সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

যে-উত্তরগুলো কার্যকারী!

যে-উত্তরগুলো কার্যকারী!

যে-উত্তরগুলো কার্যকারী!

 আজকে স্বাবলম্বী হওয়ার অগণিত বইয়ের মধ্যে যে-পরামর্শ পাওয়া যায়, তার অধিকাংশই সেইসমস্ত ব্যক্তিকে সহযোগিতা করার ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে, যাদের জীবন বর্তমানে সংকটের মধ্যে রয়েছে। বাইবেল এগুলো থেকে আলাদা। যদিও বাইবেলের পরামর্শ যারা দুর্দশার মধ্যে রয়েছে, তাদের সাহায্য করতে পারে কিন্তু এটি তার চেয়েও আরও বেশি কিছু করে। এর পরামর্শ একজন ব্যক্তিকে সেইসমস্ত ভুলভ্রান্তি এড়িয়ে চলতে সাহায্য করে, যেগুলো জীবনকে অকারণে কঠিন করে তুলতে পারে।

বাইবেল ‘অবোধদিগকে চতুরতা, যুবককে জ্ঞান ও পরিণামদর্শিতা প্রদান’ করতে পারে। (হিতোপদেশ ১:৪) বাইবেলে যা বলা হয়েছে তা যদি আপনি কাজে লাগান, তা হলে ‘পরিণামদর্শিতা আপনার প্রহরী হইবে, বুদ্ধি আপনাকে রক্ষা করিবে; যেন আপনাকে উদ্ধার করে দুষ্টের পথ হইতে।’ (হিতোপদেশ ২:১১, ১২) বাইবেলের পরামর্শ মেনে চলা যেভাবে আপনার স্বাস্থ্যরক্ষা করতে পারে, আপনার পারিবারিক জীবনকে উন্নত করতে পারে এবং আপনাকে আরও ভাল একজন কর্মী অথবা নিয়োগকর্তা করে তুলতে পারে, সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট কিছু উদাহরণ বিবেচনা করুন।

মদের ব্যবহার সম্বন্ধে পরিমিত হোন

মদের পরিমিত ব্যবহারকে বাইবেল নিষেধ করে না। প্রেরিত পৌল ওষুধ হিসেবে দ্রাক্ষারসের উপকারিতার কথা উল্লেখ করেছিলেন, যখন তিনি যুবক তীমথিয়কে পরামর্শ দিয়েছিলেন: “তোমার উদরের জন্য ও তোমার বার বার অসুখ হয় বলিয়া কিঞ্চিৎ দ্রাক্ষারস ব্যবহার করিও।” (১ তীমথিয় ৫:২৩) বাইবেলের অন্যান্য বাক্যাংশ দেখায় যে, ঈশ্বর দ্রাক্ষারসকে শুধুমাত্র ওষুধ হিসেবেই ব্যবহার করতে বলেননি। দ্রাক্ষারসকে “মর্ত্ত্যের চিত্তানন্দ-জনক” বলে বর্ণনা করা হয়েছে। (গীতসংহিতা ১০৪:১৫) কিন্তু, বাইবেল “বহুমদ্যের দাসী” হওয়ার বিরুদ্ধে সাবধান করে। (তীত ২:৩) এটি বলে: “মদ্যপায়ীদের সঙ্গী হইও না, পেটুক মাংসভোজীদের সঙ্গী হইও না; কারণ মদ্যপায়ী ও পেটুকের দৈন্যদশা ঘটে।” (হিতোপদেশ ২৩:২০, ২১) এই ধরনের ভারসাম্যপূর্ণ পরামর্শকে যখন উপেক্ষা করা হয়, তখন কী হয়? মাত্র কয়েকটা দেশ থেকে পাওয়া তথ্যগুলো লক্ষ করুন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-র গ্লোবাল স্ট্যাটাস রিপোর্ট অন আ্যলকোহল ২০০৪ বলে: “মদ সংক্রান্ত সমস্যার কারণে আয়ারল্যান্ডের লোকেরা প্রতি বছর প্রায় ২৪০ কোটি ইউরো [৩০০ কোটি মার্কিন ডলার] ব্যয় করে।” এই বিশাল পরিমাণ আর্থিক বোঝার অন্তর্ভুক্ত হল, “চিকিৎসা সংক্রান্ত ব্যয় (৩৫ কোটি মার্কিন ডলার), সড়ক দুর্ঘটনা সংক্রান্ত ব্যয় (৩৮ কোটি মার্কিন ডলার), মদ সংক্রান্ত অপরাধজনিত ব্যয় (১২ কোটি ৬০ লক্ষ মার্কিন ডলার), মদ সংক্রান্ত কারণে কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিতির ফলে ক্ষতি (১৩০ কোটি মার্কিন ডলার),” সেই রিপোর্টটি বলে।

