যিহোবার জন্য অপেক্ষা করার সময় সুখী
যিহোবার জন্য অপেক্ষা করার সময় সুখী
আপনি কি কখনো কোনো কাঁচা ফল খেয়েছেন? কোনো সন্দেহ নেই যে, আপনি সেটার স্বাদ নিয়ে হতাশ হয়েছিলেন। ফল পাকার জন্য সময় লাগে আর সেটার জন্য অপেক্ষা করা উপযুক্ত। আরও পরিস্থিতি রয়েছে, যেটার জন্য অপেক্ষা করা উত্তম ফল এনে দেয়। “সদাপ্রভুর পরিত্রাণের প্রত্যাশা করা, নীরবে অপেক্ষা করা, ইহাই মঙ্গল,” বাইবেল বলে। (বিলাপ ৩:২৬; তীত ২:১৩) কোন কোন দিক দিয়ে খ্রিস্টানরা যিহোবার জন্য অপেক্ষা করবে? তাঁর জন্য অপেক্ষা করে আমরা কীভাবে উপকৃত হতে পারি?
ঈশ্বরের জন্য অপেক্ষা করা—এর সঙ্গে কী জড়িত?
খ্রিস্টান হিসেবে, আমরা ‘ঈশ্বরের সেই দিনের আগমনের অপেক্ষা ও আকাঙ্ক্ষা করিতেছি।’ আমরা স্বস্তির জন্য সানন্দে প্রতীক্ষা করি, যখন তিনি ‘ভক্তিহীন মনুষ্যদের বিনাশ’ করবেন। (২ পিতর ৩:৭, ১২) যিহোবা নিজেও সমস্ত মন্দতা বিনাশ করার জন্য উদ্গ্রীব কিন্তু তিনি সংযম দেখাচ্ছেন, যাতে এমন এক উপায়ে খ্রিস্টানদের পরিত্রাণ করা যায়, যা তাঁর নামকে গৌরবান্বিত করবে। বাইবেল বলে: “যদি ঈশ্বর আপন ক্রোধ দেখাইবার ও আপন পরাক্রম জানাইবার ইচ্ছা করিয়া, বিনাশার্থে পরিপক্ব ক্রোধপাত্রদের প্রতি বিপুল সহিষ্ণুতায় ধৈর্য্য করিয়া থাকেন, এবং [এই জন্য করিয়া থাকেন,] যেন সেই দয়াপাত্রদের উপরে আপন প্রতাপ-ধন জ্ঞাত করেন, যাহাদিগকে প্রতাপের নিমিত্ত পূর্ব্বে প্রস্তুত করিয়াছেন।” (রোমীয় ৯:২২, ২৩) ঠিক যেমন তিনি নোহের দিনে করেছিলেন, আজকের দিনেও কখন তাঁর লোকেদেরকে রক্ষা করতে হবে, যিহোবা তা জানেন। (১ পিতর ৩:২০) তাই, ঈশ্বরের জন্য অপেক্ষা করার অন্তর্ভুক্ত হল তাঁর পদক্ষেপ নেওয়ার সময়ের জন্য অপেক্ষা করা।
যিহোবার দিনের জন্য অপেক্ষা করার সময় আমরা মাঝে মাঝে আমাদের চারিদিককার জগতে নৈতিক মানগুলোর ক্রমাগত অধঃপতন দেখে কখনো কখনো হয়তো বিষাদগ্রস্ত হতে পারি। এইরকম সময়গুলোতে, ঈশ্বরের ভাববাদী মীখার বলা কথাগুলো বিবেচনা করা উৎসাহজনক হবে, যিনি লিখেছিলেন: “পৃথিবী হইতে সাধু উচ্ছিন্ন হইয়াছে, মনুষ্যদের মধ্যে সরল লোক একেবারে নাই।” তারপর তিনি যোগ করেছিলেন: “কিন্তু আমি সদাপ্রভুর প্রতি দৃষ্টি রাখিব, আমার ত্রাণেশ্বরের অপেক্ষা করিব।” (মীখা ৭:২, ৭) ‘অপেক্ষা করা’ বা অপেক্ষা করার মনোভাব কী, যা আমাদের গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করা উচিত? যেহেতু অপেক্ষা করা প্রায়ই বিরক্তিকর, তাই কীভাবে আমরা ঈশ্বরের জন্য অপেক্ষা করার সময় আনন্দ খুঁজে পেতে পারি?
