সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

খ্রিস্টারি উন্মোচিত হয়

খ্রিস্টারি উন্মোচিত হয়

খ্রিস্টারি উন্মোচিত হয়

 আপনি যদি জানতে পারেন যে, আপনার এলাকায় ব্যাপকভাবে এক মহামারী ছড়িয়ে পড়েছে, তা হলে আপনি কীভাবে নিজেকে রক্ষা করবেন? আপনি সম্ভবত আপনার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করবেন এবং আক্রান্ত লোকেদের থেকে দূরে থাকবেন। আমাদের অবশ্যই আধ্যাত্মিক অর্থে একই বিষয় করতে হবে। শাস্ত্র আমাদের বলে যে, খ্রিস্টারি “জগতে আছে।” (১ যোহন ৪:৩) যদি আমরা “সংক্রমণ” এড়াতে চাই, তা হলে আমাদের অবশ্যই সেই রোগের ‘বাহককে’ শনাক্ত করতে হবে এবং পরিহার করতে হবে। আনন্দের বিষয় যে, বাইবেল এই বিষয়ের ওপর যথেষ্ট আলোকপাত করে থাকে।

“খ্রীষ্টারি” মানে “খ্রিস্টের বিরোধী (অথবা বিপরীত)।” তাই, ব্যাপক অর্থে এই শব্দটি তাদের সকলকে নির্দেশ করে, যারা খ্রিস্ট বা তাঁর প্রতিনিধিদের বিরোধিতা করে অথবা মিথ্যাভাবে নিজেদের তা-ই বলে দাবি করে। যিশু নিজে বলেছিলেন: “যে আমার সপক্ষ নয়, সে আমার বিপক্ষ, এবং যে আমার সহিত কুড়ায় না, সে ছড়াইয়া ফেলে।”—লূক ১১:২৩.

অবশ্য, যিশু মারা যাওয়ার এবং স্বর্গে পুনরুত্থিত হওয়ার ৬০ বছরের বেশি সময় পরে যোহন খ্রিস্টারি সম্বন্ধে লিখেছিলেন। তাই, খ্রিস্টারির কার্যকলাপকে অবশ্যই পৃথিবীতে যিশুর অনুগত অনুসারীদের কীভাবে তা প্রভাবিত করে, সেই আলোকে বুঝতে হবে।—মথি ২৫:৪০, ৪৫.

খ্রিস্টারি হল খ্রিস্টের অনুসারীদের বিরোধী

যিশু তাঁর অনুসারীদের সাবধান করেছিলেন যে, সমগ্র জগৎ তাদের দ্বেষ বা ঘৃণা করবে। তিনি বলেছিলেন: “লোকেরা ক্লেশ দিবার জন্য তোমাদিগকে সমর্পণ করিবে, ও তোমাদিগকে বধ করিবে, আর আমার নাম প্রযুক্ত সমুদয় জাতি তোমাদিগকে দ্বেষ করিবে। আর অনেক ভাক্ত ভাববাদী উঠিয়া অনেককে ভুলাইবে।”—মথি ২৪:৯, ১১.

যেহেতু যিশুর শিষ্যরা “[যিশুর] নাম প্রযুক্ত” তাড়িত হয়, তাই তাড়নাকারীরা স্পষ্টতই খ্রিস্টারি অর্থাৎ খ্রিস্টের বিরোধী। ‘ভাক্ত ভাববাদীরা,’ যাদের কেউ কেউ একসময় খ্রিস্টান ছিল, তারাও একই দলভুক্ত। (২ যোহন ৭) এই “অনেক খ্রীষ্টারি,” যোহন লিখেছিলেন, “তাহারা আমাদের হইতে বাহির হইয়াছে; কিন্তু আমাদের ছিল না; কেননা যদি আমাদের হইত, তবে আমাদের সঙ্গে থাকিত।”—১ যোহন ২:১৮, ১৯.

যিশু এবং যোহনের কথাগুলো স্পষ্টতই ইঙ্গিত দেয় যে, খ্রিস্টারি কোনো একজন ব্যক্তি নয় বরং আলাদা আলাদা অনেক খ্রিস্টারিকে নিয়ে গঠিত। অধিকন্তু, তারা যেহেতু ভাক্ত ভাববাদী, তাই তাদের প্রধান লক্ষ্যগুলোর মধ্যে একটা হল ধর্মীয় প্রতারণা। তাদের প্রতারণার কিছু দিক কী?