মদের অপব্যবহারজনিত আর্থিক মূল্যের চেয়ে মানুষের কষ্টভোগের মূল্য আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। উদাহরণস্বরূপ, অস্ট্রেলিয়াতে শুধুমাত্র ১২ মাসের মধ্যে, পাঁচ লক্ষেরও বেশি লোক এমন ব্যক্তিদের দ্বারা শারীরিক নির্যাতন ভোগ করেছে, যারা মাতাল অবস্থায় ছিল। ফ্রান্সে, সমস্ত ঘরোয়া যুদ্ধের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ ঘরোয়া যুদ্ধের জন্য মদের অপব্যবহারকে দায়ী করা হয়। এই তথ্যগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে, মদ সম্পর্কে বাইবেলের পরামর্শ কি আপনার কাছে যুক্তিযুক্ত বলে মনে হয় না?

যে-অভ্যাসগুলো দেহকে দূষিত করে, সেগুলো পরিত্যাগ করুন

১৯৪২ সালের শুরুর দিকে, যখন ধূমপানকে জনপ্রিয় বিষয় হিসেবে দেখা হতো, তখন এই পত্রিকা এর পাঠকদের বুঝতে সাহায্য করেছিল যে, তামাক ব্যবহার করা বাইবেলের নীতিগুলোকে অমান্য করে আর এগুলো পরিত্যাগ করা উচিত। সেই বছরে প্রকাশিত হওয়া একটি প্রবন্ধ যুক্তি করেছিল যে, যারা ঈশ্বরকে খুশি করতে চায়, তাদের অবশ্যই “মাংসের ও আত্মার সমস্ত মালিন্য হইতে আপনাদিগকে শুচি” করার বিষয়ে বাইবেলের আদেশ মেনে চলতে হবে। (২ করিন্থীয় ৭:১) প্রায় ৬৫ বছর পর, এখনও কি বাইবেলভিত্তিক এই পরামর্শ বাস্তবসম্মত বলে প্রমাণিত হয় না?

২০০৬ সালে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তামাক ব্যবহারকে “বিশ্বে মৃত্যুর দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ কারণ” বলে বর্ণনা করেছিল। প্রতি বছর, প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ লোক তামাক সেবন করার কারণে মারা যায়। এর বিপরীতে, প্রতি বছর প্রায় ত্রিশ লক্ষ লোক এইচআইভি/এইডসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। বিংশ শতাব্দীতে ধূমপান, আনুমানিক ১০ কোটি লোকের জীবন কেড়ে নিয়েছে, যা প্রায় সেই শতাব্দীতে সংঘটিত সমস্ত যুদ্ধে মারা যাওয়া লোকেদের সংখ্যার সমান। বস্তুতপক্ষে, তামাক পরিত্যাগ করার প্রজ্ঞা এখন ব্যাপকভাবে গৃহীত।

“তোমরা ব্যভিচার হইতে পলায়ন কর”

