সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে এক চিরস্থায়ী উপহার

সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে এক চিরস্থায়ী উপহার

সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে এক চিরস্থায়ী উপহার

 আপনার কাছে কি এই বিষয়টা আশ্চর্যজনক মনে হয় না যে, বিজ্ঞানীরা যেকোনো গ্রহে জীবনের অস্তিত্বের জন্য যে-উপাদানগুলোকে অত্যাবশ্যক বলে মনে করে থাকে, সেই সম্বন্ধে বাইবেলের প্রথম অধ্যায়ে হয় উল্লেখ করা হয়েছে নতুবা সরাসরি ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে? এই উপাদানগুলো কী?

আদিপুস্তক ১:২ পদে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে যে, জীবনকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সেখানে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে জল থাকতে হবে। সেই গ্রহের জলকে তরল অবস্থায় রাখার জন্য তাপমাত্রা অবশ্যই উপযুক্ত হতে হবে। আর এর জন্য সেই গ্রহকে সূর্য থেকে উপযুক্ত দূরত্বে থাকতে হবে। আদিপুস্তকের বিবরণ বার বার সূর্য ও পৃথিবীর ওপর এর প্রভাবের ওপর মনোযোগ আকর্ষণ করায়।

মানুষের বসবাসযোগ্য হওয়ার জন্য একটা গ্রহে এমন বায়ুমণ্ডল প্রয়োজন, যেটাতে বিভিন্ন গ্যাসের নির্দিষ্ট সংমিশ্রণ রয়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সম্বন্ধে আদিপুস্তক ১:৬-৮ পদে উল্লেখ করা হয়েছে। আদিপুস্তক ১:১১-১২ পদে বর্ণিত উদ্ভিদের বৃদ্ধি হল, অক্সিজেনের সর্ববৃহৎ উৎস। ব্যাপক বৈচিত্র্যময় প্রাণী যেন বৃদ্ধি পেতে পারে সেইজন্য একটা গ্রহে প্রয়োজন শুষ্ক, উৎপাদনশীল ভূমি, যেমনটা আদিপুস্তক ১:৯-১২ পদে বর্ণনা করা হয়েছে। অবশেষে, উপযুক্ত আবহাওয়ার জন্য একটা গ্রহকে অবশ্যই সঠিক কোণে হেলে থাকতে হবে এবং সেই অবস্থানেই থাকতে হবে—পৃথিবীর ক্ষেত্রে, এটা আমাদের চাঁদের মাধ্যাকর্ষীয় আকর্ষণের প্রভাবে আংশিকভাবে সম্পন্ন হয়ে থাকে। এই উপগ্রহের অস্তিত্ব এবং এর কিছু উপকারিতা সম্বন্ধে আদিপুস্তক ১:১৪, ১৬ পদে তুলে ধরা হয়েছে।

কীভাবে প্রাচীন লেখক মোশি, আধুনিক বিজ্ঞানের সাহায্য ছাড়াই উপরোক্ত উপাদানগুলোর প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন? এইসমস্ত বিষয়ের গুরুত্ব বোঝার ক্ষেত্রে মোশির কি অসাধারণ ক্ষমতা ছিল, যেখানে তার সমসাময়িক ব্যক্তিদের তা ছিল না? এর ব্যাখ্যা হল যে, তিনি স্বর্গ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। আদিপুস্তকের বিবরণের বৈজ্ঞানিক সঠিকতার পরিপ্রেক্ষিতে এটা উল্লেখযোগ্য।

বাইবেল নিশ্চিতভাবে বলে যে, আমরা আমাদের চারপাশের নিখিলবিশ্বে যে-বিস্ময়কর বিষয়গুলো দেখে থাকি, সেই সমস্তকিছুর পিছনে একটা উদ্দেশ্য রয়েছে। “স্বর্গ সদাপ্রভুরই স্বর্গ,” গীতসংহিতা ১১৫:১৬ পদ বলে, “কিন্তু তিনি পৃথিবী মনুষ্য-সন্তানদিগকে দিয়াছেন।” আরেকটি গীত বলে: “তিনি পৃথিবীকে তাহার ভিত্তিমূলের উপরে স্থাপন করিয়াছেন; তাহা অনন্তকালেও বিচলিত হইবে না।” (গীতসংহিতা ১০৪:৫) যদি নিখিলবিশ্ব ও আমাদের চমৎকার গ্রহ একজন সৃষ্টিকর্তার দ্বারা সৃষ্ট হয়ে থাকে, তবে অবশ্যই এটা বিশ্বাস করা যুক্তিসংগত যে, এটার যত্ন নেওয়ার ক্ষমতাও তাঁর রয়েছে। এর মানে এই প্রতিজ্ঞাটি পূর্ণ হওয়ার জন্য আপনি দৃঢ়প্রত্যয়ের সঙ্গে অপেক্ষা করতে পারেন: “ধার্ম্মিকেরা দেশের [“পৃথিবীর,” NW] অধিকারী হইবে, তাহারা নিয়ত তথায় বাস করিবে।” (গীতসংহিতা ৩৭:২৯) নিশ্চিতভাবেই, ঈশ্বর “[পৃথিবীকে] অনর্থক সৃষ্টি না করিয়া” বরং যে-কৃতজ্ঞ মানুষেরা তাঁর কাজকে স্বীকার করে, তাদের জন্য চিরকালীন “বাসস্থানার্থে নির্ম্মাণ করিয়াছেন।”—যিশাইয় ৪৫:১৮.

শাস্ত্র অনুসারে, যিশু পৃথিবীতে ঈশ্বর ও তাঁর উদ্দেশ্য সম্বন্ধে শিক্ষা দিতে এসেছিলেন, যাতে বাধ্য মানবজাতি অনন্তজীবন পেতে পারে। (যোহন ৩:১৬) আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে, খুব শীঘ্রই ঈশ্বর “পৃথিবীনাশকদিগকে নাশ” করবেন, আর অন্যদিকে সমস্ত জাতি থেকে আসা সেই শান্তিপ্রিয় লোকেরা রক্ষা পাবে, যারা তাঁর পরিত্রাণের ব্যবস্থাকে গ্রহণ করেছে। (প্রকাশিত বাক্য ৭:৯, ১৪; ১১:১৮) মানুষেরা যখন চিরকাল ধরে ঈশ্বরের বিস্ময়কর সৃষ্টিগুলো আবিষ্কার ও উপভোগ করে চলবে, তখন জীবন কতই না চমৎকার হবে!—উপদেশক ৩:১১; রোমীয় ৮:২১.

[৮ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

NASA photo