সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতে বিজয়লাভ

ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতে বিজয়লাভ

ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতে বিজয়লাভ

 ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গের ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালত, ২০০৭ সালের ১১ই জানুয়ারি রাশিয়ান ফেডারেশনের বিরুদ্ধে মামলায় রাশিয়ার যিহোবার সাক্ষিদের পক্ষে এক সর্বসম্মত রায় ঘোষণা করেছিল। সেই রায় যিহোবার সাক্ষিদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও তাদের এক নিরপেক্ষ শুনানির অধিকারকে সমর্থন করেছিল। আসুন আমরা বিবেচনা করি যে, কোন বিষয়টা সেই মামলার দিকে পরিচালিত করেছিল।

রাশিয়ার চেলিয়াবিন্‌স্ক্‌ শহরের যিহোবার সাক্ষিদের একটা মণ্ডলী মূলত বধির ব্যক্তি বিশেষদের নিয়ে গঠিত। তাদের সভাস্থলের জায়গা তারা একটা বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কলেজের কাছ থেকে ভাড়া নিয়েছিল। ২০০০ সালের ১৬ই এপ্রিল রবিবার, আঞ্চলিক মানবাধিকার কমিশনের সভানেত্রী বা কমিশনার আর সেইসঙ্গে দুজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ অফিসার ও সাধারণ পোশাক পরিহিত একজন পুলিশ তাদের সভায় বাধা প্রদান করেছিল। পক্ষপাতিত্বের কারণে বিশেষভাবে কমিশনারের পক্ষপাতিত্বের কারণে, কোনো আইনগত ভিত্তি ছাড়া সভা পরিচালনার এক মিথ্যা অভিযোগে সেই সমাবেশকে থামিয়ে দেওয়া হয়। ২০০০ সালের ১লা মে, সেই মিলনায়তনের লিজ শেষ করা হয়েছিল।

যিহোবার সাক্ষিরা চেলিয়াবিন্‌স্কের উকিলের কাছে একটা মামলা দায়ের করেছিল কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। রাশিয়ার সংবিধান এবং মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা সংরক্ষণের জন্য সম্মেলন, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং মেলামেশার স্বাধীনতাকে নিশ্চিত করে। তাই, আঞ্চলিক আদালতে আপিল করার পর জেলা আদালতে একটা দেওয়ানি মামলা করা হয়েছিল। এর আগে, ১৯৯৯ সালের ৩০শে জুলাই সর্বোচ্চ আদালত আরেকটা মামলায় নির্দেশ দিয়েছিল যে, “বিবেক ও ধর্মীয় মেলামেশার স্বাধীনতা সম্বন্ধে রাশিয়ার আইনব্যবস্থা অনুসারে, ‘কোনো বাধা ছাড়া’ বাক্যাংশটির অর্থ হচ্ছে, ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের জন্য [সেই উদ্দেশ্যে] কোনো স্থানের প্রয়োজন হলে আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি বা ছাড়পত্র লাগবে না।” (বন্ধনীগুলো তাদের।) কিন্তু এই পূর্বদৃষ্টান্ত থাকা সত্ত্বেও, জেলা ও আঞ্চলিক আদালতের মামলাগুলো খারিজ করা হয়েছিল।

২০০১ সালের ১৭ই ডিসেম্বর মামলাটি ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতে পেশ করা হয়। ২০০৪ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর এর শুনানি হয়। নীচের উদ্ধৃতিগুলো আদালতের দ্বারা উপস্থাপিত চূড়ান্ত বিচার থেকে নেওয়া হয়েছে:

“আদালত দেখেছে যে, ২০০০ সালের ১৬ই এপ্রিল আবেদনকারীদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে, সরকারি কর্মকর্তারা নির্ধারিত সময়ের আগেই তাদের ধর্মীয় সমাবেশ বন্ধ করে দিয়েছিল।”

“আইনত ভাড়া নেওয়া জায়গায় পরিচালিত একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠান ব্যাহত করার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই।”

“[আদালত] লক্ষ করেছে, রাশিয়ার সর্বোচ্চ আদালতের অতীতের মামলার নজির থেকে তৈরি আইন এই মর্মে জানায় যে, ধর্মীয় সম্মেলনগুলোর জন্য কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো আগাম অনুমতি অথবা বিজ্ঞপ্তি লাগবে না।”

“তাই ২০০০ সালের ১৬ই এপ্রিল কমিশনার ও তার সহযোগীদের দ্বারা আবেদনকারীদের ধর্মীয় সভা ব্যাহত হওয়ার কারণে [ধর্মীয় স্বাধীনতা] সম্বন্ধীয় সম্মেলনের ৯ নং ধারা লঙ্ঘন করা হয়েছে।”

“আদালত দেখেছে যে, জেলা ও আঞ্চলিক আদালত তাদের কর্তব্য পালনে ব্যর্থ হয়েছে . . . এবং এই বিষয়টা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে যে, সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো ন্যায্য ও নিরপেক্ষ রায় পেয়েছে। সেই সময় . . . [নিরপেক্ষ শুনানি লাভ করার অধিকার] সম্বন্ধীয় সম্মেলনের ৬ নং ধারা লঙ্ঘন করা হয়েছে।”

ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতে তাদের বিজয়লাভে অনুমোদন দেওয়ার জন্য যিহোবার সাক্ষিরা ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ। (গীতসংহিতা ৯৮:১) আদালতের রায়ের ফলে বিশ্বব্যাপী কতটা প্রভাব পড়বে? ধর্ম ও জননীতিমালা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি জোসেফ কে. গ্রিবস্কি বলেন: “এটা ইউরোপ জুড়ে ধর্মীয় স্বাধীনতাকে প্রভাবিত করার জন্য আরেকটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রায়, কারণ এই রায় ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের অধীন সমস্ত দেশের ধর্মীয় অধিকারগুলোকে প্রভাবিত করবে।”