কেন সত্যবাদী হবেন?
কেন সত্যবাদী হবেন?
মা ন্ফ্রেট ১৮ বছর বয়সে তার অফিসে একজন প্রশিক্ষণপ্রার্থী ছিলেন। * তিনি যে-কোম্পানিতে কাজ করতেন, সেই কোম্পানি তার ও আরও কয়েক জন প্রশিক্ষণপ্রার্থীর জন্য প্রতি সপ্তাহে দুদিন করে একটা বৃত্তিমূলক কলেজে যোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল। একদিন নির্ধারিত সময়ের আগেই ক্লাস শেষ হয়ে যায়। কোম্পানির নিয়ম অনুসারে, প্রশিক্ষণপ্রার্থীদের দিনের বাকি সময়ে কাজ করার জন্য কর্মক্ষেত্রে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, কর্মক্ষেত্রে ফিরে না গিয়ে তারা সকলে একটু আনন্দ করার জন্য চলে যায়, শুধুমাত্র মান্ফ্রেটই কর্মক্ষেত্রে ফিরে যান। ঘটনাচক্রে, সেদিন কোম্পানির প্রশিক্ষণপ্রার্থীদের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক এসে উপস্থিত হন। তিনি যখন মান্ফ্রেটকে দেখেন, তখন জিজ্ঞেস করেন: “আজ তুমি ক্লাসে যাওনি কেন? আর অন্যরাই বা কোথায়?” মান্ফ্রেটের কীভাবে উত্তর দেওয়া উচিত?
মান্ফ্রেটের কঠিন অবস্থাটা খুবই সাধারণ। তার কি সত্য বলা উচিত নাকি তার সহপাঠীদের বাঁচানোর জন্য মিথ্যা বলা উচিত? সত্য কথা বললে অন্যেরা ঝামেলায় পড়বে আর তিনি অন্যদের কাছে অপ্রিয় হয়ে যাবেন। এইরকম অবস্থায় মিথ্যা বলা কি গ্রহণযোগ্য? আপনি হলে কী করতেন? মান্ফ্রেটের ঘটনায় আমরা পরে যাচ্ছি কিন্তু তার আগে আসুন আমরা বিবেচনা করে দেখি যে, সত্য বলব কি বলব না সেই বিষয়ে আমাদের যখন সিদ্ধান্ত নিতে হয়, তখন তাতে কী জড়িত থাকে।
সত্য এবং অসত্য—মূল প্রতিদ্বন্দ্বী
মানবজাতির ইতিহাসের শুরুতে, সমস্তকিছুই সত্যের ওপর ভিত্তি করে ছিল। সেখানে বিকৃত তথ্য ছিল না, সত্যকে স্বীয়স্বার্থে ব্যবহার করা অথবা সত্যের ভুল ব্যাখ্যা ছিল না। সৃষ্টিকর্তা যিহোবা হলেন “সত্যের ঈশ্বর।” তাঁর বাক্য হল সত্য; তিনি মিথ্যা বলতে অসমর্থ আর তিনি মিথ্যা বলাকে ও মিথ্যাবাদীদের নিন্দা করেন।—গীতসংহিতা ৩১:৫; যোহন ১৭:১৭; তীত ১:২.
যদি তা-ই হয়, তা হলে অসত্য কীভাবে আসল? যিশু খ্রিস্টের ধর্মীয় বিরোধীরা, যারা তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা করছিল, তাদের তিনি এক নির্ভরযোগ্য উত্তর দিয়েছিলেন: “তোমরা আপনাদের পিতা দিয়াবলের, এবং তোমাদের পিতার অভিলাষ সকল পালন করাই তোমাদের ইচ্ছা; সে আদি হইতেই নরঘাতক, সত্যে থাকে নাই, কারণ তাহার মধ্যে সত্য নাই। সে যখন মিথ্যা বলে, তখন আপনা হইতেই বলে, কেননা সে মিথ্যাবাদী ও তাহার যোহন ৮:৪৪) অবশ্যই, যিশু এদন উদ্যানের সেই ঘটনাকে নির্দেশ করেছিলেন, যখন শয়তান প্রথম মানব দম্পতিকে ঈশ্বরের অবাধ্য হতে প্ররোচিত করেছিল এবং এর ফলে তারা পাপ ও মৃত্যুর শিকার হয়েছিল।—আদিপুস্তক ৩:১-৫; রোমীয় ৫:১২.
