মৃদুশীলেরা পৃথিবীর অধিকারী হবে
মৃদুশীলেরা পৃথিবীর অধিকারী হবে
“আমি কল্পনা করি যে, প্রকৃতি রূপান্তরিত ও পুনর্স্থাপিত হবে। . . . তবে, আগামীকালের মধ্যে নয় কিন্তু এক সুদূর ভবিষ্যতে, যখন এখানে নতুন আকাশমণ্ডল ও এক নতুন পৃথিবী থাকবে।”—ঝাঁ ম্যারি পেল্ট, ফরাসি পরিবেশ বিশেষজ্ঞ।
পৃথিবীর প্রাকৃতিক ও সামাজিক অবস্থা দেখে হতাশ হয়ে অনেকে আমাদের গ্রহটাকে পরমদেশে রূপান্তরিত হওয়া দেখতে চায়। তবে, এই আকাঙ্ক্ষা শুধুমাত্র একবিংশ শতাব্দীর এক স্বপ্ন নয়। বহু বছর আগে, বাইবেল পৃথিবীতে পরমদেশ পুনর্স্থাপন করার প্রতিজ্ঞা করে। “যাহারা মৃদুশীল . . . তাহারা দেশের অধিকারী হইবে” এবং ‘তোমার ইচ্ছা যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও হইবে’ যিশুর এই ঘোষণাগুলো শাস্ত্রের সবচেয়ে সুপরিচিত অংশ। (মথি ৫:৫; ৬:১০) কিন্তু, বর্তমানে অনেকেই বিশ্বাস করে না যে, মৃদুশীলেরা এক পার্থিব পরমদেশে বসবাস করবে। যারা নিজেদের খ্রিস্টান বলে দাবি করে তাদের অনেকের কাছে পরমদেশের ধারণাটা বলতে গেলে হারিয়ে গিয়েছে।
যেকারণে এক পরমদেশের বিশ্বাসকে—তা সেটা স্বর্গে বা পৃথিবীতে যেখানেই হোক—অন্তত ক্যথলিক গির্জা পরিত্যাগ করেছে, ফরাসি সাপ্তাহিক পত্রিকা লা ভি সেটা ব্যাখ্যা করে: “অন্তত ১৯ শতাব্দী ধরে ক্যাথলিক যাজকদের শিক্ষা এক জোরালো প্রভাব ফেলার পর, পরমদেশ সম্বন্ধে [ধারণাটা], আধ্যাত্মিক বিষয়ের জন্য আলাদা করা সময়, রবিবারের ধর্মোপদেশ এবং ঈশ্বরতাত্ত্বিক কোর্স এবং ক্যাটিকিজম ক্লাসগুলো থেকে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে।” পরমদেশ শব্দটিই “রহস্য ও বিভ্রান্তির ঘন কুয়াশায়” আড়াল হয়ে গিয়েছে। কিছু প্রচারক ইচ্ছাকৃতভাবে এটাকে এড়িয়ে চলে কারণ এটা “পৃথিবীতে সুখে থাকার বিষয়ে অনেক ধারণা প্রদান করে।”
ধর্ম বিশেষজ্ঞ, সমাজবিজ্ঞানী ফ্রেডেরিক লিনওয়রের কাছে পরমদেশের ধারণা “চিরাচরিত চিত্রগুলোর মতো।” অনুরূপভাবে, ইতিহাসবেত্তা ও এই বিষয়ের ওপর বেশ কয়েকটি বইয়ের গ্রন্থকার ঝাঁ দেলুমো মনে করেন যে, বাইবেলের প্রতিজ্ঞাগুলোর পরিপূর্ণতা মূলত রূপক বিষয়। তিনি লেখেন: “‘পরমদেশের আর কী বাকি আছে?’ এই প্রশ্নের উত্তরে খ্রিস্টীয় বিশ্বাস এইভাবে বলে: মুক্তিদাতার পুনরুত্থানের কল্যাণে, একদিন আমরা সকলে হাতে হাত মেলাব এবং সুখের দেখা পাব।”
তারপরেও কি এক পার্থিব পরমদেশের বিষয়ে কথা বলা উপযুক্ত? আমাদের গ্রহের জন্য ঠিক কোন ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে? এর ভবিষ্যৎ চিত্র কি অস্পষ্ট নাকি স্পষ্টভাবে দেখা যায়? পরবর্তী প্রবন্ধ এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবে।
[২ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]
COVER: Emma Lee/Life File/Getty Images