সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

বাইবেলের শিক্ষা বিশ্বাস গড়ে তোলে

বাইবেলের শিক্ষা বিশ্বাস গড়ে তোলে

বাইবেলের শিক্ষা বিশ্বাস গড়ে তোলে

 “গত পাঁচ মাস ধরে আমাদের সৃষ্টিকর্তার চিন্তাভাবনার প্রতি মনোযোগ দেওয়ার ও বিভিন্ন বিষয়কে তিনি যেভাবে দেখেন, সেভাবে দেখতে শেখার জন্য সময় ব্যয় করা কতই না অমূল্য এক সুযোগ হয়েছে!” ওয়াচটাওয়ার বাইবেল স্কুল অভ্‌ গিলিয়েড এর ১২২তম ক্লাসের গ্র্যাজুয়েশনের দিন একজন প্রতিনিধি উক্ত মন্তব্য করেছিলেন। ২০০৭ সালের ১০ই মার্চ ক্লাসের সেই ৫৬ জন সদস্যের জন্য অনেক দিন ধরে এক স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে, যারা খুব শীঘ্রই ২৬টা জায়গায় তাদেরকে দেওয়া কার্যভারে মিশনারি সেবা শুরু করতে যাচ্ছিল।

৬,২০৫ জন শ্রোতাকে এক উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর পর পরিচালক গোষ্ঠীর একজন সদস্য থিওডোর জারাস বলেছিলেন: “আমরা নিশ্চিত যে, এই গ্র্যাজুয়েশন কার্যক্রমে যোগদান করার ফলে আপনারা আধ্যাত্মিকভাবে শক্তিশালী হবেন এবং আপনাদের বিশ্বাস গড়ে তুলবেন।” তিনি পর্যায়ক্রমে চারজন বক্তার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন, যারা ছাত্র-ছাত্রীদের তাদের মিশনারি কার্যভারে সফল হতে সাহায্য করার জন্য সময়োপযোগী বাইবেলভিত্তিক উৎসাহ এবং পরামর্শ প্রদান করবে।

অন্যদের মধ্যে বিশ্বাস গড়ে তোলার জন্য উৎসাহ দেওয়া

যুক্তরাষ্ট্রের শাখা কমিটির একজন সদস্য লিয়ন উইভার “সৎকর্ম করে চলুন,” এই মূলভাবের ওপর বক্তৃতা তুলে ধরেছিলেন। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের মনে করিয়ে দিয়েছিলেন যে, তারা প্রত্যেকেই পূর্ণসময়ের পরিচর্যায় গড়ে ১৩ বছর ব্যয় করেছে, সেই বাইবেল শিক্ষাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে, যা বিশ্বাস গড়ে তোলে। তিনি বলেছিলেন: “এটা এক উত্তম কাজ কারণ এর সঙ্গে লোকেদের জীবন রক্ষা করা জড়িত এবং এটা যে এক উত্তম কাজ তার আরও গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল, এটা আমাদের স্বর্গীয় পিতা যিহোবাকে মহিমান্বিত করে।” এরপর ভাই উইভার ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ‘আত্মার উদ্দেশে বুনিয়া’ চলতে এবং “সৎকর্ম্ম করিতে করিতে নিরুৎসাহ” না হতে উৎসাহ দিয়েছিলেন।—গালাতীয় ৬:৮, ৯.

পরিচালক গোষ্ঠীর একজন সদস্য ডেভিড স্প্ল্যান “যথাসাধ্য দ্রুত কাজ করুন” এই মূলভাব তুলে ধরার সময় ব্যবহারিক অনুস্মারকগুলো জুগিয়েছিলেন। ভাই স্প্ল্যান এই বিষয়গুলো করার মাধ্যমে নতুন মিশনারিদের সফলভাবে কাজ শুরু করার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন: “ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখুন। সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্তে আসবেন না। হাসুন। সমালোচনা করবেন না। নম্র হোন ও স্থানীয় ভাইদের সম্মান করুন।” এরপর তিনি আরও বলেছিলেন: “প্লেন থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে যথাসাধ্য দ্রুত কাজ করুন আর আপনারা যখন লোকেদের কাছে “মঙ্গলের সুসমাচার” নিয়ে যান, তখন যিহোবা যেন আপনাদের সেই সুন্দর চরণগুলোকে আশীর্বাদ করেন।”—যিশাইয় ৫২:৭.