পিতা।” (যিশুর কথাগুলো শয়তানকে স্পষ্টভাবে ‘মিথ্যার পিতা’ অর্থাৎ মিথ্যা ও অসত্যের উৎস হিসেবে শনাক্ত করে। বস্তুতপক্ষে, শয়তান ক্রমাগতভাবে অসত্যের মুখ্য সমর্থক হয়ে এসেছে এবং ‘সে সমস্ত নরলোকের ভ্রান্তি জন্মাইয়া’ আসছে। ব্যাপকভাবে ছড়ানো মিথ্যা আজকে মানবজাতির যে-ক্ষতি করেছে, তার জন্য সে বহুলাংশে দায়ী।—প্রকাশিত বাক্য ১২:৯.
শয়তান দিয়াবলের দ্বারা প্রবর্তিত সত্য ও অসত্যের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা আজও দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। এটা মানবসমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়েছে এবং প্রত্যেককে প্রভাবিত করছে। একজন ব্যক্তি যেভাবে জীবনযাপন করেন, সেটাই নির্ধারণ করে যে, তিনি এই বিচার্য বিষয়ের পক্ষে না বিপক্ষে রয়েছেন। যারা ঈশ্বরের পক্ষে রয়েছে, তাদের জীবনধারা ঈশ্বরের বাক্য, বাইবেলের সত্যের ওপর ভিত্তি করে। যেকেউ সত্যের পথে চলে না, সে জেনেশুনে অথবা অজান্তে শয়তানের হাতে পড়ে যায়, কারণ “সমস্ত জগৎ সেই পাপাত্মার মধ্যে শুইয়া রহিয়াছে।”—১ যোহন ৫:১৯; মথি ৭:১৩, ১৪.
কেন মিথ্যা বলার প্রবণতা রয়েছে?
“সমস্ত জগৎ” শয়তানের ক্ষমতার অধীনে রয়েছে এই বিষয়টাই আমাদের বলে যে, কেন এত লোক মিথ্যা বলে। কিন্তু আমরা হয়তো জিজ্ঞেস করতে পারি, ‘“মিথ্যার পিতা” শয়তান কেন তা করে?’ শয়তান জানত যে, যিহোবা হলেন প্রথম মানব দম্পতিসহ তাঁর সৃষ্ট সমস্তকিছুর ন্যায্য সার্বভৌম প্রভু। তা সত্ত্বেও, শয়তান এই উচ্চীকৃত ও অদ্বিতীয় পদমর্যাদা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করেছিল, যা পাওয়ার কোনো অধিকার তার ছিল না। লোভ এবং স্বার্থপর উচ্চাকাঙ্ক্ষার বশবর্তী হয়ে, সে যিহোবার স্থান দখল করার চক্রান্ত করেছিল। শয়তান তার অভীষ্ট সাধন করার জন্য মিথ্যা বলেছিল এবং প্রতারণা করেছিল।—১ তীমথিয় ৩:৬.
