একজন ব্যক্তি যিনি জীবন ও লোকেদের ভালবাসতেন
একজন ব্যক্তি যিনি জীবন ও লোকেদের ভালবাসতেন
ড্যানিয়েল সিডলিক, যিহোবার সাক্ষিদের পরিচালক গোষ্ঠীর একজন দীর্ঘদিনের সদস্য, ২০০৬ সালের ১৮ই এপ্রিল মঙ্গলবার তার পার্থিব জীবন শেষ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর এবং তিনি প্রায় ৬০ বছর ধরে নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিন বেথেল পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে সেবা করেছেন।
ভাই ড্যান ১৯৪৬ সালে বেথেলে আসেন, তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব ভালবেসে তাকে এই নামেই ডাকত। এর আগে, তিনি ক্যালিফোর্নিয়ায় একজন বিশেষ অগ্রগামী হিসেবে সেবা করেছিলেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে তার খ্রিস্টীয় নিরপেক্ষতার কারণে কিছু সময় জেলেও বন্দি ছিলেন। তার সেই সময়ের অভিজ্ঞতাগুলো তার জীবনকাহিনিতে সুন্দরভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, যা ১৯৮৫ সালের ১লা জুন প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) পত্রিকার “হে ঈশ্বর, তোমার বন্ধুত্ব কতই না অমূল্য!” শিরোনামের প্রবন্ধে পাওয়া যায়।
ভাই সিডলিক একজন অমায়িক, বন্ধুত্বপরায়ণ ব্যক্তি হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। তিনি যখন বেথেল পরিবারের সকালের উপাসনা পরিচালনা করতেন, তখন জীবনের প্রতি তার ইতিবাচক মনোভাব ও ভালবাসা প্রায়ই তার প্রারম্ভিক এই কথাগুলোর মধ্যে প্রতিফলিত হতো: “সত্য ও জীবন্ত ঈশ্বরকে সেবা করার জন্য বেঁচে থাকা আনন্দদায়ক।” জনসাধারণের উদ্দেশে বক্তৃতায় তিনি অন্যদেরকেও এই বিষয়ে উৎসাহিত করেছেন, এই ধরনের মূলভাবের ওপর বক্তৃতা দিয়েছেন যেমন, “ধন্য সেই জাতি, সদাপ্রভু যাহার ঈশ্বর,” “যিহোবার আনন্দকে প্রতিফলিত করা,” “ঈশ্বরের আত্মার অগ্নিকে জীবন্ত রাখুন” এবং “সর্বোত্তম বিষয় আসা এখনও বাকি রয়েছে।”
ভাই সিডলিক ১৯৭০ সালে ইংল্যান্ডের মারিনা হডসনকে বিয়ে করেন, যাকে তিনি “ঈশ্বর প্রেরিত এক সমর্থন” বলে বর্ণনা করেছিলেন। তারা একসঙ্গে ৩৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে যিহোবাকে সেবা করেছেন।
বেথেলে থাকার বছরগুলোতে ভাই সিডলিক ছাপাখানা ও রাইটিং ডিপার্টমেন্ট-সহ বিভিন্ন বিভাগে সেবা করেছেন। এ ছাড়া, তিনি ডব্লুবিবিআর রেডিও স্টেশনের সঙ্গেও কাজ করেছেন। এরপর ১৯৭৪ সালের নভেম্বর মাসে তাকে পরিচালক গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে নিযুক্ত করা হয় এবং শেষ পর্যন্ত তিনি পারসোনেল এবং রাইটিং কমিটিতে কাজ করেছেন।
ত্রিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে পারসোনেল কমিটিতে ভাই সিডলিকের কাজ লোকেদের প্রতি তার প্রগাঢ় ভালবাসাকে প্রকাশ করেছিল। তিনি তার গুরুগম্ভীর কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে অনেক ব্যক্তিকে উৎসাহিত করেছিলেন, যিহোবাকে সেবা করার যে-বিশেষ সুযোগ আমাদের রয়েছে, সবসময় সেটার প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করাতেন। তিনি সবসময় এই বিষয়ের ওপর জোর দিতেন যে, প্রকৃত সুখ বাহ্যিক বিষয়গুলোর ওপর নয় বরং যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ও জীবনের প্রতি আমাদের মনোভাবের ওপর নির্ভর করে।
যদিও বেথেল পরিবার প্রচণ্ডভাবে ভাই সিডলিকের অভাব বোধ করে থাকে কিন্তু জীবন ও লোকেদের সত্যিই ভালবাসতেন এমন একজন ব্যক্তি হিসেবে তার উদাহরণ জীবন্ত হয়ে থাকবে। আমরা নিশ্চিত যে, তিনিও সেই ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন, যাদের সম্বন্ধে প্রকাশিত বাক্য ১৪:১৩ পদে বলা হয়েছে: “ধন্য সেই মৃতেরা যাহারা এখন অবধি প্রভুতে মরে, হাঁ, আত্মা কহিতেছেন, তাহারা আপন আপন শ্রম হইতে বিশ্রাম পাইবে; কারণ তাহাদের কার্য্য সকল তাহাদের সঙ্গে সঙ্গে চলে।”