সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

হ্যাঁ, আপনি সুখ খুঁজে পেতে পারেন

হ্যাঁ, আপনি সুখ খুঁজে পেতে পারেন

হ্যাঁ, আপনি সুখ খুঁজে পেতে পারেন

 সুখ—অকৃত্রিম, স্থায়ী সুখ—পাওয়া মাঝে মাঝে খুবই কঠিন। এর প্রধান কারণ হচ্ছে, অনেক লোক সুখ খোঁজার অবিরত চেষ্টা করার সময় ভুল উৎসগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকে। এই ক্ষেত্রে যদি তাদের কোনো নির্ভরযোগ্য ও যোগ্য বন্ধু থাকত, যিনি তাদেরকে সঠিক উৎসের দিকে পরিচালিত করতে পারেন!

বাইবেল হচ্ছে সেই প্রয়োজনীয় নির্দেশনার এক উৎস! শুধুমাত্র এর একটি বইয়ের—গীতসংহিতার—কথা বিবেচনা করুন। এই বইটি হচ্ছে যিহোবা ঈশ্বরের উদ্দেশে গাওয়া ১৫০টি পবিত্র গীতের সমষ্টি, যেগুলোর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই প্রাচীন ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদ রচনা করেছিলেন। কিন্তু লেখকদের পরিচয় জানার চেয়ে এটা জানা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ যে, এই বইটি মানবজাতির সর্বমহান বন্ধু, যিহোবার অনুপ্রেরণায় লেখা হয়েছিল। তাই, আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে, এই বইয়ে আমাদের জন্য উপকারজনক ঐশিক নির্দেশনা রয়েছে আর এটি সুখের পথের দিকে পরিচালিত করে।

গীতসংহিতার লেখকরা নিশ্চিত ছিল যে, একজন ব্যক্তির ঈশ্বরের সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্ক থাকার ফলে সুখ পাওয়া যায়। “ধন্য [“সুখী,” NW] সেই জন, যে সদাপ্রভুকে ভয় করে,” গীতরচক লিখেছিলেন। * (গীতসংহিতা ১১২:১) কোনো মানব সম্পর্ক, কোনো বস্তুগত সম্পদ এবং কোনো ব্যক্তিগত সম্পাদনই সেই সুখ নিয়ে আসতে পারে না, যা “সদাপ্রভু যাহার ঈশ্বর,” ‘সেই জাতির’ অংশ হয়ে পাওয়া যায়। (গীতসংহিতা ১৪৪:১৫) আধুনিক সময়ে ঈশ্বরের অসংখ্য দাসের জীবনধারা এই কথার সত্যতাকে প্রমাণ করে।

জুজানে হচ্ছেন এক উদাহরণ, যার বয়স ৪০ এর কোঠার প্রথম দিকে। * তিনি বলেছিলেন: “আজকে অনেকে একই লক্ষ্য অর্জন করতে বা যাদের একই আগ্রহ রয়েছে তাদের সঙ্গে মেলামেশা করতে নির্দিষ্ট দলগুলোর সঙ্গে যোগ দেয়। কিন্তু, খুব কম ক্ষেত্রেই তারা দলের প্রত্যেককে একজন বন্ধু হিসেবে দেখে থাকে। যিহোবার লোকেদের ক্ষেত্রে, তা ভিন্ন। যিহোবার প্রতি আমাদের ভালবাসা আমাদেরকে একে অন্যের প্রতি স্নেহশীল করে তোলে। আমরা যেকোনো সময়ে যেখানেই থাকি না কেন, ঈশ্বরের লোকেদের মাঝে থাকলে স্বচ্ছন্দবোধ করি। এই একতা আমাদের জীবনকে প্রচুররূপে সমৃদ্ধ করে। অন্য আর কেই বা দাবি করতে পারে যে, তাদের একেবারে ভিন্ন সংস্কৃতি ও পটভূমির লোকেদের মধ্যে এবং বিভিন্ন জাতির লোকের মধ্যে বন্ধু রয়েছে? আমি অন্তর থেকে বলতে পারি যে, যিহোবার লোকেদের অংশ হওয়ার ফলেই সুখ পাওয়া যায়।”