আজকের দিন সম্বন্ধেই বা কী বলা যায়? আপনি কি একমত নন যে, লোভ এবং স্বার্থপর উচ্চাকাঙ্ক্ষার মতো মনোভাবই আজও বহু লোককে মিথ্যা বলতে ভীষণভাবে প্ররোচনা দিচ্ছে? লোভী ব্যাবসা, দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতি এবং মিথ্যা ধর্ম প্রবঞ্চনা, মিথ্যা বলা, স্বীয়স্বার্থসাধন এবং ধূর্ততার দ্বারা পরিপূর্ণ। কেন? এর কারণ কি এটা নয় যে, লোকেরা প্রায়ই অন্যদের আগে যাওয়ার জন্য অথবা ধনসম্পদ, ক্ষমতা বা পদমর্যাদা লাভের জন্য লোভ এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষার দ্বারা প্ররোচিত হয়, যেগুলো পাওয়ার কোনো অধিকার তাদের নেই? প্রাচীন ইস্রায়েলের একজন জ্ঞানী শাসক, রাজা শলোমন সাবধান করে দিয়েছিলেন: “যে ধনবান হইবার জন্য তাড়াতাড়ি করে, সে অদণ্ডিত থাকিবে না।” (হিতোপদেশ ২৮:২০) আর প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “ধনাসক্তি সকল মন্দের একটা মূল।” (১তীমথিয় ৬:১০) নিশ্চিতভাবেই, ক্ষমতা ও পদমর্যাদার প্রতি অদম্য আকাঙ্ক্ষা সম্বন্ধেও একই কথা বলা যেতে পারে।
মিথ্যা বলার পিছনে আরেকটা কারণ হল ভয়—সত্য কথা বলার পরিণতি অথবা অন্যেরা হয়তো কী ভাববে সেই কারণে ভয়। স্বভাবতই, লোকেরা চায় যে অন্যেরা তাদেরকে পছন্দ করুক বা অন্যদের কাছে তারা গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠুক। কিন্তু, এই আকাঙ্ক্ষাই তাদেরকে ভুলত্রুটি চেপে রাখতে, অশোভন বিষয়গুলো গোপন করতে অথবা শুধুমাত্র একটা ভাল ধারণা দেওয়ার জন্য সামান্য হলেও সত্যকে বিকৃত করার দিকে পরিচালিত করতে পারে। শলোমন উপযুক্তভাবেই লিখেছিলেন: “লোক-ভয় ফাঁদজনক; কিন্তু যে সদাপ্রভুতে বিশ্বাস করে, সে উচ্চে স্থাপিত হইবে।”—হিতোপদেশ ২৯:২৫.
সত্যের ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্য
কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক যখন মান্ফ্রেটের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, তখন মান্ফ্রেট কী বলেছিলেন? মান্ফ্রেট সত্যি কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন: “স্যার আজকে আমাদের আগেই ছেড়ে দিয়েছেন, তাই আমি অফিসে চলে এসেছি। আর অন্যদের সম্বন্ধে আমি কিছু বলতে পারব না। আপনি হয়তো ব্যক্তিগতভাবে তাদেরকে জিজ্ঞেস করতে পারেন।”
মান্ফ্রেট হয়তো এক চতুরতাপূর্ণ, বিভ্রান্তিজনক উত্তর দিতে পারতেন আর এভাবে নিজেকে অন্য প্রশিক্ষণপ্রার্থীদের কাছে
জনপ্রিয় করে তুলতে পারতেন। কিন্তু, সত্যের প্রতি অনুগত থাকার অনেক উত্তম কারণ তার ছিল। মান্ফ্রেট একজন যিহোবার সাক্ষি। তার সততা তার শুদ্ধ বিবেককে রক্ষা করেছিল। এ ছাড়া, এটা তাকে তার প্রতি তার নিয়োগকর্তার নির্ভরযোগ্যতা অর্জন করতে সাহায্য করেছিল। তার প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে, মান্ফ্রেটকে জুয়েলারি বিভাগে নিয়োগ করা হয়েছিল, যেখানে সাধারণত প্রশিক্ষণপ্রার্থীদের কাজ করার অনুমতি দেওয়া হতো না। প্রায় ১৫ বছর পরে যখন মান্ফ্রেট সেই কোম্পানির এক দায়িত্বপূর্ণ পদে উন্নীত হয়েছিলেন, তখন সেই একই নির্বাহী পরিচালক তাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন এবং সত্যের প্রতি নীতিনিষ্ঠ থাকার সেই ঘটনাটা পুনরুল্লেখ করেছিলেন।যেহেতু যিহোবা হলেন সত্যের ঈশ্বর, তাই যেকেউ তাঁর সঙ্গে এক নিকট সম্পর্কে গড়ে তুলতে চায়, তাকে অবশ্যই “যাহা মিথ্যা, তাহা ত্যাগ” এবং “সত্য আলাপ” করতে হবে। ঈশ্বরের একজন দাসের সত্যকে ভালবাসা উচিত। “বিশ্বস্ত সাক্ষী মিথ্যা কথা কহে না,” জ্ঞানী ব্যক্তি লিখেছিলেন। তা হলে, মিথ্যা কী?—ইফিষীয় ৪:২৫; হিতোপদেশ ১৪:৫.
