যে-স্কুলের গ্র্যাজুয়েটরা বিশ্বব্যাপী লোকেদের উপকার করে
যে-স্কুলের গ্র্যাজুয়েটরা বিশ্বব্যাপী লোকেদের উপকার করে
দ্বীপ ও দেশ মিলিয়ে ২০০টারও বেশি জায়গায়, যিহোবার সাক্ষিদের ৯৮,০০০রেরও বেশি মণ্ডলীতে লোকেরা ঈশ্বরের দ্বারা শিক্ষাপ্রাপ্ত হচ্ছে। মূল পাঠ্যপুস্তক হল বাইবেল আর এই শিক্ষার উদ্দেশ্য হচ্ছে, ঈশ্বরের ইচ্ছা কী ও কীভাবে এর সঙ্গে মিল রেখে জীবনযাপন করা যায়, তা শেখার মাধ্যমে ব্যক্তি বিশেষদের আধ্যাত্মিক অগ্রগতি করতে সাহায্য করা। যারা এই শিক্ষা গ্রহণ করে, তারা প্রচুররূপে উপকৃত হয়। শিষ্য তৈরি করা সম্বন্ধে যিশু খ্রিস্টের নির্দেশের সঙ্গে মিল রেখে, তারা যা শেখে তা অন্যদেরও জানায়।—মথি ২৮:১৯, ২০.
মণ্ডলীগুলোতে শিক্ষাদানের এই চলমান কার্যক্রম ছাড়াও, যিহোবার সাক্ষিরা বেশ কয়েকটা বিশেষ স্কুলের ব্যবস্থা করেছে। এগুলোর মধ্যে একটা হল মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুল। ১৯৮৭ সালের অক্টোবর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার পিটস্বার্গে এই স্কুল প্রথম অনুষ্ঠিত হয়েছিল। প্রথম ক্লাসটা ইংরেজিভাষী ২৪ জন ছাত্রকে নিয়ে গঠন করা হয়েছিল। তখন থেকে পৃথিবীব্যাপী ৪৩টা জায়গায় ২১টা ভাষায় তা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই পর্যন্ত, ৯০টারও বেশি দেশের অবিবাহিত প্রাচীন ও পরিচারক দাসেরা তালিকাভুক্ত হয়েছে। আট সপ্তাহের কোর্স সম্পন্ন করার পর, গ্র্যাজুয়েটদের তাদের নিজের দেশে অথবা বিদেশে যেখানে বেশি প্রয়োজন সেখানে সেবা করার জন্য কার্যভার দেওয়া হয়। ২০০৫ সালের শেষে ২২,০০০রেরও বেশি খ্রিস্টান পরিচারক এই কোর্স সম্পন্ন করেছে। রাজ্যের বিষয়গুলোকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ও অন্যদের উপকার করতে হিতোপদেশ ১০:২২; ১ পিতর ৫:৫.
নম্রভাবে করা তাদের এই কঠোর প্রচেষ্টাগুলোতে প্রচুররূপে আশীর্বাদ করা হয়েছে।—যোগদানের জন্য ব্যবস্থা করা
মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুল-এ যোগ দেওয়ার জন্য অধিকাংশ ছাত্রকেই তাদের খণ্ডকালীন বা পূর্ণসময়ের চাকরি থেকে ছুটির আবেদন করতে হয়। মাঝে মাঝে এটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে আসে। হাওয়াইয়ে দুজন খ্রিস্টান যারা স্কুলে শিক্ষকতা করে, তাদেরকে যখন এই স্কুলে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়, তখন তাদেরকে ছুটির আবেদন করতে হয়েছিল। তারা কেন এতে যোগ দিতে চায় ও কীভাবে উপকৃত হবে, সেগুলো ব্যাখ্যা করে তারা বিশ্বাস সহকারে তাদের আবেদনপত্র জমা দিয়েছিল। দুজনের ছুটির আবেদনই মঞ্জুর করা হয়েছিল।
বেশ কিছু ক্ষেত্রে, যে-সাক্ষিরা চাকরি থেকে ছুটির আবেদন করেছিল, তাদের বলা হয়েছিল যে, ফিরে আসার পর তাদের চাকরি আর থাকবে না। তারা যিহোবার সংগঠন থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করাকেই বেছে নিয়েছিল, যদিও এই কারণে তাদের চাকরি হারাতে হয়েছিল। এদের মধ্যে কয়েক জন তাদের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে, স্কুল শেষে কাজে ফিরে আসার আমন্ত্রণ পেয়েছিল। স্কুলে যোগ দেওয়ার জন্য এই ধরনের দৃঢ়সংকল্পকে সংক্ষেপে এভাবে বর্ণনা করা যেতে পারে: নিয়োগকর্তার কাছে আবেদন করুন, যিহোবার সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করুন আর এরপর বাকিটা তাঁকে করতে দিন।—গীতসংহিতা ৩৭:৫.