গিলিয়েড নির্দেশক লরেন্স বোয়েন “এক উত্তরাধিকার, যা সমস্ত সন্দেহের ঊর্ধ্বে” এই মূলভাবটি আলোচনা করেছিলেন। ভাই বোয়েন ছাত্র-ছাত্রীদের মনে করিয়ে দিয়েছিলেন যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে গিলিয়েড স্কুল প্রতিষ্ঠা করার ভিত্তি ছিল যিহোবার ভবিষ্যদ্বাণীমূলক বাক্যের পরিপূর্ণতার ওপর পুরোপুরি নির্ভর করা। (ইব্রীয় ১১:১; প্রকাশিত বাক্য ১৭:৮) সেই সময় থেকে, গিলিয়েড স্কুল ছাত্র-ছাত্রীদেরকে তাদের বিশ্বাসকে শক্তিশালী করার এক সুযোগ করে দিয়েছে। দৃঢ় বিশ্বাস গ্র্যাজুয়েটদের সামনে এগিয়ে যেতে, উদ্যোগের সঙ্গে সত্য ঘোষণা করতে অনুপ্রাণিত করে।

আরেকজন গিলিয়েড নির্দেশক মার্ক নুমার “আপনারা আমাকে কারো কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন” এই আগ্রহজনক মূলভাবের ওপর বক্তৃতা তুলে ধরেছিলেন। তিনি ভাববাদী ইলীশায়ের উদাহরণের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করিয়েছিলেন, যিনি তার কার্যভারে বিশ্বাস ও সাহস প্রদর্শন করেছিলেন। ১ রাজাবলি ১৯:২১ পদের ওপর ভিত্তি করে বলা মন্তব্যে ভাই নুমার বলেছিলেন: “ইলীশায় তার জীবনে রদবদল করতে ইচ্ছুক ছিলেন, তিনি তার ব্যক্তিগত বিষয়গুলোকে দ্বিতীয় স্থানে রেখেছিলেন এবং যিহোবার উদ্দেশ্যকে সমর্থন করেছিলেন।” সেই একই মনোভাব দেখানোর কারণে ভাই নুমার গ্র্যাজুয়েটদের প্রশংসা করেছিলেন এবং তাদের নতুন কার্যভারে তা করা চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাদেরকে উৎসাহিত করেছিলেন।

বিশ্বাস নির্দ্বিধায় কথা বলার ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে

ভাবী মিশনারিরা স্কুল চলাকালীন তাদের বিশ্বাসকে গড়ে তোলার সঙ্গে সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোকে অন্যদের কাছে সুসমাচার প্রচার করার জন্য সদ্ব্যবহার করেছিল। এর ফলে চমৎকার সব অভিজ্ঞতা লাভ করা হয়েছিল, যেগুলো আরেকজন গিলিয়েড নির্দেশক ওয়ালেস লিভারেন্সের দ্বারা পরিচালিত একটা কার্যক্রমে বর্ণনা করা হয়েছিল ও পুনরাভিনয় করে দেখানো হয়েছিল। তার অংশের মূলভাব ছিল “আমরা বিশ্বাস করি, তাই কথা বলি,” এটা ২ করিন্থীয় ৪:১৩ পদে পাওয়া প্রেরিত পৌলের কথাগুলোকে নির্দেশ করেছিল।

এই অংশের পর, বেথেল পরিবারের সদস্য ড্যানিয়েল বার্নস্‌ ও চার্লস্‌ উডি বর্তমান ও প্রাক্তন মিশনারিদের সাক্ষাৎকার পরিচালনা করেছিল। এগুলো যে-ব্যক্তিরা যিহোবাকে বিশ্বস্তভাবে সেবা করে, তাদের জন্য তাঁর চিন্তা ও আশীর্বাদকে তুলে ধরেছিল। (হিতোপদেশ ১০:২২; ১ পিতর ৫:৭) একজন মিশনারি মন্তব্য করেছিলেন: “আমি ও আমার স্ত্রী গিলিয়েডে যে-শিক্ষা পেয়েছি, তার মাধ্যমে আমরা যিহোবার চিন্তা সুস্পষ্টভাবেই দেখেছি। এটা প্রকৃতপক্ষেই আমাদের বিশ্বাসকে গড়ে তুলেছে। বিশ্বাস গুরুত্বপূর্ণ কারণ মিশনারিরাসহ যিহোবার সমস্ত দাসই পরীক্ষা, সমস্যা ও উদ্বেগের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে।”

বাইবেলের শিক্ষাকে ক্রমাগত ছড়িয়ে দিন, যা বিশ্বাস গড়ে তোলে

গ্র্যাজুয়েশন কার্যক্রমের উপযুক্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে পরিচালক গোষ্ঠীর একজন সদস্য স্যামুয়েল হার্ড “আপনার ভাইদের ক্রমাগত গেঁথে তুলুন,” এই বিষয়ের ওপর শ্রোতাদের উদ্দেশে বক্তৃতা তুলে ধরেছিলেন। ছাত্র-ছাত্রীরা যে-শিক্ষা লাভ করেছে, সেটার উদ্দেশ্য কী ছিল? “এর উদ্দেশ্য হল, যিহোবার প্রশংসা করার জন্য কীভাবে আপনারা আপনাদের জিহ্বাকে ব্যবহার করতে পারেন তা শেখানো, আপনাদের নতুন কার্যভারের এলাকায় অন্যদের তাঁর সত্য শেখানো এবং বিশ্বাসে একে অন্যকে গেঁথে তোলা,” ভাই হার্ড বলেছিলেন। কিন্তু, তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের মনে করিয়ে দিয়েছিলেন যে, জিহ্বা এমন কিছুও ছড়াতে পারে, যা গঠনমূলক নয়। (হিতোপদেশ ১৮:২১; যাকোব ৩:৮-১০) তিনি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে তাদের জিহ্বাকে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে যিশুর উদাহরণ অনুকরণ করতে উৎসাহিত করেছিলেন। একটা ঘটনায়, যিশুর কথা শোনার পর তাঁর শিষ্যরা বলেছিল: “যখন তিনি . . . আমাদের কাছে শাস্ত্রের অর্থ খুলিয়া দিতেছিলেন, তখন আমাদের অন্তরে আমাদের চিত্ত কি উত্তপ্ত হইয়া উঠিতেছিল না?” (লূক ২৪:৩২) ভাই হার্ড বলেছিলেন: “আপনাদের কথাবার্তা যদি গঠনমূলক হয়, তা হলে সেগুলো আপনাদের কার্যভারের এলাকার ভাইবোনদের হৃদয়কে স্পর্শ করবে।”