মিথ্যা কী?
প্রতিটা মিথ্যাই অসত্য কিন্তু প্রতিটা অসত্যই মিথ্যা নয়। কেন নয়? একটি অভিধান মিথ্যাকে, “প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে বক্তার দ্বারা কোনো জানা বা প্রচলিত বিষয়কে অসত্য বলে দাবি করা” বলে সংজ্ঞায়িত করে। হ্যাঁ, মিথ্যা বলার মধ্যে কাউকে প্রতারণা করার উদ্দেশ্য অন্তর্ভুক্ত। তাই, অনিচ্ছাকৃতভাবে অসত্য বলা—যেমন ভুলবশত কাউকে ভুল তথ্য বা সংখ্যা জানানো—মিথ্যা বলার সমতুল্য নয়।
অধিকন্তু, যে-ব্যক্তি তথ্য জানতে চাইছেন তার সম্পূর্ণ উত্তর জানার অধিকার রয়েছে কি না, সেই বিষয়টাও আমাদের বিবেচনা করা প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, মনে করুন মান্ফ্রেটকে অন্য কোনো কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক সেই একই প্রশ্নগুলো জিজ্ঞেস করেছেন। মান্ফ্রেট কি তাকে সমস্তকিছু বলতে বাধ্য? নিশ্চয়ই না। যেহেতু সেই নির্বাহী পরিচালকের এই তথ্য জানার কোনো অধিকার ছিল না, তাই মান্ফ্রেটও তা জানাতে বাধ্য ছিলেন না। অবশ্য, এমনকি এই ক্ষেত্রেও তার পক্ষে মিথ্যা বলা অন্যায় হতো।
এই ক্ষেত্রে যিশু খ্রিস্ট কোন উদাহরণ স্থাপন করেছেন? একবার যিশু কিছু অবিশ্বাসী ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলছিলেন, যারা তাঁর ভ্রমণ পরিকল্পনা সম্বন্ধে আগ্রহ দেখিয়েছিল। “এখান হইতে প্রস্থান কর, যিহূদিয়াতে চলিয়া যাও,” তারা তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিল। যিশু কী উত্তর দিয়েছিলেন? “তোমরাই পর্ব্বে [যিরূশালেমে] যাও; আমি এখনও এই পর্ব্বে যাইতেছি না, কেননা আমার সময় এখনও সম্পূর্ণ হয় নাই।” এর কিছু পরে, যিশু পর্বের জন্য যিরূশালেমে গিয়েছিলেন। কেন তিনি এইরকম উত্তর দিয়েছিলেন? কারণ, তিনি কখন কোথায় থাকবেন, সেই সম্বন্ধে যথাযথ বিশদ বিবরণ জানার কোনো অধিকার তাদের ছিল না। তাই যদিও যিশু কোনো অসত্য বলেননি কিন্তু তাদেরকে এক অসম্পূর্ণ উত্তর দিয়েছিলেন, যাতে তিনি তাঁর অথবা তাঁর অনুসারীদের প্রতি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাকে কমাতে পারেন। এটা কোনো মিথ্যা ছিল না কারণ প্রেরিত পিতর খ্রিস্টের সম্বন্ধে লিখেছিলেন: “তিনি পাপ করেন নাই, তাঁহার মুখে কোন ছলও পাওয়া যায় নাই।”—যোহন ৭:১-১৩; ১ পিতর ২:২২.
স্বয়ং পিতর সম্বন্ধেই বা কী বলা যায়? যিশুকে যে-রাতে মথি ২৬:৬৯-৭৫; প্রেরিত ৪:১৮-২০; ৫:২৭-৩২; যাকোব ৩:২.