বহু লোকই যৌনতা সংক্রান্ত বিষয়ে বাইবেল যা বলে, তা গ্রহণ করতে খুব একটা ইচ্ছুক নয়। অনেকে যা বিশ্বাস করতে পরিচালিত হয়েছে, তার বৈসাদৃশ্যে বাইবেল সমস্ত ধরনের যৌন আকাঙ্ক্ষাকে পাপ বলে কঠোরভাবে নিন্দা করে না। কিন্তু, মানুষের যৌন আকাঙ্ক্ষাকে কীভাবে প্রকাশ করা উচিত, সেই বিষয়ে এটি উত্তম পরামর্শ প্রদান করে। বাইবেল শিক্ষা দেয় যে, যৌনসম্পর্ক সেই স্ত্রী ও পুরুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ, যারা বিবাহিত। (আদিপুস্তক ২:২৪; মথি ১৯:৪-৬; ইব্রীয় ১৩:৪) যৌনসম্পর্ক হল বিবাহিত সাথিদের মধ্যে প্রেম ও কোমল স্নেহ প্রকাশ এবং লাভ করার এক উপায়। (১ করিন্থীয় ৭:১-৫) এই ধরনের মিলন থেকে যে-সন্তান জন্মগ্রহণ করে, সে এমন বাবামার দ্বারা উপকৃত হয়, যারা একে অন্যের যত্ন নিয়ে থাকে।—কলসীয় ৩:১৮-২১.

বাছবিচারহীন যৌনসম্পর্ক সম্বন্ধে বাইবেল আদেশ দেয়: “তোমরা ব্যভিচার হইতে পলায়ন কর।” (১ করিন্থীয় ৬:১৮) এর একটা কারণ কী? পদটি বলে চলে: “মনুষ্য অন্য যে কোন পাপ করে, তাহা তাহার দেহের বহির্ভূত; কিন্তু যে ব্যভিচার করে, সে নিজ দেহের বিরুদ্ধে পাপ করে।” যৌনতা সংক্রান্ত বিষয়ে বাইবেলের পরামর্শ যখন উপেক্ষা করা হয়, তখন তার ফলাফল কী হয়?

যুক্তরাষ্ট্রে কী ঘটছে, তা বিবেচনা করুন। শিল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে ওই দেশে কিশোর বয়সে গর্ভধারণের হার এখন সবচেয়ে বেশি—প্রত্যেক বছর প্রায় ৮,৫০,০০০ জন। যেসমস্ত শিশুকে গর্ভপাতের দ্বারা নষ্ট করা হয় না, অবিবাহিত মায়েরা তাদের জন্ম দিয়ে থাকে। কোনো সন্দেহ নেই যে, তাদের মধ্যে বেশ কিছু অল্পবয়সি মা তাদের সন্তানদের প্রেম ও শাসনের দ্বারা বড় করে তোলার জন্য যথাসাধ্য করে এবং কেউ কেউ সফলও হয়। কিন্তু নিষ্ঠুর বাস্তবতাটা হল যে, কিশোরী মায়েদের ছেলেরা খুব সম্ভবত জেলেই যায় আর তাদের মেয়েরা সম্ভবত নিজেরাও কিশোরী মায়ে পরিণত হয়। গত কয়েক দশকের পরিসংখ্যান পুনরালোচনা করার পর, গবেষক রবার্ট লার্ম্যান লিখেছিলেন: “একক বাবা অথবা মা রয়েছে এমন পরিবারগুলোর বৃদ্ধি হয়তো অন্যান্য সামাজিক সমস্যা যেমন, পড়াশোনা শেষ হওয়ার আগেই স্কুল পরিত্যাগ করার, মদ ও মাদকদ্রব্যের অপব্যবহারের, কিশোর বয়সে গর্ভধারণ ও সন্তান প্রসবের এবং কিশোর অপরাধের হারকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।”