‘সদাপ্রভুর কাছে শিক্ষাপ্রাপ্ত’
এই স্কুলের আট সপ্তাহের কোর্সে বিস্তারিতভাবে বাইবেল অধ্যয়ন করা হয়ে থাকে। ছাত্ররা শেখে যে, যিহোবার লোকেরা কীভাবে ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার জন্য সংগঠিত হয় এবং কীভাবে তারা ব্যক্তিগতভাবে তাদের ক্ষেত্রের পরিচর্যায়, মণ্ডলীর সভাগুলোতে ও সম্মেলনগুলোতে আরও কার্যকারীভাবে বাইবেল ব্যবহার করতে পারে।
এখনও পর্যন্ত যোগ দেননি এমন এক ছাত্রকে একজন কৃতজ্ঞ গ্র্যাজুয়েট এই কথাগুলো লিখেছিলেন: “বিশ্বাস করুন, আপনি এমন সর্বোত্তম শিক্ষা লাভ করবেন, যা আগে কখনো পাননি। যে-শাস্ত্রপদ ‘সদাপ্রভুর কাছে শিক্ষাপ্রাপ্ত’ হওয়া সম্বন্ধে বলে, তা আরও বেশি অর্থপূর্ণ হয়। পুরো অভিজ্ঞতাই খ্রিস্ট যিশুর উদাহরণকে আরও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মেনে চলার জন্য হৃদয় ও ব্যক্তিত্বকে গঠন ও পরিশোধন করে। আপনি যখন যোগ দেবেন, তখন আপনি জীবনের সর্বোত্তম অভিজ্ঞতা লাভ করবেন।”—যিশাইয় ৫৪:১৩.
সুসমাচার প্রচারক, পালক এবং শিক্ষক
মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুল এর গ্র্যাজুয়েটরা বর্তমানে দ্বীপ ও দেশ মিলিয়ে ১১৭টা জায়গায় সেবা করছে। এর অন্তর্ভুক্ত আটলান্টিক, ক্যারিবীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ ও সেইসঙ্গে অধিকাংশ দেশ, যেখানে যিহোবার সাক্ষিদের শাখা অফিস রয়েছে। শাখা অফিসগুলো রিপোর্ট করে যে, ছাত্ররা যে-চমৎকার প্রশিক্ষণ পেয়েছে, তা তাদের সুসমাচার প্রচার, পালকীয় ও শিক্ষা দেওয়ার কাজে প্রতিফলিত হয়। তাদের প্রশিক্ষণ তাদেরকে ক্ষেত্রের পরিচর্যায় আরও ভালভাবে বাইবেল ব্যবহার করতে সজ্জিত করে। (২ তীমথিয় ২:১৫) গৃহকর্তাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময়ে তারা প্রায়ই শাস্ত্র থেকে যুক্তি করা * (ইংরেজি) বই থেকে রেফারেন্স উল্লেখ করে আর অন্যান্য রাজ্য প্রকাশকদেরও একই বিষয় করতে প্রশিক্ষণ দেয়। গ্র্যাজুয়েটদের এই উদ্যোগ প্রভাব বিস্তারকারী আর তাদের কার্যকলাপ মণ্ডলীকে শক্তিশালী করে।
মণ্ডলীর প্রাচীনদেরকে ‘যে পাল আছে, তাহা পালন করিবার’ এবং অন্যদের আধ্যাত্মিক চাহিদাগুলোর যত্ন নেওয়ার জন্য সাহায্য করার বিশেষ সুযোগ দেওয়া হয়েছে। (১ পিতর ৫:২, ৩) এই ব্যবস্থা সম্বন্ধে একজন প্রাচীন বলেছিলেন: “ঈশ্বরের পালকে পালন করার ভার বহন করতে আমাদের সাহায্য করার জন্য শাখা অফিস সুপ্রশিক্ষিত ভাইদের পাঠায় বলে আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।” সুদূর প্রাচ্যের একটা শাখা অফিসও একইরকম মন্তব্য করেছিল: “গ্র্যাজুয়েটরা খুবই সমবেদনাপূর্ণ। তারা কঠোর পরিশ্রম করে এবং মণ্ডলীর কাছ থেকে সম্মান অর্জন করে। তাদের নম্র, আন্তরিক ও উৎসুক মনোভাব সম্বন্ধে সবাই জানে আর সেগুলোকে উচ্চমূল্য দেওয়া হয়ে থাকে। তারা স্বেচ্ছায় নিজেদের বিলিয়ে দেয় এবং আনন্দের সঙ্গে সেই মণ্ডলীগুলোতে চলে যায়, যেখানে পালকের প্রয়োজন রয়েছে।” (ফিলিপীয় ২:৪) এই পুরুষেরা তাদের সহবিশ্বাসীদের সতেজ করে আর তারা প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য।—১ করিন্থীয় ১৬:১৮.
মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুল এর নির্দেশকরা অন্যান্য বিষয় ছাড়াও, ছাত্রদেরকে জনসাধারণের উদ্দেশে বক্তা হিসেবে তাদের দক্ষতাগুলোতে উন্নতি করার জন্য সাহায্য করে। ছাত্ররা যে-পরামর্শ ও উপদেশ লাভ করে, সেগুলো কাজে লাগানোর মাধ্যমে অনেক গ্র্যাজুয়েটকে শীঘ্রই সীমা ও জেলা সম্মেলনের কার্যক্রমে ব্যবহার করা যেতে পারে। একজন সীমা অধ্যক্ষ মন্তব্য করেন যে, গ্র্যাজুয়েটরা “চমৎকার বক্তৃতা” দেয় “এবং উত্তম যুক্তি ব্যবহার করে বিষয়বস্তুর প্রয়োগ করে।”—আফ্রিকার একটা দেশে মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুল পরিচালনা করার এবং গ্র্যাজুয়েটদেরকে ক্ষেত্রে নিযুক্ত করার পর মণ্ডলীর সভাগুলোতে শিক্ষাদানের গুণগতমান অনেক উন্নত হয়েছে। যে-প্রাচীনদের স্কুল থেকে পাঠানো হয়, তারা প্রচার, পালকীয় ও শিক্ষাদানের কাজে সহযোগিতা করে আর এভাবে মণ্ডলীগুলোকে আধ্যাত্মিকভাবে গড়ে তোলে।—ইফিষীয় ৪:৮, ১১, ১২.
মণ্ডলীর তত্ত্বাবধান কাজ উন্নত হয়
অনেক জায়গায় আরও বেশি প্রাচীন ও পরিচারক দাসের প্রয়োজন রয়েছে। কোনো কোনো মণ্ডলীতে মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুল থেকে একজন গ্র্যাজুয়েটকে পাঠানো না হলে, সেখানে কোনো প্রাচীনই থাকত না। তাই, যেখানে এই ধরনের প্রয়োজন রয়েছে, অনেক গ্র্যাজুয়েটকে সেখানে কার্যভার দেওয়া হয়।
অনেক শাখা অফিস রিপোর্ট করে যে, এই পুরুষরা “সাংগঠনিক ব্যবস্থাগুলো সম্বন্ধে ভালভাবে অবগত,” “তাদের দায়িত্বগুলো গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে থাকে,” “অন্যদেরকে যিহোবার সংগঠন সম্বন্ধে বুঝতে ও এর প্রতি সম্মান দেখাতে সাহায্য করে” এবং “তাদের মণ্ডলীর উষ্ণতা ও আধ্যাত্মিকতায় অবদান রাখে।” এর কারণ হল এই স্কুলের গ্র্যাজুয়েটরা ঈশ্বরের বাক্যে যা লেখা রয়েছে, তা অনুসরণ করে এবং নিজেদের বিবেচনায় নির্ভর করে না বা নিজেদের দৃষ্টিতে জ্ঞানবান হয় না। (হিতোপদেশ ৩:৫-৭) এই পুরুষরা সেই মণ্ডলীগুলোর জন্য আশীর্বাদস্বরূপ হয়ে ওঠে, যেখানে তাদের কার্যভার দেওয়া হয়।
বিচ্ছিন্ন এলাকাগুলোতে সেবা করা
বিশেষ অগ্রগামী হিসেবে নিযুক্তকৃত কিছু গ্র্যাজুয়েট বিচ্ছিন্ন দলগুলোকে মণ্ডলী হয়ে উঠতে সহযোগিতা করে। তাদের সাহায্যের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে গুয়েতেমালার প্রত্যন্ত এলাকার একজন প্রাচীন বলেছিলেন: “২০ বছর ধরে, এই বিশাল এলাকার কীভাবে যত্ন নেওয়া হবে, সেই বিষয়টা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন ছিলাম। বিষয়টা নিয়ে আমি প্রায়ই প্রার্থনা করতাম। মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুল থেকে আসা ভাইয়েরা বক্তৃতা দেওয়ায় ও সেইসঙ্গে সাংগঠনিক ব্যাপারে সুপ্রশিক্ষিত আর এই এলাকার প্রতি যে এখন প্রেমপূর্ণ মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে, তা দেখে আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।”
