সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

সাহস —ঈশ্বরের দাসদের জন্য অপরিহার্য

সাহস —ঈশ্বরের দাসদের জন্য অপরিহার্য

সাহস —ঈশ্বরের দাসদের জন্য অপরিহার্য

 সাহস হল বলবান, নির্ভীক, দুঃসাহসী এবং বিক্রমী হওয়ার এক গুণ। এটা ভয়, কাপুরুষতা ও ভীরুতার বিপরীত। (মার্ক ৬:৪৯, ৫০; ২ তীমথিয় ১:৭) ঈশ্বরের দাসদের ক্ষেত্রে প্রদর্শন করার জন্য এটা সবসময়ই একটা অপরিহার্য গুণ হয়ে এসেছে আর এখন এমনকি এই বর্তমান দুষ্ট বিধিব্যবস্থার শেষ সময়ে এটা আরও বেশি জরুরি।

যে-ইব্রীয় ক্রিয়াপদ প্রায়ই সাহসী হওয়ার অর্থ প্রকাশ করে তা হল, চাজাক। এটা মূলত ‘বলবান হওয়ার’ ধারণা বহন করে আর বেশির ভাগ সময়ই কাজ করার সঙ্গে যুক্ত, যেমনটা ২ বংশাবলি ১৯:১১ পদে দেখানো হয়েছে: “সাহসপূর্ব্বক [“বলবান হয়ে,” NW] কার্য্য কর, আর সদাপ্রভু সুজনের সহবর্ত্তী হউন।” চাজাক শব্দটি প্রায়ই আ্যমাট্‌স্‌ শব্দের সঙ্গে ব্যবহৃত হয় আর এটির অর্থও ‘বলবান হওয়া।’ উভয় ক্রিয়াপদই এই অভিব্যক্তিগুলোর মধ্যে পাওয়া যায় যেমন, “বলবান হও, ও সাহস কর” (যিহোশূয়ের পুস্তক ১০:২৫) এবং “সাহস কর, তোমাদের অন্তঃকরণ সবল হউক।”—গীতসংহিতা ৩১:২৪.

গ্রিক ভাষায়, নির্ভীক বা সাহসী হওয়া ২ করিন্থীয় ৫:৮ পদে “আমরা সাহস করিতেছি” কথাগুলোতে থাররিও ক্রিয়াপদের দ্বারা এবং মথি ৯:২ পদে “বৎস, সাহস কর, তোমার পাপ ক্ষমা হইল,” কথাগুলোতে থারসিও ক্রিয়াপদের দ্বারা প্রকাশিত হয়েছে। টোলমাও ক্রিয়াপদটা “দুঃসাহস” (যিহূদা ৯, NW), ‘সাহস করা,’ (মার্ক ১২:৩৪), “স্পর্ধা” (রোমীয় ১৫:১৮, NW), ‘নির্ভীকভাবে কাজ করা’ (২ করিন্থীয় ১১:২১, NW) হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে; এই ক্রিয়াপদের ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া কোনো কর্মভার সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সাহস বা নির্ভীকতাকে প্রকাশ করে।

