সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

 খ্রিস্টীয় মণ্ডলী থেকে সহযোগিতা লাভ করার যোগ্য হতে হলে একজন বিধবাকে অবশ্যই এমন একজন হতে হবে, “যাহার একমাত্র স্বামী ছিল,” পৌলের এই কথাগুলো থেকে আমরা কী বুঝতে পারি?—১ তীমথিয় ৫:৯.

এটা স্পষ্ট যে, প্রেরিত পৌল এখানে একজন স্ত্রীর বিধবা হওয়ার আগের পরিস্থিতি সম্বন্ধে উল্লেখ করছিলেন। এই কথাগুলোর মানে কি এই যে, সেই বিধবা নিশ্চয়ই শুধুমাত্র একবারই বিয়ে করেছেন? নাকি পৌলের কথাগুলোর সম্ভবত ভিন্ন কোনো অর্থ রয়েছে? *

কেউ কেউ মনে করে যে, পৌল এমন বিধবাদের সম্বন্ধে বলছিলেন, যারা শুধুমাত্র একবারই বিয়ে করেছিল। এটা সত্য যে, অনেক সংস্কৃতি ও সমাজে এমন একজন বিধবাকে বিশেষভাবে সতী বলে দেখা হতো, যিনি আর বিয়ে করতেন না। কিন্তু, এই ধরনের এক দৃষ্টিভঙ্গি পৌলের অন্যত্র বলা কথাগুলোর বিপরীত। উদাহরণস্বরূপ, করিন্থের খ্রিস্টানদের কাছে তিনি এটা স্পষ্ট করেছিলেন যে, যদিও তার মতানুসারে একজন বিধবা যদি পুনরায় বিয়ে না করেন, তা হলে আরও ধন্যা, তবে ‘সে স্বাধীনা, যাহাকে ইচ্ছা করে, তাহার সহিত বিবাহিতা হইতে পারে, কিন্তু কেবল প্রভুতেই।’ (১ করিন্থীয় ৭:৩৯, ৪০; রোমীয় ৭:২, ৩) এ ছাড়া, তীমথিয়ের উদ্দেশে লেখা তার পত্রে পৌল বলেছিলেন: “আমার বাসনা এই, যুবতী [বিধবারা] বিবাহ করুক।” (১ তীমথিয় ৫:১৪) তাই, একজন বিধবা যদি পুনরায় বিয়ে করার বিষয়টা বেছে নেন, তাতে লজ্জার কিছুই ছিল না।

তা হলে, তীমথিয়কে বলা পৌলের কথাগুলোকে আমাদের কীভাবে বোঝা উচিত? “যাহার একমাত্র স্বামী ছিল” বা যিনি এক স্বামীর স্ত্রী ছিলেন অভিব্যক্তিটা কেবলমাত্র এই পদেই পাওয়া যায়। আগ্রহের বিষয় হল, এটা পৌলের একটা অভিব্যক্তির সঙ্গে মিল রাখে, যেটা তিনি বিভিন্ন সময় তার লেখাগুলোতে মূলত এভাবে ব্যবহার করেছিলেন, “এক স্ত্রীর স্বামী”। (১ তীমথিয় ৩:২, ১২; তীত ১:৬) পৌল এই অভিব্যক্তিটাই ব্যবহার করেছিলেন, যখন তিনি খ্রিস্টান অধ্যক্ষদের ও পরিচারক দাসদের যোগ্যতাবলির তালিকা করেছিলেন। ওই প্রসঙ্গটিতে বিবরণের মূল অর্থ হচ্ছে, খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতে দায়িত্ব লাভের জন্য যোগ্য হতে হলে একজন পুরুষকে, যদি কিনা তিনি বিবাহিত হয়ে থাকেন, অবশ্যই তার স্ত্রীর প্রতি বিশ্বস্ত ও অনুগত হতে হবে এবং নৈতিকভাবে অনিন্দনীয় হতে হবে। * ব্যাপারটা যদি তা-ই হয়, তা হলে ১ তীমথিয় ৫:৯ পদের অভিব্যক্তির অর্থও একই হবে: একজন বিধবাকে মণ্ডলী থেকে সহযোগিতা লাভ করার জন্য যোগ্য হতে হলে, তাকে অবশ্যই একজন একনিষ্ঠ এবং অনুগত স্ত্রী হতে হবে, যিনি তার স্বামী বেঁচে থাকতে তার প্রতি বিশ্বস্ত ছিলেন এবং নৈতিক বিষয়ে অবশ্যই অনিন্দনীয় ছিলেন। পৌলের তালিকাকৃত অন্যান্য যোগ্যতাও এই ধরনের একজন বিধবার প্রতি ইঙ্গিত করে।—১ তীমথিয় ৫:১০.

[পাদটীকাগুলো]

^ প্রেরিতদের সময়ে গ্রিক-রোমীয় সাম্রাজ্যে বহুস্বামিক প্রথা গ্রহণযোগ্য ছিল না, যা হল একইসময়ে একজন স্ত্রীর একাধিক স্বামী থাকা। তাই, এই সম্ভাবনা খুবই কম যে, পৌল তীমথিয়কে সেই বিষয়ে বা কেউ এমনটা করেছে বলে সেই ব্যক্তিকে নিন্দা করে লিখছিলেন।

^ এই বিষয়ে আলোচনার জন্য ১৯৯৬ সালের ১৫ই অক্টোবর প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ১৭ পৃষ্ঠা এবং ১৯৮০ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) পত্রিকার ৩১ পৃষ্ঠায় “পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল” দেখুন।