সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আমরা কি সত্যিই “শেষ কালে” বাস করছি?

আমরা কি সত্যিই “শেষ কালে” বাস করছি?

আমরা কি সত্যিই “শেষ কালে” বাস করছি?

 দুটো ক্ষেত্রে পরিবর্তন আমাদেরকে বাইবেল যে-সময়কে শেষকাল বলে, সেটাকে শনাক্ত করতে সাহায্য করে। শাস্ত্র সেই ঘটনাগুলো সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করে, যেগুলো “যুগান্তের” বা বিধিব্যবস্থার শেষে ঘটবে। (মথি ২৪:৩) এ ছাড়া, বাইবেল “শেষ কালে” বসবাসরত লোকেদের মনোভাব ও আচরণে যে-পরিবর্তন হবে সেই সম্বন্ধেও বলে।—২ তীমথিয় ৩:১.

জগতের ঘটনাগুলো এবং সেইসঙ্গে লোকেদের মনোভাব ও কাজকর্ম প্রমাণ করে যে, আমরা শেষকালে বাস করছি এবং যারা ঈশ্বরকে ভালবাসে তাদের জন্য ঈশ্বরের রাজ্য শীঘ্রই অনন্তকালীন আশীর্বাদগুলো নিয়ে আসবে। যে-তিনটে বৈশিষ্ট্য শেষকালকে শনাক্ত করবে বলে যিশু বলেছিলেন, সেগুলো পরীক্ষা করার দ্বারা আমরা শুরু করি।

“যাতনার আরম্ভ মাত্র”

যিশু বলেছিলেন, “জাতির বিপক্ষে জাতি ও রাজ্যের বিপক্ষে রাজ্য উঠিবে, এবং স্থানে স্থানে দুর্ভিক্ষ ও ভূমিকম্প হইবে।” তিনি আরও বলেছিলেন: “এ সকলই যাতনার আরম্ভ মাত্র।” (মথি ২৪:৭, ৮) আসুন আমরা ‘এ সকল’ একের পর এক পরীক্ষা করে দেখি।

বিগত শতাব্দীতে বহু সংখ্যক লোক যুদ্ধে ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় নিহত হয়েছে। ওয়ার্ল্ডওয়াচ ইনস্টিটিউট থেকে বিশেষজ্ঞদের একটা রিপোর্ট জানায় যে, “সা.কা. প্রথম শতাব্দী থেকে ১৮৯৯ সাল পর্যন্ত সমস্ত যুদ্ধে যত লোক নিহত হয়েছে, তার চেয়ে তিন গুণ বেশি লোক বিংশ শতাব্দীর যুদ্ধে নিহত হয়েছে।” জনাথন গ্লোভার তার মানবতা—বিংশ শতাব্দীর এক নৈতিক ইতিহাস (ইংরেজি) বইয়ে লেখেন: “একটা আনুমানিক হিসাব দেখায় যে, ১৯০০ থেকে ১৯৮৯ সালের মধ্যে যুদ্ধের কারণে ৮ কোটি ৬০ লক্ষ লোককে হত্যা করা হয়েছে . . . বিংশ শতাব্দীর যুদ্ধে মৃতের হার এতটাই ব্যাপক যে তা নির্ণয় করা কঠিন। যেভাবেই মৃতের গড় সংখ্যা বের করা হোক না কেন, তা হবে অনুমাননির্ভর কারণ এর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ (৫ কোটি ৮০ লক্ষ) দুটো বিশ্বযুদ্ধেই মারা গেছে। কিন্তু যদি শতাব্দী জুড়ে এই মৃত্যুকে সমানভাবে প্রসারিত করা হয়, তা হলে দেখা যাবে যে, যুদ্ধের কারণে প্রতিদিন ২,৫০০ লোককে হত্যা করা হয়েছে। এর মানে, নব্বই বছরে প্রতি ঘন্টায় অবিরত ১০০রও বেশি লোককে হত্যা করা হয়েছে।” আপনি কি কল্পনা করতে পারেন যে, যুদ্ধে নিহত সেই লোকেদের লক্ষ লক্ষ আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের জন্য তা কতখানি শোক নিয়ে এসেছে?