অপেক্ষা করার সময় সুখী থাকা
যিহোবার কাছ থেকে আমরা সঠিক মনোভাব সম্বন্ধে শিখতে পারি। তিনি কখনো ‘পরম ধন্য [“সুখী,” NW] ঈশ্বর’ হওয়া থেকে বিরত হননি। (১ তীমথিয় ১:১১) অপেক্ষা করার সময়েও তিনি সুখী কারণ যে-লোকেরা তাঁকে ভালবাসে, তাদের সিদ্ধতায় উপনীত করার ব্যাপারে তাঁর উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ করার জন্য তিনি ক্রমাগত কাজ করে চলেছেন, যা মানুষকে সৃষ্টি করার সময়ই তিনি তাদের জন্য চেয়েছিলেন। (রোমীয় ৫:১২; ৬:২৩) তিনি তাঁর কাজের পরিতৃপ্তিদায়ক ফল দেখেন—লক্ষ লক্ষ লোক সত্য উপাসনার দিকে আকৃষ্ট হয়েছে। যিশু বলেছিলেন: “আমার পিতা এখন পর্য্যন্ত কার্য্য করিতেছেন, আমিও করিতেছি।” (যোহন ৫:১৭) অন্যদের জন্য কিছু করা হল সুখী হওয়ার প্রধান উপায়। (প্রেরিত ২০:৩৫, NW) একইভাবে, সত্য খ্রিস্টানরা অলসের মতো অপেক্ষা করে থাকে না। এর পরিবর্তে, তারা মানবজাতির জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে জানাতে অন্যদেরকে সাহায্য করার কাজ করে চলে।
ঈশ্বরের পদক্ষেপের জন্য অপেক্ষা করার সময় বিশ্বস্ত লোকেরা সর্বদা তাঁর প্রশংসা করে পরিতৃপ্ত থাকত। গীতরচক গীতসংহিতা ৭১ অধ্যায়, যা স্পষ্টতই দায়ূদ লিখেছিলেন, তা বলে: “আমি নিরন্তর প্রত্যাশা করিব, এবং উত্তর উত্তর তোমার আরও প্রশংসা করিব। আমার মুখ তোমার ধর্ম্মশীলতা বর্ণনা করিবে, তোমার পরিত্রাণ সমস্ত দিন বর্ণনা করিবে।” (গীতসংহিতা ৭১:১৪, ১৫) অধৈর্যপূর্বক প্রত্যাশা বা অপেক্ষা করার পরিবর্তে, দায়ূদ আনন্দ প্রকাশ করেছেন কারণ তিনি যিহোবার প্রশংসাতে রত ছিলেন এবং সত্য উপাসনায় রত অন্যদেরকে শক্তিশালী করছিলেন।—গীতসংহিতা ৭১:২৩.
