আপনি যেভাবে সফল হতে পারেন
আপনি যেভাবে সফল হতে পারেন
ঠিক যেমন বাবামায়েরা তাদের সন্তানদের জন্য চিন্তা করে ও চায় তারা যেন সফল হয়, তেমনই আমাদের স্বর্গীয় পিতা আমাদের জন্য চিন্তা করেন এবং চান যেন আমরা সফল হই। তাঁর কোমল যত্নের প্রকাশ হিসেবে, তিনি সাফল্য ও ব্যর্থতা সম্বন্ধে আমাদের প্রচুর তথ্য প্রদান করেন। বস্তুতপক্ষে, ঈশ্বর যা বলেন সেটার প্রতি মনোযোগ দেন এমন একজন ব্যক্তি সম্বন্ধে বলতে গিয়ে বাইবেল আস্থার সঙ্গে বলে: “সে যাহা কিছু করে, তাহাতেই কৃতকার্য্য হয়” বা সফল হয়।—গীতসংহিতা ১:৩.
যদি তা-ই হয়ে থাকে, তা হলে কেন এক সফল, সুখী ও পরিতৃপ্তিদায়ক জীবন অনেকের ধরাছোঁয়ার বাইরে? বাইবেলের এই গীতটি আরও ভালভাবে পরীক্ষা করা আমাদেরকে এর উত্তর দেবে এবং দেখাবে যে, কীভাবে আমরাও সফল হতে পারি।
‘দুষ্টদের মন্ত্রণা’
গীতরচক “দুষ্টদের মন্ত্রণায়” চলার বিপদ সম্বন্ধে সতর্ক করেন। (গীতসংহিতা ১:১) শয়তান দিয়াবল হল সবচেয়ে “মন্দ” বা দুষ্ট ব্যক্তি। (মথি ৬:১৩) শাস্ত্র আমাদের বলে যে, সে “এ জগতের অধিপতি” এবং “সমস্ত জগৎ সেই পাপাত্মার মধ্যে শুইয়া রহিয়াছে।” (যোহন ১৬:১১; ১ যোহন ৫:১৯) তাই এতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই যে, এই জগৎ থেকে পাওয়া মন্ত্রণা বা পরামর্শ সেই দুষ্ট ব্যক্তির চিন্তাভাবনাকে প্রতিফলিত করে।
দুষ্টরা কোন ধরনের উপদেশ দিয়ে থাকে? সাধারণত, দুষ্ট লোকেরা ঈশ্বরকে অবজ্ঞা করে। (গীতসংহিতা ১০:১৩) তাদের পরামর্শ, যা ঈশ্বরকে উপেক্ষা বা অবজ্ঞা করে, তা সর্বত্রই পাওয়া যায়। আধুনিক সমাজ ‘মাংসের অভিলাষ, চক্ষুর অভিলাষ, ও জীবিকার দর্পকে’ জাগিয়ে তোলে। (১ যোহন ২:১৬) “আপনি জীবনে যা পেতে পারেন, তার সমস্তকিছুই লাভ করুন” এই বস্তুবাদী দর্শনবিদ্যার দ্বারা প্রচারমাধ্যম আমাদেরকে জর্জরিত করে। বিশ্বব্যাপী কোম্পানিগুলো লোকেদেরকে তাদের উৎপাদিত পণ্য—তা ক্রেতাদের সেগুলো প্রয়োজন থাকুক বা না-ই থাকুক—কিনতে প্ররোচিত করার জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়ার পিছনে বছরে ৫০,০০০ কোটিরও বেশি ডলার (মার্কিন) ব্যয় করে থাকে। আর এই প্রচারণা কেবলমাত্র লোকেদের কেনাকাটার অভ্যাস পরিবর্তন করার চেয়েও আরও বেশি কিছু করেছে। এটা সাফল্য সম্বন্ধে জগতের দৃষ্টিভঙ্গিকে বিকৃত করেছে।
ফলস্বরূপ, যদিও অনেকের সেই বিষয়গুলো রয়েছে, যেগুলোর ব্যাপারে কয়েক বছর আগে তারা কেবল স্বপ্নই দেখতে পারত কিন্তু তারপরও তাদের আরও বস্তুগত বিষয় লাভ করার এক অতৃপ্ত আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। অনুভূতিটা এইরকম যে, এই বিষয়গুলো না পাওয়া পর্যন্ত আপনি সুখী বা সফল কোনোটাই হতে পারবেন না। এই ধরনের চিন্তাভাবনা মিথ্যা আর তা “পিতা হইতে নয়, কিন্তু জগৎ হইতে হইয়াছে।”—১ যোহন ২:১৬.