পৃথিবী পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য উৎপাদন করে, এই বিষয়টা সত্যি হলেও, যে-বৈশিষ্ট্যগুলো শেষকালকে শনাক্ত করে, সেগুলোর মধ্যে দুর্ভিক্ষ অন্তর্ভুক্ত। গবেষকরা বলে যে, বিগত ৩০ বছর ধরে খাদ্যের উৎপাদন জনসংখ্যা বৃদ্ধির চেয়ে দ্রুতহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তা সত্ত্বেও, পৃথিবীর অনেক অঞ্চলে দুর্ভিক্ষের প্রকোপ দেখা যায়, কারণ অনেক লোকের ফসল ফলাবার মতো পর্যাপ্ত জমি নেই অথবা খাবার কেনার মতো যথেষ্ট পয়সা নেই। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে, প্রায় ১২০ কোটি লোক দৈনিক এক (মার্কিন) ডলার বা তারও কম আয়ে কোনোরকমে জীবিকানির্বাহ করে থাকে। এদের মধ্যে ৭৮ কোটি লোক সবসময় খিদের যন্ত্রণা সহ্য করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুযায়ী, বছরে পঞ্চাশ লক্ষেরও বেশি শিশুর মৃত্যুর ক্ষেত্রে অপুষ্টি এক বিরাট ভূমিকা পালন করে।

ভূমিকম্প সম্বন্ধে যে-ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল, সেই বিষয়ে কী বলা যায়? যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক সমীক্ষা অনুযায়ী, ১৯৯০ সাল থেকে বিল্ডিংগুলোকে ধ্বংস করে দেওয়ার মতো যথেষ্ট শক্তিশালী ভূমিকম্পের সংখ্যা বছরে গড়ে ১৭-টাতে পৌঁছেছে। বিল্ডিংগুলোকে প্রায় পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করে দিতে পারে এমন শক্তিশালী ভূমিকম্পগুলো প্রতি বছর গড়ে একবার করে ঘটেছে। “গত ১০০ বছরে ভূমিকম্পে হাজার হাজার লোক প্রাণ হারিয়েছে,” আরেকটা উৎস জানায়। এর একটা কারণ হল যে, ১৯১৪ সালের পর থেকে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকাগুলোতে বিশাল জনসংখ্যার কেন্দ্রগুলো গড়ে উঠেছে।

অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ঘটনা

“স্থানে স্থানে . . . মহামারী হইবে,” যিশু বলেছিলেন। (লূক ২১:১১) বর্তমানে চিকিৎসাবিজ্ঞান আগের চেয়ে অনেক উন্নত। তবুও, পুরোনো ও নতুন উভয় রোগগুলো মানবজাতিকে নিদারুণ কষ্ট দিয়েই চলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্‌টেলিজান্‌স্‌ কাউন্সিল এর তথ্য বলে: “১৯৭৩ সাল থেকে কুড়িটিরও বেশি রোগ—যার অন্তর্ভুক্ত যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়া এবং কলেরা—প্রায়ই চরম ও ওষুধ প্রতিরোধক আকারে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ১৯৭৩ সাল থেকে, অন্ততপক্ষে পূর্বে অজানা ৩০টি রোগকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যার মধ্যে এইচআইভি, এবোলা, হেপাটাইটিস সি এবং নিপা ভাইরাস রয়েছে আর এগুলোর কোনো প্রতিকার নেই।” ২০০০ সালের ২৮শে জুন, রেড ক্রস এর একটা রিপোর্ট অনুসারে, এর আগের বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোতে যেসমস্ত লোক মারা গিয়েছিল তাদের সংখ্যার চেয়ে যারা সংক্রামিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিল, তাদের সংখ্যা প্রায় ১৬০ গুণ বেশি ছিল।

“অধর্ম্মের বৃদ্ধি” হল শেষকালের আরেকটা উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। (মথি ২৪:১২) বর্তমানে সারা পৃথিবীতে বহু লোক তাদের ঘর তালা দিয়ে রাখে এবং রাতের বেলা রাস্তায় নিরাপদ বোধ করে না। আর বায়ু, জল এবং প্রায়ই বেআইনি কাজকর্মের ফলে ঘটিত ভূমি দূষণ সম্পর্কেই বা কী বলা যায়? এটাও বাইবেলে বলা ভবিষ্যদ্বাণীর পরিপূর্ণতা। প্রকাশিত বাক্য বইটি “পৃথিবীনাশকদিগকে নাশ করিবার” জন্য ঈশ্বরের নিরূপিত সময় সম্পর্কে উল্লেখ করে।—প্রকাশিত বাক্য ১১:১৮.

