ইস্রায়েল নামে ডাকা হয় এমন লোকেদের সম্বন্ধে এক অশাস্ত্রীয় উল্লেখ
ইস্রায়েল নামে ডাকা হয় এমন লোকেদের সম্বন্ধে এক অশাস্ত্রীয় উল্লেখ
মিশরের কায়রো জাদুঘরে একটা গ্র্যানাইট প্রস্তরফলক, ফরৌণ মারনেপ্টার বিভিন্ন বিজয় স্মরণীয় করে রেখেছে। পণ্ডিত ব্যক্তিদের অনুমান অনুসারে, রামসিস ২য়-র এই ত্রয়োদশ পুত্র সা.কা.পূ. ১২১২ থেকে ১২০২ সাল পর্যন্ত—প্রাচীন ইস্রায়েলের বিচারকদের সময়কালের শেষের দিকে—শাসন করেছিলেন। মারনেপ্টার প্রস্তরফলকের শেষ দুই লাইনে লেখা রয়েছে: “কনান সবদিক দিয়ে লুণ্ঠিত হয়েছে। অস্কিলোনকে পরাজিত করা হয়েছে, গেষরকে অধিকার করা হয়েছে [এবং] ইয়ানোয়ামকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছে। ইস্রায়েল জনশূন্য অবস্থায় রয়েছে, তার বংশধর আর নেই।”
এই বর্ণনায় “ইস্রায়েল” শব্দটির দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে? চিত্রলিপি লেখনীতে অনুচ্চারিত কিছু চিহ্ন, যেগুলোকে নির্ণয়ক বলা হয়, সেগুলোকে বিভিন্ন শব্দ কোন শ্রেণীতে পড়ে তা নির্দেশ করার জন্য বানানের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হতো। প্রাচীন ইস্রায়েলের উত্থান (ইংরেজি) প্রকাশনাটি ব্যাখ্যা করে: “চারটের মধ্যে তিনটে শব্দের—অস্কিলোন, গেষর ও ইয়ানোয়ামের—সঙ্গে যুক্ত নির্ণয়ক আমাদের বলে যে, এগুলো হল নগর। . . . কিন্তু, ইস্রায়েলের সঙ্গে যুক্ত নির্ণয়কটা লোকেদের বুঝিয়ে থাকে।”—বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।
এই পাঠ্যাংশের তাৎপর্য কী? সম্পাদক ও গ্রন্থকার হারশেল শ্যাঙ্কস্ উত্তর দেন: “মারনেপ্টা প্রস্তরফলক দেখায় যে, ইস্রায়েল নামে ডাকা হতো এমন লোকেরা সা.কা.পূ. ১২১২ সালে অস্তিত্বে ছিল আর মিশরের ফরৌণ তাদের সম্বন্ধে কেবল জানতেনই না কিন্তু সেইসঙ্গে তাদেরকে যুদ্ধে পরাজিত করার বিষয়টা নিয়ে দম্ভ করাও উপযুক্ত বলে মনে করেছিলেন।” নিকটপ্রাচ্যের প্রত্নতত্ত্বের অধ্যাপক উইলিয়াম জি. ডেভার মন্তব্য করেন: “মারনেপ্টা প্রস্তরফলক আমাদেরকে স্পষ্টভাবে বলে যে: কনানে এমন লোকেরা ছিল, যারা নিজেদেরকে ‘ইস্রায়েল’ নামে ডাকত আর তাই মিশরীয়রাও—বস্তুতপক্ষে বাইবেলের সত্যতা প্রমাণের কোনো প্রবণতাই যাদের ছিল না ও সেইসঙ্গে যারা নিজেদের প্রচারণার উদ্দেশ্যে ‘ইস্রায়েলের’ মতো এইরকম এক নির্দিষ্ট ও অদ্বিতীয় লোকেদের উদ্ভাবন করতে পারে না—‘ইস্রায়েল’ নামে ডাকত।”
বাইবেলে, কুলপতি যাকোবকে দেওয়া নাম হিসেবে ইস্রায়েল শব্দটা প্রথম উল্লেখ করা হয়। যাকোবের ১২ জন ছেলের বংশধর ‘ইস্রায়েলসন্তান’ হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে। (আদিপুস্তক ৩২:২২-২৮, ৩২; ৩৫:৯, ১০) কয়েক বছর পর, ভাববাদী মোশি ও মিশরের ফরৌণ উভয়ই যাকোবের এই বংশধরদের উল্লেখ করতে গিয়ে ‘ইস্রায়েল’ শব্দটি ব্যবহার করে। (যাত্রাপুস্তক ৫:১, ২) মারনেপ্টা প্রস্তরফলক হল, ইস্রায়েল নামে ডাকা হতো এমন লোকেদের সম্বন্ধে জানা মতে সবচেয়ে পুরোনো অশাস্ত্রীয় উল্লেখ।
[২৪ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]
মারনেপ্টা প্রস্তরফলক
শেষের তিনটে চিহ্নের সমন্বয় (ডান দিক থেকে বাম দিকে)—একটা লাঠি এবং বসে থাকা পুরুষ ও নারী—ইস্রায়েলকে বিদেশি লোক হিসেবে শনাক্ত করে
[সৌজন্যে]
Egyptian National Museum, Cairo, Egypt/Giraudon/The Bridgeman Art Library