এরপর, গ্র্যাজুয়েটরা তাদের ডিপ্লোমা লাভ করেছিল। তারপর ক্লাসের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতাপূর্ণ একটা চিঠি পড়া হয়েছিল। এটি বলেছিল: “আমরা মিশনারি হিসেবে আমাদের কার্যভার বিশ্বস্তভাবে পরিপূর্ণ করতে যা শিখেছি, তা ব্যবহার করার জন্য গভীর দায়িত্ববোধ উপলব্ধি করছি। যেহেতু আমরা পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত যাওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি, তাই আমরা প্রার্থনা করি যে আমাদের প্রচেষ্টাগুলো আমাদের সর্বমহান শিক্ষক যিহোবা ঈশ্বরের উচ্চ প্রশংসা নিয়ে আসবে।” শ্রোতারা আন্তরিক হাততালি দিয়ে সাড়া দিয়েছিল। বস্তুতপক্ষে, সেই গ্র্যাজুয়েশন কার্যক্রম উপস্থিত সকলের বিশ্বাসকে গড়ে তুলেছিল।

[১৭ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

“আপনাদের কথাবার্তা যদি গঠনমূলক হয়, তা হলে সেগুলো আপনাদের কার্যভারের এলাকার ভাইবোনদের হৃদয়কে স্পর্শ করবে”

[১৫ পৃষ্ঠার বাক্স]

ক্লাসের পরিসংখ্যান

যতগুলো দেশ থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা এসেছে: ৯

যতগুলো দেশে তাদের পাঠানো হয়েছে: ২৬

মোট ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা: ৫৬

গড় বয়স: ৩৩.৪

সত্যে থাকার গড় বছর: ১৬.৮

পূর্ণসময়ের পরিচর্যার গড় বছর: ১৩

[১৬ পৃষ্ঠার চিত্র]

ওয়াচটাওয়ার বাইবেল স্কুল অভ্‌ গিলিয়েড এর ১২২তম গ্র্যাজুয়েটিং ক্লাস

নীচের তালিকাতে সামনে থেকে পিছনে সারিগুলোকে সংখ্যান্বিত করা হয়েছে এবং প্রত্যেক সারিতে বাম দিক থেকে ডান দিকে নামগুলো তালিকাবদ্ধ করা হয়েছে।

(১) হাওয়িট, আর.; স্মিথ, পি.; মার্টিনেস্‌, এ.; পটসোবন, এস.; কিতামুরা, ওয়াই.; লড, সি. (২) ফিডলার, আই.; বিসলি, কে.; মেটকভিচ, সি.; বেল, ডি.; লিপিনকট, ডব্লু. (৩) সাইট্‌স্‌, ডব্লু.; আ্যন্ডারসন, এ.; টোভ্‌স্‌, এল.; ফুসানো, জি.; রদ্রিগেস, সি.; ইয়ু, জে. (৪) সোবোমিহিন, এম.; থমাস, এল.; গেসন, এস.; ডবা, ভি.; বার্‌টৌ, এ.; উইন, সি.; ডব্রভল্‌স্কি, এম. (৫) ইয়ু, জে.; ডবা, জে.; মিক্সার, এইচ.; নিউটন, এম.; রদ্রিগেস, এফ.; মিক্সার, এন. (৬) লড, এম.; লিপিনকট, কে.; মার্টিনেস, আর.; হব্‌, এ.; স্ক্যাম্প, আর.; পটসোবন, এল.; টোভ্‌স্‌, এস. (৭) হাওয়িট, এস.; কিতামুরা, ইউ.; নিউটন, ডি.; হব্‌, জে.; সাইট্‌স্‌, জে.; থমাস, ডি. (৮) সোবোমিহিন, এল.; মেটকভিচ, জে.; ফুসানো, বি.; উইন, জে.; স্ক্যাম্প, জে.; আ্যন্ডারসন, ডি.; ডব্রভল্‌স্কি, জে. (৯) ফিডলার, পি.; বেল, ই.; বিসলি, বি.; স্মিথ, বি.; বার্‌টৌ, পি.; গেসন, এম.