মারি, যিনি স্কটল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেছেন, তিনিও শিখেছেন যে একজনের সুখ খুঁজে পাওয়ার জন্য যিহোবার সঙ্গে এক উত্তম সম্পর্ক থাকা অপরিহার্য। “বাইবেলের সত্য শেখার আগে,” তিনি বলেছিলেন, “আমি হরর সিনেমাগুলো দেখতে পছন্দ করতাম। কিন্তু, রাতের বেলায় আমি ক্রুশ হাতে না নিয়ে ঘুমাতে পারতাম না, কারণ আমি ভাবতাম যে, ক্রুশটা ধরা থাকলে সিনেমাতে দেখানো ভূতপ্রেত ও রক্তচোষারা পালাবে। কিন্তু, সত্য শিখে এই ধরনের সিনেমা দেখা বন্ধ করার পরই, যিহোবার সঙ্গে আমার সম্পর্কের কারণে আমি নির্ভয়ে বিছানায় যেতে পেরেছি, ভূতপ্রেত বা কাল্পনিক রক্তচোষাদের চেয়ে অতি শক্তিমান একজন ঈশ্বরকে সেবা করতে পেরে সুখী হয়েছি।”

যিহোবার ওপর নির্ভর করা সুখের দিকে পরিচালিত করে

সৃষ্টিকর্তার সর্বময় ক্ষমতা ও তাঁর অসীম প্রজ্ঞা সম্বন্ধে সন্দেহ করার কোনো কারণই আমাদের নেই। দায়ূদ যিহোবার ওপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখতে পারেন এবং তাঁকে তার আশ্রয় করতে পারেন, এটা জেনে লিখেছিলেন: “ধন্য সেই জন, যে সদাপভুকে আপন বিশ্বাসভূমি করে” বা তাঁর ওপর নির্ভর করে।—গীতসংহিতা ৪০:৪.

মারিয়া বলেছিলেন: “স্পেন এবং অন্যান্য জায়গায় আমার এই অভিজ্ঞতা হয়েছে যে, যখন আমরা যিহোবার পথ অনুসরণ করি, তখন যদিও আমাদের অনুভূতি ও আবেগ আমাদেরকে অন্য কিছু করার দিকে পরিচালিত করতে পারে কিন্তু আমরা যথাসম্ভব সর্বোত্তম ফল পাই। এর ফলে আমরা সুখী হই কারণ যিহোবার পথই হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ পথ।”

আন্দ্রেয়াস নামে একজন খ্রিস্টান প্রাচীন যিনি ইউরোপের বেশ কয়েকটা দেশে সেবা করেছিলেন, তিনিও তার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানেন যে, আমরা যিহোবার ওপর নির্ভর করতে পারি। তিনি বলেছিলেন: “আমার দাদা, যিনি আমার ধর্মে বিশ্বাসী নন, তিনি ছেলেবেলায় আমার ওপর জোরালো প্রভাব ফেলেছিলেন, আমাকে আর্থিক দিক দিয়ে সমৃদ্ধশালী এক কেরিয়ার গড়ে তুলতে উৎসাহিত করেছিলেন। আমি যখন তথাকথিত বেসরকারি পেনশন পরিকল্পনার দ্বারা প্রস্তাবকৃত নিরাপত্তার ওপর নির্ভর না করে পূর্ণসময়ের পরিচর্যা গ্রহণ করেছিলাম, তখন তিনি খুবই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আমার পূর্ণসময়ের পরিচর্যায় আমি কখনো অভাবে পড়িনি আর আমি সেই আশীর্বাদগুলো উপভোগ করেছি, যেগুলো পাওয়ার জন্য অনেকে স্বপ্ন দেখে।”