বিশ্বস্ত থাকার জন্য সাহস দরকার

পরাৎপরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকার জন্য ঈশ্বরের দাসদের সবসময় সাহসের দরকার হয়েছে। এই কারণে, ইস্রায়েলীয়রা যখন প্রতিজ্ঞাত দেশে প্রবেশ করার জন্য প্রস্তুত ছিল, তখন মোশি তাদের বলেছিলেন: “তোমরা বলবান হও ও সাহস কর” আর তিনি তার নিযুক্ত উত্তরসূরি যিহোশূয়ের কাছে একই পরামর্শের বিষয়ে পুনরায় উল্লেখ করেছিলেন। (দ্বিতীয় বিবরণ ৩১:৬, ৭) মোশির সেই কথাগুলোকে সমর্থন করে, যিহোবা নিজেই পরে যিহোশূয়কে বলেছিলেন, “বলবান হও ও সাহস কর; . . . কেবল বলবান হও ও অতিশয় সাহস কর।” (যিহোশূয়ের পুস্তক ১:৬, ৭, ৯) প্রয়োজনীয় সাহসের দ্বারা পূর্ণ হওয়ার জন্য সেই জাতিকে যিহোবার আইন শুনতে, শিখতে ও পালন করতে হয়েছিল। (দ্বিতীয় বিবরণ ৩১:৯-১২) একইভাবে, সাহসী ও বলবান হয়ে ওঠার জন্য যিহোশূয়কে নিয়মিতভাবে ঈশ্বরের বাক্য পড়তে ও সেগুলো যত্নপূর্বক পালন করতে বলা হয়েছিল। “তোমার মুখ হইতে এই ব্যবস্থাপুস্তক বিচলিত না হউক; তন্মধ্যে যাহা যাহা লিখিত আছে, যত্নপূর্ব্বক সেই সকলের অনুযায়ী কর্ম্ম করণার্থে তুমি দিবারাত্র তাহা ধ্যান কর; কেননা তাহা করিলে তোমার শুভগতি হইবে ও তুমি বুদ্ধিপূর্ব্বক চলিবে।” (যিহোশূয়ের পুস্তক ১:৮) আজকে ঈশ্বরের সমস্ত দাসের সামনে সাহসের সঙ্গে, বিশ্বস্তভাবে ও বিজ্ঞতার সঙ্গে কাজ করে সফল হওয়ার একই পথ রয়েছে।

সাহস অর্জন করার জন্য বিভিন্ন সহায়ক

শাস্ত্রে সাহসী হওয়ার জন্য অনেক স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে এবং সেইসঙ্গে এগুলো দেখায় যে, একজন কীভাবে তা অর্জন করতে পারে। (গীতসংহিতা ৩১:২৪) সহউপাসকদের সঙ্গে মেলামেশা বড় ধরনের এক সহায়ক হতে পারে। পৌল যখন হতাশাজনক পরিস্থিতির মধ্যে ছিলেন, তখন তিনি তার খ্রিস্টান ভাইদের দেখা পেয়েছিলেন আর “ঈশ্বরের ধন্যবাদ করিয়া সাহস প্রাপ্ত হইলেন।” (প্রেরিত ২৮:১৫) গীতসংহিতা ২৭:১৪ পদে একজন সাহসী ব্যক্তি দায়ূদ বলেছিলেন: “সাহস কর, তোমার অন্তঃকরণ সবল হউক।” ২৭ গীতের আগের পদগুলোতে তিনি প্রকাশ করেন যে, কী তাকে সাহসী হতে সাহায্য করেছিল: জীবন ‘দুর্গ’ হিসেবে যিহোবার ওপর নির্ভর করা (পদ ১), যিহোবা যেভাবে তার বিপক্ষদের মোকাবিলা করেছিলেন, সেই অতীত অভিজ্ঞতাগুলো (২, ৩ পদ), যিহোবার মন্দিরে উপাসনা করার প্রতি উপলব্ধিবোধ (৪ পদ), যিহোবার সুরক্ষার এবং তাঁর সাহায্য ও মুক্তির ওপর নির্ভর করা (৫-১০ পদ), ঈশ্বরের ধার্মিক পথের নীতিগুলোর বিষয়ে অবিরত শিক্ষা (১১ পদ), বিশ্বাস এবং অপেক্ষা বা প্রত্যাশার মতো গুণগুলো (১৩, ১৪ পদ)।