শেষকালের লোকেদের বৈশিষ্ট্য

দয়া করে আপনার বাইবেল থেকে ২ তীমথিয় ৩:১-৫ পদ খুলুন এবং পড়ুন। প্রেরিত পৌল লেখেন: “শেষ কালে বিষম সময় উপস্থিত হইবে।” তারপর তিনি ২০টি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকে তালিকাভুক্ত করেন, যেগুলো ঈশ্বরবিহীন লোকেদের মধ্যে দেখা যাবে। আপনি কি আপনার এলাকায় বসবাসকারী লোকেদের মধ্যে এগুলোর কয়েকটা লক্ষ করেছেন? বর্তমান দিনের লোকেদের সম্পর্কে সাম্প্রতিক সময়ে যা বলা হয়েছে, তা বিবেচনা করুন।

“আত্মপ্রিয়।” (২ তীমথিয় ৩:২) “[লোকেরা] তাদের নিজস্ব কাজ করার জন্য আর কখনো এতটা নাছোড়বান্দা হয়ে ওঠেনি। [এগুলো] তাদের ঈশ্বর হয়ে উঠেছে আর এগুলোকে এমনভাবেই গ্রহণ করা হোক বলেই আশা করা হয়।”—ফিন্যানশিয়াল টাইমস, সংবাদপত্র, ইংল্যান্ড।

“অর্থপ্রিয়।” (২ তীমথিয় ৩:২) “সাম্প্রতিক সময়ে, বস্তুবাদিতার অহংবোধ, বিনয়ী মনোভাবকে ছাপিয়ে গিয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত না সমাজে আপনাকে ধনী বলে মনে হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনার বেঁচে থাকার কোনো মানেই হয় না।”—জাকার্তা পোস্ট, সংবাদপত্র, ইন্দোনেশিয়া।

“পিতামাতার অবাধ্য।” (২ তীমথিয় ৩:২) “বাবামায়েরা তাদের ৪ বছর বয়সি বাচ্চাকে রাজার মতো হুকুম করতে দেখে অথবা তাদের ৮ বছর বয়সি সন্তানকে ‘আমি তোমাদের ঘৃণা করি’ বলে চিৎকার করতে দেখে হতবাক হয়ে যায়।”—আ্যমেরিকান এডুকেটর, পত্রিকা, যুক্তরাষ্ট্র।

“অসাধু।” (২ তীমথিয় ৩:২) “পুরুষদের মধ্যে তাদের সঙ্গী ও সন্তানদের ফেলে চলে যাওয়ার ইচ্ছা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়াই সম্ভবত [বিগত ৪০ বছরে] নৈতিক মূল্যবোধগুলোর সবচেয়ে বড় একটা পরিবর্তন।”—উইলসন কোয়াটারলি, পত্রিকা, যুক্তরাষ্ট্র।

“স্নেহরহিত।” (২ তীমথিয় ৩:৩) “পৃথিবীব্যাপী বিভিন্ন সমাজে দৈনন্দিন জীবনে ঘরোয়া যুদ্ধ এক প্রভাবশালী বিষয়।”—জার্নাল অভ্‌ দি আ্যমেরিকান মেডিক্যাল এসোসিয়েশন, পত্রিকা, যুক্তরাষ্ট্র।

“অজিতেন্দ্রিয়।” (২ তীমথিয় ৩:৩) “প্রতিদিন সকালে যে-ঘটনাগুলো সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় থাকে, সেগুলো লোকেদের ইন্দ্রিয়দমনের অভাব, নীতিতে স্থির থাকার সংকল্পের অভাব এবং সহমানবদের এমনকি নিজেদের প্রতিও সমবেদনাহীন মনোভাবকে প্রতিফলিত করে। . . . আমাদের সমাজ যদি এই ক্ষতিকর মনোভাবকে এখনকার মতো প্রশ্রয় দিয়ে যায়, তা হলে তা খুব শীঘ্রই নৈতিকতা ধ্বংসের এক পর্যায়ে প্রবেশ করবে।—ব্যাঙ্কক পোস্ট, সংবাদপত্র, থাইল্যান্ড।

“প্রচণ্ড।” (২ তীমথিয় ৩:৩) “রাস্তায় গাড়ি চালকদের মধ্যে অযৌক্তিক ক্রোধ ও অনিয়ন্ত্রিত রোষ, পরিবারের মধ্যে খারাপ ব্যবহার এবং অকারণ দৌরাত্ম্য দেখা যায়, যেগুলোর সঙ্গে প্রায়ই অপরাধ জড়িত থাকে। যখন-তখন ও অকল্পনীয় দৌরাত্ম্য ভোগ করে থাকে এবং লোকেরা একাকী ও অনিরাপদ বোধ করে।”—বিজনেস ডে, সংবাদপত্র, দক্ষিণ আফ্রিকা।