আমাদের সৃষ্টিকর্তা জানেন যে, কোন বিষয়টা আমাদের প্রকৃতপক্ষে রোমীয় ১২:২, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন।
সফল করবে। তাঁর পরামর্শ ‘দুষ্টদের মন্ত্রণা’ থেকে আলাদা। তাই, সাফল্য লাভ করার জন্য জগতের পথে চলার সঙ্গে সঙ্গে ঈশ্বরের আশীর্বাদ লাভ করার চেষ্টা করা হল, একই সময়ে দুটো ভিন্ন পথে চলার চেষ্টা করার মতো। তা একেবারেই করা যায় না। তাই, এতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই যে, বাইবেল সতর্ক করে: “এখানকার মন্দ জগতের চালচলনের মধ্যে তোমরা নিজেদের ডুবিয়ে দিয়ো না”!—জগতের ধাঁচে নিজেকে গড়তে দেবেন না
শয়তানের প্রভাবাধীন জগৎ আমাদের মঙ্গলের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাতে চেষ্টা করে বলে মনে হয়। কিন্তু, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। মনে রাখবেন যে, শয়তান স্বীয়স্বার্থে প্রথম নারী হবাকে প্ররোচিত করেছিল। তারপর সে আদমকে পাপের পথে চালিত করার জন্য সেই নারীকে ব্যবহার করেছিল। আজকেও শয়তান তার মন্দ পরামর্শ দেওয়ার জন্য মানুষকে ব্যবহার করে।
উদাহরণস্বরূপ, আগের প্রবন্ধে উল্লেখিত ডেভিডকে অতিরিক্ত সময় কাজ করতে ও ঘন ঘন ব্যবসায়িক সফরে যেতে বলা হয়েছিল। “আমি প্রতি সোমবার ভোরে বেরিয়ে যেতাম এবং বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফিরে আসতাম,” ডেভিড বলেছিলেন। জাগতিক সাফল্য অর্জন করার জন্য এই ধরনের ত্যাগস্বীকার যে আবশ্যক তা চিন্তা করে ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব, পরিবারের সদস্যরা ও সহকর্মীরা ডেভিডকে পরামর্শ দিয়েছিল: “তোমার পরিবারের স্বার্থে তা করো।” তারা যুক্তি দেখিয়েছিল যে, প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে পর্যন্ত কেবলমাত্র কয়েক বছরের জন্যই তাকে এই ধরনের এক তালিকা বজায় রাখতে হবে। ডেভিড ব্যাখ্যা করেছিলেন: “তারা যুক্তি দেখিয়েছিল যে, এটা আমার পরিবারের জন্য আরও ভাল হবে কারণ আমি ঘরের জন্য আরও বেশি টাকাপয়সা রোজগার করতে পারব—আমি আরও সফল হতে পারব। যদিও আমি আমার পরিবারের সঙ্গে ছিলাম না কিন্তু আমার বন্ধুবান্ধব আমাকে এমনটা বিশ্বাস করতে পরিচালিত করেছিল যে, আমি আসলে আমার পরিবারকে আরও বেশি কিছু দিচ্ছিলাম।” ডেভিডের মতো আরও অনেক ব্যক্তিই তাদের পরিবারকে সেই সমস্তকিছু দেওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে, যেগুলো তাদের প্রিয়জনদের প্রয়োজন রয়েছে বলে তারা চিন্তা করে থাকে। কিন্তু এই ধরনের উপদেশ অনুসরণ করা কি সাফল্যের দিকে পরিচালিত করে? একটা পরিবারের জন্য আসলে কোন বিষয়টা প্রয়োজন?