যেকারণে খ্রিস্টানদের সাহস দরকার

যিহোবা ঈশ্বরের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন এক জগতের আচরণ ও কাজগুলো থেকে কলুষতামুক্ত থাকতে এবং জগতের ঘৃণা সত্ত্বেও তাঁর প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে প্রত্যেক খ্রিস্টানের সাহস দরকার। যিশু খ্রিস্ট তাঁর শিষ্যদের বলেছিলেন: “জগতে তোমরা ক্লেশ পাইতেছ; কিন্তু সাহস কর, আমিই জগৎকে জয় করিয়াছি।” (যোহন ১৬:৩৩) ঈশ্বরের পুত্র কখনোই জগতের প্রভাবের প্রতি বশীভূত হননি কিন্তু তিনি কোনো দিক দিয়েই জগতের মতো না হয়ে বরং জগৎকে জয় করেছিলেন। একজন বিজয়ী হিসেবে যিশু খ্রিস্টের চমৎকার উদাহরণ এবং তাঁর নিখুঁত জীবনধারার ফলাফল একজন ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় সাহস দিয়ে পূর্ণ করতে পারে, যাতে সেই ব্যক্তি জগৎ থেকে আলাদা এবং নিষ্কলঙ্ক থাকার ক্ষেত্রে তাঁকে অনুকরণ করতে পারেন।—যোহন ১৭:১৬.

যিশু খ্রিস্ট তাঁর অনুসারীদের ওপর আস্থা সহকারে যে-কাজ অর্পণ করেছিলেন, তা করার জন্য সাহস দরকার। তিনি তাদের বলেছিলেন, “সর্ব্ব জাতির কাছে সাক্ষ্য দিবার নিমিত্ত রাজ্যের এই সুসমাচার সমুদয় জগতে প্রচার করা যাইবে” এবং ‘তোমরা পৃথিবীর প্রান্ত পর্য্যন্ত আমার সাক্ষী হইবে।’—মথি ২৪:১৪; প্রেরিত ১:৮.

খ্রিস্টানরা তাদের প্রচেষ্টার জন্য কোন ফলাফল আশা করতে পারে? পৌলের এই অভিজ্ঞতা হয়েছিল যে, “কেহ কেহ তাঁহার কথায় প্রত্যয় করিলেন, আর কেহ কেহ অবিশ্বাস করিলেন।” (প্রেরিত ২৮:২৪) ঈশ্বরের বাক্যের ওপর ভিত্তি করে প্রকৃত খ্রিস্টীয় প্রচারের ক্ষেত্রে কোনো না কোনো ধরনের সাড়া আশা করা যায়। এটা অত্যন্ত জোরালো, শক্তিশালী এবং সর্বোপরি এটা এমন এক বিচার্য বিষয় তুলে ধরে, যেটার পক্ষে বা বিপক্ষে লোকেদের যেতে হবে। কেউ কেউ রাজ্যের বার্তার সক্রিয় প্রতিরোধী হয়ে ওঠে। (প্রেরিত ১৩:৫০; ১৮:৫, ৬) অন্যেরা আবার কিছু সময়ের জন্য শোনে কিন্তু বিভিন্ন কারণে শেষ পর্যন্ত সরে পড়ে। (যোহন ৬:৬৫, ৬৬) আর কেউ কেউ সুসমাচার গ্রহণ করে এবং সেইমতো কাজ করে। (প্রেরিত ১৭:১১; লূক ৮:১৫) কিন্তু, বিরোধীদের অথবা উদাসীন ব্যক্তিদের কাছ থেকে নেতিবাচক সাড়ার মুখোমুখি হওয়ার জন্য রাজ্যের সুসমাচারের ঘোষকদের সাহসের প্রয়োজন।

তাড়নার প্রতি উপযুক্ত মনোভাব

খ্রিস্টান হিসেবে একজন ব্যক্তি যদি ঈশ্বরের আদেশগুলো মেনে চলেন, তা হলে তাড়না এড়ানো অসম্ভব কারণ “যত লোক ভক্তিভাবে খ্রীষ্ট যীশুতে জীবন ধারণ করিতে ইচ্ছা করে, সেই সকলের প্রতি তাড়না ঘটিবে।” (২ তীমথিয় ৩:১২) কিন্তু, সত্য খ্রিস্টানরা সমস্ত ধরনের চরম তাড়না সাহসের সঙ্গে সহ্য করতে এবং একই সময়ে তাড়নাকারীদের প্রতি কোনোরকম বিদ্বেষ ও ঘৃণা ছাড়াই সবসময় এক সুখী মনোভাব বজায় রাখতে সক্ষম। এর কারণ হল, তারা এর সঙ্গে জড়িত বিষয়গুলো অর্থাৎ তাড়নার উৎস কে এবং কেন তা ঘটতে দেওয়া হচ্ছে, সেগুলো জানে। এই ধরনের অভিজ্ঞতাগুলোর কারণে আশ্চর্য এবং উদ্বিগ্ন হওয়ার পরিবর্তে, তারা তাড়নার মধ্যে আনুগত্যের পরীক্ষায় খ্রিস্টের সঙ্গে আনন্দের সহভাগী হয়।—১ পিতর ৪:১২-১৪.

