‘পাথরের গৃহে’ আধ্যাত্মিক নির্মাণ কাজ
‘পাথরের গৃহে’ আধ্যাত্মিক নির্মাণ কাজ
আফ্রিকার এই দেশটার নামের অর্থ হল, “পাথরের গৃহ।” এটা হল সেই দেশ, যেটা ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত এবং বৈচিত্র্যময় বন্যপ্রাণীর জন্য সুপরিচিত। এ ছাড়া, এখানে সাহারার দক্ষিণে মানুষের তৈরি সবচেয়ে বড় প্রাচীন অট্টালিকাগুলো রয়েছে। একটা গ্রানাইট মালভূমি এর কেন্দ্রে আড়াআড়িভাবে বিস্তৃত। ওই উপত্যকার নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া এক ফলোৎপাদক, সতেজতাদায়ক প্রাকৃতিক দৃশ্যের অবতারণা করেছে। দেশটা হল জিম্বাবোয়ে, যেখানে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ লোক বাস করে।
কে ন পাথরের গৃহ নাম দেওয়া হয়েছে? ১৮৬৭ সালে, শিকারি ও আবিষ্কারক আ্যডাম রেনডার্স্ ১,৮০০ একর জমির ওপর ছড়িয়েছিটিয়ে থাকা বড় বড় পাথরের কাঠামোর কাছে এসে উপস্থিত হন। তিনি আফ্রিকার অরণ্যহীন তৃণভূমিতে ভ্রমণ করছিলেন, যেখানে ঘরগুলো সাধারণত কাদামাটি, খুঁটি এবং ঘাসের ছাউনি দিয়ে তৈরি করা হয়। এরপর তিনি পাথরের তৈরি এক বিশাল শহরের ধ্বংসাবশেষের কাছে উপস্থিত হন, এখন যেটাকে গ্রেট জিম্বাবোয়ে বলা হয়।
এই ধ্বংসাবশেষ এখন ম্যাসভিংগো বলে পরিচিত এলাকার একেবারে দক্ষিণে অবস্থিত। কিছু কিছু দেওয়াল ৯ মিটারেরও বেশি উঁচু আর কোনো চুনবালির মিশ্রণ ছাড়াই গ্রানাইট পাথরগুলো একটার ওপর আরেকটা রাখা হয়েছিল। সেই ধ্বংসাবশেষের মধ্যে অসাধারণ এক মোচাকৃতির দুর্গ রয়েছে, যা ৬ মিটার ব্যাসের ভিত্তি থেকে প্রায় ১১ মিটার উঁচুতে উঠে গিয়েছে। এই কাঠামোর প্রকৃত উদ্দেশ্য কী ছিল, তা এখনও অজানা। যদিও এই ধ্বংসাবশেষটা সা.কা. অষ্টম শতাব্দীর কিন্তু এই বিষয়ে প্রমাণ রয়েছে যে, এলাকাটা তারও প্রায় একশো বছর আগেই দখল করা হয়েছিল।
১৯৮০ সালে, তখনকার রোডেশিয়া নামে পরিচিত দেশটা ব্রিটেন থেকে স্বাধীন হয়েছিল এবং তার নতুন নাম হয়েছিল
জিম্বাবোয়ে। এখানকার অধিবাসীদের মধ্যে দুটো প্রধান উপজাতি হল—শোনা, যাদের নিয়ে জনসংখ্যার বিশাল অংশ গঠিত এবং উনডিব্যালে। যিহোবার সাক্ষিরা তাদের ঘরে ঘরে সুসমাচার প্রচার কাজ করার সময় প্রায়ই লক্ষ করেছে যে লোকেরা অতিথিপরায়ণ। কখনো কখনো এমনকি কোনো আগন্তুকের পরিচয় জানার আগেই, সেই ব্যক্তি কড়া নাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই “ভিতরে আসুন” এবং “দয়া করে বসুন,” এই ধরনের আমন্ত্রণ জানানো হয়। জিম্বাবোয়ের বেশিরভাগ অধিবাসীরই বাইবেলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে আর তারা প্রায়ই শাস্ত্রীয় আলোচনার সময় তাদের সন্তানদের সেখানে বসতে ও শুনতে অনুরোধ করে থাকে।এক গঠনমূলক সান্ত্বনার বার্তা জানানো
জিম্বাবোয়ে সম্বন্ধে আলোচনা করার সময় প্রচারমাধ্যমে প্রায়ই “এইডস” এবং “খরা” শব্দগুলো ব্যবহৃত হয়। আফ্রিকায় সাহারার দক্ষিণাঞ্চলে এইডস ছড়িয়ে পড়ার ফলে এর জনসংখ্যা ও অর্থনীতি গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখানকার হাসপাতালগুলোতে প্রায়ই এইচআইভি সংক্রমণের কারণে রোগীদের ভর্তি করা হয়। আর এই রোগ বহু লোকের পারিবারিক জীবনকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