“ঈশ্বরপ্রিয় নয়, বরং বিলাসপ্রিয়।” (২ তীমথিয় ৩:৪) “যৌন স্বাধীনতা যেখানে এক নৈতিক আন্দোলন হয়ে উঠেছে, সেখানে খ্রিস্টীয় নৈতিকতা হয়ে উঠেছে এক শত্রু।—বাউন্ডলেস, একটা ইন্টারনেট পত্রিকা।

“ভক্তির অবয়বধারী, কিন্তু তাহার শক্তি অস্বীকারকারী হইবে।” (২ তীমথিয় ৩:৫) “[নেদারল্যান্ডসের একজন প্রাক্তন পতিতা] স্বীকার করেছিলেন যে, [পতিতাবৃত্তিকে] বৈধ করার ক্ষেত্রে মূলত ধর্মীয় দলগুলোর কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি বাধা আসে। তিনি একটু থামেন আর বিদ্রূপের হাসি হেসে বলেন, তিনি যখন একজন পতিতা ছিলেন, তখন বেশ কয়েক জন [ধর্মীয়] পরিচারক তার খদ্দের ছিল। ‘পতিতারা সবসময়ই বলে থাকে যে, তাদের সবচেয়ে ভাল খদ্দের আসে ধর্মীয় সম্প্রদায় থেকে,’ তিনি হেসে বলেন।”—ন্যাশনাল ক্যাথলিক রিপোর্টার, সংবাদপত্র, যুক্তরাষ্ট্র।

ভবিষ্যতে কী রয়েছে?

বাইবেল ঠিক যেমন ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল, বর্তমান পৃথিবী সমস্যায় পরিপূর্ণ। কিন্তু, “[খ্রিস্টের] আগমনের এবং যুগান্তের চিহ্ন” সম্বন্ধে করা ভবিষ্যদ্বাণীটি এক ইতিবাচক বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে। “সর্ব্ব জাতির কাছে সাক্ষ্য দিবার নিমিত্ত রাজ্যের এই সুসমাচার সমুদয় জগতে প্রচার করা যাইবে,” যিশু বলেছিলেন। (মথি ২৪:৩, ১৪) ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার ২৩০টারও বেশি দেশে প্রচার করা হচ্ছে। ষাট লক্ষেরও বেশি লোক যারা “প্রত্যেক জাতির ও বংশের ও প্রজাবৃন্দের ও ভাষার” থেকে এসেছে, তারা সক্রিয়ভাবে রাজ্য ঘোষণার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। (প্রকাশিত বাক্য ৭:৯) তাদের উদ্যোগী কাজ কী সম্পাদন করেছে? এটা: রাজ্য কী, এটা কী সম্পাদন করবে এবং কীভাবে এর আশীর্বাদগুলো পাওয়া যাবে এই বার্তা পৃথিবীর প্রায় সব লোকের কাছে পৌঁছে দিয়েছে। বস্তুতপক্ষে, ‘শেষকালে জ্ঞানের বৃদ্ধি হইবে।’—দানিয়েল ১২:৪.

এই জ্ঞান থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য আপনার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। যিহোবার সন্তোষ অনুযায়ী সুসমাচার প্রচার হয়ে যাওয়ার পর যা হবে, তা বিবেচনা করুন। যিশু বলেছিলেন: “তখন শেষ উপস্থিত হইবে।” (মথি ২৪:১৪) এটা হবে পৃথিবী থেকে সমস্ত দুষ্টতা দূর করার জন্য ঈশ্বরের সময়। হিতোপদেশ ২:২২ পদ বলে: “কিন্তু দুষ্টগণ দেশ হইতে উচ্ছিন্ন হইবে, বিশ্বাসঘাতকেরা তথা হইতে উন্মূলিত হইবে।” শয়তান ও তার মন্দ দূতদের সম্বন্ধে কী বলা যায়? তাদেরকে এক অগাধলোকে ফেলে দেওয়া হবে, যেখানে তারা জাতিগুলোকে আর বিপথে পরিচালিত করতে পারবে না। (প্রকাশিত বাক্য ২০:১-৩) তারপর পৃথিবীতে ‘সরলগণ এবং সিদ্ধেরা অবশিষ্ট থাকিবে।’ আর তারা রাজ্যের চমৎকার আশীর্বাদগুলো উপভোগ করবে।—হিতোপদেশ ২:২১; প্রকাশিত বাক্য ২১:৩-৫.

আপনি কী করতে পারেন?