দায়ূদের উদাহরণকে বিবেচনা করুন। দায়ূদকে তার রাজা তাড়না করেছিলেন, এক ঘনিষ্ঠ সঙ্গী দায়ূদের সঙ্গে প্রতারণা করেছিলেন এবং তার নিজের পুত্র তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। এই প্রত্যেকটা ঘটনাতে, যিহোবার নিরূপিত সময়ে স্বস্তি পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করার সময় দায়ূদ কি সুখী হতে পারতেন?যিহোবার জন্য অপেক্ষা করা, দেরি করছে এমন একটা বাসের জন্য অপেক্ষা করার মতো বিরক্তিকর বিষয় নয়। এটা অনেকটা সেই বাবামাদের আনন্দপূর্ণ অপেক্ষার মতো, যখন তাদের সন্তান ধীরে ধীরে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার দিকে এগিয়ে যায়, যার জন্য তারা গর্বিত হতে পারবে। সেই বছরগুলো কাজের—প্রশিক্ষণ, নির্দেশনা ও শাসন প্রদানের—দ্বারা পরিপূর্ণ, যার সমস্তকিছুর লক্ষ্য হল আশানুরূপ ফল লাভ করা। একইভাবে, আমরা যারা যিহোবার জন্য অপেক্ষা করছি আমরা অন্যদেরকে ঈশ্বরের নিকটবর্তী হতে সাহায্য করার দ্বারা সুখ খুঁজে পাই। আমরাও ঈশ্বরের অনুমোদন এবং পরিশেষে পরিত্রাণ চাই।
আশা পরিত্যাগ না করা
যিহোবার জন্য অপেক্ষা করা, আশাকে পরিত্যাগ না করে বরং ক্রমাগত তাঁকে ভালবেসে ও সেবা করে চলাকে ইঙ্গিত করে। এটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাস্বরূপ হতে পারে। আজকে ঈশ্বরের অনেক দাস এমন সমাজগুলোতে বাস করে, যেখানে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞার ওপর বিশ্বাস করে জীবনযাপন করে বলে লোকেরা তাদেরকে উপহাস করে থাকে। কিন্তু, সেই বিশ্বস্ত ইস্রায়েলীয়দের উদাহরণ বিবেচনা করুন, যারা বাবিলে ৭০ বছর নির্বাসনে থাকাকালীন তাদের আশাকে জীবন্ত রেখেছিল। কী তাদেরকে তা করতে সাহায্য করেছিল? কোনো সন্দেহ নেই যে, গীতসংহিতার পুস্তক অধ্যয়ন করা তাদের শক্তি জুগিয়েছিল। উৎসাহজনক এক গীত, যেটি হয়তো সেই সময়েই লেখা হয়েছিল, সেটি বলে: “আমি তাঁহার বাক্যে প্রত্যাশা করিতেছি। প্রহরিগণ যেরূপ প্রত্যূষের, প্রহরিগণ যেরূপ প্রত্যূষের জন্য আকাঙ্ক্ষী, আমার প্রাণ প্রভুর [“যিহোবার,” NW] জন্য ততোধিক আকাঙ্ক্ষী। ইস্রায়েল, সদাপ্রভুতে প্রত্যাশা কর।”—গীতসংহিতা ১৩০:৫-৭.
যে-যিহুদিরা এই বিষয়টা পড়ে ও এর সম্বন্ধে কথা বলে তাদের আশাকে জীবন্ত রেখেছিল, তারা পুরস্কৃত হয়েছিল, যখন শেষ পর্যন্ত আক্রমণকারীদের কাছে বাবিলের পতন হয়েছিল। হাজার হাজার বিশ্বস্ত যিহুদি দ্রুত যিরূশালেমের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। সেই সময়ের বিষয়ে লেখা হয়েছিল: “সদাপ্রভু যখন সিয়োনের বন্দিদিগকে ফিরাইলেন . . . আমাদের মুখ হাস্যে পূর্ণ হইল।” (গীতসংহিতা ১২৬:১, ২) সেই যিহুদিরা আশা ত্যাগ করেনি কিন্তু তারা ক্রমাগত তাদের বিশ্বাসকে শক্তিশালী করে চলেছিল। আর তারা যিহোবার প্রশংসা গান করাও পরিত্যাগ করেনি।
একইভাবে, যে-সত্য খ্রিস্টানরা “যুগান্তের” সময়ে ঈশ্বরের জন্য অপেক্ষা করে, তারা তাদের বিশ্বাসকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টা করে চলে। তারা ঈশ্বরের বাক্য অধ্যয়ন করে, একে অন্যকে উৎসাহ দান করে এবং তাঁর রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করার দ্বারা যিহোবার প্রশংসা করে চলে।—মথি ২৪:৩, ১৪.
শাসন থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করা
ঈশ্বরের ভাববাদী যিরমিয় লিখেছিলেন: “সদাপ্রভুর পরিত্রাণের প্রত্যাশা করা, নীরবে অপেক্ষা করা, ইহাই মঙ্গল।” (বিলাপ ৩:২৬) যিরমিয় বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, যিরূশালেমকে ধ্বংস হতে দিয়ে যিহোবা তাঁর লোকেদের যেভাবে শাসন করেছিলেন, সেই সম্বন্ধে ঈশ্বরের লোকেদের অভিযোগ না করা ভাল হবে। এর পরিবর্তে, তাদের নিজেদের অবাধ্যতা এবং মনোভাবের পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে গভীরভাবে চিন্তা করার দ্বারা অভিজ্ঞতা থেকে উপকৃত হওয়া উচিত ছিল।—বিলাপ ৩:৪০, ৪২.
