের নীতিগুলোর সঙ্গে সংগতি রেখে তাদের জীবনে আবশ্যকীয় পরিবর্তনগুলো করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রেরণা জোগাতে পারে। তাই, সংরক্ষিত এলাকার আটটা বিভাগে নিযুক্ত বিশেষ অগ্রগামী পরিচারকরা, স্থানীয় যোগ্য সাক্ষিদের সাহায্যে নগবেরে ভাষা শিখেছে।

সেই এলাকায় যে-১৪টা মণ্ডলী গড়ে উঠেছে, সেগুলোতে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, কয়েক বছর আগে, ডিমাস ও হিজিলা নামে বিশেষ অগ্রগামী এক দম্পতিকে টোবোবির উপকূলবর্তী এলাকায় প্রায় ৪০ জন প্রকাশকের একটা মণ্ডলীতে কার্যভার দেওয়া হয়েছিল। আটলান্টিক উপকূলের সহজ-সরল লোকেদের কাছে প্রচার করার জন্য ডিঙিতে করে বার বার যাত্রা করার সঙ্গে অভ্যস্থ হওয়া তাদের জন্য সহজ ছিল না। ডিমাস ও হিজিলা দেখেছিল যে, শান্ত সাগর মুহূর্তের মধ্যেই উত্তাল হয়ে যেতে পারে। দাঁড় টেনে টেনে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যেতে তাদের হাত ও পিঠে প্রায়ই ব্যথা হতো। স্থানীয় ভাষা শেখা ছিল আরেক প্রতিদ্বন্দ্বিতা। কিন্তু, তাদের ত্যাগস্বীকার ও অধ্যবসায়ের জন্য ২০০১ সালে তারা পুরস্কৃত হয়েছিল, যখন প্রায় ৫৫২ জন লোক খ্রিস্টের মৃত্যুর স্মরণার্থ সভায় যোগ দিয়েছিল।

টোবোবি থেকে উপসাগরের অন্য পারে রয়েছে, পুনটা এসকোনডিডা গ্রাম। কিছু সময় ধরে, প্রকাশকদের এক ছোট দল আবহাওয়া ভাল থাকলে উপসাগরের অন্য পারে টোবোবিতে সভাগুলোতে উপস্থিত থাকার জন্য, নিয়মিত নৌকার দাঁড় টেনে সেখানে যেত এবং রিপোর্ট ইঙ্গিত করেছিল যে, এই এলাকায় একটা নতুন মণ্ডলী গড়ে তোলার বেশ ভাল সম্ভাবনা রয়েছে। সেই বিষয়টা মাথায় রেখে, ডিমাস ও হিজিলাকে পুনটা এসকোনডিডায় চলে যেতে বলা হয়েছিল। দুবছরেরও কম সময়ের মধ্যে, পুনটা এসকোনডিডার দলটি ২৮ জন প্রকাশকের এক সক্রিয় মণ্ডলী হয়ে উঠেছিল, যেখানে সাপ্তাহিক জনসাধারণের উদ্দেশে বক্তৃতায় গড়ে ১১৪ জন করে সভাতে উপস্থিত থাকত। ২০০৪ সালে, নতুন মণ্ডলী খুবই আনন্দিত হয়েছিল, যখন খ্রিস্টের মৃত্যুর স্মরণার্থ সভায় মোট ৪৫৮ জন উপস্থিত হয়েছিল।

নিরক্ষরতার প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে অতিক্রম করা

নিরক্ষরতাকে অতিক্রম করা, অনেক সৎহৃদয়ের ব্যক্তিকে যিহোবার সঙ্গে এক নিকট সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। কোমারকা-র পার্বত্যাঞ্চল থেকে ফারমিনা নামে একজন মহিলার বেলায় এমনটাই হয়েছিল। তিনি যেখানে থাকতেন সেই বিচ্ছিন্ন এলাকায় কার্যরত সাক্ষি মিশনারিরা লক্ষ করেছিল যে, তিনি রাজ্যের বার্তার প্রতি খুবই মনোযোগী। তাকে যখন বাইবেল অধ্যয়নের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তিনি উত্তরে বলেছিলেন যে তিনি আরও শিখতে চান। কিন্তু, একটা সমস্যা ছিল। তিনি স্প্যানিশ ও নগবেরে দুটো ভাষায়ই কথা বলতে পারতেন কিন্তু কোনোটাতেই লিখতে বা পড়তে পারতেন না। একজন মিশনারি তাকে নিজে পড়ুন ও লিখুন (ইংরেজি) ব্রোশারটি ব্যবহার করে লেখাপড়া শেখানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। *