এই বিষয় কোনো সন্দেহ নেই। শয়তানের বিধিব্যবস্থার শেষ সন্নিকট। আমরা যে শেষকালে বাস করছি সেটার প্রমাণকে যারা উপেক্ষা করে, তারা যখন শেষ আসবে, তখন অপ্রস্তুত হয়ে পড়বে। (মথি ২৪:৩৭-৩৯; ১ থিষলনীকীয় ৫:২) তাই, যিশু তাঁর শ্রোতাদের বলেছিলেন: “আপনাদের বিষয়ে সাবধান থাকিও, পাছে ভোগপীড়ায় ও মত্ততায় এবং জীবিকার চিন্তায় তোমাদের হৃদয় ভারগ্রস্ত হয়, আর সেই দিন হঠাৎ ফাঁদের ন্যায় তোমাদের উপরে আসিয়া পড়ে; কেননা সেই দিন সমস্ত ভূতলনিবাসী সকলের উপরে উপস্থিত হইবে। কিন্তু তোমরা সর্ব্বসময়ে জাগিয়া থাকিও এবং প্রার্থনা করিও, যেন এই যে সকল ঘটনা হইবে, তাহা এড়াইতে, এবং মনুষ্যপুত্ত্রের সম্মুখে দাঁড়াইতে, শক্তিমান্‌ হও।”—লূক ২১:৩৪-৩৬.

মনুষ্যপুত্র যিশুর সামনে যারা এক অনুমোদনযোগ্য অবস্থায় রয়েছে, শুধুমাত্র তাদেরই এই বিধিব্যবস্থার শেষ থেকে রক্ষা পাওয়ার প্রত্যাশা থাকবে। তাই, যিহোবা ঈশ্বর ও যিশু খ্রিস্টের অনুমোদন লাভ করতে চেষ্টা করার জন্য বাকি সময়টুকু ব্যবহার করা আমাদের জন্য কতই না গুরুত্বপূর্ণ! ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করার সময় যিশু বলেছিলেন: “ইহাই অনন্ত জীবন যে, তাহারা তোমাকে, একমাত্র সত্যময় ঈশ্বরকে, এবং তুমি যাঁহাকে পাঠাইয়াছ, তাঁহাকে, যীশু খ্রীষ্টকে, জানিতে পায়।” (যোহন ১৭:৩) তাই, যিহোবা ও তাঁর চাহিদাগুলো সম্পর্কে শেখা আপনার জন্য বিজ্ঞতার কাজ হবে। আপনার এলাকার যিহোবার সাক্ষিরা, বাইবেল যা শিক্ষা দেয় তা বুঝতে আপনাকে সাহায্য করতে পেরে খুশি হবে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে অথবা এই পত্রিকার প্রকাশকদের কাছে লিখতে আমরা আপনাকে উষ্ণ আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।

[৭ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্রগুলো]

শেষকালের বৈশিষ্ট্যগুলো

বড় বড় ঘটনা:

▪ যুদ্ধ।—মথি ২৪:৬, ৭.

▪ দুর্ভিক্ষ।—মথি ২৪:৭.

▪ ভূমিকম্প।—মথি ২৪:৭.

▪ মহামারী।—লূক ২১:১১.

▪ অধর্মের বৃদ্ধি।—মথি ২৪:১২.

▪ পৃথিবীকে নাশ করা।—প্রকাশিত বাক্য ১১:১৮.

লোকেদের মধ্যে:

▪ আত্মপ্রিয়।—২ তীমথিয় ৩:২.

▪ অর্থপ্রিয়।—২ তীমথিয় ৩:২.

▪ অভিমানী বা গর্বিত। —২ তীমথিয় ৩:২.

▪ পিতামাতার অবাধ্য। —২ তীমথিয় ৩:২.

▪ অকৃতজ্ঞ।—২ তীমথিয় ৩:২.

▪ অসাধু।—২ তীমথিয় ৩:২.

▪ স্নেহরহিত।—২ তীমথিয় ৩:৩.

▪ অজিতেন্দ্রিয়।—২ তীমথিয় ৩:৩.

▪ প্রচণ্ড।—২ তীমথিয় ৩:৩.

▪ বিলাসপ্রিয়।—২ তীমথিয় ৩:৪.

▪ ধর্মীয় কপটতা।—২ তীমথিয় ৩:৫.

সত্য উপাসকদের মধ্যে:

▪ প্রচুর জ্ঞানের অধিকারী। —দানিয়েল ১২:৪.

▪ পৃথিবীব্যাপী সুসমাচার প্রচার। —মথি ২৪:১৪.

[সৌজন্যে]

UNITED NATIONS/Photo by F. GRIFFING