সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

মানবমর্যাদা যে-অধিকারকে প্রায়ই লঙ্ঘন করা হয়

মানবমর্যাদা যে-অধিকারকে প্রায়ই লঙ্ঘন করা হয়

মানবমর্যাদা যে-অধিকারকে প্রায়ই লঙ্ঘন করা হয়

“ক্যাম্পের জীবনের প্রতিটা বর্ণনাই ছিল অবমাননা ও অমর্যাদার দিকে নিয়ে যায় এমন নিম্নমুখী সিঁড়ির আরেকটা ধাপমাত্র।”—ম্যাগডেলেনা কুসেরো রয়টার, নাৎসি কনসেনট্রেশন ক্যাম্প থেকে রক্ষাপ্রাপ্ত ব্যক্তি।

 যত বীভৎসই হোক না কেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের নৃশংসতা, মানবমর্যাদার ওপর আক্রমণের শুরু বা শেষ কোনোটাই ছিল না। আমরা অতীত অথবা বর্তমান যা-ই পরীক্ষা করি না কেন, এই অভিমতটা স্পষ্ট: ‘অবমাননা ও অমর্যাদার দিকে নিয়ে যায় এমন নিম্নমুখী সিঁড়িটা’ দীর্ঘ এবং অনেকে তাতে ভ্রমণ করেছে।

কিন্তু, মানবমর্যাদার লঙ্ঘনগুলো কেবল সেই বর্বরোচিত কাজগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, যেগুলো মানব ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে। প্রায়ই সেগুলো তাদের কুৎসিত রূপকে আরও সূক্ষ্ম উপায়ে প্রকাশ করে। এমন একটা শিশুর কথা চিন্তা করুন, যাকে তার কোনো শারীরিক বৈশিষ্ট্যের কারণে বিদ্রূপ করা হয়। অথবা সেই অভিবাসীর কথা, যাকে “বিদেশি” কিছু প্রথার জন্য উপহাস করা হয়। কিংবা এমন ব্যক্তির কথা, যিনি তার চামড়ার রং বা জাতীয়তার কারণে বৈষম্যের শিকার হন। আর যারা এই কাজগুলো করে থাকে, তারা হয়তো বিষয়টাকে নিছক মজা হিসেবে দেখে থাকে কিন্তু এভাবে ছোট করার ফলে অন্যেরা যে-কষ্ট ও অবমাননা বোধ করে থাকে, তা কোনো হাসিতামাশার বিষয় নয়।—হিতোপদেশ ২৬:১৮, ১৯.

মানবমর্যাদা বলতে কী বোঝায়?

একটি অভিধান মর্যাদাকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করে, ‘যোগ্য, সম্মানিত অথবা শ্রদ্ধাপূর্ণ হওয়ার গুণ বা অবস্থা।’ তাই, নিজেদেরকে আমরা যেভাবে দেখি ও অন্যেরা আমাদের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করে, এই দুটো বিষয়ই মানবমর্যাদার সঙ্গে জড়িত। যদিও বিভিন্ন বিষয় নিজেদের সম্বন্ধে আমাদের অনুভূতিকে প্রভাবিত করতে পারে, কিন্তু অন্যেরা আমাদেরকে যেভাবে দেখে বা আমাদের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করে, সেটাই রোজকার জীবনে আমাদের ব্যক্তিগত মূল্যবোধের ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা পালন করে থাকে।

প্রতিটা সমাজেই দরিদ্র, অরক্ষিত ও দুর্বল লোকেরা রয়েছে। কিন্তু, এই পরিস্থিতিগুলোতে থাকাই যে একজন ব্যক্তির মর্যাদাবোধকে হ্রাস করে, তা নয়। বরং, অন্যদের মনোভাব ও প্রতিক্রিয়াই একজন ব্যক্তির মর্যাদাবোধকে বিপন্ন করতে পারে। দুঃখজনক বাস্তবতা হল যে, খারাপ পরিস্থিতিতে যে-লোকেরা রয়েছে সাধারণত তাদের মানবমর্যাদার অধিকারকেই তুচ্ছ বা পদদলিত করা হয়। বয়স্ক, দরিদ্র অথবা মানসিক বা শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের সঙ্গে খারাপ আচরণের ক্ষেত্রে আমরা কতবারই না “অকর্মণ্য,” “অযোগ্য” এবং “মর্যাদাহীন,” এই শব্দগুলো শুনে থাকি!

কেন লোকেরা একে অপরকে অবমানিত করে? মানবমর্যাদার মৌলিক অধিকার কি কখনো বাস্তবায়িত হবে? পরের প্রবন্ধ ঈশ্বরের বাক্য বাইবেল থেকে সন্তোষজনক উত্তর দেবে।