১৯৯৩ সালে, ফেলিক্সকে জার্মানির সেল্টারে যিহোবার সাক্ষিদের শাখা অফিসের বিল্ডিংকে সম্প্রসারিত করার কাজে সাহায্য করতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেই কাজটা শেষ হওয়ার পর, তাকে সেখানকার বেথেল পরিবারের একজন স্থায়ী সদস্য হতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তিনি কেমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন? “আমি কিছু দ্বিধাদ্বন্দ্ব করে সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছিলাম। কিন্তু এখন আমি প্রায় দশ বছর ধরে সেখানে রয়েছি এবং আমি দৃঢ়নিশ্চিত যে, যিহোবা আমার প্রার্থনার উত্তর দিয়েছেন। তিনি জানেন যে, আমার জন্য কোনটা সবচেয়ে ভাল। তাঁর ওপর পূর্ণ আস্থা রেখে এবং তাঁকে পরিচালনা দিতে দিয়ে আমাকে এই বিষয়টা দেখানোর জন্য আমি তাঁকে সুযোগ করে দিই যে, তিনি আমাকে দিয়ে কী করাতে চান।”

পূর্বে উল্লেখিত জুজান একজন অগ্রগামী অর্থাৎ পূর্ণসময়ের একজন পরিচারক হিসেবে সেবা করতে চেয়েছিলেন কিন্তু একটা খণ্ডকালীন কাজ খুঁজে পেতে তার সমস্যা হয়েছিল। কোনো একটা ব্যবস্থা হবে, এমন চিন্তা করে এক বছর অপেক্ষা করার পর তিনি যিহোবার ওপর নির্ভর করে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন: “আমি নিয়মিত অগ্রগামীর আবেদনপত্র পূরণ করেছিলাম। প্রায় এক মাসের আমার দৈনন্দিন খরচগুলোর জন্য আমি টাকা জমিয়েছিলাম। আর সেটা কী এক রোমাঞ্চকর মাসই না হয়ে উঠেছিল! আমার পরিচর্যা প্রচুর আনন্দের এক উৎস হয়েছিল, তবে চাকরির জন্য একটার পর একটা আবেদন নাকচ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, যিহোবা যেমনটা প্রতিজ্ঞা করেছেন, তিনি আমাকে পরিত্যাগ করেননি। মাসের শেষ দিনে আমি একটা চাকরি পেয়েছিলাম। তখন আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে আমি সত্যি সত্যি যিহোবার ওপর নির্ভর করতে পারি! পূর্ণসময়ের পরিচর্যায় এই প্রথম অভিজ্ঞতাটি এক ফলপ্রসূ ও সুখী জীবন পাওয়ার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে।”

ঐশিক পরামর্শ গ্রহণ করা আরও সুখ প্রদান করে

রাজা দায়ূদ কিছু গুরুতর ভুল করেছিলেন। মাঝে মাঝে তার বিজ্ঞ পরামর্শের প্রয়োজন হয়েছিল। আমরা কি দায়ূদের মতো পরামর্শ ও নির্দেশনা গ্রহণ করতে ইচ্ছুক?

ফ্রান্সের এইদা একবার বুঝতে পেরেছিলেন যে, তিনি একটা গুরুতর ভুল করেছেন। তিনি বর্ণনা করেছিলেন: “আমার প্রধান চিন্তার বিষয় ছিল, যিহোবার সঙ্গে আমার সম্পর্ককে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা। আর কোনোকিছুই আমাকে চিন্তিত করেনি।” তিনি সাহায্যের জন্য খ্রিস্টান প্রাচীনদের কাছে গিয়েছিলেন। ১৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে পূর্ণসময়ের পরিচর্যা করার পর, তিনি এখন বলেন: “এটা জানা কতই না পরিতৃপ্তিদায়ক যে, যিহোবা আমার ভুলকে ক্ষমা করে দিয়েছেন!”