জিম্বাবোয়ের লোকেদেরকে সাহায্য করার জন্য যিহোবার সাক্ষিরা এই ঘোষণা করতে ব্যস্ত যে, বাইবেলে বলা ঈশ্বরের মানগুলো দ্বারা পরিচালিত হওয়াই হল একজন ব্যক্তির জন্য সর্বোৎকৃষ্ট জীবনের পথ। উদাহরণস্বরূপ, ঈশ্বরের বাক্য শিক্ষা দেয় যে, যৌনসম্পর্ক হল এমন এক ঐশিক উপহার, যা শুধুমাত্র বিবাহিত ব্যক্তিরাই উপভোগ করতে পারবে, সমকামিতা ঈশ্বরের কাছে গ্রহণযোগ্য নয় আর রক্ত দেওয়া-নেওয়া ও নিছক আনন্দ লাভের জন্য মাদকদ্রব্য ব্যবহার করা যিহোবার আইনের মধ্যে নিষিদ্ধ রয়েছে। (প্রেরিত ১৫:২৮, ২৯; রোমীয় ১:২৪-২৭; ১ করিন্থীয় ৭:২-৫; ২ করিন্থীয় ৭:১) সাক্ষিরা এক সুদৃঢ় আশার বার্তাও ছড়িয়ে দিয়েছে, যা এই বিষয়ের ওপর জোর দেয় যে, নিকট ভবিষ্যতে ঈশ্বরের রাজ্য সমস্ত রকম রোগব্যাধি দূর করবে।—যিশাইয় ৩৩:২৪.
ত্রাণসামগ্রী জোগানো
বিগত দশক জুড়ে খরা জিম্বাবোয়ের ওপর এক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে। খাদ্যাভাবে ও জলশূন্যতায় বিভিন্ন বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। লক্ষ লক্ষ গবাদি পশু মারা গিয়েছে। দাবানল বহু একর জুড়ে থাকা অরণ্যকে বিধ্বস্ত করে দিয়েছে। অনেক শিশু ও বৃদ্ধ অপুষ্টিতে মারা গিয়েছে। এমনকি খরস্রোতা জাম্বেসি নদীর জলের মাত্রা এতটাই নীচে নেমে গিয়েছে যে, তা জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের জন্য হুমকিস্বরূপ হয়েছে।
এই ধরনের বিপর্যয়ে সাড়া দিয়ে যিহোবার সাক্ষিরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটটা ত্রাণ কমিটি গঠন করেছে। প্রকৃতপক্ষে কতটা প্রয়োজন আছে, তা দেখার জন্য ভ্রমণ অধ্যক্ষরা মণ্ডলীগুলো পরিদর্শন করেছিল। আর এই তথ্যগুলো আবার উপযুক্ত ত্রাণ কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছিল। একজন ভ্রমণ অধ্যক্ষ বর্ণনা করেছিলেন: “বিগত পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমরা এক হাজার টনেরও বেশি ভুট্টা, দশ টন শুটকি মাছ এবং সমপরিমাণ শুগার বিন বিতরণ করেছি। আমাদের আধ্যাত্মিক ভাইবোনেরা দুই টন মুফুশোয়া [শুকনো শাকসবজি] প্রক্রিয়াজাত করেছে। এ ছাড়া, আমরা দানকৃত অনেক জামাকাপড় এবং প্রয়োজনমতো অর্থও বিতরণ করেছি।” আরেকজন ভ্রমণ অধ্যক্ষ মন্তব্য করেছিলেন: “জিম্বাবোয়ে এবং দক্ষিণ আফ্রিকাতে এইসব ত্রাণসামগ্রী আনার অনুমতি পেতে গিয়ে আমরা যে-বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলাম, সেই বিষয়ে এবং অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এই ত্রাণের জন্য যাতায়াত করার সময় প্রয়োজনীয় জ্বালানি দ্রব্যের যে ক্রমাগত অভাব থাকত, সেই সম্বন্ধে আমি যখন চিন্তা করি, তখন আমি শুধু এই উপসংহারেই আসি যে, আমাদের সাফল্য ছিল যিশুর এই আশ্বাসের আরেকটা প্রমাণ যে, আমাদের স্বর্গস্থ পিতা জানেন এই সকল দ্রব্য আমাদের প্রয়োজন আছে।”—মথি ৬:৩২.