একটা ব্যবসায়িক সফরে থাকার সময়ে ডেভিড সেই প্রয়োজনটা বুঝতে পেরেছিলেন। “আমি আমার মেয়ে আ্যঞ্জেলিকার সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলাম, যে বলেছিল: ‘বাবা, তুমি আমাদের সঙ্গে ঘরে থাকতে চাও না কেন?’ সেটা প্রচণ্ড কষ্টদায়ক ছিল,” ডেভিড বলেছিলেন। তার মেয়ের মন্তব্য ইস্তফা দেওয়ার জন্য তার ইচ্ছাকে শক্তিশালী করেছিল। ডেভিড তার পরিবারকে সেই বিষয়টাই দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যা তাদের আসলেই প্রয়োজন ছিল—তাকেই তাদের প্রয়োজন ছিল।
ঈশ্বরের পরামর্শ প্রয়োগ করা সাফল্য নিয়ে আসে
কীভাবে আপনি এই জগতে অবাধে প্রচলিত নেতিবাচক প্রচারণাকে প্রতিরোধ করতে পারেন? গীতরচক আমাদের বলেন যে সেই ব্যক্তিই সফল ও সুখী, যে “সদাপ্রভুর ব্যবস্থায় আমোদ করে, তাঁহার ব্যবস্থা দিবারাত্র ধ্যান করে।”—গীতসংহিতা ১:২.
ঈশ্বর যখন যিহোশূয়কে ইস্রায়েল জাতির নেতা হিসেবে নিযুক্ত করেছিলেন, তখন তাকে বলা হয়েছিল: “তুমি দিবারাত্র [ঈশ্বরের বাক্য] ধ্যান কর।” হ্যাঁ, ঈশ্বরের বাক্য পড়া ও তা নিয়ে ধ্যান করা অপরিহার্য ছিল কিন্তু সেইসঙ্গে যিহোশূয়কে ‘তন্মধ্যে যাহা যাহা লিখিত [ছিল], যত্নপূর্ব্বক সেই সকলের যিহোশূয়ের পুস্তক ১:৮.
অনুযায়ী কর্ম্ম করিতে হইয়াছিল।’ অবশ্য, বাইবেল পড়লেই যে আপনি এমনি এমনিই সাফল্য লাভ করবেন, তা নয়। আপনি যা পড়েন, সেগুলো কাজে প্রয়োগ করতে হবে। যিহোশূয়কে বলা হয়েছিল: “তাহা করিলে তোমার শুভগতি হইবে ও তুমি বুদ্ধিপূর্ব্বক চলিবে।”—কল্পনা করুন যে, একটা হাসিখুশি বাচ্চা একজন প্রেমময় বাবা অথবা মায়ের কোলে বসে একসঙ্গে একটা প্রিয় গল্প পড়ছে। এর আগে যতবারই তারা সেটা পড়ে থাকুক না কেন, তারা এই ধরনের মুহূর্তগুলোকে মূল্যবান বলে গণ্য করে। একইভাবে, যে-ব্যক্তি ঈশ্বরকে ভালবাসেন, তিনি প্রতিদিন বাইবেল পড়াকে এক আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা—তার স্বর্গীয় পিতার সঙ্গে এক উপভোগ্য সময় ব্যয় করা—বলে মনে করেন। যিহোবার পরামর্শ ও নির্দেশনা অনুসরণ করার মাধ্যমে এই ধরনের একজন ব্যক্তি “জলস্রোতের তীরে রোপিত বৃক্ষের সদৃশ” হয়ে ওঠে, “যাহা যথাসময়ে ফল দেয়, যাহার পত্র ম্লান হয় না; আর সে যাহা কিছু করে, তাহাতেই কৃতকার্য্য হয়।”—গীতসংহিতা ১:৩.
গীতরচকের দ্বারা বর্ণিত গাছটা হঠাৎ করেই অঙ্কুরিত হয় না। এটাকে সতর্কতার সঙ্গে জলাশয়ের তীরে রোপণ করা হয়েছে এবং কৃষকের যত্নাধীনে রাখা হয়েছে। একইভাবে, আমাদের স্বর্গীয় পিতা আমাদের চিন্তাভাবনাকে শাস্ত্রে প্রাপ্ত পরামর্শের মাধ্যমে রদবদল ও সংশোধন করেন। ফলস্বরূপ, আমরা সমৃদ্ধি লাভ করি এবং ঈশ্বরীয় ফলগুলো উৎপন্ন করি।
কিন্তু, “দুষ্টগণ সেরূপ নহে।” এটা ঠিক যে, একটা সময়ের জন্য তারা সমৃদ্ধি লাভ করে বলে মনে হয় কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের পরিণতি খারাপ হয়। তারা “বিচারে দাঁড়াইবে না।” এর পরিবর্তে, “দুষ্টদের পথ বিনষ্ট হইবে।”—গীতসংহিতা ১:৪-৬.