ঐশিক পরামর্শের প্রতি সাড়া দেওয়া আমাদের ভুল করা থেকে বিরত করতে পারে। ইয়ুডিট ব্যাখ্যা করেছিলেন: “২০ বছর বয়সে আমি একজন জার্মান ব্যবসায়ী সহকর্মীর প্রেমে পড়ি, যিনি আমাকে প্রভাবিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন। তিনি সকলের সম্মানীয় ছিলেন ও তার এক সফল কেরিয়ার ছিল—এবং তিনি বিবাহিত ছিলেন! আমি উপলব্ধি করেছিলাম যে, আমাকে যিহোবার আইনগুলোর বাধ্য হওয়া অথবা তাঁকে পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করা, এই দুটোর মধ্যে বেছে নিতে হবে। আমি আমার বাবামাকে বিষয়টা জানিয়েছিলাম। বাবা কথা না ঘুরিয়ে সরাসরি আমাকে মনে করিয়ে দিয়েছিলেন যে, যিহোবা আমার কাছ থেকে কী আশা করেন। তিনি খোলাখুলিভাবে আমার সঙ্গে কথা বলেছিলেন—আর আমার ঠিক সেটাই প্রয়োজন ছিল! তা সত্ত্বেও, আমি মনে মনে অজুহাত দেখানোর চেষ্টা করেছিলাম। কয়েক সপ্তাহ ধরে আমার মা সন্ধ্যাবেলাগুলোতে আমার সঙ্গে ঈশ্বরের আইনগুলো কতটা গুরুত্বপূর্ণ ও জীবনদায়ী, সেটা নিয়ে কথা বলেছিলেন। আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ যে, আমার হৃদয় ধীরে ধীরে যিহোবার প্রতি ফিরে এসেছিল। যিহোবার দ্বারা শাসিত ও শিক্ষিত হওয়া আমাকে প্রচুর সুখ এনে দিয়েছে—পূর্ণসময়ের পরিচর্যায় অনেক ফলপ্রসূ বছর এবং একজন উত্তম খ্রিস্টান সাথি, যিনি পূর্ণহৃদয় দিয়ে আমাকে ও যিহোবাকে ভালবাসেন।”

স্পষ্টতই, এই ধরনের অভিজ্ঞতাগুলো দায়ূদের কথার সত্যতাকে প্রমাণ করে: “ধন্য সেই, যাহার অধর্ম্ম ক্ষমা হইয়াছে, যাহার পাপ আচ্ছাদিত হইয়াছে। ধন্য সেই ব্যক্তি, যাহার পক্ষে সদাপ্রভু অপরাধ গণনা করেন না।”—গীতসংহিতা ৩২:১, ২.

অন্যদের প্রতি বিবেচনা দেখানো থেকে সুখ

“ধন্য সেই জন, যে দীনহীনের পক্ষে চিন্তাশীল,” দায়ূদ লিখেছিলেন। তিনি আরও বলেছিলেন: “বিপদের দিনে সদাপ্রভু তাহাকে নিস্তার করিবেন। সদাপ্রভু তাহাকে রক্ষা করিবেন, জীবিত রাখিবেন, দেশে সে আশীর্ব্বাদ পাইবে।” (গীতসংহিতা ৪১:১, ২) দায়ূদের প্রিয় বন্ধু যোনাথনের খোঁড়া ছেলে মফীবোশতের প্রতি দায়ূদের প্রেমময় চিন্তা বা বিবেচনা দেখানো হচ্ছে দীনহীনের প্রতি সঠিক মনোভাব রাখার এক সুন্দর উদাহরণ।—২ শমূয়েল ৯:১-১৩.

মার্লিস, যিনি ৪৭ বছর ধরে একজন মিশনারি হিসেবে সেবা করে আসছেন, তার সেই সমস্ত লোকের কাছে প্রচার করার বিশেষ সুযোগ রয়েছে, যাদেরকে আফ্রিকা, এশিয়া এবং পূর্ব ইউরোপের বিপদজনক এলাকাগুলো থেকে পালিয়ে আসতে হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন: “তাদের নানারকম সমস্যা রয়েছে আর তারা সাধারণত মনে করে যে, অন্যেরা তাদেরকে সাদরে গ্রহণ করে নেয় না, বরং তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্য দেখানো হয়। এই ধরনের লোকদের সাহায্য করা সবসময় সুখ নিয়ে আসে।”

মারিনা, যার বয়স ৪০ এর কোঠার প্রথম দিকে, তিনি লিখেছিলেন: “অবিবাহিতা হওয়ায় আমি জানি যে, অন্যেরা আপনার সাহায্যের জন্য রয়েছে, এই কথার অর্থ কী। এটা আমাকে লোকেদেরকে টেলিফোন করে বা চিঠির মাধ্যমে উৎসাহিত করতে প্রেরণা দেয়। অনেকে তাদের উপলব্ধি প্রকাশ করেছে। অন্যদের সাহায্য করা আমার জন্য আনন্দ নিয়ে আসে।”