ধর্মীয় মিথ্যাগুলো ছড়ানো

প্রেরিত পৌল তার সহকর্মী তীমথিয়কে হুমিনায় ও ফিলীতের মতো ধর্মভ্রষ্টদের শিক্ষাগুলোর বিষয়ে সতর্ক থাকার ব্যাপারে জানিয়েছিলেন, যাদের “বাক্য গলিত ক্ষতের ন্যায়।” পৌল আরও বলেছিলেন: “ইহারা সত্যের সম্বন্ধে লক্ষ্যভ্রষ্ট হইয়াছে, বলিতেছে, পুনরুত্থান হইয়া গিয়াছে, এবং কাহারও কাহারও বিশ্বাস উল্টাইয়া ফেলিতেছে।” (২ তীমথিয় ২:১৬-১৮) স্পষ্টতই, হুমিনায় ও ফিলীত শিক্ষা দিয়েছিল যে, পুনরুত্থান ছিল রূপক এক বিষয় আর খ্রিস্টানরা ইতিমধ্যেই আধ্যাত্মিক অর্থে পুনরুত্থিত হয়ে গিয়েছে। এটা সত্যি যে, যিশুর একজন প্রকৃত শিষ্য হওয়া মানে হল, সেই ব্যক্তি ঈশ্বরের দৃষ্টিকোণ থেকে জীবিত হন, যা পৌল নিজেও স্পষ্টভাবে বলেছিলেন। (ইফিষীয় ২:১-৫) তবে, হুমিনায় ও ফিলীতের শিক্ষা, ঈশ্বরের রাজ্যের শাসনাধীনে মৃতদের সত্যিকারের পুনরুত্থানের বিষয়ে যিশুর প্রতিজ্ঞাকে অবজ্ঞা করেছিল।—যোহন ৫:২৮, ২৯.

পুরোপুরিভাবে এক রূপক পুনরুত্থানের ধারণাগুলো পরবর্তী সময়ে খ্রিস্টীয় রহস্যবাদী (নোসটিক্‌স) নামে একটা দলের দ্বারা সম্প্রসারিত হয়েছিল। বিশ্বাস করা হতো যে, জ্ঞান (গ্রিক ভাষায় নোসিস) এক দুর্বোধ্য উপায়ে লাভ করা যেতে পারে, খ্রিস্টীয় রহস্যবাদীরা ধর্মভ্রষ্ট খ্রিস্টধর্মকে গ্রিক দর্শনবাদ ও প্রাচ্যের অতীন্দ্রিয়বাদের সঙ্গে মিশ্রিত করেছিল। উদাহরণ হিসেবে, তারা বিশ্বাস করত যে, সমস্ত ভৌত বিষয়ই মন্দ আর সেই কারণেই যিশু মাংসিকভাবে আসেননি কিন্তু কেবলমাত্র এমনটা মনে হয়েছিল যেন তাঁর এক মানবদেহ ছিল। আমরা যেমন দেখেছি যে, প্রেরিত যোহন ঠিক এর বিরুদ্ধেই সাবধান করেছিলেন।—১ যোহন ৪:২, ৩; ২ যোহন ৭.

কয়েক শতাব্দী পর আরেকটা মিথ্যা উদ্ভব হয়েছিল আর তা হল তথাকথিত পবিত্র ত্রিত্বের মতবাদ, যা দাবি করে যে, যিশু হলেন উভয়ই অর্থাৎ সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এবং ঈশ্বরের পুত্র। ড. আ্যলভান লামসেন তার প্রথম তিন শতাব্দীর গির্জা (ইংরেজি) নামে বইয়ে বলেন যে, ত্রিত্বের মতবাদের “উৎপত্তি এমন এক উৎস থেকে যার সঙ্গে যিহুদি ও খ্রিস্টীয় শাস্ত্রের কোনো সম্পর্কই ছিল না; এটা প্লেটোর দর্শনে বিশ্বাসী পাদরিরা তৈরি করেছিল ও খ্রিস্টধর্মে ঢুকিয়ে দিয়েছিল।” এই “প্লেটোর দর্শনে বিশ্বাসী পাদরিরা” কারা ছিল? তারা ছিল ধর্মভ্রষ্ট যাজক, যারা পৌত্তলিক গ্রিক দার্শনিক প্লেটোর শিক্ষাগুলোর দ্বারা আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল।

ত্রিত্বের বিষয়টা ঢুকিয়ে দেওয়া খ্রিস্টারিদের অতিশয় নিপুণ এক কাজ ছিল, কারণ এই মতবাদ ঈশ্বরকে এক রহস্যে আবৃত করেছে এবং পুত্রের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ককে দুর্বোধ্য করেছে। (যোহন ১৪:২৮; ১৫:১০; কলসীয় ১:১৫) একটু চিন্তা করুন, ঈশ্বর যদি এক রহস্যই হয়ে থাকেন, তা হলে কীভাবে একজন ব্যক্তি ‘ঈশ্বরের নিকটবর্ত্তী হইবে,’ যেমনটা শাস্ত্রে উৎসাহিত করা হয়েছে?—যাকোব ৪:৮.