তাই, আপনার লক্ষ্য ও মূল্যবোধগুলোকে জগতের ধাঁচে গড়তে দেবেন না। আপনার হয়তো মেধা রয়েছে ও এই জগতে সাফল্য লাভ করার সম্ভাবনা রয়েছে কিন্তু আপনি কীভাবে আপনার মেধাকে ব্যবহার করেন অথবা কীভাবে জগৎকে তা ব্যবহার করতে দেন, সেই বিষয়ে সতর্ক থাকুন। নিষ্ফল, বস্তুগত বিষয়ের পিছনে ছোটা একজন ব্যক্তিকে “ম্লান” করে দিতে পারে। অন্যদিকে, ঈশ্বরের সঙ্গে এক সুন্দর সম্পর্ক প্রকৃত সাফল্য ও সুখ নিয়ে আসে।
আপনি যেভাবে সফল হতে পারেন
ঈশ্বরের পরামর্শ অনুসরণ করলে কেন একজন ব্যক্তি যা কিছুই করেন, তাতেই সফল হন? গীতরচক এই জগতের সাফল্য সম্বন্ধে কথা বলছিলেন না। একজন ধার্মিক ব্যক্তির সাফল্য ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত—আর ঈশ্বরের ইচ্ছা সবসময়ই সফল হয়। আসুন আমরা লক্ষ করি যে, কীভাবে বাইবেলের নীতিগুলো প্রয়োগ করা আপনাকে সফল করতে পারে।
পরিবার: শাস্ত্র স্বামীদেরকে “আপন আপন স্ত্রীকে আপন আপন দেহ বলিয়া প্রেম করিতে” পরামর্শ দেয় এবং একজন খ্রিস্টান স্ত্রীকে তার ‘স্বামীকে ভয় [“সম্মান,” বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন] করিতে’ নির্দেশ দেয়। (ইফিষীয় ৫:২৮, ৩৩) বাবামাদেরকে তাদের সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটানোর, তাদের সঙ্গে হাসিঠাট্টা করার ও তাদেরকে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো শিক্ষা দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে। (দ্বিতীয় বিবরণ ৬:৬, ৭; উপদেশক ৩:৪) এ ছাড়া, ঈশ্বরের বাক্য বাবামাদের পরামর্শ দেয়: “আপন আপন সন্তানদিগকে ক্রুদ্ধ করিও না।” এই পরামর্শ প্রয়োগ করা হলে সন্তানদের পক্ষে ‘[তাহাদের] পিতামাতার আজ্ঞাবহ হওয়া’ এবং ‘[তাহাদের] পিতাকে ও মাতাকে সমাদর করা’ আরও সহজ হয়। (ইফিষীয় ৬:১-৪) এই ঐশিক পরামর্শ অনুসরণ করা পারিবারিক জীবনে সাফল্য নিয়ে আসতে পারে।
বন্ধুবান্ধব: অধিকাংশ লোকই বন্ধু চায়। আমাদের অন্যদেরকে ভালবাসার এবং তাদের ভালবাসা পাওয়ার মানসিক ও আবেগগত ক্ষমতা রয়েছে। যিশু তাঁর অনুসারীদের বলেছিলেন যে, তাদের ‘পরস্পর প্রেম করা’ উচিত। (যোহন ১৩:) আমরা তাদের মধ্যে থেকেই বন্ধু খুঁজে থাকি, যাদেরকে আমরা ভালবাসতে ও যাদের ওপর নির্ভর করতে পারি—এমনকি আমাদের মনের গভীরের চিন্তাভাবনা ও অনুভূতি বলতে পারি। ( ৩৪, ৩৫হিতোপদেশ ১৮:২৪) সর্বোপরি, বাইবেলের নীতিগুলো প্রয়োগ করার মাধ্যমে আমরা ‘ঈশ্বরের নিকটবর্ত্তী হইতে’ পারি এবং অব্রাহামের মতো এমনকি “ঈশ্বরের বন্ধু” নাম পেতে পারি।—যাকোব ২:২৩; ৪:৮.