এ ছাড়া, যেসমস্ত ব্যক্তি যৌনতার ক্ষেত্রে বাছবিচারহীন, তারা শারীরিক ও মানসিক উভয় দিক থেকেই স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ঝুঁকির মুখোমুখি হয়। উদাহরণস্বরূপ, পিডিয়াট্রিকস নামক পত্রিকা রিপোর্ট করে: “উপাত্ত ইঙ্গিত দেয় যে, সক্রিয়ভাবে যৌনসম্পর্কে লিপ্ত কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বিষণ্ণ হওয়ার ও আত্মহত্যা করার এক উচ্চ প্রবণতা রয়েছে।” অন্যান্য স্বাস্থ্যগত বিপদ সম্বন্ধে আমেরিকান সোশাল হেল্থ আ্যসোসিয়েশন বলে: “[যুক্তরাষ্ট্রে] অর্ধেকেরও বেশি লোক তাদের জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে যৌনবাহিত রোগব্যাধির শিকার হবে।” যৌনতা সম্বন্ধে বাইবেলের ব্যবহারিক পরামর্শ মেনে চললে যে-মনোদুঃখ ও কষ্টভোগ এড়ানো যেত, তা একটু চিন্তা করে দেখুন!

দৃঢ় পারিবারিক বন্ধন গড়ে তুলুন

বাইবেল ধ্বংসাত্মক অভ্যাসগুলো সম্বন্ধে সাবধান করা ছাড়াও আরও বেশি কিছু করে। কীভাবে পারিবারিক জীবনকে উন্নত করা যায়, সেই সম্বন্ধে এটির ব্যবহারিক পরামর্শ লক্ষ করুন।

ঈশ্বরের বাক্য বলে: “স্বামীরাও আপন আপন স্ত্রীকে আপন আপন দেহ বলিয়া প্রেম করিতে বাধ্য।” (ইফিষীয় ৫:২৮) তাদের স্ত্রীদের মূল্যকে উপেক্ষা করার পরিবর্তে, স্বামীদেরকে জোরালো পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, তারা যেন “স্ত্রীলোক অপেক্ষাকৃত দুর্ব্বল পাত্র বলিয়া তাহাদের সহিত জ্ঞানপূর্ব্বক” বাস করে। (১ পিতর ৩:৭) যে-তর্কবিতর্ক শুরু হতে পারে, সেই বিষয়ে স্বামীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে: “তোমরা আপন আপন স্ত্রীকে প্রেম কর, তাহাদের প্রতি কটুব্যবহার করিও না।” (কলসীয় ৩:১৯) আপনি কি এই বিষয়ে একমত নন যে, যে-স্বামী এই পরামর্শ কাজে লাগান, তিনি তার স্ত্রীর প্রেম ও সম্মান লাভ করেন?

স্ত্রীদের প্রতি বাইবেল এই নির্দেশনা প্রদান করে: “নারীগণ, তোমরা যেমন প্রভুর, তেমনি নিজ নিজ স্বামীর বশীভূতা হও। কেননা স্বামী স্ত্রীর মস্তক, যেমন খ্রীষ্টও মণ্ডলীর মস্তক; . . . স্ত্রীর উচিত যেন সে স্বামীকে ভয় [“সম্মান,” বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন] করে।” (ইফিষীয় ৫:২২, ২৩, ৩৩) আপনার কি মনে হয় না যে, একজন স্ত্রী যখন তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলার—বা তার সম্বন্ধে অন্যদের কাছে বলার—সময় এই পরামর্শ মেনে চলেন, তখন তিনি তার স্বামীর গভীর ভালবাসা লাভ করেন?