গ্রেপ্তার করা হয়েছিল সেই রাতে পিতর কি তিনবার মিথ্যা বলেননি এবং যিশুকে চিনতে অস্বীকার করেননি? হ্যাঁ, পিতর মনুষ্যভয়ের কাছে নতিস্বীকার করেছিলেন এবং মিথ্যা বলেছিলেন। কিন্তু তিনি এর পর পরই ‘অত্যন্ত রোদন করিয়াছিলেন’ এবং অনুতপ্ত হয়েছিলেন আর তার পাপ ক্ষমা করা হয়েছিল। অধিকন্তু, তিনি নিজের ভুল থেকে শিক্ষা লাভ করেছিলেন। কিছুদিন পরে, তিনি জনসমক্ষে যিশুর সম্বন্ধে কথা বলেছিলেন এবং যিরূশালেমের যিহুদি কর্তৃপক্ষরা যখন তা বন্ধ করার জন্য তাকে হুমকি দিয়েছিল, তখন তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। নিশ্চিতভাবেই, পিতরের ক্ষণিকের দুর্বলতা ও তা দ্রুত কাটিয়ে ওঠা আমাদের সকলের জন্য উৎসাহের এক বিষয় হওয়া উচিত, যারা সহজেই মুহূর্তের দুর্বলতার দ্বারা আচ্ছন্ন হতে ও কথা বা কাজে উছোট খেতে পারে।—সত্য চিরকাল স্থায়ী হবে
“সত্যের ওষ্ঠ চিরকাল স্থায়ী; কিন্তু মিথ্যাবাদী জিহ্বা নিমেষমাত্র স্থায়ী,” হিতোপদেশ ১২:১৯ পদ ব্যাখ্যা করে। হ্যাঁ, সত্য কথা স্থায়িত্বের দ্বারা চিহ্নিত। আর মানবসম্পর্ক তখনই স্থায়ী ও পরিতৃপ্তিদায়ক হয়, যখন লোকেরা সত্য বলার অঙ্গীকার করে এবং তার সঙ্গে মিল রেখে কাজ করে। বস্তুতপক্ষে, সত্যবাদিতা তাৎক্ষণিক অনেক পুরস্কার নিয়ে আসে। এগুলোর অন্তর্ভুক্ত হল এক শুদ্ধ বিবেক, সুনাম এবং বিবাহে, পরিবারে, বন্ধুবান্ধবের মধ্যে ও এমনকি ব্যাবসার ক্ষেত্রে দৃঢ় সম্পর্ক।
অন্যদিকে মিথ্যা, কোনো না কোনোভাবে প্রকাশ হয়ে পড়বেই। মিথ্যাবাদী জিহ্বা সাময়িকভাবে প্রতারণা করতে পারে কিন্তু অসত্য দীর্ঘসময় ধরে জয়ী হতে পারে না। অধিকন্তু, সত্যের ঈশ্বর যিহোবা, অসত্য এবং যারা মিথ্যাকে প্রশ্রয় দেয় তাদের সহ্য করার জন্য এক সময়সীমা নির্ধারণ করে রেখেছেন। বাইবেল প্রতিজ্ঞা করে যে, মিথ্যার পিতা শয়তান দিয়াবল যে পৃথিবীর সমস্ত অধিবাসীকে ভ্রান্ত করছে, তার প্রভাবকে যিহোবা মুছে ফেলবেন। যিহোবা শীঘ্রই সমস্ত মিথ্যা ও মিথ্যাবাদীদের শেষ নিয়ে আসবেন।—প্রকাশিত বাক্য ২১:৮.
শেষ পর্যন্ত যখন “সত্যের ওষ্ঠ” চিরকালের জন্য দৃঢ়ভাবে স্থায়ী হবে, তখন তা কতই না স্বস্তিজনক হবে!
[পাদটীকা]
^ তার আসল নাম নয়।
[৫ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]
লোভ এবং স্বার্থপর উচ্চাকাঙ্ক্ষার মতো মনোভাবই লোকেদেরকে মিথ্যা বলতে ভীষণভাবে প্ররোচিত করে
[৬ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]
প্রতিটা মিথ্যাই অসত্য কিন্তু প্রতিটা অসত্যই মিথ্যা নয়
[৬ পৃষ্ঠার চিত্র]
পিতরের খ্রিস্টকে অস্বীকার করা থেকে আমরা কী শিখতে পারি?
[৭ পৃষ্ঠার চিত্র]
সত্য বলা স্থায়ী ও পরিতৃপ্তিদায়ক সম্পর্ক গড়ে তোলে