দিমিতা, যার বয়স ২০ এর কোঠার মাঝামাঝি, সে বলে: “আমার মা একক অভিভাবক হিসেবে আমাকে মানুষ করে তুলেছে। আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন মণ্ডলীর এমন একজন বই অধ্যয়ন অধ্যক্ষকে পেয়ে আনন্দিত ছিলাম, যিনি আমাকে পরিচর্যায় প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য প্রতি সপ্তাহে তার সঙ্গে নিয়ে যেতেন। তার অধ্যবসায়ের জন্য আমি এখনও কৃতজ্ঞ। আমি জানি যে, আমাকে প্রেরণা দেওয়া সবসময় সহজ ছিল না।” একসময় যে-সাহায্য সে পেয়েছিল, সেটার প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখিয়ে দিমিতা এখন অন্যদের সাহায্য করে: “আমি মাসে অন্তত একবার ক্ষেত্রের পরিচর্যায় আমার সঙ্গে একজন অল্পবয়সি ব্যক্তি ও সেইসঙ্গে একজন বয়স্ক ব্যক্তিকে নেওয়ার চেষ্টা করি।”

এ ছাড়া, গীতসংহিতা বইটি অন্যান্য বিষয়ও উল্লেখ করে, যেগুলো সুখ এনে দিতে পারে। একটা হচ্ছে নিজের ওপর নির্ভর করার পরিবর্তে যিহোবার শক্তির ওপর নির্ভর করার গুরুত্ব: “ধন্য সেই ব্যক্তি, যাহার বল [সদাপ্রভুতে]।”—গীতসংহিতা ৮৪:৫.

করিনা এই বিষয়টা বর্ণনা করতে পারেন। তিনি এমন এক দেশে চলে গিয়েছিলেন, যেখানে পরিচর্যায় আরও বেশি প্রকাশকের প্রয়োজন ছিল। “আমি নতুন ভাষা, নতুন সংস্কৃতি এবং নতুন চিন্তাধারার মুখোমুখি হয়েছিলাম। আমার মনে হয়েছিল যে, আমি যেন এক ভিন্ন গ্রহে রয়েছি। আমি সম্পূর্ণ অচেনা এক পরিবেশে প্রচার করার কথা চিন্তা করেই ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। আমি যিহোবার কাছে সাহায্য চেয়েছিলাম এবং তাঁর শক্তিতেই বিচ্ছিন্ন এলাকায় প্রচার করতে সমর্থ হয়েছিলাম। কিছু সময় পর, সেখানে প্রচার করা আমার কাছে একেবারে স্বাভাবিক বিষয় বলে মনে হয়েছিল। আমি অনেক বাইবেল অধ্যয়ন শুরু করেছি আর আমি এখনও এই অভিজ্ঞতা থেকে উপকার লাভ করছি। আমি শিখেছি যে, যিহোবার শক্তিতে আমরা আপাতদৃষ্টিতে পর্বতসমান বাধাগুলোও অতিক্রম করতে পারি।”

হ্যাঁ, সুখের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয় অবদান রাখে, যেমন ঈশ্বর ও তাঁর লোকেদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা, যিহোবার ওপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করা, ঐশিক পরামর্শ গ্রহণ করা এবং অন্যদের প্রতি বিবেচনা দেখানো। যিহোবার পথে চলে ও তাঁর আইনগুলোর বাধ্য হয়ে আমরা তাঁর অনুগ্রহ উপভোগ করে সুখী হতে পারি।—গীতসংহিতা ৮৯:১৫; ১০৬:৩; ১১২:১; ১২৮:১, ২.

[পাদটীকাগুলো]

^ এই প্রবন্ধে ব্যবহৃত বাংলা স্টান্ডার্ড বাইবেলের পদগুলোতে যেখানে ধন্য শব্দটি রয়েছে, সেখানে ইংরেজি নতুন জগৎ অনুবাদ-এ আসলে “সুখী” শব্দটি রয়েছে।

^ কিছু কিছু নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

[১২ পৃষ্ঠার চিত্র]

মারিয়া

[১৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

মারি

[১৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

জুজান এবং আন্দ্রেয়াস

[১৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

করিনা

[১৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

দিমিতা