গ্র্যাজুয়েটরা সেই এলাকাগুলোতে আরও কার্যকারী হতে শিখেছে, যেখানে ছড়িয়েছিটিয়ে থাকা ছোট ছোট গ্রামে পৌঁছাতে তাদেরকে পার্বত্য এলাকায় দীর্ঘ পথ ভ্রমণ করতে হয়। তারা খুব তাড়াতাড়ি সেখানে বিচ্ছিন্ন দল প্রতিষ্ঠা ও সংগঠিত করে, যদিও অন্যেরা তা করতে অসমর্থ হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, নাইজারের একজন প্রাচীন গ্র্যাজুয়েটদের সাহায্য চেয়ে অনুরোধ করেছিলেন কারণ তিনি মনে করেছিলেন যে, তিনি যে-এলাকায় থাকতেন সেখানে তারা চমৎকার কাজ করতে পারবে। বিশেষভাবে প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে অবিবাহিত পুরুষদের পক্ষে বিশেষ অগ্রগামী ও সীমা অধ্যক্ষ হিসেবে সেবা করা আরও সহজ হতে পারে। প্রেরিত পৌলের মতো তাদেরও ‘নদীসঙ্কটে, দস্যুসঙ্কটে, মরুসঙ্কটে’ পড়তে হয় এবং ব্যক্তিগত অসুবিধা ভোগ করতে হয় ও সেইসঙ্গে তারা যে-মণ্ডলীতে সেবা করে সেটার জন্য চিন্তাও থাকে।—২ করিন্থীয় ১১:২৬-২৮.
অল্পবয়সিদের উপকার করছে
শাস্ত্র অল্পবয়সিদের তাদের সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করতে জোরালো পরামর্শ দেয়। (উপদেশক ১২:১) মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুল এর উদ্যোগী গ্র্যাজুয়েটরা অল্পবয়সি খ্রিস্টানদের জন্য চমৎকার উদাহরণ। যুক্তরাষ্ট্রের একটা মণ্ডলীতে দুজন গ্র্যাজুয়েট আসার পর, সেই মণ্ডলীর ভাইবোনদের পরিচর্যায় ব্যবহৃত মোট সময় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল। অধিকন্তু, নিয়মিত অগ্রগামী বা পূর্ণসময়ের রাজ্য ঘোষণাকারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ২ জন থেকে ১১ জন হয়েছিল। অনেক মণ্ডলীতে এমনটাই ঘটেছে।
এ ছাড়া, গ্র্যাজুয়েটরা যুবকদেরকে মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুল-এ যোগ দেওয়ার বিষয়টা বিবেচনা করার জন্য উৎসাহিত করে। এটা করা, এখনও পর্যন্ত পরিচারক দাস
হয়নি এমন অনেককে সেই বিশেষ সুযোগ লাভ করার জন্য প্রচেষ্টা করতে প্রেরণা দিয়েছে। নেদারল্যান্ডসের শাখা অফিস মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুল এর গ্র্যাজুয়েটদেরকে “সেইসমস্ত যুবকের জন্য জীবন্ত উদাহরণ” বলে থাকে, “যারা তাদের জীবনের লক্ষ্য সম্বন্ধে পরিকল্পনা করছে।”বিদেশিভাষী মণ্ডলীগুলোতে সেবা করা
অনেক দেশে, লোকেদের কাছে তাদের মাতৃভাষায় সুসমাচার প্রচার করার বিভিন্ন প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত হচ্ছে। মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুল এর গ্র্যাজুয়েটরা প্রায়ই অন্যান্য ভাষা শিখে থাকে এবং সেই এলাকাগুলোতে কাজ করে, যেখানে বিপুল সংখ্যক অভিবাসী বাস করে। উদাহরণস্বরূপ, বেলজিয়ামে আলবানীয়, পারসীক ও রাশিয়ান ক্ষেত্রগুলোতে আরও বেশি রাজ্য ঘোষণাকারীর প্রয়োজন রয়েছে।
ইতালি, জার্মানি, ব্রিটেন, মেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের বিদেশিভাষী মণ্ডলী ও দলগুলো ইতিমধ্যেই সেইসমস্ত ভ্রমণ অধ্যক্ষ, প্রাচীন ও পরিচারক দাসদের কাছ থেকে প্রচুররূপে উপকৃত হয়েছে, যারা মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুল থেকে গ্র্যাজুয়েট হয়েছে। কোরিয়ার শাখা অফিস রিপোর্ট করে যে, “২০০ জনেরও বেশি গ্র্যাজুয়েট বিদেশিভাষী মণ্ডলী ও দলগুলোতে সাহায্য করায় এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।”