খরা কবলিত এলাকায় কাজ করার সময়ে ভ্রমণ
অধ্যক্ষরা কীভাবে সেই অবস্থার সঙ্গে মোকাবিলা করেছিল? কেউ কেউ তাদের নিজেদের ও যে-পরিবারগুলোর সঙ্গে তারা থাকবে, তাদের জন্য খাবার নিয়ে এসেছিল। তাদের মধ্যে একজন বলেছিলেন যে, কয়েক জন খ্রিস্টান বোন, সেই দিনের জন্য তাদের প্রচার কাজ বন্ধ করে প্রত্যাশিত সরকারি ত্রাণের জন্য লাইনে দাঁড়ানো উচিত হবে কি না, সেই বিষয়ে প্রশ্ন করেছিল। তারা প্রচার কাজের প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে যিহোবার ওপর নির্ভর করার এবং কীভাবে সমস্যার সমাধান হয়, তা দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেদিন কোনো সরকারি ত্রাণ এসে পৌঁছায়নি।পরের দিন একটা খ্রিস্টীয় সভার পরিকল্পনা করা হয়েছিল আর সেই বোনদের আবারও সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। তারা কি সভায় যোগ দেবে নাকি ত্রাণসামগ্রী আসার জন্য অপেক্ষা করবে? সঠিক বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে তারা কিংডম হলে সভায় যোগ দিয়েছিল। (মথি ৬:৩৩) শেষ গানটা গাওয়ার সময়ে একটা ট্রাক আসার শব্দ শুনতে পেয়েছিল। ত্রাণ কমিটিতে থাকা তাদের আধ্যাত্মিক ভাইদের মাধ্যমে ঠিক সেখানেই ত্রাণসামগ্রী এসে পৌঁছেছিল! সেই সভায় যোগদানকারী বিশ্বস্ত সাক্ষিদের আনন্দ আর কৃতজ্ঞতা অভিভূত করার মতো ছিল।
প্রেম গেঁথে তোলে
খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর বাইরে থাকা লোকেদের প্রতি দয়ার কাজগুলো এক উত্তম সাক্ষ্যদানের বিভিন্ন সুযোগের দ্বার খুলে দিয়েছে। ম্যাসভিংগো এলাকার একজন ভ্রমণ অধ্যক্ষ, স্থানীয় কিছু সাক্ষির সঙ্গে সুসমাচার প্রচারে রত ছিলেন। তিনি রাস্তার ধারে একটা মেয়েকে পড়ে থাকতে দেখেন। যেহেতু সে ঠিকমতো কথা বলতে পারছিল না আর তার গলা কাঁপছিল, তাই সাক্ষিরা বুঝতে পারে যে সে খুবই অসুস্থ। সেই মেয়েটার নাম ছিল হামুনিয়ারি, শোনা ভাষায় যেটার মানে হল “তুমি কি লজ্জিত নও?” ভাইয়েরা জানতে পারে যে তার গির্জার সদস্যরা, যারা কোনো একটা ধর্মীয় কাজে পাহাড়ে যাচ্ছিল, তারা তাকে পরিত্যাগ করেছে। সাক্ষিরা প্রেমের সঙ্গে সেই মেয়েটাকে সহযোগিতা করেছিল, তাকে কাছের এক গ্রামে নিয়ে গিয়েছিল।
সেই গ্রামের কয়েক জন জানত যে, হামুনিয়ারি কে, তাই তারা তার আত্মীয়স্বজনকে সেখানে আসতে বলেছিল। সেই সাক্ষিদের সম্পর্কে গ্রামের লোকেরা মন্তব্য করেছিল: “এটাই হল সত্য ধর্ম। খ্রিস্টানদের এইরকম প্রেমই দেখানো উচিত।” (যোহন ১৩:৩৫) চলে আসার আগে ভাইয়েরা, হামুনিয়ারিকে আপনি কি বাইবেল সম্বন্ধে আরও বেশি জানতে চান? * নামক ট্র্যাক্টটি দিয়েছিল।