ফারমিনা একজন চমৎকার ছাত্রী ছিলেন, আগ্রহ নিয়ে তার পড়াগুলো, তার সমস্ত হোমওয়ার্ক করে রাখতেন এবং বানানগুলো খুব ভালভাবে মুখস্থ করতেন। তিনি এক বছরের মধ্যে, আপনি ঈশ্বরের বন্ধু হতে পারেন! ব্রোশারটি দিয়ে অধ্যয়ন করার মতো উন্নতি করেছিলেন।* যখন সভাগুলোর ব্যবস্থা করা হয়, তখন ফারমিনা সেগুলোতেও যোগ দিতে শুরু করেন। কিন্তু, তিনি খুব গরিব পরিবারের বলে বাচ্চাদের নিয়ে সভাগুলোতে যাওয়ার খরচ জোগানো তার পক্ষে খুবই কঠিন ছিল। ফারমিনার পরিস্থিতি সম্বন্ধে অবগত হওয়ায় অগ্রগামীদের মধ্যে একজন তাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, তিনি যেন নগবে মহিলাদের জাতীয় পোশাক তৈরি করে তা বিক্রি করেন। ফারমিনা তা-ই করেছিলেন এবং অন্যান্য বস্তুগত চাহিদা থাকা সত্ত্বেও, তিনি এভাবে প্রাপ্ত পয়সা শুধুমাত্র খ্রিস্টীয় সভাগুলোতে যোগ দেওয়ার জন্য ব্যবহার করতেন। পরিবারসহ তিনি এখন অন্য জায়গায় চলে গিয়েছেন আর সেখানে তিনি আধ্যাত্মিকভাবে উন্নতি করে চলেছেন। তারা শুধু নিরক্ষরতার প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে অতিক্রম করেছে বলেই খুশি নয় কিন্তু এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হল, তারা যিহোবাকে জানতে পেরেছে।

বধিরতার প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করা

পানামায়, বধির সদস্য রয়েছে এমন অনেক পরিবার বিব্রত বোধ করে থাকে। মাঝে মাঝে, এইরকম লোকেরা যেকোনো ধরনের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকে। অনেক বধির লোক নিজেকে একাকী ও অবাঞ্ছিত মনে করে কারণ তাদের সঙ্গে ভাববিনিময় করা খুবই কঠিন।

তাই এটা খুবই স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল যে, বধির লোকেদের কাছে সুসমাচার পৌঁছানোর জন্য কিছু করা প্রয়োজন। একজন ভ্রমণ অধ্যক্ষের উৎসাহে, উৎসুক অগ্রগামীদের একটা দল ও অন্যান্যরা পানামীয় সাংকেতিক ভাষা শেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তাদের প্রচেষ্টা পুরস্কৃত হয়েছিল।

২০০১ সালের শেষের দিকে, পানামা শহরে সাংকেতিক ভাষার একটা দল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সভায় উপস্থিতির সংখ্যা ছিল প্রায় ২০ জন। ভাইবোনেরা সেই ভাষায় আরও বেশি দক্ষ হয়ে ওঠার পর, তারা এমন অনেকের কাছে পৌঁছাতে পেরেছে, যারা প্রথম বারের মতো তাদের ভাষায় বাইবেলের সত্য “শুনেছিল।” বধির সন্তান রয়েছে এমন অনেক সাক্ষিও সভাগুলোতে উপস্থিত হতে শুরু করেছিল এবং লক্ষ করেছিল যে, তাদের সন্তানরা বাইবেলের শিক্ষাগুলোকে সহজেই বুঝতে পারছে এবং সত্যের প্রতি আরও বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। কিছু ক্ষেত্রে, বাবামারাও সাংকেতিক ভাষা শিখেছিল এবং এর মাধ্যমে তাদের সন্তানদের সঙ্গে আরও ভালভাবে ভাববিনিময় করতে পেরেছিল। বাবামারা তাদের সন্তানদের আধ্যাত্মিকভাবে সাহায্য করতে পেরেছিল এবং পরিবার শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। এলসা ও তার মেয়ে ইরাইদার অভিজ্ঞতা থেকে এই বিষয়টা স্পষ্ট হয়।

সাংকেতিক ভাষার দলে কাজ করে এমন একজন সাক্ষি ইরাইদার সম্বন্ধে জানতে পেরে তার কাছে যান এবং তাকে পৃথিবীতে অনন্তজীবন উপভোগ করুন! ব্রোশারটি অর্পণ করেন।* ইরাইদা ছবিগুলো থেকে নতুন জগৎ সম্বন্ধে যা শিখেছিল, তার জন্য খুবই আনন্দিত হয়েছিল। ব্রোশারটি দিয়ে একটা বাইবেল অধ্যয়ন শুরু হয়েছিল। সেই প্রকাশনাটি দিয়ে অধ্যয়ন শেষ হওয়ার পর, তারা ঈশ্বর আমাদের কাছ থেকে কী চান? ব্রোশারটি ব্যবহার করে। * এই সময়, ইরাইদা তার মাকে অধ্যয়নের জন্য তৈরি হতে ও তার কাছে তথ্যগুলো ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করার জন্য বলতে থাকে।