অন্যান্য ক্ষেত্রে নম্রভাবে সেবা করা
বিদেশিভাষী দল ও মণ্ডলীগুলোতে সেবা করা ছাড়াও, মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুল এর গ্র্যাজুয়েটরা প্রাচীন, পরিচারক দাস ও ভ্রমণ অধ্যক্ষ হিসেবে সেবা করে থাকে। কোনো শাখা অফিসের পরিচর্যা বিভাগের জরুরি প্রয়োজন মেটানোর জন্য কেউ কেউ হয়তো অন্য দেশে গিয়ে কার্যভার গ্রহণ করে। যারা নির্মাণ কাজে দক্ষতা অর্জন করেছে, তারা হয়তো কিংডম হল নির্মাণ কাজে অংশ নেয়।
বিশ্বব্যাপী মণ্ডলী ও সীমার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া দেখায় যে, ক্রমাগত আরও বেশি ভ্রমণ অধ্যক্ষের প্রয়োজন রয়েছে। এই প্রয়োজন পূরণে সাহায্য করার জন্য মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুল এর গ্র্যাজুয়েটদের মধ্য থেকে বাছাইকৃত ব্যক্তিরা ভ্রমণ কাজের ওপর দশ সপ্তাহের প্রশিক্ষণ পেয়ে থাকে আর তারপর বিকল্প অথবা নিয়মিত সীমা অধ্যক্ষ হিসেবে সেবা করে। বর্তমানে প্রায় ১,৩০০ জন গ্র্যাজুয়েট ৯৭টা দেশে ভ্রমণ অধ্যক্ষ হিসেবে সেবা করছে। আফ্রিকার একটা দেশে ৫৫ শতাংশেরও বেশি ভ্রমণ অধ্যক্ষ মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুল থেকে গ্র্যাজুয়েটপ্রাপ্ত। আফ্রিকার অন্য আরেকটা দেশে এই পরিমাণ ৭০ শতাংশ।
অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপ, কানাডা, সুদূর প্রাচ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে এই স্কুলের শত শত গ্র্যাজুয়েটকে অন্যান্য দেশের নির্দিষ্ট প্রয়োজনগুলো পূরণ করার জন্য পাঠানো হয়েছে। এভাবে এই স্কুল থেকে প্রাপ্ত উপকার বিশ্বব্যাপী প্রসারিত হয়েছে।
যিহোবা তাঁর পুত্র যিশু খ্রিস্টের মাধ্যমে সুসমাচার প্রচারক, পালক, শিক্ষক ও অন্যদের উৎপন্ন করেছেন, যারা এই শেষকালে রাজ্যের বিষয়গুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ঈশ্বরের লোকেদের সংখ্যা কি আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে? অবশ্যই! তাই, আরও বেশি দায়িত্ব লাভের জন্য প্রচেষ্টা করে এমন উৎসর্গীকৃত পুরুষদের বৃদ্ধিরত চাহিদা সবসময়ই থাকবে। (যিশাইয় ৬০:২২; ১ তীমথিয় ৩:১, ১৩) মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুল প্রাচীন ও পরিচারক দাসদের তাদের পরিচর্যাকে প্রসারিত করতে সজ্জিত হওয়ার জন্য এক সুযোগ প্রদান করে ও সেইসঙ্গে তাদের নিজেদের এবং বিশ্বব্যাপী ক্ষেত্রে অন্যদের প্রচুর উপকার করে।
[পাদটীকা]
^ যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত।
[১০ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]
মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুল বিশ্বব্যাপী রাজ্যের বিষয়গুলো এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে
[১৩ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]
আপনি কি মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুল-এ তালিকাভুক্ত হওয়ার ও তারপর অন্যদের উপকার করার আশা করেন?