বিভ্রান্তি আরও বৃদ্ধি পায় কারণ অনেক বাইবেল অনুবাদক তাদের অনুবাদগুলো থেকে ঈশ্বরের নাম যিহোবা সরিয়ে দিয়েছে, যদিও মূল পাঠ্যাংশে এই নাম ৭,০০০ বারেরও বেশি পাওয়া যায়! স্পষ্টতই, সর্বশক্তিমানকে কেবল এক রহস্যেই নয় বরং তাঁকে এক নামহীন রহস্যে পরিণত করার প্রচেষ্টা, আমাদের সৃষ্টিকর্তা এবং তাঁর অনুপ্রাণিত বাক্যের প্রতি এক চরম অসম্মানজনক কাজ। (প্রকাশিত বাক্য ২২:১৮, ১৯) অধিকন্তু, ঐশিক নামের জায়গায় প্রভু এবং ঈশ্বর এই উপাধিগুলো স্থাপন করাটা যিশুর আদর্শ প্রার্থনার এই কথাগুলোকে লঙ্ঘন করে: “তোমার নাম পবিত্র বলিয়া মান্য হউক।”—মথি ৬:৯.

খ্রিস্টারিরা ঈশ্বরের রাজ্যকে প্রত্যাখ্যান করে

খ্রিস্টারিরা বিশেষভাবে এই “শেষ কালে” সক্রিয় হয়ে উঠেছে, যে-সময়টাতে আমরা এখন বাস করছি। (২ তীমথিয় ৩:১) আধুনিক দিনের এই প্রতারকদের একটা প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে ঈশ্বরের রাজ্যের রাজা হিসেবে যিশুর ভূমিকার বিষয়ে লোকেদের বিভ্রান্ত করা, যে-রাজ্য হল এক স্বর্গীয় সরকার, যা শীঘ্রই পুরো পৃথিবীর ওপর শাসন করবে।—দানিয়েল ৭:১৩, ১৪; প্রকাশিত বাক্য ১১:১৫.

উদাহরণ হিসেবে, কিছু ধর্মীয় নেতা প্রচার করে যে, ঈশ্বরের রাজ্য হচ্ছে মানুষের হৃদয়ের এক অবস্থা অথচ এটা এমন এক দৃষ্টিভঙ্গি, যেটার কোনো শাস্ত্রীয় ভিত্তি নেই। (দানিয়েল ২:৪৪) অন্যেরা দাবি করে যে, খ্রিস্ট মানব সরকার ও প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমেই কাজ করছেন। কিন্তু, যিশু বলেছিলেন: “আমার রাজ্য এ জগতের নয়।” (যোহন ১৮:৩৬) বস্তুতপক্ষে খ্রিস্ট নয়, শয়তানই হচ্ছে “জগতের অধিপতি” এবং “এই যুগের দেব।” (যোহন ১৪:৩০; ২ করিন্থীয় ৪:৪) তাই এটা বোঝা যায় যে, কী কারণে যিশু শীঘ্রই সমস্ত মানব সরকারকে দূর করবেন এবং পৃথিবীর একমাত্র শাসক হবেন। (গীতসংহিতা ২:২, ৬-৯; প্রকাশিত বাক্য ১৯:১১-২১) লোকেরা সেই অবস্থার জন্যই প্রার্থনা করে থাকে যখন তারা প্রভুর প্রার্থনা মুখস্থ বলে, যেটি জানায়: “তোমার রাজ্য আইসুক, তোমার ইচ্ছা সিদ্ধ হউক, . . . পৃথিবীতেও হউক।”—মথি ৬:১০.