পরবর্তী সপ্তাহে সেই ভ্রমণ অধ্যক্ষ হামুনিয়ারি যেখানে থাকত, সেই এলাকার মণ্ডলীতে সেবা করেছিলেন। হামুনিয়ারি নিরাপদে বাড়ি পৌঁছেছে কি না, তিনি তা জানতে চেয়েছিলেন। তাকে এবং স্থানীয় ভাইদের দেখে পুরো পরিবার খুবই খুশি হয়েছিল। তার বাবামা বলেছিল: “আপনারাই সত্য ধর্ম পালন করেন। আপনারা আমাদের মেয়ের জীবন বাঁচিয়েছেন, যাকে মৃত্যুর জন্য রাস্তায় ফেলে রাখা হয়েছিল।” তারা তার গির্জার সদস্যদের জিজ্ঞেস করেছিল: “হামুনিয়ারির নামের অর্থের সঙ্গে মিল রেখে, তাকে মৃতপ্রায় অবস্থায় ফেলে যাওয়ার কারণে কি আপনারা লজ্জিত নন?” সাক্ষিরা হামুনিয়ারির পরিবারের সঙ্গে এক বাইবেল আলোচনা শুরু করে এবং বাইবেলভিত্তিক প্রকাশনা দিয়ে আসে আর সেই পরিবার ভাইদের পুনরায় ফিরে আসতে ও তাদের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন পরিচালনা করতে আমন্ত্রণ জানায়। পরিবারের কয়েক জন সদস্য, যারা সাক্ষিদের বিরোধিতা করেছিল, তারা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পালটায়। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন হামুনিয়ারির দাদাবাবু, যিনি সেই এলাকার একটা গির্জার নেতা ছিলেন। তিনি বাইবেল অধ্যয়ন করতে রাজি হয়েছিলেন।
উপাসনা গৃহ নির্মাণ করা
বহু আগে একজন অনুপ্রাণিত কবি লিখেছিলেন: “হে গীতসংহিতা ৬৩:১) জিম্বাবোয়ের লোকেদের বেলায় তা কতই না সত্য! আক্ষরিকভাবে তারা খরা সহ্য করেছে কিন্তু আধ্যাত্মিকভাবে তারা ঈশ্বর ও তাঁর মঙ্গলভাবের জন্য পিপাসিত। যিহোবার সাক্ষিদের খ্রিস্টীয় পরিচর্যার ফলাফল থেকেই আপনারা তা দেখতে পারেন। ১৯৮০ সালে জিম্বাবোয়ে যখন স্বাধীন হয়, সেই সময় ৪৭৬টি মণ্ডলীতে প্রায় ১০,০০০ জন সাক্ষি সেবা করছিল। আর এখন, প্রায় ২৭ বছর পরে, সক্রিয় সাক্ষিদের সংখ্যা তিনগুণ এবং মণ্ডলীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
ঈশ্বর, . . . আমার প্রাণ তোমার জন্য পিপাসু . . . শুষ্ক ও শ্রান্তিকর দেশে, জলবিহীন দেশে।” (এই মণ্ডলীগুলোর মধ্যে শুধু অল্প কয়েকটারই নিজস্ব উপাসনাস্থল রয়েছে। ২০০১ সালের জানুয়ারি মাসে, জিম্বাবোয়ের ৮০০রও বেশি মণ্ডলীর মধ্যে কেবলমাত্র ৯৮টা মণ্ডলীতে মিলিত হওয়ার জন্য একটা উপাসনা গৃহ—কিংডম হল—ছিল। অনেক মণ্ডলীতে সভাগুলো গাছের তলায় অথবা খুঁটি, কাদামাটির দেওয়ালবিশিষ্ট ঘাসের ছাউনি দিয়ে তৈরি অতি সাধাসিধে কুঁড়ে ঘরগুলোতে অনুষ্ঠিত হতো।