বাবামায়েরা, সন্তানদের প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্বন্ধে বাইবেল আপনাদের পরামর্শ দেয় যে, আপনারা আপনাদের সন্তানদের সঙ্গে “গৃহে বসিবার কিম্বা পথে চলিবার সময়ে এবং শয়ন কিম্বা গাত্রোত্থান কালে” ভাববিনিময় করুন। (দ্বিতীয় বিবরণ ৬:৭) বিশেষভাবে বাবাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, তারা যেন তাদের সন্তানদের নৈতিক নির্দেশনা এবং প্রেমপূর্ণ শাসন প্রদান করে। ঈশ্বরের বাক্য বলে, “পিতারা, তোমরা আপন আপন সন্তানদিগকে ক্রুদ্ধ করিও না, বরং প্রভুর [“যিহোবার,” NW] শাসনে ও চেতনা প্রদানে তাহাদিগকে মানুষ করিয়া তুল।” (ইফিষীয় ৬:৪) অন্যদিকে, সন্তানদের বলা হয়েছে: “তোমরা . . . পিতামাতার আজ্ঞাবহ হও” এবং “তোমার পিতাকে ও তোমার মাতাকে সমাদর করিও।” *ইফিষীয় ৬:১, ২.

আপনি কি মনে করেন যে, এই পরামর্শ কাজে লাগানোর দ্বারা পরিবারগুলো উপকৃত হতে পারবে? ‘হ্যাঁ,’ আপনি হয়তো বলতে পারেন, ‘মতবাদ হিসেবে শুনতে ভাল লাগে ঠিকই কিন্তু এটা কি সত্যিই কার্যকারী?’ আমরা আপনাকে যিহোবার সাক্ষিদের স্থানীয় কিংডম হলে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সেখানে আপনি সেই পরিবারগুলোর সঙ্গে পরিচিত হবেন, যারা বাইবেলের বিজ্ঞ পরামর্শ কাজে লাগানোর জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করছে। তাদের সঙ্গে কথা বলুন। পরিবারের সদস্যরা যেভাবে একে অন্যের সঙ্গে ভাববিনিময় করে, তা লক্ষ করুন। আপনি ব্যক্তিগতভাবে দেখতে পাবেন যে, বাইবেলের নীতিগুলো অনুযায়ী জীবনযাপন করা প্রকৃতপক্ষে পরিবারগুলোকে সুখী করে!

এক অধ্যবসায়ী কর্মী ও এক সৎ নিয়োগকর্তা

একটা চাকরি টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে রোজকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা সম্বন্ধে বাইবেল কী বলে? এটি বলে যে, যে-কর্মী তার কাজে দক্ষ, সম্ভবত তাকে মূল্যবান বলে গণ্য করা হয় ও তিনি পুরস্কৃত হন। “তুমি কি এমন কোন লোককে দেখেছ যে পাকা হাতে কাজ করে?” বিজ্ঞ রাজা শলোমন জিজ্ঞেস করেছিলেন। “সে রাজাদের জন্য কাজ করবে।” (হিতোপদেশ ২২:২৯, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন) অন্যদিকে, “অলস” ব্যক্তি তার নিয়োগকর্তার কাছে বিরক্তিকর, ঠিক যেন তার “চক্ষের পক্ষে ধূম।” (হিতোপদেশ ১০:২৬) বাইবেল কর্মীদের সৎ ও অধ্যবসায়ী হতে উৎসাহ দেয়। “চোর আর চুরি না করুক, বরং স্বহস্তে সদ্ব্যাপারে পরিশ্রম করুক।” (ইফিষীয় ৪:২৮) এই পরামর্শটি এমনকি তখনও প্রযোজ্য, যখন একজন নিয়োগকর্তা দেখছেন না। “যাহারা মাংসের সম্বন্ধে তোমাদের প্রভু, তোমরা তাহাদের আজ্ঞাবহ হও; চাক্ষুষ সেবা দ্বারা মনুষ্যের তুষ্টিকরের মত নয়, কিন্তু অন্তঃকরণের সরলতায় প্রভুকে [“যিহোবাকে,” NW] ভয় করিয়া আজ্ঞাবহ হও।” (কলসীয় ৩:২২) যদি আপনি একজন নিয়োগকর্তা হন, তা হলে আপনি কি এমন একজন কর্মীকে মূল্যবান বলে মনে করবেন না, যিনি এই পরামর্শটা কাজে লাগিয়েছেন?

