আমোষ তার পেশা কী ছিল?
আমোষ তার পেশা কী ছিল?
সাধারণ কাল পূর্ব নবম শতাব্দীতে একজন বাছুর উপাসনাকারী দুষ্ট যাজক অমৎসিয়, ভাববাদী আমোষকে ইস্রায়েলে ভাববাণী করতে নিষেধ করেছিলেন। আমোষ আপত্তি জানিয়ে বলেছিলেন: ‘আমি কেবল গোপালক ও ডুমুরফল সংগ্রাহক ছিলাম। কিন্তু সদাপ্রভু আমাকে পশুপালের অনুগমন হইতে লইলেন, এবং সদাপ্রভু আমাকে কহিলেন, যাও, আমার প্রজা ইস্রায়েলের কাছে ভাববাণী বল।’ (আমোষ ৭:১৪, ১৫) হ্যাঁ, যিহোবা আমোষকে একজন ভাববাদী হিসেবে প্রেরণ করেছিলেন; তিনি নিজের থেকে এই কাজ করেননি। কিন্তু, আমোষ যখন বলেছিলেন যে, তিনি একজন ডুমুর ফল “সংগ্রাহক” ছিলেন, তখন তিনি কী বুঝিয়েছিলেন?
যে-ইব্রীয় অভিব্যক্তিটিকে এখানে “ডুমুরফল সংগ্রাহক” হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে, সেটাকে আরও যথার্থভাবে ‘ডুমুরফল ছিদ্রকারী’ হিসেবে অনুবাদ করা যেতে পারে। ইকোনোমিক বোটানি জার্নাল বলে যে, এই শব্দটি ডুমুর ফল চাষির এক বিশেষ কাজকে নির্দেশ করে থাকে।
ছিদ্র করার কাজ অর্থাৎ ডুমুর ফলের গায়ে ছোট করে গভীরভাবে কেটে দেওয়ার বিষয়টা মিশর এবং সাইপ্রাসে বেশ আগে থেকেই সুপরিচিত। আধুনিক দিনের ইস্রায়েলে এখন আর তা করা হয় না, কারণ এই দেশে এখন বিভিন্ন ধরনের ডুমুর চাষ করা হয়। কিন্তু, আমোষের দিনে ইস্রায়েলীয়রা ছিদ্র করার কাজ করত কারণ সেই সময়ে ইস্রায়েলে যে-ডুমুরের চাষ করা হতো, তা মিশরে থাকা বিভিন্ন জাতের ডুমুর থেকে উদ্ভূত হয়েছিল।
স্পষ্টতই, ডুমুরে ছিদ্র করার ফলে এগুলো জল শুষে নিতে পারে আর রসাল হয়ে ওঠে। এ ছাড়া, এটা ফলের মধ্যে ইথিলিন গ্যাস উৎপাদনকে বৃদ্ধি করে, যা ফল পাকার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে আর এতে ফল বড় ও মিষ্টি হয়। অধিকন্তু, বোলতাজাতীয় কীটপতঙ্গ ফলকে নষ্ট করে না, কারণ এটা খুব তাড়াতাড়ি পেকে যায়।
একজন মেষপালক এবং ডুমুর ফল ছিদ্রকারী হিসেবে আমোষের সাধারণ পটভূমি থাকা সত্ত্বেও, তিনি তার শত্রুদের কারণে ভয় পেয়ে যাননি। বরং, তিনি সাহসের সঙ্গে ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যিহোবার বিচারের বার্তা ঘোষণা করেছিলেন। আজকে ঈশ্বরের সেই দাসদের জন্য কী এক চমৎকার উদাহরণ, যাদেরকে অবশ্যই একইভাবে অপ্রিয় এক বার্তা ঘোষণা করতে হবে!—মথি ৫:১১, ১২; ১০:২২.