এলসার দুটো সমস্যা ছিল: তিনি সাক্ষি ছিলেন না, তাই বাইবেলের সত্য জানতেন না আর তিনি সাংকেতিক ভাষাও বুঝতেন না। তাকে বলা হয়েছিল যে, মেয়ের সঙ্গে তার সংকেতের মাধ্যমে কথা বলা উচিত নয় বরং তার মেয়েকেই কথা বলতে শিখতে হবে। তাই, বলতে গেলে মা-মেয়ের মধ্যে ভাববিনিময় হতোই না। সাহায্যের জন্য ইরাইদার কাকুতিমিনতির দ্বারা পরিচালিত হয়ে এলসা মণ্ডলীর একজন সাক্ষি বোনকে এলসার সঙ্গে অধ্যয়ন করতে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন: “আমি আমার মেয়ের জন্য আপনাকে অনুরোধ করছি কারণ এর আগে আমি ইরাইদাকে কখনো কোনো বিষয় নিয়ে এতটা উৎফুল্ল হতে দেখিনি।” এলসা তার মেয়ের অধ্যয়নে যোগ দিয়েছিলেন এবং সাংকেতিক ভাষা শিখেছিলেন। এলসা তার মেয়েকে যত অধিক সময় দিতে থাকেন, বাড়িতে তাদের মধ্যে ভাববিনিময়ে ততই উন্নতি হয়। ইরাইদা তার বন্ধুবান্ধব বাছাই করার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হয়ে ওঠে এবং সে মণ্ডলীর সঙ্গে মেলামেশা করে। এখন মা ও মেয়ে দুজনেই নিয়মিত খ্রিস্টীয় সভাগুলোতে আসে। সম্প্রতি, এলসা বাপ্তিস্ম নিয়েছেন এবং ইরাইদা সেই লক্ষ্যের দিকে উন্নতি করে যাচ্ছে। এলসা বলেন যে, এই প্রথম তিনি তার মেয়েকে এত ভাল করে জানতে পারছেন আর এখন তারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারে, যেগুলো তাদের দুজনের কাছেই প্রিয়।

সেই সাংকেতিক ভাষার দল, যা ২০০৩ সালে এপ্রিলে একটা মণ্ডলী হয়ে ওঠে, সেখানে এখন প্রায় ৫০ জন রাজ্য প্রকাশক রয়েছে এবং সভাগুলোতে উপস্থিতির সংখ্যা এর চেয়েও বেশি। এদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি ব্যক্তি বধির। পানামা শহরের মেট্রোপলিটান এলাকার বাইরে তিনটে শহরে সাংকেতিক ভাষার দলগুলো গঠিত হচ্ছে। যদিও এই ক্ষেত্রে আরও অনেক কিছু করার আছে কিন্তু কোনো সন্দেহ নেই যে, সৎহৃদয়ের বধির লোকেদের ও তাদের প্রেমময় সৃষ্টিকর্তা যিহোবা ঈশ্বরের মধ্যে ‘নীরবতার’ প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করার জন্য, এক বিরাট পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এই ধরনের ফলাফল পানামার সর্বত্রই ঘটছে। যদিও লোকেরা নানা সংস্কৃতি, ভাষা ও পটভূমি থেকে আসে কিন্তু অনেকেই একমাত্র সত্য ঈশ্বরের উপাসনায় ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। যিহোবার বাক্যের সত্য, এই দেশে ভাববিনিময়ের প্রতিবন্ধকতাগুলোকে সফলভাবে অতিক্রম করেছে, যে-দেশকে অনেকে “বিশ্বের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করার এক সেতু” হিসেবে বিবেচনা করে থাকে।—ইফিষীয় ৪:৪.

[পাদটীকাগুলো]

^ যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত।

^ যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত।

[৮ পৃষ্ঠার মানচিত্রগুলো]

(পুরোপুরি ফরম্যাট করা টেক্সটের জন্য এই প্রকাশনা দেখুন)

ক্যারিবিয়ান সাগর

পানামা

টোবোবি

প্রশান্ত মহাসাগর

পানামা খাল

[৮ পৃষ্ঠার চিত্র]

কুনা মহিলারা তাদের ঐতিহ্যগত কাপড় ধরে রয়েছে

[৯ পৃষ্ঠার চিত্র]

একজন মিশনারি এক নগবে মহিলার কাছে প্রচার করছেন

[১০ পৃষ্ঠার চিত্র]

নগবে থেকে আসা সাক্ষিরা একদিনের বিশেষ সম্মেলন কার্যক্রমে যোগ দেওয়ার জন্য একটা ডিঙিতে চড়ছে

[১১ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

পানামায় বাইবেলের সত্য সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত প্রতিবন্ধকতাগুলোকে অতিক্রম করে

[১২ পৃষ্ঠার চিত্র]

সাংকেতিক ভাষায় “প্রহরীদুর্গ” অধ্যয়ন

[১২ পৃষ্ঠার চিত্র]

এলসা ও তার মেয়ে ইরাইদা অর্থপূর্ণ ভাববিনিময় উপভোগ করে থাকে

[৮ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

জাহাজ এবং কুনা মহিলারা: © William Floyd Holdman/Index Stock Imagery; গ্রাম: © Timothy O’Keefe/Index Stock Imagery