যিহোবার কাছ থেকে আসা শাসন যেভাবে আমাদের উপকৃত করে, সেটাকে অনেকটা ফল যেভাবে পরিপক্ব হতে থাকে, সেটার সঙ্গে তুলনা করা যায়। ঈশ্বরের কাছ থেকে আসা শাসন সম্বন্ধে বাইবেল বলে: “যাহাদের অভ্যাস জন্মিয়াছে, তাহা পরে তাহাদিগকে ধার্ম্মিকতার শান্তিযুক্ত ফল প্রদান করে।” (ইব্রীয় ১২:১১) ঠিক যেমন ফল পাকার জন্য সময়ের প্রয়োজন, তেমনই ঈশ্বরের জোগানো প্রশিক্ষণে সাড়া দিয়ে আমাদের মনোভাব পরিবর্তনের জন্যও সময়ের প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, আমাদের কোনো অশোভন আচরণের জন্য যদি আমরা মণ্ডলীতে কিছু বিশেষ সুযোগ হারাই, তা হলে ঈশ্বরের জন্য অপেক্ষা করার মনোভাব আমাদেরকে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়া ও হাল ছেড়ে দেওয়া থেকে প্রতিরোধ করবে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে দায়ূদের অনুপ্রাণিত কথাগুলো উৎসাহজনক: “[ঈশ্বরের] ক্রোধ নিমেষমাত্র থাকে, তাঁহার অনুগ্রহেতেই জীবন; সন্ধ্যাকালে রোদন অতিথিরূপে আইসে, কিন্তু প্রাতঃকালে আনন্দ উপস্থিত।” (গীতসংহিতা ৩০:৫) আমরা যদি অপেক্ষা করার মনোভাব গড়ে তুলি এবং ঈশ্বরের বাক্য ও সংগঠন থেকে পাওয়া পরামর্শ প্রয়োগ করি, তা হলে আমাদের জন্য “আনন্দ উপস্থিত” হবে।
পরিপক্ব হওয়ার জন্য সময়ের প্রয়োজন
আপনার বয়স যদি কম হয়ে থাকে বা সম্প্রতি আপনি বাপ্তিস্ম নিয়ে থাকেন, তা হলে আপনি হয়তো খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতে কিছু দায়িত্ব পাওয়ার জন্য উৎসুক হতে পারেন। কিন্তু এই ধরনের দায়িত্ব পালন করার জন্য যে-আধ্যাত্মিক পরিপক্বতার প্রয়োজন, তা গড়ে তুলতে সময় লাগবে। তাই, একজন আধ্যাত্মিকমনা ব্যক্তি হয়ে ওঠার জন্য, আপনার প্রথম দিকের বছরগুলোকে কাজে লাগান। উদাহরণস্বরূপ, তরুণ বয়স হল পুরো বাইবেল পড়ার, খ্রিস্টীয় গুণাবলি গড়ে তোলার এবং শিষ্য তৈরি করার জন্য দক্ষতা অর্জন করার একেবারে উপযুক্ত সময়। (উপদেশক ১২:১) আপনি যদি নম্রভাবে অপেক্ষা করার মনোভাব দেখান, তা হলে আপনার ক্ষেত্রে আরও বেশি দায়িত্ব লাভ করার জন্য যিহোবার নিরূপিত সময় আসবে।
শিষ্য তৈরির কাজের জন্যও ধৈর্যের প্রয়োজন। একজন কৃষক যেমন যতক্ষণ না ঈশ্বর বীজের বৃদ্ধি ঘটান, ততক্ষণ পর্যন্ত জল ঢালতেই থাকেন, শিষ্যকরণের কাজটাও সেইরকম। (১ করিন্থীয় ৩:৭; যাকোব ৫:৭) অন্যদের হৃদয়ে যিহোবার প্রতি বিশ্বাস ও উপলব্ধিবোধ গড়ে তোলার জন্য ধৈর্যপূর্বক মাসের পর মাস বা এমনকি বছরের পর বছর ধরে বাইবেল অধ্যয়ন করাতে হতে পারে। যিহোবার জন্য অপেক্ষা করার অন্তর্ভুক্ত হল অধ্যবসায়ী হওয়া, এমনকি প্রথম দিকে ছাত্ররা যদি তারা যা শিখছে তাতে সাড়া না-ও দেয়। তারা যদি অন্তত কিছুটা উপলব্ধিও দেখায়, তবে সেটাই হয়তো একটা লক্ষণ হতে পারে যে, তারা যিহোবার আত্মার প্রতি সাড়া দিচ্ছে। ধৈর্য ধরলে আপনি হয়তো এই বিষয়টা দেখে আনন্দিত হতে পারবেন যে, যিহোবা আপনার ছাত্রকে খ্রিস্টের একজন শিষ্য হওয়ার দিকে চালিত করছেন।—মথি ২৮:২০.