নিয়োগকর্তাদের জন্য বাইবেল এই অনুস্মারক প্রদান করে: “কার্য্যকারী আপন বেতনের যোগ্য।” (১ তীমথিয় ৫:১৮) ইস্রায়েলকে দেওয়া ঈশ্বরের ব্যবস্থা নিয়োগকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছিল, যাতে তারা তাদের কর্মীদেরকে যথাসময়ে এবং ন্যায্য বেতন দেয়। মোশি লিখেছিলেন, “তুমি আপন প্রতিবাসীর উপর অত্যাচার করিও না, এবং তাহার দ্রব্য অপহরণ করিও না। বেতনজীবীর বেতন প্রাতঃকাল পর্য্যন্ত সমস্ত রাত্রি রাখিও না।” (লেবীয় পুস্তক ১৯:১৩) আপনি কি এমন একজন নিয়োগকর্তার অধীনে কাজ করতে পছন্দ করবেন না, যিনি বাইবেলের নির্দেশনা মেনে চলেন এবং আপনাকে যথাসময়ে ও ন্যায্য বেতন প্রদান করেন?

প্রজ্ঞার এক শ্রেষ্ঠ উৎস

এই বিষয়টা কি আপনাকে অবাক করে যে, বাইবেলের মতো অতি প্রাচীন বইয়ে এমন পরামর্শ রয়েছে, যা আজকের দিনেও ব্যবহারিক? অন্যান্য অনেক বই যেখানে অব্যবহারিক হয়ে পড়েছে, সেখানে বাইবেলে যা কিছু রয়েছে, তা আজও টিকে থাকার পিছনে কারণটা হল, বাইবেল কোনো মানুষের বাক্য নয় কিন্তু “ঈশ্বরের বাক্য।”—১ থিষলনীকীয় ২:১৩.

আমরা আপনাকে ঈশ্বরের বাক্যের সঙ্গে আরও ভালভাবে পরিচিত হওয়ার জন্য সময় করে নিতে উৎসাহিত করছি। যদি আপনি তা করেন, তা হলে আপনি বাইবেলের গ্রন্থকার যিহোবা ঈশ্বরের প্রতি আসক্তি অনুভব করতে শুরু করবেন। তিনি যে-পরামর্শ প্রদান করেন, তা কাজে লাগান আর দেখুন যে, এটা আপনাকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করছে এবং আপনার জীবনকে উন্নত করতে সাহায্য করছে। তা করার দ্বারা, আপনি ‘ঈশ্বরের নিকটবর্ত্তী হইবেন, তাহাতে তিনিও আপনার নিকটবর্ত্তী হইবেন।’ (যাকোব ৪:৮) অন্য কোনো বই আপনাকে এভাবে সাহায্য করতে পারবে না।

[পাদটীকা]

^ বাইবেলের যে-নীতিগুলো আপনার পারিবারিক জীবনে সাহায্য করতে পারে, সেই সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনার জন্য যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত পারিবারিক সুখের রহস্য (ইংরেজি) বইটি দেখুন।

[৪ পৃষ্ঠার চিত্র]

মদের ব্যবহার সম্পর্কে বাইবেলের দৃষ্টিভঙ্গি কি আপনার কাছে ব্যবহারিক বলে মনে হয়?

[৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

তামাক পরিত্যাগ করা সম্পর্কে বাইবেলভিত্তিক পরামর্শের সঙ্গে আপনি কি একমত?

[৭ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

বাইবেলের পরামর্শ মেনে চলা পারিবারিক জীবনকে উন্নত করে

[৫ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

ভূ-গোলক: Based on NASA photo