উদার দান ও তাদের বিশ্বব্যাপী পরিশ্রমী খ্রিস্টীয় ভাইদের স্বেচ্ছাকৃত কাজের ফলে জিম্বাবোয়ের সাক্ষিরা একটা প্রকল্প শুরু করে, যেটা আরও মণ্ডলীকে সাধাসিধে কিন্তু মর্যাদাপূর্ণ কিংডম হল পেতে সক্ষম করেছিল। নির্মাণ কাজে দক্ষ বহু বিদেশি সাক্ষি জিম্বাবোয়েতে যাওয়ার ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করেছিল। স্থানীয় একজন সাক্ষি লিখেছিলেন: “আমরা সেই সমস্ত ভাইবোনকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই, যারা সুন্দর সুন্দর কিংডম হল নির্মাণে সাহায্য করার জন্য অনেক দেশ থেকে জিম্বাবোয়েতে এসেছে। আর আমরা বাকি সবাইকে কিংডম হল তহবিলে দেওয়া আপনাদের দানের জন্যও ধন্যবাদ জানাই, যার ফলে এই কাজ সম্ভবপর হয়েছে।”
দেশের পূর্বাঞ্চলে, ৫০ বছর ধরে একটা প্রকাণ্ড বেওব্যাব গাছের তলায় ভায়েরা মিলিত হতো। যখন খ্রিস্টান প্রাচীনদের বলা হয়েছিল যে, সেখানে সত্যিই একটা উপাসনা গৃহ নির্মাণ করা হবে, তখন তাদের মধ্যে অন্তত একজন তার চোখের জলকে ধরে রাখতে পারেননি। কাছের একটা মণ্ডলীর ৯১ বছর বয়সি একজন প্রাচীন বলেছিলেন: “আমি বহু দিন ধরে এইরকম কিছু ঘটার জন্যই যিহোবার কাছে কেঁদেছি!”
এই আকর্ষণীয় বিল্ডিংগুলো যে দ্রুত নির্মিত হয়েছে, সেই সম্বন্ধে অনেকে মন্তব্য করেছিল। একজন ব্যক্তি বলেছিলেন: “আপনারা দিনের বেলা নির্মাণ করছেন কিন্তু রাতের বেলা নিশ্চয়ই ঈশ্বরও নির্মাণ করছেন!” কর্মীদের একতা ও আনন্দও লক্ষ করা গিয়েছিল। এই পর্যন্ত, সারা দেশে ৩৫০টারও বেশি নতুন কিংডম হল তৈরি করা শেষ হয়েছে। এটা ৫৩৪টা মণ্ডলীকে ইটের তৈরি মজবুত কিংডম হলে মিলিত হতে সক্ষম করেছে।
জিম্বাবোয়েতে গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক নির্মাণ কাজ চলছে। যা সম্পন্ন করা হয়েছে, সেই বিষয়ে আমরা যখন চিন্তা করি, তখন আমরা এই ধরনের আশীর্বাদের উৎস যিহোবাকে কৃতিত্ব দিতে পরিচালিত হই। হ্যাঁ, “যদি সদাপ্রভু গৃহ নির্ম্মাণ না করেন, তবে নির্ম্মাতারা বৃথাই পরিশ্রম করে।”—গীতসংহিতা ১২৭:১.
[পাদটীকা]
^ যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত।
[৯ পৃষ্ঠার মানচিত্রগুলো]
(পুরোপুরি ফরম্যাট করা টেক্সটের জন্য এই প্রকাশনা দেখুন)
জিম্বাবোয়ে
হারারে
ম্যাসভিংগো
গ্রেট জিম্বাবোয়ে
[৯ পৃষ্ঠার চিত্র]
মোচাকৃতির দুর্গ
[১২ পৃষ্ঠার চিত্র]
নতুন কিংডম হল, কানসেশন মন্ডলী
[১২ পৃষ্ঠার চিত্র]
লিনডেল মণ্ডলীর সদস্যরা তাদের নতুন কিংডম হলের বাইরে
[৯ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]
ধ্বংসাবশেষসহ সিঁড়ি: ©Chris van der Merwe/AAI Fotostock/age fotostock; ইনসেটে দুর্গ: ©Ingrid van den Berg/AAI Fotostock/age fotostock