জীবনের উদ্দেশ্য: যারা সত্যিকার অর্থেই সফল, তারা এক লক্ষ্যহীন জীবনযাপন করার পরিবর্তে, জীবনের অর্থ ও উদ্দেশ্য খুঁজে থাকে। তাদের জীবন এই বিধিব্যবস্থার অস্থায়ী পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে নয়। তাদের লক্ষ্যগুলো বাস্তব ও স্থায়ী পরিতৃপ্তির দিকে পরিচালিত করে কারণ সেগুলো প্রকৃত জীবনের উদ্দেশ্যকে ঘিরে আবর্তিত। কী একজনকে জীবনের উদ্দেশ্য প্রদান করতে পারে? “ঈশ্বরকে ভয় কর, ও তাঁহার আজ্ঞা সকল পালন কর, কেননা ইহাই সকল মনুষ্যের কর্ত্তব্য।”—উপদেশক ১২:১৩.
আশা: ঈশ্বরকে আমাদের বন্ধু হিসেবে লাভ করা আমাদেরকে ভবিষ্যতের আশাও প্রদান করে থাকে। প্রেরিত পৌল খ্রিস্টানদের ‘ধনের অস্থিরতার উপরে নয়, কিন্তু ঈশ্বরেরই উপরে প্রত্যাশা রাখিতে’ জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন। এভাবে তারা ‘আপনাদের নিমিত্ত ভাবীকালের জন্য উত্তম ভিত্তিমূলস্বরূপ নিধি প্রস্তুত করিতে’ পারবে “যেন, যাহা প্রকৃতরূপে জীবন, তাহাই ধরিয়া রাখিতে পারে।” (১ তীমথিয় ৬:১৭-১৯) এই প্রকৃত জীবন শীঘ্রই আসবে, যখন ঈশ্বরের স্বর্গীয় রাজা এই পৃথিবীতে পরমদেশ পুনর্স্থাপন করবেন।—লূক ২৩:৪৩.
বাইবেলের পরামর্শ প্রয়োগ করলে আপনি সমস্যা থেকে মুক্ত হয়ে যাবেন না কিন্তু আপনি এমন অনেক মনোব্যথা ও দুঃখকষ্ট এড়াতে সমর্থ হবেন, যেগুলো দুষ্টরা নিজেদের ওপর নিয়ে আসে। আগে উল্লেখিত ডেভিড এবং তার মতো আরও লক্ষ লক্ষ লোক তাদের জীবনে বাইবেলের নীতিগুলো প্রয়োগ করার মূল্য সম্বন্ধে শিখেছে। তার তালিকার জন্য উপযুক্ত এমন একটা চাকরি পাওয়ার পর ডেভিড বলেছিলেন: “আমার স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে আমার সম্পর্কের জন্য আর সেইসঙ্গে মণ্ডলীর একজন প্রাচীন হিসেবে যিহোবা ঈশ্বরকে সেবা করার বিশেষ সুযোগ লাভ করার জন্য আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।” তাই, এতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই যে, ঈশ্বরের পরামর্শে মনোযোগ দেন এমন একজন ব্যক্তি সম্বন্ধে গীতরচক এই কথা বলেন: “সে যাহা কিছু করে, তাহাতেই কৃতকার্য্য হয়”!
[৬ পৃষ্ঠার তালিকা]
সফল হওয়ার পাঁচটা পদক্ষেপ
১ এই জগতের মূল্যবোধগুলোর ধাঁচে গড়ে ওঠা প্রত্যাখ্যান করুন।
২ প্রতিদিন ঈশ্বরের বাক্য পড়ুন ও তা নিয়ে ধ্যান করুন।
৩ আপনার জীবনে বাইবেলের পরামর্শ প্রয়োগ করুন।
৪ ঈশ্বরকে আপনার বন্ধু করুন।
৫ সত্য ঈশ্বরকে ভয় করুন ও তাঁর আজ্ঞা সকল পালন করুন।
[৭ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]
আপনি কি সফল হওয়ার পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করছেন?