যেহেতু অনেক ধর্মীয় নেতা জগতের রাজনৈতিক বিষয়গুলো সমর্থন করে, তাই তারা সেই ব্যক্তিদের বিরোধিতা এমনকি তাড়না করেছে, যারা ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধে সত্য ঘোষণা করে। আগ্রহের বিষয় যে, বাইবেলের প্রকাশিত বাক্য বই এক রূপক বেশ্যা—“মহতী বাবিল”—সম্বন্ধে উল্লেখ করে, যে “পবিত্রগণের রক্তে ও যীশুর সাক্ষিগণের রক্তে মত্তা।” (প্রকাশিত বাক্য ১৭:৪-৬) এ ছাড়া, সে পৃথিবীর ‘রাজগণের’ বা রাজনৈতিক শাসকদের প্রতি তার সমর্থন প্রদান করে আধ্যাত্মিক বেশ্যাক্রিয়ায় লিপ্ত হয়, যার ফলে প্রতিদানে সে তাদের আনুকূল্য লাভ করে। এই প্রতীকী নারী পৃথিবীর মিথ্যা ধর্মগুলো ছাড়া আর কিছুই নয়। সে হচ্ছে খ্রিস্টারির এক প্রধান অংশ।—প্রকাশিত বাক্য ১৮:২, ৩; যাকোব ৪:৪.

খ্রিস্টারি ‘কাণচুল্‌কানি দেয়’

বাইবেলের সত্য প্রত্যাখ্যান করার সঙ্গে সঙ্গে নামধারী অনেক খ্রিস্টান, প্রচলিত নৈতিক মানের কারণে আচরণের বিষয়ে বাইবেলের মানগুলোকে অস্বীকার করেছে। ঈশ্বরের বাক্য এই বিষয়ের বিস্তার সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করে বলে: “এমন সময় আসিবে, যে সময় লোকেরা নিরাময় শিক্ষা সহ্য করিবে না, কিন্তু কাণচুল্‌কানি-বিশিষ্ট হইয়া আপন আপন অভিলাষ অনুসারে আপনাদের জন্য রাশি রাশি গুরু ধরিবে।” (২ তীমথিয় ৪:৩) এ ছাড়া, এই ধর্মীয় প্রবঞ্চকদের এই বলেও বর্ণনা করা হয় যে, তারা “ভাক্ত প্রেরিত, প্রতারক কর্ম্মকারী, তাহারা খ্রীষ্টের প্রেরিতদের বেশ ধারণ করে।” বাইবেল আরও বলে: “তাহাদের পরিণাম তাহাদের ক্রিয়ানুসারে হইবে।”—২ করিন্থীয় ১১:১৩-১৫.

তাদের ক্রিয়া বা কাজগুলোর অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে, ‘স্বৈরাচার’ বা লম্পটতা, যা হল উচ্চ নৈতিক মানগুলোর প্রতি এক চরম অবমাননা। (২ পিতর ২:১-৩, ১২-১৪) আমরা কি ধর্মীয় নেতাদের এবং তাদের অনুসারীদের এক ক্রমবর্ধমান সংখ্যা দেখছি না, যারা অখ্রিস্টীয় অভ্যাসগুলো, যেমন সমকামিতা এবং বিয়ের বাইরে যৌনসম্পর্কে লিপ্ত হচ্ছে বা সেগুলো প্রশ্রয় দিচ্ছে? দয়া করে, ব্যাপকভাবে গৃহীত এইসব দৃষ্টিভঙ্গি ও জীবনধারার সঙ্গে বাইবেলের লেবীয় পুস্তক ১৮:২২; রোমীয় ১:২৬, ২৭; ১ করিন্থীয় ৬:৯, ১০; ইব্রীয় ১৩:৪ এবং যিহূদা ৭ পদগুলোতে যা বলা হয়েছে, সেগুলোর তুলনা করার জন্য একটু সময় করে নিন।

“আত্মা সকলের পরীক্ষা করিয়া দেখ”

উপরোক্ত বিষয়গুলোর পরিপ্রেক্ষিতে, আমাদের নিজস্ব ধর্মীয় বিশ্বাসগুলো হালকাভাবে না নেওয়ার জন্য প্রেরিত যোহনের কথাগুলোতে আমাদের মনোযোগ দেওয়া উচিত। “তোমরা সকল আত্মাকে বিশ্বাস করিও না,” তিনি সতর্ক করেন, “বরং আত্মা সকলের পরীক্ষা করিয়া দেখ, তাহারা ঈশ্বর হইতে কি না; কারণ অনেক ভাক্ত ভাববাদী জগতে বাহির হইয়াছে।”—১ যোহন ৪:১.