সাহসী বিজয়ীরা

যিশু খ্রিস্ট তাঁর অনুসারীদের বলেছিলেন, “সাহস কর, আমিই জগৎকে জয় করিয়াছি।” যারা বিশ্বস্তভাবে তাঁর উদাহরণ অনুসরণ করে এবং ঈশ্বরের বাক্য বাইবেল ও যিহোবার আত্মা দ্বারা পরিচালিত সংগঠনের মাধ্যমে জোগানো সমস্ত সাহায্য গ্রহণ করে, তারাও তা-ই করতে পারে। তাদেরও যিহোবা ঈশ্বরের কাছ থেকে এই নিশ্চয়তা রয়েছে, যা ইব্রীয় ১৩ অধ্যায় ৫ ও ৬ পদে এভাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে: “আমি কোন ক্রমে তোমাকে ছাড়িব না, ও কোন ক্রমে তোমাকে ত্যাগ করিব না।” তাই, আমরা উত্তমভাবেই সাহস রেখে বলতে পারি: “প্রভু [“যিহোবা,” NW] আমার সহায়, আমি ভয় করিব না; মনুষ্য আমার কি করিবে?”

[৩১ পৃষ্ঠার বাক্স]

যিহোবার সাক্ষিদের ২০০৭ সালের “খ্রিস্টকে অনুসরণ করুন!” জেলা সম্মেলন

তারিখ শহর ভাষা

১. আগস্ট ৩১-সেপ্টে. ২ চেন্নাই-১ তামিল

২. আগস্ট ৩১-সেপ্টে. ২ কোচি-১ মালায়ালাম

৩. আগস্ট ৩১-সেপ্টে. ২ খোজিখোদ মালায়ালাম

৪. সেপ্টে. ৭-৯ গ্যাংটক নেপালি

৫. সেপ্টে. ২১-২৩ কোচি-২ মালায়ালাম

৬. সেপ্টে. ২৮-৩০ চেন্নাই-২ তামিল

৭. সেপ্টে. ২৮-৩০ কোয়েম্বাটুর তামিল

৮. অক্টো. ৫-৭ দুলিয়াজান হিন্দি

৯. অক্টো. ৫-৭ মাদুরাই তামিল

১০. অক্টো. ৫-৭ তিরুচ্চিরাপল্লী তামিল

১১. অক্টো. ১৩-১৪ আইজল মিজো

১২. অক্টো. ১২-১৪ ব্যাঙ্গালোর ইংরেজি

১৩. অক্টো. ১২-১৪ জামশেদপুর হিন্দি

১৪. অক্টো. ১২-১৪ ম্যাঙ্গালোর কান্নাড়া

১৫. অক্টো. ১২-১৪ মুম্বই হিন্দি

১৬. অক্টো. ১২-১৪ বিজয়ওয়াড়া তেলুগু

১৭. অক্টো. ১৯-২১ ব্যাঙ্গালোর তামিল

১৮. অক্টো. ১৯-২১ চিনচড় হিন্দি

১৯. অক্টো. ১৯-২১ জলন্ধর পাঞ্জাবি

২০. অক্টো. ১৯-২১ নিউ দিল্লি হিন্দি

২১. অক্টো. ১৯-২১ পোর্ট ব্লেয়ার হিন্দি

২২. অক্টো. ১৯-২১ সেকেন্দ্রাবাদ তেলুগু

২৩. অক্টো. ২৬-২৮ আনন্দ গুজরাটি

২৪. অক্টো. ২৬-২৮ কলকাতা বাংলা