অপেক্ষা করার দ্বারা প্রেম প্রকাশ করা
অপেক্ষা করা কীভাবে প্রেম ও দৃঢ়প্রত্যয়ের এক প্রকাশ হতে পারে, তার উদাহরণ হিসেবে একজন বৃদ্ধা সাক্ষি বোনের পরিস্থিতি বিবেচনা করুন, যিনি দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজের মরু অঞ্চলে বাস করেন। তাদের গ্রামে কেবল তিনি এবং আরেকজন বোনই যিহোবার সাক্ষি। আপনি কি কল্পনা করতে পারেন যে, সহসাক্ষিদের পরিদর্শনের জন্য তারা কতটা উৎসুকভাবে অপেক্ষা করে থাকে? একবার, একজন ভ্রমণ অধ্যক্ষ তাদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় পথ হারিয়ে ফেলেন আর সেইজন্য তাকে নিজের পায়ের চিহ্ন অনুসরণ করে আবার সেই জায়গায় ফিরে যেতে হয়, যেখান থেকে তিনি যাত্রা শুরু করেছিলেন। এর ফলে তার বেশ কয়েক ঘন্টা দেরি হয়ে যায়। মধ্যরাত গড়িয়ে যাওয়ার অনেক পরে তিনি অবশেষে দূর থেকে সেই গ্রামটা দেখতে পান। যেহেতু সেই এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না, তাই তিনি এক জায়গায় আলো জ্বলছে দেখে অবাক হয়ে যান। তিনি কত আনন্দিতই না হয়েছিলেন, যখন তিনি শেষ পর্যন্ত গ্রামের প্রবেশপথে এসে পৌঁছেছিলেন আর দেখেছিলেন যে, সেই আলোটা ওই বৃদ্ধা বোনের উঁচুতে ধরে রাখা প্রদীপ থেকে আসছিল। সেই বোন নিশ্চিত ছিলেন যে, ভ্রমণ অধ্যক্ষ আসবেনই আর তাই তিনি অপেক্ষা করছিলেন।
এই বোনের ধৈর্যের মতো আমরাও যিহোবার জন্য অপেক্ষা করার সময় সুখী। আমরা নিশ্চিত যে, যিহোবা তাঁর প্রতিজ্ঞাগুলো রাখবেন। আর সেই ভ্রমণ অধ্যক্ষের মতো আমরা তাদের প্রতি উপলব্ধি দেখাই, যারা আমাদের জন্য অপেক্ষা করে থাকে। তাই এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, যারা যিহোবার জন্য অপেক্ষা করে, তাদের প্রতি তিনি সন্তুষ্ট। বাইবেল বলে: “সদাপ্রভু তাহাদিগেতে সন্তুষ্ট, . . . যাহারা তাঁহার দয়ার অপেক্ষায় থাকে।”—গীতসংহিতা ১৪৭:১১.
[১৮ পৃষ্ঠার চিত্র]
যে-লোকেরা ঈশ্বরের প্রশংসায় ব্যস্ত রয়েছে, তারা যিহোবার জন্য অপেক্ষা করে আনন্দ খুঁজে পায়