প্রথম শতাব্দীতে বিরয়া নগরে বাস করত এমন কয়েক জন “ভদ্র” লোকের উত্তম উদাহরণ বিবেচনা করুন। তারা “সম্পূর্ণ আগ্রহপূর্ব্বক বাক্য গ্রহণ করিল, আর এ সকল [পৌল এবং সীল যা বলেছিল] বাস্তবিকই এইরূপ কি না, তাহা জানিবার জন্য প্রতিদিন শাস্ত্র পরীক্ষা করিতে লাগিল।” (প্রেরিত ১৭:১০, ১১) হ্যাঁ, যদিও তারা জানতে আগ্রহী ছিল কিন্তু বিরয়ার লোকেরা এই বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে নিয়েছিল যে, তারা যা শুনেছিল এবং গ্রহণ করেছিল সেগুলো দৃঢ়ভাবে শাস্ত্রের ওপর ভিত্তি করে ছিল।

আজকেও, প্রকৃত খ্রিস্টানরা প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গির উত্থান-পতনের দ্বারা প্রভাবিত হয় না, বরং তারা বাইবেলের সত্যের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে লেগে থাকে। প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “আমি এই প্রার্থনা করিয়া থাকি, তোমাদের প্রেম যেন তত্ত্বজ্ঞানে ও সর্ব্বপ্রকার সূক্ষ্মচৈতন্যে উত্তর উত্তর উপচিয়া পড়ে।”—ফিলিপীয় ১:৯.

যদি আপনি ইতিমধ্যেই তা করে না থাকেন, তা হলে বাইবেল প্রকৃতপক্ষে যা শিক্ষা দেয়, তা জানার মাধ্যমে তত্ত্বজ্ঞান ও সর্ব্বপ্রকার সূক্ষ্মচৈতন্য’ লাভ করাকে আপনার লক্ষ্য করে তুলুন। যারা বিরয়ার লোকেদের অনুকরণ করে, তারা খ্রিস্টারিদের “কল্পিত বাক্য” দ্বারা প্রতারিত হয় না। (২ পিতর ২:৩) এর পরিবর্তে, তারা প্রকৃত খ্রিস্ট ও তাঁর সত্য অনুসারীদের আধ্যাত্মিক সত্যের দ্বারা স্বাধীন।—যোহন ৮:৩২, ৩৬.

[৪ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্র]

খ্রিস্টারি সম্বন্ধে বাইবেল যা বলে

“শিশুগণ, শেষকাল [স্পষ্টতই, প্রেরিতদের সময়কালের শেষ] উপস্থিত, আর তোমরা যেমন শুনিয়াছ যে, খ্রীষ্টারি আসিতেছে, তেমনি এখনই অনেক খ্রীষ্টারি হইয়াছে।”—১ যোহন ২:১৮.

“যীশুই খ্রীষ্ট, ইহা যে অস্বীকার করে, সে বই আর মিথ্যাবাদী কে? সেই ব্যক্তি খ্রীষ্টারি, যে পিতাকে ও পুত্ত্রকে অস্বীকার করে।”—১ যোহন ২:২২.

“যে কোন আত্মা যীশুকে স্বীকার না করে, সে ঈশ্বর হইতে নয়; আর তাহাই খ্রীষ্টারির আত্মা, যাহার বিষয়ে তোমরা শুনিয়াছ যে, তাহা আসিতেছে, এবং সম্প্রতি তাহা জগতে আছে।”—১ যোহন ৪:৩.

“অনেক ভ্রামক জগতে বাহির হইয়াছে; যীশু খ্রীষ্ট মাংসে আগমন করিয়াছেন, ইহা তাহারা স্বীকার করে না; এই ত সেই ভ্রামক ও খ্রীষ্টারি।”—২ যোহন ৭.

[৫ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্রগুলো]

বিভিন্ন বেশধারী এক প্রতারক

যারা যিশু খ্রিস্ট সম্বন্ধে বাইবেল যা বলে তা অস্বীকার করে, তাঁর রাজ্যের বিরোধিতা করে এবং তাঁর অনুসারীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে, তাদের সকলের প্রতি “খ্রীষ্টারি” শব্দটি প্রযোজ্য। এ ছাড়া এই আখ্যা সেইসব ব্যক্তিকে, সংগঠনকে এবং জাতিকে অন্তর্ভুক্ত করে, যারা মিথ্যাভাবে খ্রিস্টকে প্রতিনিধিত্ব করার দাবি করে অথবা যারা উদ্ধতভাবে সেই বিষয়গুলো অর্জন করার প্রতিজ্ঞা করে মশীহের ভূমিকাকে অনুপযুক্তভাবে নিজেরা গ্রহণ করে, যা কিনা একমাত্র খ্রিস্টই করতে পারেন আর তা হল প্রকৃত শান্তি ও নিরাপত্তা নিয়ে আসা।

[সৌজন্যে]

অগাস্টিন: ©SuperStock/age fotostock

[৭ পৃষ্ঠার চিত্র]

বিরয়ার লোকেদের মতো আমাদের ‘প্রতিদিন শাস্ত্র পরীক্ষা করা’ উচিত